মর্তুজা হাসান সৈকত
বর্তমানে পৃথিবীর আলোচিত এবং সংকটময় বিষয়গুলোর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন অন্যতম প্রধান। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন ঘটছে। বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্র স্তরের উচ্চতা যদি আর এক মিটার বাড়ে, তাহলে একুশ শতকের সমাপ্তিকালের মধ্যে মালদ্বীপ, পাপুয়া নিউগিনি, বার্বাডোজ, কিরিবাতিসহ প্রশান্ত মহাসাগরের অনেক দ্বীপপুঞ্জ পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। ডুবে যাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী নিচু এলাকা। জলবায়ুবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্যানেল আইপিসির নতুন জলবায়ু মডেলের হিসাব বলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৬০ শতাংশ বেশি হারে বেড়ে চলেছে। এভাবে চললে এই শতকের শেষে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা সর্বোচ্চ এক মিটার পর্যন্ত বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এভাবে যদি উচ্চতা বাড়তে থাকে, তাহলে মালদ্বীপের ১২০০ দ্বীপ ডুবে যাবে, গৃহহীন হবেন চার লক্ষ মানুষ। ঝুঁকির মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। কারণ, বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে ৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূল।
২.
জলবাযু পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ একটি গ্রাউন্ড জিরো দেশ হিসেবে নিজের কোনো দোষ ছাড়াই জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার। দেশটি প্রায়ই ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, দাবদাহ ও খরার মতো মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। তা ছাড়া সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দেশটির অনেক অঞ্চল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। প্রকৃতির এসব বিরুদ্ধতার মুখে এ দেশের মানুষের টিকে থাকা ও ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি-সহিষ্ণুতার খবরও ঢের রয়েছে। যদিও বহির্বিশ্বের মানুষ এসব আগে জানেনি। বাংলাদেশের জনগণ প্রকৃতির এসব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যে শুধু যে টিকে থাকতেই জানে তা নয়, বরং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকিগুলো দক্ষভাবে মোকাবিলা করার সুদূরপ্রসারী কর্মকৌশলও নিতে পারে, এটি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কল্যাণে বিশ্ববাসী জেনেছে। তিনি জলবায়ুবিষয়ক সর্বোচ্চ বিশ্ব ফোরাম, জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসিসি) কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজে (সিওপি) ২০১৫ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন।
রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই সম্মাননা ছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর বিশ্ব ফোরামে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের মুখপাত্র হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়ার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ৫০টি স্বল্পোন্নত দেশ, যারা বিশ্বের ১ শতাংশের মতো গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের জন্য দায়ী, তারাই এই নিঃসরণজনিত কারণে সৃষ্ট জলবায়ু সংকটের শিকার হচ্ছে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বিশ্বসভায় এই দেশগুলোর স্বার্থরক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পুরস্কারটি এটিরও স্বীকৃতি বটে।
৩.
বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ব্যাপারটা নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকে না। গরিব ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর খাপ খাওয়ানোর সক্ষমতা কম বলে তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মূলত এ কারণে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব এবং দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিজস্ব অর্থায়নে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি ক্লাইমেট ট্রাস্ট তহবিল গঠন করে। শুধু তা-ই নয়, ২০১৫ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার বাংলাদেশ এই খাতে ব্যয় করবে আরও ৪ হাজার কোটি ডলার। এর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং পানি ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় অবদান রাখার পাশাপাশি বিশ্বজনীন আলোচনায় স্বীয় স্বার্থ সংরক্ষণে সদাসচেষ্ট রয়েছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বিভিন্ন বৈশ্বিক সভায় বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন ও সামলে নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু ধারণা ও অভিজ্ঞতা আছে, যা বিনিময় করার মতো। আমি শুধু নিজের দেশ নিয়ে ভাবি না। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে অনেক ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জ হারিয়ে যাবে। তখন সেখানকার মানুষেরা কোথায় যাবে, সে কথাও আমাদের ভাবতে হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রতিকূলতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনন্য দক্ষতা ও সাফল্য প্রদর্শনের সুবাদে বিশ্বের কাছে আজ একটি রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মহাসচিব জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনের জন্য বাংলাদেশকে একটি মডেল হিসেবে বর্ণনা করে জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনে বাংলাদেশ সেরা শিক্ষক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিশ্বনেতাদের মধ্যে অন্যতম, যিনি জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাটি নিয়ে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’
৪.
