আবদুর রাজ্জাক
বেশ কয়েক বছর ধরে পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে সম্পদ পাচার হচ্ছে। কোনো কোনো সময় বছরে ৬০-৮০ হাজার কোটি টাকা বা কমবেশি একটি প্রাক্কলন হাজির করা হয়।
তবে সম্পদ পাচার হচ্ছে, বিদেশের ব্যাংকে অর্থ জমা আছে, সুইস ব্যাংকসহ অন্যান্য দেশের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা জমা আছে, এ কথা সত্য। নগদ অর্থ ছাড়াও বিপুল পরিমাণ সম্পদ আছে কয়েকটি দেশে। কানাডা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বহু দেশে বাংলাদেশিদের অনেক সম্পদ আছে বলে জানা যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে, সব সম্পদই কি বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া, অর্থের বিনিময়ে কেনা হয়েছে, নাকি কেউ কেউ ওই সব দেশে বা অন্য কোনো দেশে ব্যবসা, চাকরি করে এসব সম্পদ গড়েছেন? হয়তো কেউ কেউ বাংলাদেশ থেকে সম্পদ পাচার না করেও প্রবাসে ব্যবসা ও চাকরি করে ওই সব দেশে সম্পদ করেছেন।
তবে বেশ কিছুদিন ধরে পত্রপত্রিকা দেখলে বোঝা যাবে, আমাদের দেশের কিছু মানুষ বাংলাদেশে থাকেন, এই দেশেই ব্যবসা করেন, এই দেশে রাজনীতি করেন, এই দেশের উচ্চপদে চাকরি করেন, কালেভদ্রে বিদেশে যান, অথচ তাদের ছেলেমেয়ে-স্ত্রীসহ নিকটাত্মীয়রা উন্নত দেশগুলোয় প্রচুর সম্পদ করেছেন। এই সম্পদ কোত্থেকে এল, এ তথ্য বের করা দরকার।
সম্প্রতি মহামান্য হাইকোর্টে ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট একটি তথ্য দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৩ হাজার ৯৩৪ ব্যক্তির যৌথ নাগরিকত্ব আছে। এ ক্ষেত্রে একটু খোঁজখবর নিলে দেখা যাবে, সব দ্বৈত নাগরিক সম্পদ পাচারের সঙ্গে যুক্ত নন। বহু গবেষক, বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী ব্যক্তির দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিক না হয়েও সম্পদ পাচার করা যেতে পারে। অথবা অন্য দেশের নাগরিক, কিন্তু জন্মসূত্রে বাংলাদেশি, জীবনের কোনো একপর্যায়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বিসর্জন দিয়ে অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন, এমন মানুষও বিভিন্নভাবে বাংলাদেশ থেকে সম্পদ পাচার করে নিয়ে থাকতে পারেন।
সম্পদ কীভাবে পাচার হয়? আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং, হুন্ডি বা সম্পদ বিনিময়ের মাধ্যমে। আজ বলব এই সম্পদের উৎস কীভাবে জানা যাবে এবং কীভাবে তা দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে, তা নিয়ে। বর্তমানে আমরা দেখি, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদক তৎপর রয়েছে। ব্যাংকিং পদ্ধতির মাধ্যমে যদি কেউ মানি লন্ডারিং করে থাকেন, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ইনটেলিজেন্স উইং ব্যবহার করে হয়তো কিছুটা তথ্য বের করতে পারবে। দুদক কোনো তথ্য পেলে, যে দেশের সম্পদ পাচার হয়েছে, সেই দেশের সরকারকে অনুরোধ করতে পারবে তথ্য দেওয়ার জন্য। এখানে যেটা করতে হবে, এই দুটি সংস্থার সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগের একটি শাখা আছে, আন্তর্জাতিক কর। এই শাখার মাধ্যমে বিদেশে সঞ্চিত সম্পদ ও অর্থের খোঁজ করা যেতে পারে। বিদেশে কোনো সম্পদ করতে হলে, সেই দেশের আয়কর নথিতে সম্পূর্ণ হিসাবসহ ব্যাখ্যা দিতে হয়। অতএব বাংলাদেশের কোনো নাগরিক, সে যদি দ্বৈত নাগরিকত্ব লাভ করে বা না-ও করে থাকে, তবে তার সম্পদের হিসাব সংশ্লিষ্ট দেশের আয়কর নথিতে সংরক্ষিত আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগ থেকে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, দ্বৈত কর চুক্তি। এই চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বৈত কর পরিহারের পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
