তরুণ চক্রবর্তী
কংগ্রেসকে জমি হারানো জমিদারদের সঙ্গে তুলনা করেছেন সাবেক হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা, বর্তমানে মহারাষ্ট্রের এনসিপির প্রধান শারদ পাওয়ার। তাঁর মতে, পায়ের নিচে জমি (পড়ুন জনসমর্থন) না থাকলেও কংগ্রেসের জমিদারি মেজাজ এখনো কমেনি। দলের সাবেক নেতার জবাব দিতে দেরি করেনি কংগ্রেসও। জমি দেখভালের দায়িত্ব যাঁদের দিয়েছিল, তাঁরাই নাকি জমি চুরি (পড়ুন ভোটব্যাংক) করেছেন। কারণ পাওয়ার থেকে শুরু করে ভারতের বেশির ভাগ আঞ্চলিক দলের নেতারই উত্থান কংগ্রেসের হাত ধরে। এমনকি বিজেপির এই রমরমার পেছনেও রয়েছে সাবেক কংগ্রেসিদেরই দলবদল। এখন কংগ্রেসের দাপট কমায় অনেকেই নতুন করে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু তাঁদের শক্তি ও গোটা দেশে গ্রহণযোগ্যতা কংগ্রেসের থেকে অনেকটাই কম, এটাই বাস্তব। আবার কংগ্রেসেরও তাঁদের ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব। জোটই ভবিতব্য বিজেপিবিরোধীদের।
একসময় গোটা ভারতেই ছিল শুধু কংগ্রেসেরই দাপট। কিন্তু এখন বিরোধী দলের মর্যাদাও খুইয়েছে কংগ্রেস। গান্ধী পরিবারের ওপর রাগে, অভিমানে অন্য দল গড়েছিলেন শারদ পাওয়ার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এখন তাঁদের সঙ্গে দোস্তি করতে হচ্ছে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীদের। তাতেও লাভ হচ্ছে না। ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশে তাঁরা আজ প্রায় অপ্রাসঙ্গিক। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে নামিয়েও লাভ হয়নি। মধ্যপ্রদেশে ভোটে জিতেও ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেননি। মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ুতে আঞ্চলিক দলের ভরসায় সরকারে রয়েছে। রাজস্থান, পাঞ্জাব বা ছত্তিশগড়েও নড়বড়ে কংগ্রেসি সরকার। প্রতিনিয়ত কংগ্রেস ভাঙছে। রাহুল গান্ধী সামাজিক গণমাধ্যমে সক্রিয়। কিন্তু মাঠের রাজনীতিতে নন। স্থায়ী কোনো সভাপতি নেই কংগ্রেসে। গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে পুরোপুরি ব্যর্থ বর্তমান নেতৃত্ব। ঠাটবাট ঠিক থাকলেও কংগ্রেস হাইকমান্ডের কোনো কমান্ডেই আজ আর কাজ হয় না।
তবু বিজেপিরোধী দলগুলোর মধ্যে কংগ্রেসই সবচেয়ে শক্তিশালী। এনসিপি, সমাজবাদী পার্টি, তৃণমূল, ডিএমকে প্রভৃতি দল নিজেদের রাজ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু সব রাজ্যেই কংগ্রেসের পতাকা তোলার মতো কিছু মানুষ আছেন। অন্যদের নেই। বামেদের অবস্থা কংগ্রেসের থেকেও খারাপ। কেরালায় সরকার টিকে থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় তাদের অস্তিত্বসংকট। শারদের এনসিপি বহু রাজ্যে চেষ্টা করলেও আটকে রয়েছে মহারাষ্ট্রেই। তা-ও কংগ্রেসের হাত ধরে। তৃণমূল ত্রিপুরায় চেষ্টা করছে। আসামেও পা ফেলতে মরিয়া। কিন্তু তাদেরও শক্তি শুধু পশ্চিমবঙ্গেই। সমাজবাদী পার্টি উত্তর প্রদেশে, দিল্লিতেই থমকে আছে আম আদমি পার্টি। দক্ষিণ ভারতের দলগুলো দক্ষিণে একেকটি রাজ্যে শক্তিশালী। বিজেপিবিরোধী দলগুলোর মধ্যে একমাত্র কংগ্রেসেরই রয়েছে এখনো প্যানইন্ডিয়া উপস্থিতি।
কিছুদিন পর পাঁচ রাজ্যে ভোট। উত্তর প্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ আছে। কাজে লাগানোর মুরোদ নেই কংগ্রেসের। তাদের প্রথম সারির নেতা জিতিন প্রসাদসহ অনেকেই এখন বিজেপিতে।
