রফি হক
করোনাভাইরাসের বিষয়ে কিছুই বলার নেই। কারণ, আমি নিজেই কোভিড-১৯ পজেটিভ। এক সপ্তাহেরও ওপর ঘর থেকে বের হচ্ছি না। চিকিৎসকের পরামর্শে যা যা করণীয় তা করছি। শুধু এটুকু বলব, গত এক বছরের বেশি সময় নিয়ে আমার পক্ষে যতটা নিরাপত্তা ও সচেতনতা অবলম্বন সম্ভব, তা আমি করেছিলাম। কিন্তু সচেতনতা, নিরাপত্তা, নিয়ম-নীতি, বিধি-নিষেধ মেনে চলা একপক্ষীয় কোনো বিষয় নয়। আমরা যদি তা সবাই মেনে না চলি, তাহলে তো হবে না। মেনে চলতে হবে। না হলে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কতটা যে ভয়ঙ্কর হবে, তা অকল্পনীয়; সব ভাবনারও বাইরে ।
সরকার এটা করবে। সরকার ওটা করবে। সরকার সব করবে। আমরা সাধারণ নাগরিকেরাই যদি সচেতন না হয়ে, শিক্ষিতের মতো আচরণ না করি, তবে সরকারও আপনাকে আমাকে রক্ষা করতে পারবে না। প্রথমে আমাদেরই সচেতন হয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
সরকারকে তো অবশ্যই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে, রুচিশীল হতে হবে। দেখুন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশ করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার অন্তত তিন মাস পর এ দেশে তা এসেছে। এটি রুখতে যথাযথ ব্যবস্থা সরকার নিতে পারেনি। তখন ব্যবস্থা নেওয়া কতটা সহজ ছিল একবার ভাবুন তো। তা পারেনি সরকার। আবার গত এক বছরে একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে সরকারের। এর মধ্যে বিপুল জানমালেরও ক্ষতি হয়েছে। তারপরও সরকারের মন্ত্রীরা কত ফালতু কথা যে বলেছেন, তা ভাবলে অবাক হই। ‘বাংলাদেশ হাসপাতালের দেশ হবে’, ‘ঢাকা হাসপাতালে ছেয়ে যাবে’, ‘চীনের থেকেও আমরা বেশি হাসপাতাল বানাব’, ‘করোনা চিকিৎসায় আমরা ইউরোপ-আমেরিকার চেয়েও বেশি সফল’; এসব কি সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের কথাবার্তা? দায়িত্ববান মানুষদের কাছে অনুরোধ, আপনারা রুচিশীল হোন। আধুনিক সভ্যতায়, সমকালীন পৃথিবীতে রুচিশীল হওয়া প্রথম কর্তব্য।
আমার কথা বলি, আমি যখন বুঝতে পারছি যে অসুস্থ বোধ করছি। বিশ্বাস করুন, ওয়েবসাইটে সরকারের হাসপাতালের, আইসিডিডিআরবির এবং মন্ত্রণালয়ের যেখানে যত টেলিফোন নম্বর ছিল, সবখানে ফোন করেছি। একটি ছাড়া কোনো ফোনই রিসিভ করেনি কেউ কোথাও। বেশির ভাগ ফোনই অকেজো। সেগুলো ওয়েবসাইটে আপডেটও করা হয়নি! আমি ধিক্কার ও ঘৃণা জানাই, যারা সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের ফালতু কথা বলেন, তাঁদের প্রতি।
আমি হাল ছাড়িনি। সারাদিন পর বিকেলের ফোনটি কেউ একজন রিসিভ করলেন। যিনি ধরেছিলেন, অত্যন্ত ভদ্র ব্যবহার করে বলেছিলেন, ‘এখন তো অনেক রোগী, আপনার যদি সামর্থ হয় তো কিছু মনে করবেন না ভালো কোনো বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করিয়ে নিন। সময় নষ্ট করবেন না।’ আমি তাঁর কথা মন দিয়ে শুনে বলেছিলাম, ‘আমি সেটা পারি, সেটা ইস্যু নয়। ইস্যু হলো, সরকারি ব্যবস্থাপনা দেখা যে তাদের সাফল্য কিসে এবং কোথায়? তা আমি সারাদিনে দেখে ফেলেছি।