সম্প্রতি প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম দিনই জলবায়ু চুক্তিতে ফেরার আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন। চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরার দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি বেশ কয়েকটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তাঁর সঙ্গে যুক্তরাজ্য ও ইতালির রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে দেখা গেছে। এসব অনুষ্ঠানে দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জানিয়েছেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে ট্রাম্প প্রশাসন সরে যাওয়ার ফলে যে সময় নষ্ট হয়েছে, তা পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত এ কারণে শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের ৪০ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে নিয়ে ‘ক্লাইমেট লিডারস সামিট’ নামে একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি ৯ এপ্রিল এক ঝটিকা সফরে ঢাকা এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন।
সম্মেলনটি ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হলেও ক্লাইমেট লিডারস সামিট এবং এই বছরের শেষে হতে যাওয়া কপ ২৬ (বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন) সম্মেলনের খুব ভালো অগ্রগতি নিশ্চিত করতে ১ থেকে ৯ এপ্রিল আবুধাবি, নয়াদিল্লি ও ঢাকা সফর করেন জন কেরি। প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসার পর জো বাইডেনের এ উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি প্রশমনে বিশ্বনেতাদের একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। আর এই প্লাটফর্মে জো বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর বিশ্ব ফোরামে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের মুখপাত্র শেখ হাসিনাকে খুব করে পাশে চাইছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পাঠানো ভিডিও বার্তাতেও তা ফুটে উঠেছে। সেই ভিডিও বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আপনি ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন। এটি বিশ্বে উদারতা ও মানবতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এই সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র অংশীদার হিসেবে কাজ করবে। এ ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনে একযোগে কাজ করবে দুই দেশ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে জো বাইডেনের এই আগ্রহের মূল কারণ হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী যে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে, তার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের কিছু আশাব্যঞ্জক কৌশল হাতে নিয়েছে। অন্যদিকে উন্নয়নশীল দেশগুলো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে যে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, তা মোকাবিলার জন্য ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ নামে একটি ফান্ড গঠনের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে জোরাল দাবি তুলে আসছে। এই ফান্ড এখনো গঠিত না হলেও, ফান্ড গঠনের পথে ২০১৯ সালের মাদ্রিদ জলবায়ু সম্মেলনে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। একটি এক্সপার্ট গ্রুপ গঠনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে ফান্ড গঠনের জন্য।
জলবায়ু সম্মেলনে শেখ হাসিনার আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র কতটা গুরুত্ব দেয়, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরির এই সফর তা তুলে ধরেছে।’ তা ছাড়া গণমাধ্যমে মার্কিন দূতাবাসের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ২২-২৩ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেট’ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বীকৃতি পাবেন। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম ও ভালনারেবল টোয়েন্টি গ্রুপ অব ফাইন্যান্স মিনিস্টারসের চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং জলবায়ু ঝুঁকির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো ও সহনশীলতা অর্জনের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
৫.
মনুষ্য বাসের এই পৃথিবীতে যাতে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে না আসে, সে জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মধ্যে থাকা স্বল্পোন্নত সব দেশের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রতিনিধি হয়ে উঠেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সব আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে তাঁর জলবায়ু এজেন্ডা বিশ্বনেতাদের সামনে উপস্থাপন করে প্রশংসিত হচ্ছেন। শেখ হাসিনা উদ্ভাবনমূলক নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্যে যেমন বাংলাদেশকে প্রস্তুত করে তুলছেন, তেমনই বিশ্ববিবেককে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন।
প্যারিস চুক্তিতে বিশ্বনেতাদের প্রদত্ত অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপ্রবণ এবং দরিদ্র দেশগুলোর পক্ষে বিশ্বজনমত গঠনের আন্দোলনে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ভূমিকা বিশ্বসভায় বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করে তুলছে। তিনি হয়ে উঠছেন বিশ্বের জলবায়ু অধিকার হাজারো কর্মীর আশা-ভরসার প্রতীক।
বর্তমানে পৃথিবীর আলোচিত এবং সংকটময় বিষয়গুলোর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন অন্যতম প্রধান। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন ঘটছে। বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্র স্তরের উচ্চতা যদি আর এক মিটার বাড়ে, তাহলে একুশ শতকের সমাপ্তিকালের মধ্যে মালদ্বীপ, পাপুয়া নিউগিনি, বার্বাডোজ, কিরিবাতিসহ প্রশান্ত মহাসাগরের অনেক দ্বীপপুঞ্জ পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। ডুবে যাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী নিচু এলাকা। জলবায়ুবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্যানেল আইপিসির নতুন জলবায়ু মডেলের হিসাব বলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৬০ শতাংশ বেশি হারে বেড়ে চলেছে। এভাবে চললে এই শতকের শেষে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা সর্বোচ্চ এক মিটার পর্যন্ত বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এভাবে যদি উচ্চতা বাড়তে থাকে, তাহলে মালদ্বীপের ১২০০ দ্বীপ ডুবে যাবে, গৃহহীন হবেন চার লক্ষ মানুষ। ঝুঁকির মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। কারণ, বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে ৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূল।
২.
