শেখ ফিরোজ আহমদ
সারেং বউ হলে গিয়ে দেখেছি। বগুড়ায় ‘মধুবন’ হল নাকি ‘মেরিনা’ টকিজে ঠিক মনে নেই। সারেং বউ মানেই আমার কাছে আবদুল জব্বারের ‘ওরে নীল দরিয়া আমায় দে রে দে ছাড়িয়া।’ পরিচালকের নামও মনে পরে না। যতটা মনে পড়ে কবরী, ফারুক আর বদমাইশ চরিত্রে অভিনয় করা আরিফুল হকের কথা। আমি বহুদিন পর্যন্ত আরিফুল হককে সহ্য করতে পারতাম না এই কারণে। পরে বুঝেছি উনি মানুষ ভালো, শক্তিশালী অভিনেতা। কবরী-ফারুকের সুজন সখীর গান চায়ের টং দোকানে ক্যাসেট প্লেয়ারে বাজত। লোকের মুখে মুখে ফিরত। আরও ছোট বয়সে চাঁদপুরে পুরান বাজারের আবু মামার কোহিনূর হলে সাত ভাই চম্পা কয়েকবার দেখা হয়ে গেছে। নিয়ে যেত খালাতো ভাই বাপি। নানাবাড়ির যত বুড়া-গুঁড়া বাপি ভাইয়ের পেছন পেছন যেতাম। আমরা চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরে এলে এ রকম বোনাস দুই-একটা পাওয়া যেত। কবরী তখন সাত ভাই চম্পার একমাত্র বোন পারুল।
আশির দশকে ইবনে মিজান ও দেলোয়ার জাহান ঝন্টুদের গাঁজাখুরি ফিল্মি জমানার রমরমা শুরু। সাহিত্য এবং লোককাহিনিনির্ভর সিনেমার তখনো জনপ্রিয়তা, মানুষ হলে গিয়ে সিনেমা দেখত। কবরী, শাবানা এবং ববিতা ছিল আমার পছন্দের নায়িকা। আমার মেজ মামির পছন্দের নায়ক ছিলেন রাজ্জাক। কবরীর কথায় আসি।
আমি ২০০৪ থেকে অফিসের কাজে চুয়াডাঙ্গায় যেতাম। একদিন সন্ধ্যার পর রিসো নামের একটি এনজিওর প্রধান জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন হাঁটতে বেরোলাম। আমাকে জাহিদ বললেন, ‘চলেন, আপনাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাই।’ নতুন কিছু দেখার ব্যাপারে আমার বরাবরই উৎসাহ। আমরা সদলবলে গেলাম। জাহিদ বললেন, ‘এইটা কবরী রোড’। আমি চমকে গেলাম। বিস্মিত গলায় বলি, ‘কবরী, মানে সিনেমার কবরী?’ আমার সহকর্মীদের মুখে গর্বের হাসি—‘হ্যাঁ, সেই কবরী।’
গল্প জমে গেল। কবরী ক খ গ ঘ ঙ নামের সিনেমার শুটিংয়ে চুয়াডাঙ্গায় আসেন ১৯৬৯ সালে। উঠেছিলেন ওয়াপদা পাড়ায় ক্যামেরার বিখ্যাত মানুষ বেবী ইসলামের বাড়িতে। প্রায় এক মাস ছিলেন, শুটিংও করেন। তখন কবরীকে দেখার জন্যে প্রতিদিনই হাজার হাজার স্থানীয় মানুষের ভিড় জমে যেত ওই এলাকায়। চুয়াডাঙ্গা শহরের ওয়াপদা পাড়ার ওই রাস্তাটি আপনা-আপনিই লোকের মুখে মুখে ‘কবরী রোড’ নামে পরিচিতি পায়। পৌরভবন থেকে সরকারি কলেজ পর্যন্ত আধা কিলোমিটার দীর্ঘ ওয়াপদা পাড়ার এই রাস্তাটিই এখন কবরী রোড। সেই থেকে এই নামটি আছে লোকের মুখে মুখে পৌরসভার নথিতে এসেছে ২০১৭ সালে। কবরী জানতেন তাঁর নামে চুয়াডাঙ্গায় একটা রাস্তা আছে। তিনি আসার ইচ্ছাও দেখিয়েছেন, কিন্তু আসা হয়নি।
পরিচালক নারায়ণ ঘোষ মিতা, ছবির নায়ক, নায়িকাসহ শুটিং ইউনিটের পুরো টিম ছিল কবরীর সঙ্গে। ক খ গ ঘ ঙ সিনেমায় মূল চরিত্রে অভিনয় করেন কবরী, রাজ্জাক, আনোয়ার হোসেন, সুরস্রষ্টা আলতাফ মাহমুদ, রহিমা খালা ও বেবী ইসলামের স্ত্রী তন্দ্রা ইসলাম। বেবী ইসলাম ছবির চিত্রগ্রহণের কাজ করেন, সহকারী ছিলেন মোরশেদ আহমেদ ওরফে তোকা মিয়া। তাঁরা ছিলেন মামাতো-ফুফাতো ভাই।