সাধারণ মানুষের দোষ দেওয়া যায় খুব সহজভাবে। এই মানছে না সেই মানছে না, থু থু ফেলে যেখানে-সেখানে, প্রাকৃতিক কাজ সারে যত্রতত্র, আবর্জনা ফেলে, এরা অশিক্ষিত, এরা মূর্খ, এরা এটিকেট জানে না ইত্যাদি। এসব তো বলা যায়-ই। কিন্তু সাধারণ মানুষকে আমরা কখনও সুন্দর করে রুচি বা এটিকেটের কথা বলেছি? সুন্দর করে শিক্ষার মধ্য দিয়ে বড় করার কথা ভেবেছি কখনও? দেখুন, সরকার কত কিছু বানাচ্ছে। কত ডেভেলপিং ওয়ার্ক হচ্ছে। হাইওয়ে এক্সপ্রেস, মেট্রো, আন্ডারপাস, টানেল হচ্ছে। নির্মাণাধীন মেট্রো আর হাইওয়ে এক্সপ্রেসের খাম্বা দেখুন। পোস্টারে পোস্টারে ভরে গেছে। আর প্রতিটি খাম্বার নিচে মলমূত্র ত্যাগের আদর্শ জায়গা হয়েছে! আর পোস্টারগুলো সব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। এদের পোস্টার দেখে দেখে ধরে ধরে কঠিন শাস্তি দিন। কঠিনতম শাস্তি দিন। তবে কর্মীদের ধরবেন না। ধরবেন এমপি, ওয়ার্ড কমিশনার, চেয়ারম্যানদের। প্রয়োজনে বাতিল হোক এদের সদস্যপদ ।
দুই পাশের রাস্তাজুড়ে হকার। ফুটপাত কি এই জীবনে আর জনসাধারণের হবে না, ক্ষমতাসীন চাঁদাবাজদের দখলেই থাকবে? আমরাই তো রুচিহীনতা প্রশ্রয় দিচ্ছি সর্বত্র। দেশজুড়েই চলছে তা-ই। এই যে ছাল ওঠা, ট্যাপ খাওয়া, ভাঙা-পচা-মজা-জরাজীর্ণ শত শত বাস নিয়ে আমাদের ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম। গাড়ির জানালা নেই, দরজা নেই, জানালায় আধভাঙা কাচ হাঁ করে আছে, কারও ভ্রুক্ষেপ নেই। গাড়ির ড্যাসবোর্ড নেই, মিরর নেই; বলতে গেলেই কিছুই নেই। তবু গাড়ির ফিটনেস আছে! ভাবুন, মানুষ সেখানে গরু-ছাগলের মতো চড়ে। একটি দেশের রাজধানীতে এই অবস্থা! যে দেশকে আমরা সোনার বাংলা বলি, সেই সোনার বাংলার এই হাল!
এই ট্রান্সপোর্ট কাদের হাতে জিম্মি? একেকজন রাজনৈতিক নেতা, পাতি নেতা উপনেতা, তস্য নেতার হাতে এগুলো জিম্মি, সরকার অবষ্যই এসব জানে। আমাদের রুচির যে অধঃপতন, তার মূল কারণ এসব বস্তাপচা রাজনীতি। দেশের প্রধানতম সমস্যা রুচির সমস্যা। ইট-কংক্রিটের ডেভেলপমেন্ট কোনো উন্নয়ন নয়। ওটা চাক্ষুস উন্নয়ন। সাধারণ মানুষের মনের ভেতরটা রুচির মাধ্যমে উন্নয়ন করুন। তখন দেখবেন সবাই লকডাউন মানছে। সরকারকে শ্রদ্ধা করছে। মানুষ মানুষকে শ্রদ্ধা করছে। কারণ, তারা নিজের রুচিবোধ তৈরি করতে পারবে আপনা থেকেই। রুচির সঙ্গে ভালো-মন্দ বুঝতে পারাটাও বিশাল ব্যাপার। আজ সেটা নেই বলেই আমাদের এত অশ্রদ্ধা। এত অভক্তি। সিঙ্গাপুর, হংকং, টোকিও শহরও তো লোকসংখ্যায় আমাদের কাছাকাছি। দেখুন, তারা কিন্তু রাস্তায় থু থু, কফ ফেলে না। কাগজ, পলিথিন বা ময়লা ফেলে না। আমরাও যদি এগুলো সুন্দরভাবে অর্জন করতে পারতাম! করোনাভাইরাস আমাদের এখানে মহামারি ও অতিমারিতে হয়তো রূপ নিতে পারতো না।
