সেলিম জাহান
ষাটের দশকে আমরা যখন বড় হচ্ছি, তখন আমেরিকা আর তদানীন্তন সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে শৈত্য লড়াইয়ের কথা প্রায়ই শোনা যেত। কখনও কখনও অবস্থা এত উত্তপ্ত হয়ে যেত যে আশঙ্কা হতো, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর বেশি দূরে নয়। ১৯৬১ সালের কথা মনে আছে। কিউবাকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি এবং প্রধানমন্ত্রী নিকিতা ক্রুশ্চেভের মধ্যে হুমকি ও পাল্টা হুমকি এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায় যে মনে হলো এই বুঝি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে গেল।
তারপর ৬০ বছর কেটে গেছে, না তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগেনি। অঞ্চলভিত্তিক সংঘর্ষ হয়েছে, দেশে দেশে লড়াই লেগেছে, কিন্তু বিশ্বযুদ্ধ হয়নি। ২০১৯ সাল পর্যন্ত মনে হয়েছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা আসলে একটি অলীক ব্যাপার।
কিন্তু গত এক বছর বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ অতিমারির পরে কিন্তু এমনটা মনে হচ্ছে না। আসলে গত বছরই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে এবং এখন আমরা এই যুদ্ধ লড়ছি। কোভিড-১৯ অতিমারির পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এখন আর অলীক নয়, একটি নির্মম বাস্তব সত্য।
বিশ্বযুদ্ধই তো বটে। এই যুদ্ধ তো বিশ্বব্যাপী এবং বিশ্বের সব দেশই তো এ যুদ্ধে আক্রান্ত। পৃথিবী প্রাণপণে লড়ছে চোখে না-দেখা এক অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে–কোভিড-১৯। ঢেউয়ের মতো এ শত্রু আছড়ে পড়ছে দেশে দেশে–তরঙ্গের মতো তার আক্রমণ। রং বদলাচ্ছে এই শত্রু দিনে দিনে, বদলাচ্ছে তার কৌশলও। ছোট-বড় কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না সে, বাছাই করছে না ধনী-দরিদ্রে এবং বাছবিচার করছে না পুরুষ-নারীতে।
বিশ্বজুড়ে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ২২১টি রাষ্ট্র ও অঞ্চল কোভিড-১৯ আক্রমণের শিকার হয়েছে, ১৩ কোটি মানুষ এই শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে এবং সাড়ে ২৯ লক্ষ মানুষ প্রয়াত হয়েছেন। জানি, সংখ্যার দিক থেকে প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মৃত্যুসংখ্যার সঙ্গে তুলনীয় নয়, তবু বিজ্ঞানে এগিয়ে যাওয়া আধুনিক বিশ্বের জন্যে এ এক বিরাট সংখ্যা। আর মানুষ তো শুধু সংখ্যা নয়, মানুষ মানে প্রিয়জন, মানুষ মানে আশা, মানুষ মানে ভালোবাসা। আরও মনে রাখা দরকার যে সমরাস্ত্রে ব্যবহারে এত মানুষের জীবনহানি হয়নি, স্রেফ একটি রোগজীবাণু এ কাজটি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারতের মতো দেশে এ শত্রুর তাণ্ডবলীলা আমরা দেখেছি।
এ বিশ্বযুদ্ধ তছনছ করছে মানবজীবন, ধ্বংস করছে অর্থনীতি, বদলে দিচ্ছে মানুষে-মানুষের নিত্যদিনের সম্পর্ক। কোভিড-১৯ মানুষের স্বাভাবিক জীবনকে নষ্ট করেছে। আমরা অবরুদ্ধ হচ্ছি ঘরের মধ্যে, কাজের প্রক্রিয়া বদলে গেছে, শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ। মানুষ কাজ হারাচ্ছেন, কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না, দোকান-ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে। মানুষে-মানুষে সম্ভাষণের রীতি বদলে গেছে, মানষ মানুষকে স্পর্শ করছেন না, একজনের বাড়িতে আরেকজন যাচ্ছেন না।
এ শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি তিনটে অস্ত্র ব্যবহার করে। প্রথমত, স্বাস্থ্যবিধি মেনে, যেমন–প্রায়শ হস্ত প্রক্ষালন করে, মুখাবরণী ব্যবহার করে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। দ্বিতীয়ত, টিকা গ্রহণ করে এবং তৃতীয়ত, গবেষণার মাধ্যমে এ শত্রুর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য আরও ভালোভাবে বুঝতে চেষ্টা করে।
সুতরাং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ পৃথিবীতে ঘটেনি, তা বোধহয় বলা যাবে না। আমরা একটা বিশ্বযুদ্ধের মধ্যেই আছি–প্রত্যক্ষ করছি মৃত্যুর এক মিছিল। আগের বিশ্বযুদ্ধ দুটোই পাঁচ বছর করে চলেছে, ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ অতিমারি স্থায়ী হয়েছিল প্রায় দুই বছর। আজকের বিশ্বযুদ্ধ কত দিনে শেষ হবে, কত দিনে?