কবরী রোডের ওই বাড়ির মালিক সপরিবারে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায়। বাড়ির একটি অংশে ব্যবসায়ী আখের আলী স্ত্রী নিলুফা বেগম এবং দুই সন্তান আবুল বাশার ও মেহেদী হাসানকে নিয়ে থাকেন। নিলুফা বেগম সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, ‘আমি গর্বিত। যে বাড়িতে, যে ঘরে নায়িকা কবরী একটি মাস ছিলেন, আমি সেই ঘরের বাসিন্দা।’ কবরীও প্রথম আলোর প্রতিবেদককে ২০১৬ সালে কথাপ্রসঙ্গে বলেছিলেন, “এলাকার লোকজন স্বাধীনতার পর একটা চিঠি পাঠায়। চিঠির ভেতরে ছিল আরেকটি খাম। যেখানে লেখা ছিল, ‘কবরী রোড, চুয়াডাঙ্গা’।”
চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত শহর। ছোট্ট ছিমছাম। অধিবাসীরা সজ্জন, অতিথিবৎসল, সহজ-সরল এবং একরোখা।
২. কবরী আপাকে দেখি, সামনা-সামনি ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। বিএনপি তখন ক্ষমতায়। ২০০১ সালের ঘটনা এটা। উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের উত্থানের প্রতিবাদে শহীদ মিনার থেকে প্রতি শুক্রবার জাতীয় পতাকা মিছিল বের করা হতো। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালকে সামনে রেখে এই মিছিলের আয়োজন করা হতো। সাংগঠনিক খুঁটিনাটি সমন্বয় করতেন মোতাহার আকন্দ। আমরা স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট থেকে যেতাম। মিছিলের স্লোগান ধরতাম মূলত আমি ও শিবু সাওজাল। আরও কেউ কেউ ছিলেন, নাম মনে নেই। একদিন মিছিলের আগে দেখি কবরী শহীদ মিনারে এলেন। তিনি আমাদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দিতে চান। বুঝলাম আমাদের মিছিলে কাজ হচ্ছে। মানুষ সাহসী হয়ে উঠছে। সেই থেকে কবরী আপা সাপ্তাহিক এই জাতীয় পতাকা মিছিলে আসতেন।
৩. স্টেপস নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা ও নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করত। সারা বছরই এই রিলেটেড নানা প্রোগ্রাম লেগে থাকত। আমি তখন বিশেষভাবে মিডিয়া কম্যুনিকেশন এবং গেস্ট ইনভাইটেশনের দায়িত্ব পালন করতাম। স্টেপসের পরিচালক সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার নেপথ্য থেকে আমাকে বুদ্ধি পরামর্শ ও সহযোগিতা করতেন। সামনেই বড় একটা অনুষ্ঠান, নামী-দামি সব গেস্ট। ভেন্যু আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তন অথবা ছায়ানট হবে, মনে নেই। কবরী তখন সংসদ সদস্য। আমার স্পেশাল দায়িত্ব পড়ল ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করার। নানাভাবে চেষ্টা করলাম। যেটা হয়, ওনারা ব্যস্ত মানুষ। এদিক-ওদিক নানা রকম দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত থাকেন। পাওয়াটাই মুশকিল। ভাগ্যক্রমে পেয়ে গেলাম। কয়েক দফা যোগাযোগের পর- একদিন দুপুরের পর আমাকে যেতে বললেন। গুলশানে খুঁজে খুঁজে বাসা বের করলাম। রিসেপশন থেকে ইন্টারকমে কথা হলো। কবরী আপা, উপরে যেতে বললেন না। কথা দিলেন সেমিনারে থাকবেন। আমি তাঁর কথামতো আমন্ত্রণপত্র রেখে এলাম।