খারাপ লাগছে আমার বান্ধবী মিতু (শিল্পী সৈয়দা রিফাত জামাল) করোনা আক্রান্ত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে অক্সিজেন নিচ্ছেন। আমার প্রায় ৩২ বছরের বন্ধু। শোনার পর থেকে মন আরও বিষণ্ণ হলো। আমার শিক্ষক ফরিদা পারভীন হাসপাতালে আছেন। সবার প্রিয় কবরী আপা লাইফ সাপোর্টে। ভাবতেই পারছি না। শামসুজ্জামান খানের মতো অত বড় প-িত, গবেষক, সাহিত্যিক মানুষও চলে গেলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। ভাবুন, আমরা কেউ নিরাপদ নই । সুতোর ওপর দিয়ে হাঁটছি। আসুন আক্রান্ত সবার জন্য দোয়া করি ।
পুনশ্চ: আমার স্ত্রীর কাছে শুনলাম ১৫ এপ্রিল মসজিদে নামাজ পড়া নিয়েও গ-গোল-মারামারি হয়েছে কোথাও কোথাও। ধর্ম কি মারামারি করতে বলে? এত অশিক্ষা-কুশিক্ষা আমার মনে হয় মধ্যযুগেও ছিল না। কোথা থেকে আসে এসব জোশ! আপৎকালীন সময়ে ঘরে নামাজ পড়লে কি-ই বা ক্ষতি হয়? আরব দেশেও তো মসজিদে নামাজ হচ্ছে না এই সময়ে! কিছুদিন আগেই ঘোড়া, চাক্কু, ঢাল-তলোয়ার, লাঠিসোঁটা নিয়ে কি যে এক মধ্যযুগীয় খেল দেখাল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এসব দেখানোর সাহস পায় কী করে? এই দুঃসময়ে এমনসব সমাবেশ করার অনুমতিই বা পায় কী করে? হুজুরদের বলি, আল্লাহর ওয়াস্তে এসব থেকে ক্ষ্যান্ত দিন। ইসলাম অনেক বড় ও মানবিক ধর্ম । রুচির ধর্ম। ইসলাম রুচিশীল হতে শিক্ষা দেয়। আপনারা এসব জিহাদি শিক্ষা কীভাবে পাচ্ছেন জানি না। সরকার জানে কি?
করোনাভাইরাসের বিষয়ে কিছুই বলার নেই। কারণ, আমি নিজেই কোভিড-১৯ পজেটিভ। এক সপ্তাহেরও ওপর ঘর থেকে বের হচ্ছি না। চিকিৎসকের পরামর্শে যা যা করণীয় তা করছি। শুধু এটুকু বলব, গত এক বছরের বেশি সময় নিয়ে আমার পক্ষে যতটা নিরাপত্তা ও সচেতনতা অবলম্বন সম্ভব, তা আমি করেছিলাম। কিন্তু সচেতনতা, নিরাপত্তা, নিয়ম-নীতি, বিধি-নিষেধ মেনে চলা একপক্ষীয় কোনো বিষয় নয়। আমরা যদি তা সবাই মেনে না চলি, তাহলে তো হবে না। মেনে চলতে হবে। না হলে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কতটা যে ভয়ঙ্কর হবে, তা অকল্পনীয়; সব ভাবনারও বাইরে ।
সরকার এটা করবে। সরকার ওটা করবে। সরকার সব করবে। আমরা সাধারণ নাগরিকেরাই যদি সচেতন না হয়ে, শিক্ষিতের মতো আচরণ না করি, তবে সরকারও আপনাকে আমাকে রক্ষা করতে পারবে না। প্রথমে আমাদেরই সচেতন হয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
সরকারকে তো অবশ্যই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে, রুচিশীল হতে হবে। দেখুন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশ করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার অন্তত তিন মাস পর এ দেশে তা এসেছে। এটি রুখতে যথাযথ ব্যবস্থা সরকার নিতে পারেনি। তখন ব্যবস্থা নেওয়া কতটা সহজ ছিল একবার ভাবুন তো। তা পারেনি সরকার। আবার গত এক বছরে একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে সরকারের। এর মধ্যে বিপুল জানমালেরও ক্ষতি হয়েছে। তারপরও সরকারের মন্ত্রীরা কত ফালতু কথা যে বলেছেন, তা ভাবলে অবাক হই। ‘বাংলাদেশ হাসপাতালের দেশ হবে’, ‘ঢাকা হাসপাতালে ছেয়ে যাবে’, ‘চীনের থেকেও আমরা বেশি হাসপাতাল বানাব’, ‘করোনা চিকিৎসায় আমরা ইউরোপ-আমেরিকার চেয়েও বেশি সফল’; এসব কি সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের কথাবার্তা? দায়িত্ববান মানুষদের কাছে অনুরোধ, আপনারা রুচিশীল হোন। আধুনিক সভ্যতায়, সমকালীন পৃথিবীতে রুচিশীল হওয়া প্রথম কর্তব্য।