জলবাযু পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ একটি গ্রাউন্ড জিরো দেশ হিসেবে নিজের কোনো দোষ ছাড়াই জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার। দেশটি প্রায়ই ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, দাবদাহ ও খরার মতো মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। তা ছাড়া সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দেশটির অনেক অঞ্চল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। প্রকৃতির এসব বিরুদ্ধতার মুখে এ দেশের মানুষের টিকে থাকা ও ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি-সহিষ্ণুতার খবরও ঢের রয়েছে। যদিও বহির্বিশ্বের মানুষ এসব আগে জানেনি। বাংলাদেশের জনগণ প্রকৃতির এসব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যে শুধু যে টিকে থাকতেই জানে তা নয়, বরং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকিগুলো দক্ষভাবে মোকাবিলা করার সুদূরপ্রসারী কর্মকৌশলও নিতে পারে, এটি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কল্যাণে বিশ্ববাসী জেনেছে। তিনি জলবায়ুবিষয়ক সর্বোচ্চ বিশ্ব ফোরাম, জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসিসি) কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজে (সিওপি) ২০১৫ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন।
রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই সম্মাননা ছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর বিশ্ব ফোরামে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের মুখপাত্র হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়ার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ৫০টি স্বল্পোন্নত দেশ, যারা বিশ্বের ১ শতাংশের মতো গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের জন্য দায়ী, তারাই এই নিঃসরণজনিত কারণে সৃষ্ট জলবায়ু সংকটের শিকার হচ্ছে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বিশ্বসভায় এই দেশগুলোর স্বার্থরক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পুরস্কারটি এটিরও স্বীকৃতি বটে।
৩.
বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ব্যাপারটা নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকে না। গরিব ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর খাপ খাওয়ানোর সক্ষমতা কম বলে তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মূলত এ কারণে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব এবং দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিজস্ব অর্থায়নে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি ক্লাইমেট ট্রাস্ট তহবিল গঠন করে। শুধু তা-ই নয়, ২০১৫ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার বাংলাদেশ এই খাতে ব্যয় করবে আরও ৪ হাজার কোটি ডলার। এর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং পানি ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় অবদান রাখার পাশাপাশি বিশ্বজনীন আলোচনায় স্বীয় স্বার্থ সংরক্ষণে সদাসচেষ্ট রয়েছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বিভিন্ন বৈশ্বিক সভায় বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন ও সামলে নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু ধারণা ও অভিজ্ঞতা আছে, যা বিনিময় করার মতো। আমি শুধু নিজের দেশ নিয়ে ভাবি না। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে অনেক ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জ হারিয়ে যাবে। তখন সেখানকার মানুষেরা কোথায় যাবে, সে কথাও আমাদের ভাবতে হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রতিকূলতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনন্য দক্ষতা ও সাফল্য প্রদর্শনের সুবাদে বিশ্বের কাছে আজ একটি রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মহাসচিব জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনের জন্য বাংলাদেশকে একটি মডেল হিসেবে বর্ণনা করে জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনে বাংলাদেশ সেরা শিক্ষক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিশ্বনেতাদের মধ্যে অন্যতম, যিনি জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাটি নিয়ে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’
৪.