অনুষ্ঠানের দিন অপেক্ষা করি। আরও গেস্ট আছেন, তাঁরা ফোন করেন, আসেন। আমি অভ্যর্থনা জানাই। কিন্তু কবরী আপা আসেন না। অনুষ্ঠান শুরু হয় হয়, আমি মোবাইলে ফোন দিলাম।
কবরী আপা নিচুস্বরে বললেন, ‘আমি পার্লামেন্টে। স্যরি, ইমার্জেন্সি থাকায় আসতে হয়েছে। আপনারা কিছু মনে করবেন না। অনুষ্ঠান চালিয়ে যান।’
-আমি বললাম, ‘জ্বি, আপা। পরে আবার ডাকলে ফ্রি থাকলে আইসেন।’
-‘আচ্ছা, আচ্ছা।’
সারাহ বেগম কবরী, আপনি আমার প্রিয় অভিনেত্রী। ১২ দিন করোনাভাইরাসের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অন্যভুবনে চলে গেলেন। রেখে গেলেন মহত্তম শিল্পকর্ম সারেং বউ । অযুত-নিযুত ভক্তের হৃদয় কাঁদছে আপনার জন্য। সবার ভালোবাসা আপনাকে ঘিরে আছে। আপনার আত্মার চিরশান্তি কামনা করি। ১৭ এপ্রিল ২০২১
সারেং বউ হলে গিয়ে দেখেছি। বগুড়ায় ‘মধুবন’ হল নাকি ‘মেরিনা’ টকিজে ঠিক মনে নেই। সারেং বউ মানেই আমার কাছে আবদুল জব্বারের ‘ওরে নীল দরিয়া আমায় দে রে দে ছাড়িয়া।’ পরিচালকের নামও মনে পরে না। যতটা মনে পড়ে কবরী, ফারুক আর বদমাইশ চরিত্রে অভিনয় করা আরিফুল হকের কথা। আমি বহুদিন পর্যন্ত আরিফুল হককে সহ্য করতে পারতাম না এই কারণে। পরে বুঝেছি উনি মানুষ ভালো, শক্তিশালী অভিনেতা। কবরী-ফারুকের সুজন সখীর গান চায়ের টং দোকানে ক্যাসেট প্লেয়ারে বাজত। লোকের মুখে মুখে ফিরত। আরও ছোট বয়সে চাঁদপুরে পুরান বাজারের আবু মামার কোহিনূর হলে সাত ভাই চম্পা কয়েকবার দেখা হয়ে গেছে। নিয়ে যেত খালাতো ভাই বাপি। নানাবাড়ির যত বুড়া-গুঁড়া বাপি ভাইয়ের পেছন পেছন যেতাম। আমরা চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরে এলে এ রকম বোনাস দুই-একটা পাওয়া যেত। কবরী তখন সাত ভাই চম্পার একমাত্র বোন পারুল।
আশির দশকে ইবনে মিজান ও দেলোয়ার জাহান ঝন্টুদের গাঁজাখুরি ফিল্মি জমানার রমরমা শুরু। সাহিত্য এবং লোককাহিনিনির্ভর সিনেমার তখনো জনপ্রিয়তা, মানুষ হলে গিয়ে সিনেমা দেখত। কবরী, শাবানা এবং ববিতা ছিল আমার পছন্দের নায়িকা। আমার মেজ মামির পছন্দের নায়ক ছিলেন রাজ্জাক। কবরীর কথায় আসি।
আমি ২০০৪ থেকে অফিসের কাজে চুয়াডাঙ্গায় যেতাম। একদিন সন্ধ্যার পর রিসো নামের একটি এনজিওর প্রধান জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন হাঁটতে বেরোলাম। আমাকে জাহিদ বললেন, ‘চলেন, আপনাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাই।’ নতুন কিছু দেখার ব্যাপারে আমার বরাবরই উৎসাহ। আমরা সদলবলে গেলাম। জাহিদ বললেন, ‘এইটা কবরী রোড’। আমি চমকে গেলাম। বিস্মিত গলায় বলি, ‘কবরী, মানে সিনেমার কবরী?’ আমার সহকর্মীদের মুখে গর্বের হাসি—‘হ্যাঁ, সেই কবরী।’
