তাপস বড়ুয়া
পদ্মা সেতু তৈরি। শিগগিরই সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে দ্বার। দেশের জন্য, সরকারের জন্য এ এক বিশাল সাফল্য। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের দীর্ঘ স্বপ্নের বাস্তবায়ন। পদ্মা পার হতে ফেরিঘাটে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের সমাপ্তির দ্বারপ্রান্তে আমরা।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর সড়ক ও রেলপথে যুক্ত হবে ঢাকার সঙ্গে। দেশের অর্থনীতিতে ঘটবে যুগান্তকারী পরিবর্তন। এই সব স্বপ্ন আজ হাতের নাগালে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প, তাতে দুর্নীতির অভিযোগ, বৈশ্বিক ঋণদানকারী সংস্থার বৈরিতা, বাংলাদেশের নিজ অর্থায়নে এই বড় প্রকল্প চালিয়ে নেওয়া এবং সফলভাবে শেষ করা—সব মিলিয়ে এ এক মহাকাব্যিক উপাখ্যান। যাতে ঘটনার উত্থান-পতন রয়েছে, মারাত্মক সব টুইস্ট রয়েছে। এই কেসটিকে পৃথিবীর মোড়ল টাইপ গ্লোবাল নর্থ বা উন্নত বিশ্ব আর গ্লোবাল সাউথ বা অপেক্ষাকৃত কম উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর সম্পর্কের একটা পালাবদলের সূচনা হিসেবে দেখা যায়।
একদিকে আমাদের যত বড় সাফল্য; আমার বিবেচনায়, অন্যদিকে বৈশ্বিক ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের তত বড় ব্যর্থতা। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ—এসব প্রতিষ্ঠান দাতা সংস্থা নয়; তারা দান করে না, ঋণ দেয়; সুদে-আসলে আদায় করে। এই সব প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল নর্থ উন্নত দেশগুলোর অলিখিত প্রতিনিধিত্ব করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
১৯৪৪ সালের ব্রাইটন উডস কনফারেন্সের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের জন্ম। উদ্দেশ্য, বৈশ্বিক বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নে অবদান রাখা, যার মাধ্যমে বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্কসমূহে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। তারা দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে ঋণ দেয় এসব দেশের অর্থনীতি চাঙা রাখতে, যাতে বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক লেনদেন চলমান থাকতে পারে।
এসব প্রতিষ্ঠান ঋণের চাইতে উপদেশ দেওয়ায় কখনো কখনো বেশি আগ্রহ দেখায়। তারা ঋণ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে। ঋণ গ্রহণকারী দেশকে তার নীতিকাঠামোয় অথবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়ে বিভিন্ন পরিবর্তন আনার সুপারিশ করে তারা। যদিও তারা দেশকে অর্থ দান করে না, বরং সুদে ধার দেয়, তবু উপদেশ-পরামর্শকে কখনো কখনো চাপের পর্যায়ে নিয়ে যায়। তাদের এসব কাজে বৈশ্বিক উত্তরের মোড়লদের সঙ্গে পায় সব সময়। অথবা বৈশ্বিক উত্তরের মোড়লেরা তাদের এজেন্ডা অন্য দেশগুলোর ওপর চাপিয়ে দিতে এসব প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে পায়।
ঋণকে তারা একটি দেশকে, একটি সরকারকে চাপে রাখার অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার করে—এ অভিযোগ পুরোনো। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলো সেই চাপের কাছে মাথা নিচু করতে বাধ্য হয় অনেক ক্ষেত্রে।
পৃথিবীর যেসব দেশ সময়মতো এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণসংক্রান্ত পাওনা নিয়মিত পরিশোধ করে, বাংলাদেশ সেগুলোর একটা। এই রাষ্ট্রকে, সরকারকে চাপে রাখার একটা উপলক্ষ তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে পেয়েছিল, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। সরকার অভিযুক্তদের প্রকল্পসংশ্লিষ্ট দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরেও তারা চাপ অব্যাহত রাখে।
