ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
সম্পদের প্রকৃত মালিক মহান আল্লাহ। মানুষ তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে শুধু সেগুলো ভোগ করার অনুমতি পেয়েছে। জাগতিক জীবনে ধনসম্পদের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ইসলাম বৈরাগ্যবাদ সমর্থন করে না। মানুষের অর্থনৈতিক তৎপরতা, উপার্জন এবং উৎপাদনের প্রচেষ্টা শুধু প্রশংসনীয়ই নয়; বরং ইসলাম সেটা আবশ্যক করেছে। স্বয়ং মহানবী (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এবং পূর্ববর্তী নবী-রাসুলগণ জীবিকার জন্য বিভিন্ন পেশা অবলম্বন করেছেন। বিভিন্ন দায়িত্বও পালন করেছেন। মহান আল্লাহ হালাল জীবিকা উপার্জনের নির্দেশ দিয়ে সুরা জুমার ১০ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘নামাজ আদায়ের পর তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ করো।’ তিনি সুরা কাসাসের ৭০ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘তুমি দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলে যেয়ো না।’
ইসলাম এ ক্ষেত্রে বল্গাহীন স্বাধীনতা প্রদান না করে বিশেষ কিছু নিয়মনীতি ও সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং হালাল উপার্জন ফরজ করেছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ সুরা বাকারার ১০২ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আমার দেওয়া হালাল ও পূতপবিত্র রিজিক আহার করো।’ হারাম থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি সুরা বাকারার ৮৮ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ গ্রাস করো না।’
উল্লিখিত আয়াতমালা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, হালাল পন্থায় উপার্জন এবং হালাল রুজি ভক্ষণ করা আল্লাহর নির্দেশ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘হালাল জীবিকা অন্বেষণ করা আল্লাহর অন্যান্য ফরজ আদায়ের পর একটি অন্যতম ফরজ।’ (মিশকাত)
হাদিসটি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, হালাল জীবিকা উপার্জন করা ফরজ কাজের দ্বিতীয় স্তর। তাই ইসলাম স্বহস্তে হালাল উপার্জনের ব্যাপারে বেশ গুরুত্বারোপ করেছে। কেননা, শরীর খাটিয়ে হালাল উপার্জন করা ইসলামের দৃষ্টিতে তুচ্ছ নয়; বরং সর্বোত্তম কাজ। বর্ণিত আছে, ‘একদা মহানবী (সা.) সর্বোত্তম উপার্জন সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বলেন, ব্যক্তির নিজ হাতের কাজ এবং বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জনই সর্বোত্তম।’ (মিশকাত)
মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের নিজ উপার্জন থেকে আহার করা সর্বোত্তম। অবশ্য তোমাদের সন্তানসন্ততিও নিজ উপার্জনের অন্তর্ভুক্ত।’ (তিরমিজি)
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি তার নিজ হাত দ্বারা যা হালাল পন্থায় উপার্জন করে, তার চেয়ে উত্তম উপার্জন আর নেই। কেউ তার পরিবার ও চাকরের জন্য যা ব্যয় করে, তা সদকা হিসেবে গৃহীত।’
(ইব্ন মাজাহ)
পক্ষান্তরে হারাম পন্থায় উপার্জনকারী ব্যক্তি কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং জাহান্নাম হবে তার শেষ ঠিকানা। কেননা, মহানবী (সা.) বলেন, ‘হারাম মাল দ্বারা গঠিত শরীর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। কারণ, যে শরীর হারাম দ্বারা গঠিত, জাহান্নামই তার উপযুক্ত স্থান।’ (মিশকাত)
যেসব বস্তু খাওয়া হারাম, তার মাধ্যমে জীবিকা উপার্জনও হারাম। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো জাতির জন্য কোনো বস্তুর আহার হারাম করেন, তখন তার বিক্রয়লব্ধ মূল্যও হারাম করে দেন।’ (আবু দাউদ)
সুতরাং মৃত প্রাণীর গোশত, রক্ত এবং মদ, শরাব, গাঁজা, আফিম, হেরোইনসহ যাবতীয় মাদকদ্রব্য ও পূজার মূর্তি মৌলিকভাবে হারাম। তাই এগুলোর বেচাকেনা কিংবা এগুলোর মাধ্যমে জীবিকা উপার্জন করাও হারাম। কেননা, হারাম খাদ্য ভক্ষণ করে কোনো ইবাদত করলে সে ইবাদত কবুল হয় না। এ প্রসঙ্গে ইব্ন ওমর (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ১০ দিরহাম দিয়ে একটি কাপড় ক্রয় করল, যাতে একটি হারাম দিরহামও ছিল। আল্লাহ তার কোনো নামাজ কবুল করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে ওই কাপড় পরিহিত অবস্থায় থাকবে।’ (আহমদ)