ষাটের দশকে আমরা যখন বড় হচ্ছি, তখন আমেরিকা আর তদানীন্তন সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে শৈত্য লড়াইয়ের কথা প্রায়ই শোনা যেত। কখনও কখনও অবস্থা এত উত্তপ্ত হয়ে যেত যে আশঙ্কা হতো, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর বেশি দূরে নয়। ১৯৬১ সালের কথা মনে আছে। কিউবাকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি এবং প্রধানমন্ত্রী নিকিতা ক্রুশ্চেভের মধ্যে হুমকি ও পাল্টা হুমকি এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায় যে মনে হলো এই বুঝি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে গেল।
তারপর ৬০ বছর কেটে গেছে, না তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগেনি। অঞ্চলভিত্তিক সংঘর্ষ হয়েছে, দেশে দেশে লড়াই লেগেছে, কিন্তু বিশ্বযুদ্ধ হয়নি। ২০১৯ সাল পর্যন্ত মনে হয়েছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা আসলে একটি অলীক ব্যাপার।
কিন্তু গত এক বছর বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ অতিমারির পরে কিন্তু এমনটা মনে হচ্ছে না। আসলে গত বছরই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে এবং এখন আমরা এই যুদ্ধ লড়ছি। কোভিড-১৯ অতিমারির পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এখন আর অলীক নয়, একটি নির্মম বাস্তব সত্য।
বিশ্বযুদ্ধই তো বটে। এই যুদ্ধ তো বিশ্বব্যাপী এবং বিশ্বের সব দেশই তো এ যুদ্ধে আক্রান্ত। পৃথিবী প্রাণপণে লড়ছে চোখে না-দেখা এক অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে–কোভিড-১৯। ঢেউয়ের মতো এ শত্রু আছড়ে পড়ছে দেশে দেশে–তরঙ্গের মতো তার আক্রমণ। রং বদলাচ্ছে এই শত্রু দিনে দিনে, বদলাচ্ছে তার কৌশলও। ছোট-বড় কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না সে, বাছাই করছে না ধনী-দরিদ্রে এবং বাছবিচার করছে না পুরুষ-নারীতে।
বিশ্বজুড়ে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ২২১টি রাষ্ট্র ও অঞ্চল কোভিড-১৯ আক্রমণের শিকার হয়েছে, ১৩ কোটি মানুষ এই শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে এবং সাড়ে ২৯ লক্ষ মানুষ প্রয়াত হয়েছেন। জানি, সংখ্যার দিক থেকে প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মৃত্যুসংখ্যার সঙ্গে তুলনীয় নয়, তবু বিজ্ঞানে এগিয়ে যাওয়া আধুনিক বিশ্বের জন্যে এ এক বিরাট সংখ্যা। আর মানুষ তো শুধু সংখ্যা নয়, মানুষ মানে প্রিয়জন, মানুষ মানে আশা, মানুষ মানে ভালোবাসা। আরও মনে রাখা দরকার যে সমরাস্ত্রে ব্যবহারে এত মানুষের জীবনহানি হয়নি, স্রেফ একটি রোগজীবাণু এ কাজটি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারতের মতো দেশে এ শত্রুর তাণ্ডবলীলা আমরা দেখেছি।
এ বিশ্বযুদ্ধ তছনছ করছে মানবজীবন, ধ্বংস করছে অর্থনীতি, বদলে দিচ্ছে মানুষে-মানুষের নিত্যদিনের সম্পর্ক। কোভিড-১৯ মানুষের স্বাভাবিক জীবনকে নষ্ট করেছে। আমরা অবরুদ্ধ হচ্ছি ঘরের মধ্যে, কাজের প্রক্রিয়া বদলে গেছে, শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ। মানুষ কাজ হারাচ্ছেন, কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না, দোকান-ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে। মানুষে-মানুষে সম্ভাষণের রীতি বদলে গেছে, মানষ মানুষকে স্পর্শ করছেন না, একজনের বাড়িতে আরেকজন যাচ্ছেন না।
এ শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি তিনটে অস্ত্র ব্যবহার করে। প্রথমত, স্বাস্থ্যবিধি মেনে, যেমন–প্রায়শ হস্ত প্রক্ষালন করে, মুখাবরণী ব্যবহার করে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। দ্বিতীয়ত, টিকা গ্রহণ করে এবং তৃতীয়ত, গবেষণার মাধ্যমে এ শত্রুর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য আরও ভালোভাবে বুঝতে চেষ্টা করে।
সুতরাং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ পৃথিবীতে ঘটেনি, তা বোধহয় বলা যাবে না। আমরা একটা বিশ্বযুদ্ধের মধ্যেই আছি–প্রত্যক্ষ করছি মৃত্যুর এক মিছিল। আগের বিশ্বযুদ্ধ দুটোই পাঁচ বছর করে চলেছে, ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ অতিমারি স্থায়ী হয়েছিল প্রায় দুই বছর। আজকের বিশ্বযুদ্ধ কত দিনে শেষ হবে, কত দিনে?
যেকোনো সামাজিক বিষয় বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কখনো কখনো তত্ত্ব দিয়ে তার ব্যাখ্যা করি, আবার কখনো কখনো বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয় বা সমস্যার বিশ্লেষণ করি। তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা...
৬ ঘণ্টা আগেগাজার সবচেয়ে সুপরিচিত ফুটবল স্টেডিয়ামটি এখন বিশৃঙ্খলায় ভরা। মাঠ ও বসার জায়গায় বাস্তুচ্যুত লোকের বন্যা। সবার পিঠে ব্যাগ আর কিছু কাপড়। কেউ অসুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করছেন বা আহত আত্মীয়দের নিয়ে চলেছেন। আবার কেউ কেউ একা হাঁটছেন, খালি পায়েই হেঁটে চলেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেসিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
৬ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
৬ ঘণ্টা আগে