প্রধানমন্ত্রী তখন শক্ত অবস্থান নেন। অসীম সাহস না থাকলে বৈশ্বিক দক্ষিণের একজন নেতা হয়ে বৈশ্বিক উত্তরের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। শেখ হাসিনা সেটি করে দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অতীতের কোনো সরকারপ্রধান এভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারতেন বলে মনে হয় না। নিজস্ব অর্থায়নে এত বড় কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছিলেন তিনি। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন আর প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তা জয়যুক্ত হয়েছে। এ কাজে তিনি সঙ্গে নিয়েছিলেন একদল যোগ্য ও নিবেদিতপ্রাণ মানুষকে। অনেকের নামই নেওয়া যায়। এই বিশাল অঙ্কের অর্থ অভ্যন্তরীণভাবে সঞ্চয়নও সহজ ছিল না। সেই অর্থ অভ্যন্তরীণভাবে সঞ্চয়নের ক্ষেত্রে বড় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অলটারনেটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদটি মনে হয় বাংলাদেশের আমলাদের জন্যই তৈরি। এ দেশের বড় আমলারা ওখানে যান, বড় বেতনে চাকরি করেন। ফিরে এসে আবার সরকারি পদে আসীন হন। এবং আমার ধারণা, বিশ্বব্যাংকের ফরমুলা এ দেশের নীতিকাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করার দায়িত্ব নিয়ে ফেরেন। সেই সব আমলা, যাঁদের অনেকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে এখন সিভিল সোসাইটির মাথা হয়েছেন, তাঁদেরও ভালো কোনো ভূমিকা আমরা পদ্মা সেতু প্রকল্পের জট খোলার কাজে লাগাতে দেখিনি।
বাংলাদেশে দুর্নীতির যে প্রবল প্রতাপ আছে, এটা কোনো নতুন তথ্য নয়। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকে আমরা প্রথম দিকেই থাকি। তাই বলে ঢালাওভাবে প্রায় তথ্য-প্রমাণবিহীনভাবে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা দুর্নীতির অভিযোগ তুলবে, এটা সমর্থনযোগ্য নয়।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের কথিত দুর্নীতি নিয়ে কানাডা ও বাংলাদেশে মামলা ও তদন্ত হয়েছিল। দুই জায়গার কোথাও আদালতে অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়নি। পরে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকেরই সংস্কারের প্রস্তাব করেছিলেন। যাঁরা বিভিন্ন দেশে সংস্কারের পরামর্শ দিয়ে বেড়ান, তাঁদের নিজেদের সংস্কার করতে বলার ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ। এই প্রশ্ন তোলাই যায়, অভিযোগগুলো বিশ্বব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা তুলেছিলেন, অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ার পরে সংস্থাটি কি সেই সব কর্মকর্তার উদ্দেশ্য নিয়ে কোনো তদন্ত করেছে?
পদ্মা সেতু শুধু বাংলাদেশের গর্ব নয়, বৈশ্বিক দক্ষিণের জন্য গর্বের। বৈশ্বিক উত্তরকে দেখিয়ে দেওয়া, ‘তোমরা বৈরী হলেই আমরা বড় কিছু করতে পারব না—এই ধারণা নিয়ে তোমাদের বসে থাকার দিন শেষ।’
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
শেষ করা যাক ওয়াই ভি লক্ষণ রাওয়ের একটি গবেষণার কথা বলে। ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত তাঁর বই Communication and Development: Study of Two Indian Villages–এ তিনি দক্ষিণ ভারতের দুটি গ্রামের ওপর গবেষণার ভিত্তিতে দেখিয়েছিলেন, কীভাবে একটি রাস্তা দুটো গ্রামের উন্নয়নের মধ্যে ফারাক তৈরি করে দেয়, গ্রামের ওপর দিয়ে যাওয়া একটি রাস্তা কীভাবে একটি গ্রামের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখে। পদ্মা সেতু দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জীবনে সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখবে, সেটাই এখন প্রত্যাশা।
লেখক: বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত ও কলাম লেখক
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
পদ্মা সেতু তৈরি। শিগগিরই সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে দ্বার। দেশের জন্য, সরকারের জন্য এ এক বিশাল সাফল্য। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের দীর্ঘ স্বপ্নের বাস্তবায়ন। পদ্মা পার হতে ফেরিঘাটে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের সমাপ্তির দ্বারপ্রান্তে আমরা।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর সড়ক ও রেলপথে যুক্ত হবে ঢাকার সঙ্গে। দেশের অর্থনীতিতে ঘটবে যুগান্তকারী পরিবর্তন। এই সব স্বপ্ন আজ হাতের নাগালে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প, তাতে দুর্নীতির অভিযোগ, বৈশ্বিক ঋণদানকারী সংস্থার বৈরিতা, বাংলাদেশের নিজ অর্থায়নে এই বড় প্রকল্প চালিয়ে নেওয়া এবং সফলভাবে শেষ করা—সব মিলিয়ে এ এক মহাকাব্যিক উপাখ্যান। যাতে ঘটনার উত্থান-পতন রয়েছে, মারাত্মক সব টুইস্ট রয়েছে। এই কেসটিকে পৃথিবীর মোড়ল টাইপ গ্লোবাল নর্থ বা উন্নত বিশ্ব আর গ্লোবাল সাউথ বা অপেক্ষাকৃত কম উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর সম্পর্কের একটা পালাবদলের সূচনা হিসেবে দেখা যায়।