কংগ্রেসশাসিত পাঞ্জাবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, সাবেক ক্রিকেটার নবজ্যোত সিং সিধুর লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে পদত্যাগ করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংকে। সিধুর পরামর্শে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়া হয়েছে চরণজিৎ সিং চান্নিকে। নেতাদের ঝগড়ায় মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ভেঙে বিজেপির সরকার তৈরি হয়েছে। রাজস্থানেও সুতোয় দুলছে কংগ্রেস সরকারের ভবিষ্যৎ। ছত্তিশগড়েও অশান্তি। দক্ষিণ ভারতে তামিলনাড়ুতেই শুধু ডিএমকের ছোট শরিক কংগ্রেস। পশ্চিম ভারতে একমাত্র মহারাষ্ট্রে এনসিপি আর শিব সেনার জোট রয়েছে সরকারে। পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ক্ষমতার ধারেকাছে নেই কংগ্রেস।
অথচ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর, নাগাল্যান্ড প্রভৃতি রাজ্যে সাবেক কংগ্রেসিরাই মুখ্যমন্ত্রী। গোটা দেশেই পায়ের নিচের জমি হারাচ্ছে কংগ্রেস। ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ জুটির উত্থানের পর ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেস। বাগ্মী নরেন্দ্র মোদির বিপরীতে গ্রহণযোগ্য কোনো জননেতাকে তুলে ধরতে না পারার ব্যর্থতা ভোগাচ্ছে তাদের। রয়েছে রাহুল বা প্রিয়াঙ্কার ধারাবাহিকতার অভাবও। শারীরিক কারণে সোনিয়াও এখন তেমন সক্রিয় নন। মনমোহন সিংও তা-ই। গোটা দেশে প্রভাব ফেলতে পারে—এমন নেতার বড় অভাব। তাই কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতাও কমছে। অথচ বিজেপির বিরুদ্ধে ইস্যুর অভাব নেই। আট-নয় মাস ধরে চলছে কৃষি আইনের বিরোধিতায় কৃষক আন্দোলন। ফ্রান্সের কাছ থেকে বেশি দাম দিয়ে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে সে দেশেই তদন্ত হচ্ছে। অ-কংগ্রেসিরা একসময় বোফর্স কামান কেলেঙ্কারিতে তাঁর বাবার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ টলিয়ে দিলেও মোদির কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারছেন না রাহুল। বিদেশিদের দিয়ে ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ বা জ্বালানির জ্বলুনিকে নিয়েও আন্দোলনে ব্যর্থ কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতাদের বোঝা উচিত, বিভিন্ন রাজ্যে আজ আঞ্চলিক দল ছাড়া তাঁদের গতি নেই। যেমন পশ্চিমবঙ্গ। কংগ্রেসের একজনও বিধায়ক নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছা়ড়া পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে হারানো কংগ্রেসের পক্ষে অসম্ভব। অথচ মমতা-বিরোধিতায় এখনো সরব বহু কংগ্রেস নেতা। কিছু কিছু রাজ্যে কংগ্রেসই আঞ্চলিক দলের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন বিহার। মহাজোট করতে গিয়ে পস্তাতে হয়েছে তেজস্বী যাদবের আরজেডিকে। বেশির ভাগ আসনে তারা জিতলেও কংগ্রেস জিততে পারেনি। কংগ্রেসের পায়ের তলা থেকে জমি চলে গিয়েছে, এটা বাস্তব। তবু কংগ্রেস ছাড়া বিজেপিবিরোধীদের গতি নেই। বিজেপি বিরোধিতায় জোটই ভরসা। তাই জমিদারি বা জমিচুরি নিয়ে যতই কটাক্ষ হোক, জোট বিনা গতি নেই। কিন্তু সেই জোটে জটিলতাও অনেক। বাস্তবে কিন্তু দলের থেকে ব্যক্তি বড়, দেশের থেকে বড় দল। তাই জোটে দলের স্বার্থ বিসর্জন দেওয়া খুব কঠিন। ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে) কংগ্রেসে যোগ দেবেন বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বিরোধীদের হরেক অঙ্ক মাথায় রেখে কতটা কৌশল ২০২৪ সালে তিনি দেখাতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পশ্চিমবঙ্গে কেরামতি দেখালেও উত্তর প্রদেশে গতবার ডাহা ফেল করেছিলেন পিকে। জমিদার আর জমিচোরের সমন্বয়ে বিরোধী ঐক্য অসম্ভব না হলেও বেশ, বেশ কঠিন। এখন দেখার বিষয় ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে বিজেপিকে আদৌ শক্ত চ্যালেঞ্জ দিতে পারে কি না ভারতের বিরোধীরা। কংগ্রেসের একার পক্ষে অসম্ভব, এটা পরিষ্কার।
লেখক: কলকাতা প্রতিনিধি, আজকের পত্রিকা