আমার কথা বলি, আমি যখন বুঝতে পারছি যে অসুস্থ বোধ করছি। বিশ্বাস করুন, ওয়েবসাইটে সরকারের হাসপাতালের, আইসিডিডিআরবির এবং মন্ত্রণালয়ের যেখানে যত টেলিফোন নম্বর ছিল, সবখানে ফোন করেছি। একটি ছাড়া কোনো ফোনই রিসিভ করেনি কেউ কোথাও। বেশির ভাগ ফোনই অকেজো। সেগুলো ওয়েবসাইটে আপডেটও করা হয়নি! আমি ধিক্কার ও ঘৃণা জানাই, যারা সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের ফালতু কথা বলেন, তাঁদের প্রতি।
আমি হাল ছাড়িনি। সারাদিন পর বিকেলের ফোনটি কেউ একজন রিসিভ করলেন। যিনি ধরেছিলেন, অত্যন্ত ভদ্র ব্যবহার করে বলেছিলেন, ‘এখন তো অনেক রোগী, আপনার যদি সামর্থ হয় তো কিছু মনে করবেন না ভালো কোনো বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করিয়ে নিন। সময় নষ্ট করবেন না।’ আমি তাঁর কথা মন দিয়ে শুনে বলেছিলাম, ‘আমি সেটা পারি, সেটা ইস্যু নয়। ইস্যু হলো, সরকারি ব্যবস্থাপনা দেখা যে তাদের সাফল্য কিসে এবং কোথায়? তা আমি সারাদিনে দেখে ফেলেছি।
সাধারণ মানুষের দোষ দেওয়া যায় খুব সহজভাবে। এই মানছে না সেই মানছে না, থু থু ফেলে যেখানে-সেখানে, প্রাকৃতিক কাজ সারে যত্রতত্র, আবর্জনা ফেলে, এরা অশিক্ষিত, এরা মূর্খ, এরা এটিকেট জানে না ইত্যাদি। এসব তো বলা যায়-ই। কিন্তু সাধারণ মানুষকে আমরা কখনও সুন্দর করে রুচি বা এটিকেটের কথা বলেছি? সুন্দর করে শিক্ষার মধ্য দিয়ে বড় করার কথা ভেবেছি কখনও? দেখুন, সরকার কত কিছু বানাচ্ছে। কত ডেভেলপিং ওয়ার্ক হচ্ছে। হাইওয়ে এক্সপ্রেস, মেট্রো, আন্ডারপাস, টানেল হচ্ছে। নির্মাণাধীন মেট্রো আর হাইওয়ে এক্সপ্রেসের খাম্বা দেখুন। পোস্টারে পোস্টারে ভরে গেছে। আর প্রতিটি খাম্বার নিচে মলমূত্র ত্যাগের আদর্শ জায়গা হয়েছে! আর পোস্টারগুলো সব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। এদের পোস্টার দেখে দেখে ধরে ধরে কঠিন শাস্তি দিন। কঠিনতম শাস্তি দিন। তবে কর্মীদের ধরবেন না। ধরবেন এমপি, ওয়ার্ড কমিশনার, চেয়ারম্যানদের। প্রয়োজনে বাতিল হোক এদের সদস্যপদ ।
দুই পাশের রাস্তাজুড়ে হকার। ফুটপাত কি এই জীবনে আর জনসাধারণের হবে না, ক্ষমতাসীন চাঁদাবাজদের দখলেই থাকবে? আমরাই তো রুচিহীনতা প্রশ্রয় দিচ্ছি সর্বত্র। দেশজুড়েই চলছে তা-ই। এই যে ছাল ওঠা, ট্যাপ খাওয়া, ভাঙা-পচা-মজা-জরাজীর্ণ শত শত বাস নিয়ে আমাদের ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম। গাড়ির জানালা নেই, দরজা নেই, জানালায় আধভাঙা কাচ হাঁ করে আছে, কারও ভ্রুক্ষেপ নেই। গাড়ির ড্যাসবোর্ড নেই, মিরর নেই; বলতে গেলেই কিছুই নেই। তবু গাড়ির ফিটনেস আছে! ভাবুন, মানুষ সেখানে গরু-ছাগলের মতো চড়ে। একটি দেশের রাজধানীতে এই অবস্থা! যে দেশকে আমরা সোনার বাংলা বলি, সেই সোনার বাংলার এই হাল!