সম্প্রতি প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম দিনই জলবায়ু চুক্তিতে ফেরার আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন। চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরার দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি বেশ কয়েকটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তাঁর সঙ্গে যুক্তরাজ্য ও ইতালির রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে দেখা গেছে। এসব অনুষ্ঠানে দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জানিয়েছেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে ট্রাম্প প্রশাসন সরে যাওয়ার ফলে যে সময় নষ্ট হয়েছে, তা পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত এ কারণে শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের ৪০ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে নিয়ে ‘ক্লাইমেট লিডারস সামিট’ নামে একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি ৯ এপ্রিল এক ঝটিকা সফরে ঢাকা এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন।
সম্মেলনটি ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হলেও ক্লাইমেট লিডারস সামিট এবং এই বছরের শেষে হতে যাওয়া কপ ২৬ (বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন) সম্মেলনের খুব ভালো অগ্রগতি নিশ্চিত করতে ১ থেকে ৯ এপ্রিল আবুধাবি, নয়াদিল্লি ও ঢাকা সফর করেন জন কেরি। প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসার পর জো বাইডেনের এ উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি প্রশমনে বিশ্বনেতাদের একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। আর এই প্লাটফর্মে জো বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর বিশ্ব ফোরামে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের মুখপাত্র শেখ হাসিনাকে খুব করে পাশে চাইছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পাঠানো ভিডিও বার্তাতেও তা ফুটে উঠেছে। সেই ভিডিও বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আপনি ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন। এটি বিশ্বে উদারতা ও মানবতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এই সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র অংশীদার হিসেবে কাজ করবে। এ ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনে একযোগে কাজ করবে দুই দেশ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে জো বাইডেনের এই আগ্রহের মূল কারণ হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী যে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে, তার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের কিছু আশাব্যঞ্জক কৌশল হাতে নিয়েছে। অন্যদিকে উন্নয়নশীল দেশগুলো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে যে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, তা মোকাবিলার জন্য ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ নামে একটি ফান্ড গঠনের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে জোরাল দাবি তুলে আসছে। এই ফান্ড এখনো গঠিত না হলেও, ফান্ড গঠনের পথে ২০১৯ সালের মাদ্রিদ জলবায়ু সম্মেলনে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। একটি এক্সপার্ট গ্রুপ গঠনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে ফান্ড গঠনের জন্য।
জলবায়ু সম্মেলনে শেখ হাসিনার আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র কতটা গুরুত্ব দেয়, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরির এই সফর তা তুলে ধরেছে।’ তা ছাড়া গণমাধ্যমে মার্কিন দূতাবাসের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ২২-২৩ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেট’ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বীকৃতি পাবেন। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম ও ভালনারেবল টোয়েন্টি গ্রুপ অব ফাইন্যান্স মিনিস্টারসের চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং জলবায়ু ঝুঁকির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো ও সহনশীলতা অর্জনের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
৫.
মনুষ্য বাসের এই পৃথিবীতে যাতে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে না আসে, সে জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মধ্যে থাকা স্বল্পোন্নত সব দেশের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রতিনিধি হয়ে উঠেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সব আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে তাঁর জলবায়ু এজেন্ডা বিশ্বনেতাদের সামনে উপস্থাপন করে প্রশংসিত হচ্ছেন। শেখ হাসিনা উদ্ভাবনমূলক নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্যে যেমন বাংলাদেশকে প্রস্তুত করে তুলছেন, তেমনই বিশ্ববিবেককে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন।
প্যারিস চুক্তিতে বিশ্বনেতাদের প্রদত্ত অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপ্রবণ এবং দরিদ্র দেশগুলোর পক্ষে বিশ্বজনমত গঠনের আন্দোলনে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ভূমিকা বিশ্বসভায় বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করে তুলছে। তিনি হয়ে উঠছেন বিশ্বের জলবায়ু অধিকার হাজারো কর্মীর আশা-ভরসার প্রতীক।
যেকোনো সামাজিক বিষয় বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কখনো কখনো তত্ত্ব দিয়ে তার ব্যাখ্যা করি, আবার কখনো কখনো বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয় বা সমস্যার বিশ্লেষণ করি। তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা...
৬ ঘণ্টা আগেগাজার সবচেয়ে সুপরিচিত ফুটবল স্টেডিয়ামটি এখন বিশৃঙ্খলায় ভরা। মাঠ ও বসার জায়গায় বাস্তুচ্যুত লোকের বন্যা। সবার পিঠে ব্যাগ আর কিছু কাপড়। কেউ অসুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করছেন বা আহত আত্মীয়দের নিয়ে চলেছেন। আবার কেউ কেউ একা হাঁটছেন, খালি পায়েই হেঁটে চলেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেসিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
৬ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
৬ ঘণ্টা আগে