কংগ্রেসকে জমি হারানো জমিদারদের সঙ্গে তুলনা করেছেন সাবেক হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা, বর্তমানে মহারাষ্ট্রের এনসিপির প্রধান শারদ পাওয়ার। তাঁর মতে, পায়ের নিচে জমি (পড়ুন জনসমর্থন) না থাকলেও কংগ্রেসের জমিদারি মেজাজ এখনো কমেনি। দলের সাবেক নেতার জবাব দিতে দেরি করেনি কংগ্রেসও। জমি দেখভালের দায়িত্ব যাঁদের দিয়েছিল, তাঁরাই নাকি জমি চুরি (পড়ুন ভোটব্যাংক) করেছেন। কারণ পাওয়ার থেকে শুরু করে ভারতের বেশির ভাগ আঞ্চলিক দলের নেতারই উত্থান কংগ্রেসের হাত ধরে। এমনকি বিজেপির এই রমরমার পেছনেও রয়েছে সাবেক কংগ্রেসিদেরই দলবদল। এখন কংগ্রেসের দাপট কমায় অনেকেই নতুন করে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু তাঁদের শক্তি ও গোটা দেশে গ্রহণযোগ্যতা কংগ্রেসের থেকে অনেকটাই কম, এটাই বাস্তব। আবার কংগ্রেসেরও তাঁদের ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব। জোটই ভবিতব্য বিজেপিবিরোধীদের।
একসময় গোটা ভারতেই ছিল শুধু কংগ্রেসেরই দাপট। কিন্তু এখন বিরোধী দলের মর্যাদাও খুইয়েছে কংগ্রেস। গান্ধী পরিবারের ওপর রাগে, অভিমানে অন্য দল গড়েছিলেন শারদ পাওয়ার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এখন তাঁদের সঙ্গে দোস্তি করতে হচ্ছে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীদের। তাতেও লাভ হচ্ছে না। ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশে তাঁরা আজ প্রায় অপ্রাসঙ্গিক। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে নামিয়েও লাভ হয়নি। মধ্যপ্রদেশে ভোটে জিতেও ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেননি। মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ুতে আঞ্চলিক দলের ভরসায় সরকারে রয়েছে। রাজস্থান, পাঞ্জাব বা ছত্তিশগড়েও নড়বড়ে কংগ্রেসি সরকার। প্রতিনিয়ত কংগ্রেস ভাঙছে। রাহুল গান্ধী সামাজিক গণমাধ্যমে সক্রিয়। কিন্তু মাঠের রাজনীতিতে নন। স্থায়ী কোনো সভাপতি নেই কংগ্রেসে। গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে পুরোপুরি ব্যর্থ বর্তমান নেতৃত্ব। ঠাটবাট ঠিক থাকলেও কংগ্রেস হাইকমান্ডের কোনো কমান্ডেই আজ আর কাজ হয় না।
তবু বিজেপিরোধী দলগুলোর মধ্যে কংগ্রেসই সবচেয়ে শক্তিশালী। এনসিপি, সমাজবাদী পার্টি, তৃণমূল, ডিএমকে প্রভৃতি দল নিজেদের রাজ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু সব রাজ্যেই কংগ্রেসের পতাকা তোলার মতো কিছু মানুষ আছেন। অন্যদের নেই। বামেদের অবস্থা কংগ্রেসের থেকেও খারাপ। কেরালায় সরকার টিকে থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় তাদের অস্তিত্বসংকট। শারদের এনসিপি বহু রাজ্যে চেষ্টা করলেও আটকে রয়েছে মহারাষ্ট্রেই। তা-ও কংগ্রেসের হাত ধরে। তৃণমূল ত্রিপুরায় চেষ্টা করছে। আসামেও পা ফেলতে মরিয়া। কিন্তু তাদেরও শক্তি শুধু পশ্চিমবঙ্গেই। সমাজবাদী পার্টি উত্তর প্রদেশে, দিল্লিতেই থমকে আছে আম আদমি পার্টি। দক্ষিণ ভারতের দলগুলো দক্ষিণে একেকটি রাজ্যে শক্তিশালী। বিজেপিবিরোধী দলগুলোর মধ্যে একমাত্র কংগ্রেসেরই রয়েছে এখনো প্যানইন্ডিয়া উপস্থিতি।
কিছুদিন পর পাঁচ রাজ্যে ভোট। উত্তর প্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ আছে। কাজে লাগানোর মুরোদ নেই কংগ্রেসের। তাদের প্রথম সারির নেতা জিতিন প্রসাদসহ অনেকেই এখন বিজেপিতে।