একদিকে আমাদের যত বড় সাফল্য; আমার বিবেচনায়, অন্যদিকে বৈশ্বিক ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের তত বড় ব্যর্থতা। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ—এসব প্রতিষ্ঠান দাতা সংস্থা নয়; তারা দান করে না, ঋণ দেয়; সুদে-আসলে আদায় করে। এই সব প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল নর্থ উন্নত দেশগুলোর অলিখিত প্রতিনিধিত্ব করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
১৯৪৪ সালের ব্রাইটন উডস কনফারেন্সের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের জন্ম। উদ্দেশ্য, বৈশ্বিক বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নে অবদান রাখা, যার মাধ্যমে বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্কসমূহে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। তারা দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে ঋণ দেয় এসব দেশের অর্থনীতি চাঙা রাখতে, যাতে বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক লেনদেন চলমান থাকতে পারে।
এসব প্রতিষ্ঠান ঋণের চাইতে উপদেশ দেওয়ায় কখনো কখনো বেশি আগ্রহ দেখায়। তারা ঋণ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে। ঋণ গ্রহণকারী দেশকে তার নীতিকাঠামোয় অথবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়ে বিভিন্ন পরিবর্তন আনার সুপারিশ করে তারা। যদিও তারা দেশকে অর্থ দান করে না, বরং সুদে ধার দেয়, তবু উপদেশ-পরামর্শকে কখনো কখনো চাপের পর্যায়ে নিয়ে যায়। তাদের এসব কাজে বৈশ্বিক উত্তরের মোড়লদের সঙ্গে পায় সব সময়। অথবা বৈশ্বিক উত্তরের মোড়লেরা তাদের এজেন্ডা অন্য দেশগুলোর ওপর চাপিয়ে দিতে এসব প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে পায়।
ঋণকে তারা একটি দেশকে, একটি সরকারকে চাপে রাখার অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার করে—এ অভিযোগ পুরোনো। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলো সেই চাপের কাছে মাথা নিচু করতে বাধ্য হয় অনেক ক্ষেত্রে।
পৃথিবীর যেসব দেশ সময়মতো এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণসংক্রান্ত পাওনা নিয়মিত পরিশোধ করে, বাংলাদেশ সেগুলোর একটা। এই রাষ্ট্রকে, সরকারকে চাপে রাখার একটা উপলক্ষ তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে পেয়েছিল, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। সরকার অভিযুক্তদের প্রকল্পসংশ্লিষ্ট দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরেও তারা চাপ অব্যাহত রাখে।
প্রধানমন্ত্রী তখন শক্ত অবস্থান নেন। অসীম সাহস না থাকলে বৈশ্বিক দক্ষিণের একজন নেতা হয়ে বৈশ্বিক উত্তরের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। শেখ হাসিনা সেটি করে দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অতীতের কোনো সরকারপ্রধান এভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারতেন বলে মনে হয় না। নিজস্ব অর্থায়নে এত বড় কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছিলেন তিনি। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন আর প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তা জয়যুক্ত হয়েছে। এ কাজে তিনি সঙ্গে নিয়েছিলেন একদল যোগ্য ও নিবেদিতপ্রাণ মানুষকে। অনেকের নামই নেওয়া যায়। এই বিশাল অঙ্কের অর্থ অভ্যন্তরীণভাবে সঞ্চয়নও সহজ ছিল না। সেই অর্থ অভ্যন্তরীণভাবে সঞ্চয়নের ক্ষেত্রে বড় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অলটারনেটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদটি মনে হয় বাংলাদেশের আমলাদের জন্যই তৈরি। এ দেশের বড় আমলারা ওখানে যান, বড় বেতনে চাকরি করেন। ফিরে এসে আবার সরকারি পদে আসীন হন। এবং আমার ধারণা, বিশ্বব্যাংকের ফরমুলা এ দেশের নীতিকাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করার দায়িত্ব নিয়ে ফেরেন। সেই সব আমলা, যাঁদের অনেকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে এখন সিভিল সোসাইটির মাথা হয়েছেন, তাঁদেরও ভালো কোনো ভূমিকা আমরা পদ্মা সেতু প্রকল্পের জট খোলার কাজে লাগাতে দেখিনি।