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ মোতাবেক হালাল জীবিকা উপার্জন করা এবং সব হারাম ও অবৈধ উপার্জন থেকে বেঁচে থাকা আমাদের সবারই নৈতিক ও ইমানি দায়িত্ব।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পদের প্রকৃত মালিক মহান আল্লাহ। মানুষ তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে শুধু সেগুলো ভোগ করার অনুমতি পেয়েছে। জাগতিক জীবনে ধনসম্পদের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ইসলাম বৈরাগ্যবাদ সমর্থন করে না। মানুষের অর্থনৈতিক তৎপরতা, উপার্জন এবং উৎপাদনের প্রচেষ্টা শুধু প্রশংসনীয়ই নয়; বরং ইসলাম সেটা আবশ্যক করেছে। স্বয়ং মহানবী (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এবং পূর্ববর্তী নবী-রাসুলগণ জীবিকার জন্য বিভিন্ন পেশা অবলম্বন করেছেন। বিভিন্ন দায়িত্বও পালন করেছেন। মহান আল্লাহ হালাল জীবিকা উপার্জনের নির্দেশ দিয়ে সুরা জুমার ১০ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘নামাজ আদায়ের পর তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ করো।’ তিনি সুরা কাসাসের ৭০ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘তুমি দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলে যেয়ো না।’
ইসলাম এ ক্ষেত্রে বল্গাহীন স্বাধীনতা প্রদান না করে বিশেষ কিছু নিয়মনীতি ও সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং হালাল উপার্জন ফরজ করেছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ সুরা বাকারার ১০২ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আমার দেওয়া হালাল ও পূতপবিত্র রিজিক আহার করো।’ হারাম থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি সুরা বাকারার ৮৮ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ গ্রাস করো না।’
উল্লিখিত আয়াতমালা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, হালাল পন্থায় উপার্জন এবং হালাল রুজি ভক্ষণ করা আল্লাহর নির্দেশ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘হালাল জীবিকা অন্বেষণ করা আল্লাহর অন্যান্য ফরজ আদায়ের পর একটি অন্যতম ফরজ।’ (মিশকাত)
হাদিসটি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, হালাল জীবিকা উপার্জন করা ফরজ কাজের দ্বিতীয় স্তর। তাই ইসলাম স্বহস্তে হালাল উপার্জনের ব্যাপারে বেশ গুরুত্বারোপ করেছে। কেননা, শরীর খাটিয়ে হালাল উপার্জন করা ইসলামের দৃষ্টিতে তুচ্ছ নয়; বরং সর্বোত্তম কাজ। বর্ণিত আছে, ‘একদা মহানবী (সা.) সর্বোত্তম উপার্জন সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বলেন, ব্যক্তির নিজ হাতের কাজ এবং বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জনই সর্বোত্তম।’ (মিশকাত)
মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের নিজ উপার্জন থেকে আহার করা সর্বোত্তম। অবশ্য তোমাদের সন্তানসন্ততিও নিজ উপার্জনের অন্তর্ভুক্ত।’ (তিরমিজি)
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি তার নিজ হাত দ্বারা যা হালাল পন্থায় উপার্জন করে, তার চেয়ে উত্তম উপার্জন আর নেই। কেউ তার পরিবার ও চাকরের জন্য যা ব্যয় করে, তা সদকা হিসেবে গৃহীত।’
(ইব্ন মাজাহ)
পক্ষান্তরে হারাম পন্থায় উপার্জনকারী ব্যক্তি কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং জাহান্নাম হবে তার শেষ ঠিকানা। কেননা, মহানবী (সা.) বলেন, ‘হারাম মাল দ্বারা গঠিত শরীর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। কারণ, যে শরীর হারাম দ্বারা গঠিত, জাহান্নামই তার উপযুক্ত স্থান।’ (মিশকাত)
যেসব বস্তু খাওয়া হারাম, তার মাধ্যমে জীবিকা উপার্জনও হারাম। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো জাতির জন্য কোনো বস্তুর আহার হারাম করেন, তখন তার বিক্রয়লব্ধ মূল্যও হারাম করে দেন।’ (আবু দাউদ)
সুতরাং মৃত প্রাণীর গোশত, রক্ত এবং মদ, শরাব, গাঁজা, আফিম, হেরোইনসহ যাবতীয় মাদকদ্রব্য ও পূজার মূর্তি মৌলিকভাবে হারাম। তাই এগুলোর বেচাকেনা কিংবা এগুলোর মাধ্যমে জীবিকা উপার্জন করাও হারাম। কেননা, হারাম খাদ্য ভক্ষণ করে কোনো ইবাদত করলে সে ইবাদত কবুল হয় না। এ প্রসঙ্গে ইব্ন ওমর (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ১০ দিরহাম দিয়ে একটি কাপড় ক্রয় করল, যাতে একটি হারাম দিরহামও ছিল। আল্লাহ তার কোনো নামাজ কবুল করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে ওই কাপড় পরিহিত অবস্থায় থাকবে।’ (আহমদ)
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ মোতাবেক হালাল জীবিকা উপার্জন করা এবং সব হারাম ও অবৈধ উপার্জন থেকে বেঁচে থাকা আমাদের সবারই নৈতিক ও ইমানি দায়িত্ব।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
৩ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
৪ ঘণ্টা আগে