বিভুরঞ্জন সরকার
তাঁর শারীরিক অনুপস্থিতির ১৭ বছর হয়ে গেলেও তিনি এখনো উজ্জ্বল আছেন অসংখ্য মানুষের স্মৃতিতে, চোখের আড়ালে গিয়েও অনেকের মন জুড়ে তাঁর উপস্থিতি আছে সব সময়। কারণ, তাঁর জীবন নিবেদিত ছিল মানুষের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে যে বর্বর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল, তাতে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছিলেন কয়েকজন। আর গুরুতর আহত হয়েছিলেন যাঁরা তাঁদের একজন আইভি রহমান। আওয়ামী লীগের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী আইভি রহমান আহত অবস্থায় জীবনযুদ্ধ চালিয়ে পরাজয় শিকার করেন ২৪ আগস্ট। তাঁর মৃত্যু শুধু তাঁর আত্মীয়-পরিজনকে কাঁদায়নি, বিবেকবান প্রতিটি মানুষের চোখ সেদিন ভিজে গিয়েছিল। অশ্রুতে, পুষ্পে ঢেকে হয়েছিল তাঁর শেষযাত্রা।
আইভি রহমানের জন্ম ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। তাঁর বাবা ছিলেন ঢাকা কলেজের একসময়ের ডাকসাইটে অধ্যক্ষ জালালউদ্দিন আহমেদ। জন্মের পর নাম রাখা হয়েছিল জেবুন্নেছা আইভি। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন তাঁর বিয়ে হয় আইনজীবী ও আওয়ামী লীগের উদীয়মান নেতা জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। বিয়ের সাক্ষী ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি তখন বাঙালি জাতির অধিকার আন্দোলনের নেতা হিসেবে খ্যাতিমান হয়ে উঠেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানার শাশুড়ি হচ্ছেন আইভি রহমানের বড় বোন।
অল্প বয়সে বিয়ে হলেও আইভি রহমান পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছেন। রাজনীতিতেও তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন স্বাভাবিকভাবেই। বঙ্গবন্ধু এবং স্বামী জিল্লুর রহমানের উৎসাহ ও প্রেরণায় তিনি ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হন এবং মৃত্যুর সময় পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের নেত্রী পর্যায়েই ছিলেন। আইভি রহমান মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদকসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক দায়িত্ব তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। তবে পদ-পদবি তাঁর কাছে বড় ছিল না, তিনি কাজ করতে পছন্দ করতেন এবং সেটা ঘটা করে প্রচার করে নয়। তিনি মুক্তিযুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আইভি রহমান সব সময় রাজপথেই কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন নিরহংকার, রাজপথের নেতা। আওয়ামী লীগের সুসময় কিংবা দুঃসময়–সব সময় রাজপথে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজকে পেছনে ফেলে যে জাতীয় অগ্রগতি ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারে না, সেটা উপলব্ধি করেই তিনি নারী সংগঠন প্রতিষ্ঠায়ও উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেছেন। মহিলা সমিতি, জাতীয় মহিলা সংস্থায় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আইভি রহমান ছিলেন সত্যিকার অর্থেই দশ হাতে কাজ করা মানুষ। তিনি সংসার সামলেছেন, এক পুত্র নাজমুল হাসান পাপন, দুই কন্যা তানিয়া ও তনিমাকে মাতৃস্নেহে বড় করেছেন। রাজনীতিবিদ স্বামী, যিনি একাধিকবার আওয়ামী লীগের মতো বিরাট সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁর সহযোদ্ধা এবং ছায়াসঙ্গী হিসেবে থেকেছেন আবার রাজনীতি ও সামাজিক দায়িত্ব পালনেও পেছনে থাকেননি কোনো সময়। আইভি রহমানের মৃত্যুর পর জিল্লুর রহমান আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আইভি ছাড়া আমি তো জীবন্মৃত!’ মৃত্যুদিনে এই সাহসী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও দরদি মানুষটির প্রতি জানাই
গভীর শ্রদ্ধা।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