এই ট্রান্সপোর্ট কাদের হাতে জিম্মি? একেকজন রাজনৈতিক নেতা, পাতি নেতা উপনেতা, তস্য নেতার হাতে এগুলো জিম্মি, সরকার অবষ্যই এসব জানে। আমাদের রুচির যে অধঃপতন, তার মূল কারণ এসব বস্তাপচা রাজনীতি। দেশের প্রধানতম সমস্যা রুচির সমস্যা। ইট-কংক্রিটের ডেভেলপমেন্ট কোনো উন্নয়ন নয়। ওটা চাক্ষুস উন্নয়ন। সাধারণ মানুষের মনের ভেতরটা রুচির মাধ্যমে উন্নয়ন করুন। তখন দেখবেন সবাই লকডাউন মানছে। সরকারকে শ্রদ্ধা করছে। মানুষ মানুষকে শ্রদ্ধা করছে। কারণ, তারা নিজের রুচিবোধ তৈরি করতে পারবে আপনা থেকেই। রুচির সঙ্গে ভালো-মন্দ বুঝতে পারাটাও বিশাল ব্যাপার। আজ সেটা নেই বলেই আমাদের এত অশ্রদ্ধা। এত অভক্তি। সিঙ্গাপুর, হংকং, টোকিও শহরও তো লোকসংখ্যায় আমাদের কাছাকাছি। দেখুন, তারা কিন্তু রাস্তায় থু থু, কফ ফেলে না। কাগজ, পলিথিন বা ময়লা ফেলে না। আমরাও যদি এগুলো সুন্দরভাবে অর্জন করতে পারতাম! করোনাভাইরাস আমাদের এখানে মহামারি ও অতিমারিতে হয়তো রূপ নিতে পারতো না।
খারাপ লাগছে আমার বান্ধবী মিতু (শিল্পী সৈয়দা রিফাত জামাল) করোনা আক্রান্ত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে অক্সিজেন নিচ্ছেন। আমার প্রায় ৩২ বছরের বন্ধু। শোনার পর থেকে মন আরও বিষণ্ণ হলো। আমার শিক্ষক ফরিদা পারভীন হাসপাতালে আছেন। সবার প্রিয় কবরী আপা লাইফ সাপোর্টে। ভাবতেই পারছি না। শামসুজ্জামান খানের মতো অত বড় প-িত, গবেষক, সাহিত্যিক মানুষও চলে গেলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। ভাবুন, আমরা কেউ নিরাপদ নই । সুতোর ওপর দিয়ে হাঁটছি। আসুন আক্রান্ত সবার জন্য দোয়া করি ।
পুনশ্চ: আমার স্ত্রীর কাছে শুনলাম ১৫ এপ্রিল মসজিদে নামাজ পড়া নিয়েও গ-গোল-মারামারি হয়েছে কোথাও কোথাও। ধর্ম কি মারামারি করতে বলে? এত অশিক্ষা-কুশিক্ষা আমার মনে হয় মধ্যযুগেও ছিল না। কোথা থেকে আসে এসব জোশ! আপৎকালীন সময়ে ঘরে নামাজ পড়লে কি-ই বা ক্ষতি হয়? আরব দেশেও তো মসজিদে নামাজ হচ্ছে না এই সময়ে! কিছুদিন আগেই ঘোড়া, চাক্কু, ঢাল-তলোয়ার, লাঠিসোঁটা নিয়ে কি যে এক মধ্যযুগীয় খেল দেখাল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এসব দেখানোর সাহস পায় কী করে? এই দুঃসময়ে এমনসব সমাবেশ করার অনুমতিই বা পায় কী করে? হুজুরদের বলি, আল্লাহর ওয়াস্তে এসব থেকে ক্ষ্যান্ত দিন। ইসলাম অনেক বড় ও মানবিক ধর্ম । রুচির ধর্ম। ইসলাম রুচিশীল হতে শিক্ষা দেয়। আপনারা এসব জিহাদি শিক্ষা কীভাবে পাচ্ছেন জানি না। সরকার জানে কি?
যেকোনো সামাজিক বিষয় বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কখনো কখনো তত্ত্ব দিয়ে তার ব্যাখ্যা করি, আবার কখনো কখনো বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয় বা সমস্যার বিশ্লেষণ করি। তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা...
৫ ঘণ্টা আগেগাজার সবচেয়ে সুপরিচিত ফুটবল স্টেডিয়ামটি এখন বিশৃঙ্খলায় ভরা। মাঠ ও বসার জায়গায় বাস্তুচ্যুত লোকের বন্যা। সবার পিঠে ব্যাগ আর কিছু কাপড়। কেউ অসুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করছেন বা আহত আত্মীয়দের নিয়ে চলেছেন। আবার কেউ কেউ একা হাঁটছেন, খালি পায়েই হেঁটে চলেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেসিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
৬ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
৬ ঘণ্টা আগে