গল্প জমে গেল। কবরী ক খ গ ঘ ঙ নামের সিনেমার শুটিংয়ে চুয়াডাঙ্গায় আসেন ১৯৬৯ সালে। উঠেছিলেন ওয়াপদা পাড়ায় ক্যামেরার বিখ্যাত মানুষ বেবী ইসলামের বাড়িতে। প্রায় এক মাস ছিলেন, শুটিংও করেন। তখন কবরীকে দেখার জন্যে প্রতিদিনই হাজার হাজার স্থানীয় মানুষের ভিড় জমে যেত ওই এলাকায়। চুয়াডাঙ্গা শহরের ওয়াপদা পাড়ার ওই রাস্তাটি আপনা-আপনিই লোকের মুখে মুখে ‘কবরী রোড’ নামে পরিচিতি পায়। পৌরভবন থেকে সরকারি কলেজ পর্যন্ত আধা কিলোমিটার দীর্ঘ ওয়াপদা পাড়ার এই রাস্তাটিই এখন কবরী রোড। সেই থেকে এই নামটি আছে লোকের মুখে মুখে পৌরসভার নথিতে এসেছে ২০১৭ সালে। কবরী জানতেন তাঁর নামে চুয়াডাঙ্গায় একটা রাস্তা আছে। তিনি আসার ইচ্ছাও দেখিয়েছেন, কিন্তু আসা হয়নি।
পরিচালক নারায়ণ ঘোষ মিতা, ছবির নায়ক, নায়িকাসহ শুটিং ইউনিটের পুরো টিম ছিল কবরীর সঙ্গে। ক খ গ ঘ ঙ সিনেমায় মূল চরিত্রে অভিনয় করেন কবরী, রাজ্জাক, আনোয়ার হোসেন, সুরস্রষ্টা আলতাফ মাহমুদ, রহিমা খালা ও বেবী ইসলামের স্ত্রী তন্দ্রা ইসলাম। বেবী ইসলাম ছবির চিত্রগ্রহণের কাজ করেন, সহকারী ছিলেন মোরশেদ আহমেদ ওরফে তোকা মিয়া। তাঁরা ছিলেন মামাতো-ফুফাতো ভাই।
কবরী রোডের ওই বাড়ির মালিক সপরিবারে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায়। বাড়ির একটি অংশে ব্যবসায়ী আখের আলী স্ত্রী নিলুফা বেগম এবং দুই সন্তান আবুল বাশার ও মেহেদী হাসানকে নিয়ে থাকেন। নিলুফা বেগম সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, ‘আমি গর্বিত। যে বাড়িতে, যে ঘরে নায়িকা কবরী একটি মাস ছিলেন, আমি সেই ঘরের বাসিন্দা।’ কবরীও প্রথম আলোর প্রতিবেদককে ২০১৬ সালে কথাপ্রসঙ্গে বলেছিলেন, “এলাকার লোকজন স্বাধীনতার পর একটা চিঠি পাঠায়। চিঠির ভেতরে ছিল আরেকটি খাম। যেখানে লেখা ছিল, ‘কবরী রোড, চুয়াডাঙ্গা’।”
চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত শহর। ছোট্ট ছিমছাম। অধিবাসীরা সজ্জন, অতিথিবৎসল, সহজ-সরল এবং একরোখা।
২. কবরী আপাকে দেখি, সামনা-সামনি ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। বিএনপি তখন ক্ষমতায়। ২০০১ সালের ঘটনা এটা। উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের উত্থানের প্রতিবাদে শহীদ মিনার থেকে প্রতি শুক্রবার জাতীয় পতাকা মিছিল বের করা হতো। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালকে সামনে রেখে এই মিছিলের আয়োজন করা হতো। সাংগঠনিক খুঁটিনাটি সমন্বয় করতেন মোতাহার আকন্দ। আমরা স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট থেকে যেতাম। মিছিলের স্লোগান ধরতাম মূলত আমি ও শিবু সাওজাল। আরও কেউ কেউ ছিলেন, নাম মনে নেই। একদিন মিছিলের আগে দেখি কবরী শহীদ মিনারে এলেন। তিনি আমাদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দিতে চান। বুঝলাম আমাদের মিছিলে কাজ হচ্ছে। মানুষ সাহসী হয়ে উঠছে। সেই থেকে কবরী আপা সাপ্তাহিক এই জাতীয় পতাকা মিছিলে আসতেন।
