মনোতোষ কুমার দে
৭১ সারের ১৪ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও পাকিস্তানি হানাদারকবলিত হয়। আর তখনই আমাদের প্রিয় জনপদের মানুষ হয়ে পড়েন মৃত্যু আতঙ্কে হতবিহ্বল, দিশেহারা। সবারই জীবনে নেমে আসে ভয়াবহ অন্ধকার। সবারই মুখ ভয়ে কেমন ফ্যাকাশে হয়ে যায়। গর্জে ওঠা মেশিনগানের মুখে গ্রাম স্তব্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। খবর আসে, খবর নয় দুঃসংবাদ—
‘প্রতিবেশী গ্রাম দগ্ধ; আহত গাছের/ ডালে ঝোলে বৃদ্ধ মৃতদেহ। আলে রক্তরাঙা শাড়ি। বন্দুকের/ নলের হুকুমে গ্রাম্যজন নেয় মেনে অবরুদ্ধ যন্ত্রণায়/ যান্ত্রিক কাতারবন্দি মৃত্যু।’ গোটা দেশের মতোই এই ঠাকুরগাঁও মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। সবাই প্রহর গুনতে থাকে নির্মম মৃত্যুর। মৃত্যুর থাবা থেকে রক্ষা পেতে নিরুপায় হয়ে আশ্রয় নেয় গ্রামে, গ্রামের ঝোপঝাড়-জঙ্গলে, তবু নিষ্কৃতি নেই। ভয়াবহ মৃত্যুদূত এসে পড়ে যখন-তখন।
এমনি যখন মৃত্যুবিভীষিকা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র, যখন কোনো কৌশলে প্রাণ রক্ষার কোনো উপায়ই ছিল না তাঁদের, তখন তাঁরা পুরুষানুক্রমিক ভিটেমাটি ছেড়ে দেশান্তর হতে চেয়েছিলেন। তাঁরা এই ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বেশকিছু গ্রামের মানুষ। তাঁরা হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার নর-নারী। আর এই গ্রামগুলো হলো জগন্নাথপুর, চকহলদি, সিঙ্গিয়া, চ-ীপুর, আলমপুর, বাসুদেবপুর, গৌরীপুর মিলনপুর, খামার ভোপলা, শুকান পুকুরি, ঢাবঢুবসহ অনেক গ্রাম। এসব গ্রাম থেকে হেঁটে হেঁটে তাঁরা সীমান্তের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে জাঠিভাঙ্গায় পাক হানাদার বাহিনীর কিছু চিহ্নিত দোসর তাঁদের আটকে দেয়। নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে তাঁদের আশ্রয় দেয় ওই এলাকার পরিত্যক্ত ঘরবাড়িতে। ওই বাড়িগুলো ছিল কয়েক দিন আগেই চলে যাওয়া লোকজনের শূন্য ঘরদোর।
সন্ধ্যা হওয়ায় এবং ক্লান্ত বোধ করায় তাঁরা সেখানে রাত্রি যাপন করতে বাধ্য হন। একটি ভোরের প্রতীক্ষায় তাঁরা যখন রাতটুকু কাটাচ্ছিলেন, তখন হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর এ দেশীয় কিছু দোসর খবর দেয় ঠাকুরগাঁও ইপিআর ক্যাম্পে। সকালেই চলে আসে দুই লরী বোঝাই সশস্ত্র পাকিস্তানি সৈন্য। সেদিন ২৩ এপ্রিল যথানিয়মে ভোর হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তাঁদের জীবনে নেমে এসেছিল ভয়াবহ অন্ধকার। পাকিস্তানি সৈন্যরা তাঁদের ঘেরাও করে ফেলে। জাঠিভাঙ্গায় ছড়িয়ে পড়ে কান্নার রোল। পুরুষদের বের করে এনে নিকটেই পাথরাজ নদের বালুর চরায় লাইন ধরিয়ে গুলি করে হত্যা করতে থাকে। এই হত্যাযজ্ঞ চলে বিকেল পর্যন্ত। এ সময় তারা ধর্ষণও করে কমবয়সী নারীদের। প্রায় তিন হাজার নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করেছে ওরা। কাদের মদদে এই হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছিল তা সবারই জানা। কিন্তু তাদের আজও বিচারের সম্মুখীন করা সম্ভব হয়নি।
৭১ সারের ১৪ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও পাকিস্তানি হানাদারকবলিত হয়। আর তখনই আমাদের প্রিয় জনপদের মানুষ হয়ে পড়েন মৃত্যু আতঙ্কে হতবিহ্বল, দিশেহারা। সবারই জীবনে নেমে আসে ভয়াবহ অন্ধকার। সবারই মুখ ভয়ে কেমন ফ্যাকাশে হয়ে যায়। গর্জে ওঠা মেশিনগানের মুখে গ্রাম স্তব্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। খবর আসে, খবর নয় দুঃসংবাদ—