বাংলাদেশে দুর্নীতির যে প্রবল প্রতাপ আছে, এটা কোনো নতুন তথ্য নয়। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকে আমরা প্রথম দিকেই থাকি। তাই বলে ঢালাওভাবে প্রায় তথ্য-প্রমাণবিহীনভাবে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা দুর্নীতির অভিযোগ তুলবে, এটা সমর্থনযোগ্য নয়।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের কথিত দুর্নীতি নিয়ে কানাডা ও বাংলাদেশে মামলা ও তদন্ত হয়েছিল। দুই জায়গার কোথাও আদালতে অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়নি। পরে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকেরই সংস্কারের প্রস্তাব করেছিলেন। যাঁরা বিভিন্ন দেশে সংস্কারের পরামর্শ দিয়ে বেড়ান, তাঁদের নিজেদের সংস্কার করতে বলার ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ। এই প্রশ্ন তোলাই যায়, অভিযোগগুলো বিশ্বব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা তুলেছিলেন, অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ার পরে সংস্থাটি কি সেই সব কর্মকর্তার উদ্দেশ্য নিয়ে কোনো তদন্ত করেছে?
পদ্মা সেতু শুধু বাংলাদেশের গর্ব নয়, বৈশ্বিক দক্ষিণের জন্য গর্বের। বৈশ্বিক উত্তরকে দেখিয়ে দেওয়া, ‘তোমরা বৈরী হলেই আমরা বড় কিছু করতে পারব না—এই ধারণা নিয়ে তোমাদের বসে থাকার দিন শেষ।’
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
শেষ করা যাক ওয়াই ভি লক্ষণ রাওয়ের একটি গবেষণার কথা বলে। ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত তাঁর বই Communication and Development: Study of Two Indian Villages–এ তিনি দক্ষিণ ভারতের দুটি গ্রামের ওপর গবেষণার ভিত্তিতে দেখিয়েছিলেন, কীভাবে একটি রাস্তা দুটো গ্রামের উন্নয়নের মধ্যে ফারাক তৈরি করে দেয়, গ্রামের ওপর দিয়ে যাওয়া একটি রাস্তা কীভাবে একটি গ্রামের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখে। পদ্মা সেতু দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জীবনে সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখবে, সেটাই এখন প্রত্যাশা।
লেখক: বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত ও কলাম লেখক
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
শেখ হাসিনার পতিত স্বৈরাচারী সরকার সাড়ে ১৫ বছর ধরে এ দেশের জনগণের মাথাপিছু জিডিপি প্রশংসনীয় গতিতে বাড়ার গল্প সাজিয়ে শাসন করেছে। মাথাপিছু জিডিপি প্রকৃতপক্ষে একটি মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ কনসেপ্ট। এটার সবচেয়ে মারাত্মক সীমাবদ্ধতা হলো, এটা একটা গড়, যেটা স্বল্পসংখ্যক ধনী এবং বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ নিম্ন-মধ্যবিত্ত
১৭ ঘণ্টা আগেআমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথিবীকে জলবায়ু-বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য ‘শূন্য বর্জ্য ও শূন্য কার্বন’-এর ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন জীবনধারা গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন।
১৭ ঘণ্টা আগেআমেরিকার ১৩২ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে একবার হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম মেয়াদে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ট্রাম্প।
১৭ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বড্ড কষ্ট বুকে নিয়েই ‘সব শালারা বাটপার’ স্লোগানটি দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পাচ্ছেন না। ঠিকাদারেরা ভেলকিবাজি করছেন।ক্যাম্পাসের জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হয়নি।
১৭ ঘণ্টা আগে