৩. স্টেপস নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা ও নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করত। সারা বছরই এই রিলেটেড নানা প্রোগ্রাম লেগে থাকত। আমি তখন বিশেষভাবে মিডিয়া কম্যুনিকেশন এবং গেস্ট ইনভাইটেশনের দায়িত্ব পালন করতাম। স্টেপসের পরিচালক সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার নেপথ্য থেকে আমাকে বুদ্ধি পরামর্শ ও সহযোগিতা করতেন। সামনেই বড় একটা অনুষ্ঠান, নামী-দামি সব গেস্ট। ভেন্যু আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তন অথবা ছায়ানট হবে, মনে নেই। কবরী তখন সংসদ সদস্য। আমার স্পেশাল দায়িত্ব পড়ল ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করার। নানাভাবে চেষ্টা করলাম। যেটা হয়, ওনারা ব্যস্ত মানুষ। এদিক-ওদিক নানা রকম দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত থাকেন। পাওয়াটাই মুশকিল। ভাগ্যক্রমে পেয়ে গেলাম। কয়েক দফা যোগাযোগের পর- একদিন দুপুরের পর আমাকে যেতে বললেন। গুলশানে খুঁজে খুঁজে বাসা বের করলাম। রিসেপশন থেকে ইন্টারকমে কথা হলো। কবরী আপা, উপরে যেতে বললেন না। কথা দিলেন সেমিনারে থাকবেন। আমি তাঁর কথামতো আমন্ত্রণপত্র রেখে এলাম।
অনুষ্ঠানের দিন অপেক্ষা করি। আরও গেস্ট আছেন, তাঁরা ফোন করেন, আসেন। আমি অভ্যর্থনা জানাই। কিন্তু কবরী আপা আসেন না। অনুষ্ঠান শুরু হয় হয়, আমি মোবাইলে ফোন দিলাম।
কবরী আপা নিচুস্বরে বললেন, ‘আমি পার্লামেন্টে। স্যরি, ইমার্জেন্সি থাকায় আসতে হয়েছে। আপনারা কিছু মনে করবেন না। অনুষ্ঠান চালিয়ে যান।’
-আমি বললাম, ‘জ্বি, আপা। পরে আবার ডাকলে ফ্রি থাকলে আইসেন।’
-‘আচ্ছা, আচ্ছা।’
সারাহ বেগম কবরী, আপনি আমার প্রিয় অভিনেত্রী। ১২ দিন করোনাভাইরাসের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অন্যভুবনে চলে গেলেন। রেখে গেলেন মহত্তম শিল্পকর্ম সারেং বউ । অযুত-নিযুত ভক্তের হৃদয় কাঁদছে আপনার জন্য। সবার ভালোবাসা আপনাকে ঘিরে আছে। আপনার আত্মার চিরশান্তি কামনা করি। ১৭ এপ্রিল ২০২১
যেকোনো সামাজিক বিষয় বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কখনো কখনো তত্ত্ব দিয়ে তার ব্যাখ্যা করি, আবার কখনো কখনো বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয় বা সমস্যার বিশ্লেষণ করি। তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা...
৪ ঘণ্টা আগেগাজার সবচেয়ে সুপরিচিত ফুটবল স্টেডিয়ামটি এখন বিশৃঙ্খলায় ভরা। মাঠ ও বসার জায়গায় বাস্তুচ্যুত লোকের বন্যা। সবার পিঠে ব্যাগ আর কিছু কাপড়। কেউ অসুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করছেন বা আহত আত্মীয়দের নিয়ে চলেছেন। আবার কেউ কেউ একা হাঁটছেন, খালি পায়েই হেঁটে চলেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেসিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
৪ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
৪ ঘণ্টা আগে