তাঁর শারীরিক অনুপস্থিতির ১৭ বছর হয়ে গেলেও তিনি এখনো উজ্জ্বল আছেন অসংখ্য মানুষের স্মৃতিতে, চোখের আড়ালে গিয়েও অনেকের মন জুড়ে তাঁর উপস্থিতি আছে সব সময়। কারণ, তাঁর জীবন নিবেদিত ছিল মানুষের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে যে বর্বর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল, তাতে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছিলেন কয়েকজন। আর গুরুতর আহত হয়েছিলেন যাঁরা তাঁদের একজন আইভি রহমান। আওয়ামী লীগের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী আইভি রহমান আহত অবস্থায় জীবনযুদ্ধ চালিয়ে পরাজয় শিকার করেন ২৪ আগস্ট। তাঁর মৃত্যু শুধু তাঁর আত্মীয়-পরিজনকে কাঁদায়নি, বিবেকবান প্রতিটি মানুষের চোখ সেদিন ভিজে গিয়েছিল। অশ্রুতে, পুষ্পে ঢেকে হয়েছিল তাঁর শেষযাত্রা।
আইভি রহমানের জন্ম ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। তাঁর বাবা ছিলেন ঢাকা কলেজের একসময়ের ডাকসাইটে অধ্যক্ষ জালালউদ্দিন আহমেদ। জন্মের পর নাম রাখা হয়েছিল জেবুন্নেছা আইভি। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন তাঁর বিয়ে হয় আইনজীবী ও আওয়ামী লীগের উদীয়মান নেতা জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। বিয়ের সাক্ষী ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি তখন বাঙালি জাতির অধিকার আন্দোলনের নেতা হিসেবে খ্যাতিমান হয়ে উঠেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানার শাশুড়ি হচ্ছেন আইভি রহমানের বড় বোন।
অল্প বয়সে বিয়ে হলেও আইভি রহমান পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছেন। রাজনীতিতেও তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন স্বাভাবিকভাবেই। বঙ্গবন্ধু এবং স্বামী জিল্লুর রহমানের উৎসাহ ও প্রেরণায় তিনি ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হন এবং মৃত্যুর সময় পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের নেত্রী পর্যায়েই ছিলেন। আইভি রহমান মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদকসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক দায়িত্ব তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। তবে পদ-পদবি তাঁর কাছে বড় ছিল না, তিনি কাজ করতে পছন্দ করতেন এবং সেটা ঘটা করে প্রচার করে নয়। তিনি মুক্তিযুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আইভি রহমান সব সময় রাজপথেই কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন নিরহংকার, রাজপথের নেতা। আওয়ামী লীগের সুসময় কিংবা দুঃসময়–সব সময় রাজপথে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজকে পেছনে ফেলে যে জাতীয় অগ্রগতি ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারে না, সেটা উপলব্ধি করেই তিনি নারী সংগঠন প্রতিষ্ঠায়ও উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেছেন। মহিলা সমিতি, জাতীয় মহিলা সংস্থায় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আইভি রহমান ছিলেন সত্যিকার অর্থেই দশ হাতে কাজ করা মানুষ। তিনি সংসার সামলেছেন, এক পুত্র নাজমুল হাসান পাপন, দুই কন্যা তানিয়া ও তনিমাকে মাতৃস্নেহে বড় করেছেন। রাজনীতিবিদ স্বামী, যিনি একাধিকবার আওয়ামী লীগের মতো বিরাট সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁর সহযোদ্ধা এবং ছায়াসঙ্গী হিসেবে থেকেছেন আবার রাজনীতি ও সামাজিক দায়িত্ব পালনেও পেছনে থাকেননি কোনো সময়। আইভি রহমানের মৃত্যুর পর জিল্লুর রহমান আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আইভি ছাড়া আমি তো জীবন্মৃত!’ মৃত্যুদিনে এই সাহসী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও দরদি মানুষটির প্রতি জানাই
গভীর শ্রদ্ধা।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১৩ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
১৪ ঘণ্টা আগে