‘প্রতিবেশী গ্রাম দগ্ধ; আহত গাছের/ ডালে ঝোলে বৃদ্ধ মৃতদেহ। আলে রক্তরাঙা শাড়ি। বন্দুকের/ নলের হুকুমে গ্রাম্যজন নেয় মেনে অবরুদ্ধ যন্ত্রণায়/ যান্ত্রিক কাতারবন্দি মৃত্যু।’ গোটা দেশের মতোই এই ঠাকুরগাঁও মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। সবাই প্রহর গুনতে থাকে নির্মম মৃত্যুর। মৃত্যুর থাবা থেকে রক্ষা পেতে নিরুপায় হয়ে আশ্রয় নেয় গ্রামে, গ্রামের ঝোপঝাড়-জঙ্গলে, তবু নিষ্কৃতি নেই। ভয়াবহ মৃত্যুদূত এসে পড়ে যখন-তখন।
এমনি যখন মৃত্যুবিভীষিকা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র, যখন কোনো কৌশলে প্রাণ রক্ষার কোনো উপায়ই ছিল না তাঁদের, তখন তাঁরা পুরুষানুক্রমিক ভিটেমাটি ছেড়ে দেশান্তর হতে চেয়েছিলেন। তাঁরা এই ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বেশকিছু গ্রামের মানুষ। তাঁরা হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার নর-নারী। আর এই গ্রামগুলো হলো জগন্নাথপুর, চকহলদি, সিঙ্গিয়া, চ-ীপুর, আলমপুর, বাসুদেবপুর, গৌরীপুর মিলনপুর, খামার ভোপলা, শুকান পুকুরি, ঢাবঢুবসহ অনেক গ্রাম। এসব গ্রাম থেকে হেঁটে হেঁটে তাঁরা সীমান্তের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে জাঠিভাঙ্গায় পাক হানাদার বাহিনীর কিছু চিহ্নিত দোসর তাঁদের আটকে দেয়। নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে তাঁদের আশ্রয় দেয় ওই এলাকার পরিত্যক্ত ঘরবাড়িতে। ওই বাড়িগুলো ছিল কয়েক দিন আগেই চলে যাওয়া লোকজনের শূন্য ঘরদোর।
সন্ধ্যা হওয়ায় এবং ক্লান্ত বোধ করায় তাঁরা সেখানে রাত্রি যাপন করতে বাধ্য হন। একটি ভোরের প্রতীক্ষায় তাঁরা যখন রাতটুকু কাটাচ্ছিলেন, তখন হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর এ দেশীয় কিছু দোসর খবর দেয় ঠাকুরগাঁও ইপিআর ক্যাম্পে। সকালেই চলে আসে দুই লরী বোঝাই সশস্ত্র পাকিস্তানি সৈন্য। সেদিন ২৩ এপ্রিল যথানিয়মে ভোর হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তাঁদের জীবনে নেমে এসেছিল ভয়াবহ অন্ধকার। পাকিস্তানি সৈন্যরা তাঁদের ঘেরাও করে ফেলে। জাঠিভাঙ্গায় ছড়িয়ে পড়ে কান্নার রোল। পুরুষদের বের করে এনে নিকটেই পাথরাজ নদের বালুর চরায় লাইন ধরিয়ে গুলি করে হত্যা করতে থাকে। এই হত্যাযজ্ঞ চলে বিকেল পর্যন্ত। এ সময় তারা ধর্ষণও করে কমবয়সী নারীদের। প্রায় তিন হাজার নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করেছে ওরা। কাদের মদদে এই হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছিল তা সবারই জানা। কিন্তু তাদের আজও বিচারের সম্মুখীন করা সম্ভব হয়নি।
যেকোনো সামাজিক বিষয় বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কখনো কখনো তত্ত্ব দিয়ে তার ব্যাখ্যা করি, আবার কখনো কখনো বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয় বা সমস্যার বিশ্লেষণ করি। তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা...
৪ ঘণ্টা আগেগাজার সবচেয়ে সুপরিচিত ফুটবল স্টেডিয়ামটি এখন বিশৃঙ্খলায় ভরা। মাঠ ও বসার জায়গায় বাস্তুচ্যুত লোকের বন্যা। সবার পিঠে ব্যাগ আর কিছু কাপড়। কেউ অসুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করছেন বা আহত আত্মীয়দের নিয়ে চলেছেন। আবার কেউ কেউ একা হাঁটছেন, খালি পায়েই হেঁটে চলেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেসিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
৪ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
৪ ঘণ্টা আগে