কংগ্রেসশাসিত পাঞ্জাবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, সাবেক ক্রিকেটার নবজ্যোত সিং সিধুর লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে পদত্যাগ করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংকে। সিধুর পরামর্শে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়া হয়েছে চরণজিৎ সিং চান্নিকে। নেতাদের ঝগড়ায় মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ভেঙে বিজেপির সরকার তৈরি হয়েছে। রাজস্থানেও সুতোয় দুলছে কংগ্রেস সরকারের ভবিষ্যৎ। ছত্তিশগড়েও অশান্তি। দক্ষিণ ভারতে তামিলনাড়ুতেই শুধু ডিএমকের ছোট শরিক কংগ্রেস। পশ্চিম ভারতে একমাত্র মহারাষ্ট্রে এনসিপি আর শিব সেনার জোট রয়েছে সরকারে। পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ক্ষমতার ধারেকাছে নেই কংগ্রেস।
অথচ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর, নাগাল্যান্ড প্রভৃতি রাজ্যে সাবেক কংগ্রেসিরাই মুখ্যমন্ত্রী। গোটা দেশেই পায়ের নিচের জমি হারাচ্ছে কংগ্রেস। ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ জুটির উত্থানের পর ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেস। বাগ্মী নরেন্দ্র মোদির বিপরীতে গ্রহণযোগ্য কোনো জননেতাকে তুলে ধরতে না পারার ব্যর্থতা ভোগাচ্ছে তাদের। রয়েছে রাহুল বা প্রিয়াঙ্কার ধারাবাহিকতার অভাবও। শারীরিক কারণে সোনিয়াও এখন তেমন সক্রিয় নন। মনমোহন সিংও তা-ই। গোটা দেশে প্রভাব ফেলতে পারে—এমন নেতার বড় অভাব। তাই কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতাও কমছে। অথচ বিজেপির বিরুদ্ধে ইস্যুর অভাব নেই। আট-নয় মাস ধরে চলছে কৃষি আইনের বিরোধিতায় কৃষক আন্দোলন। ফ্রান্সের কাছ থেকে বেশি দাম দিয়ে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে সে দেশেই তদন্ত হচ্ছে। অ-কংগ্রেসিরা একসময় বোফর্স কামান কেলেঙ্কারিতে তাঁর বাবার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ টলিয়ে দিলেও মোদির কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারছেন না রাহুল। বিদেশিদের দিয়ে ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ বা জ্বালানির জ্বলুনিকে নিয়েও আন্দোলনে ব্যর্থ কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতাদের বোঝা উচিত, বিভিন্ন রাজ্যে আজ আঞ্চলিক দল ছাড়া তাঁদের গতি নেই। যেমন পশ্চিমবঙ্গ। কংগ্রেসের একজনও বিধায়ক নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছা়ড়া পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে হারানো কংগ্রেসের পক্ষে অসম্ভব। অথচ মমতা-বিরোধিতায় এখনো সরব বহু কংগ্রেস নেতা। কিছু কিছু রাজ্যে কংগ্রেসই আঞ্চলিক দলের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন বিহার। মহাজোট করতে গিয়ে পস্তাতে হয়েছে তেজস্বী যাদবের আরজেডিকে। বেশির ভাগ আসনে তারা জিতলেও কংগ্রেস জিততে পারেনি। কংগ্রেসের পায়ের তলা থেকে জমি চলে গিয়েছে, এটা বাস্তব। তবু কংগ্রেস ছাড়া বিজেপিবিরোধীদের গতি নেই। বিজেপি বিরোধিতায় জোটই ভরসা। তাই জমিদারি বা জমিচুরি নিয়ে যতই কটাক্ষ হোক, জোট বিনা গতি নেই। কিন্তু সেই জোটে জটিলতাও অনেক। বাস্তবে কিন্তু দলের থেকে ব্যক্তি বড়, দেশের থেকে বড় দল। তাই জোটে দলের স্বার্থ বিসর্জন দেওয়া খুব কঠিন। ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে) কংগ্রেসে যোগ দেবেন বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বিরোধীদের হরেক অঙ্ক মাথায় রেখে কতটা কৌশল ২০২৪ সালে তিনি দেখাতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পশ্চিমবঙ্গে কেরামতি দেখালেও উত্তর প্রদেশে গতবার ডাহা ফেল করেছিলেন পিকে। জমিদার আর জমিচোরের সমন্বয়ে বিরোধী ঐক্য অসম্ভব না হলেও বেশ, বেশ কঠিন। এখন দেখার বিষয় ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে বিজেপিকে আদৌ শক্ত চ্যালেঞ্জ দিতে পারে কি না ভারতের বিরোধীরা। কংগ্রেসের একার পক্ষে অসম্ভব, এটা পরিষ্কার।
লেখক: কলকাতা প্রতিনিধি, আজকের পত্রিকা
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
২ ঘণ্টা আগে