যে কয়েকটি দেশ আমি উল্লেখ করলাম, হয়তো এসব দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বৈত কর চুক্তি আছে, আর যদি না থাকে, এই দ্বৈত কর চুক্তি করে, ওই সব দেশের আয়কর বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে, যেসব ব্যক্তি বিদেশে সম্পদ পাচার করেছেন, তাঁদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
এখন শুধু দরকার সরকারের সদিচ্ছা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগ, দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে, অর্থ পাচার বা সম্পদ পাচার সুনির্দিষ্ট করে, দোষী ব্যক্তিদের সম্পত্তি ফিরিয়ে আনা যেতে পারে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
লেখক: প্রকৌশলী
বেশ কয়েক বছর ধরে পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে সম্পদ পাচার হচ্ছে। কোনো কোনো সময় বছরে ৬০-৮০ হাজার কোটি টাকা বা কমবেশি একটি প্রাক্কলন হাজির করা হয়।
তবে সম্পদ পাচার হচ্ছে, বিদেশের ব্যাংকে অর্থ জমা আছে, সুইস ব্যাংকসহ অন্যান্য দেশের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা জমা আছে, এ কথা সত্য। নগদ অর্থ ছাড়াও বিপুল পরিমাণ সম্পদ আছে কয়েকটি দেশে। কানাডা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বহু দেশে বাংলাদেশিদের অনেক সম্পদ আছে বলে জানা যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে, সব সম্পদই কি বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া, অর্থের বিনিময়ে কেনা হয়েছে, নাকি কেউ কেউ ওই সব দেশে বা অন্য কোনো দেশে ব্যবসা, চাকরি করে এসব সম্পদ গড়েছেন? হয়তো কেউ কেউ বাংলাদেশ থেকে সম্পদ পাচার না করেও প্রবাসে ব্যবসা ও চাকরি করে ওই সব দেশে সম্পদ করেছেন।
তবে বেশ কিছুদিন ধরে পত্রপত্রিকা দেখলে বোঝা যাবে, আমাদের দেশের কিছু মানুষ বাংলাদেশে থাকেন, এই দেশেই ব্যবসা করেন, এই দেশে রাজনীতি করেন, এই দেশের উচ্চপদে চাকরি করেন, কালেভদ্রে বিদেশে যান, অথচ তাদের ছেলেমেয়ে-স্ত্রীসহ নিকটাত্মীয়রা উন্নত দেশগুলোয় প্রচুর সম্পদ করেছেন। এই সম্পদ কোত্থেকে এল, এ তথ্য বের করা দরকার।
সম্প্রতি মহামান্য হাইকোর্টে ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট একটি তথ্য দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৩ হাজার ৯৩৪ ব্যক্তির যৌথ নাগরিকত্ব আছে। এ ক্ষেত্রে একটু খোঁজখবর নিলে দেখা যাবে, সব দ্বৈত নাগরিক সম্পদ পাচারের সঙ্গে যুক্ত নন। বহু গবেষক, বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী ব্যক্তির দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিক না হয়েও সম্পদ পাচার করা যেতে পারে। অথবা অন্য দেশের নাগরিক, কিন্তু জন্মসূত্রে বাংলাদেশি, জীবনের কোনো একপর্যায়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বিসর্জন দিয়ে অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন, এমন মানুষও বিভিন্নভাবে বাংলাদেশ থেকে সম্পদ পাচার করে নিয়ে থাকতে পারেন।
সম্পদ কীভাবে পাচার হয়? আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং, হুন্ডি বা সম্পদ বিনিময়ের মাধ্যমে। আজ বলব এই সম্পদের উৎস কীভাবে জানা যাবে এবং কীভাবে তা দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে, তা নিয়ে। বর্তমানে আমরা দেখি, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদক তৎপর রয়েছে। ব্যাংকিং পদ্ধতির মাধ্যমে যদি কেউ মানি লন্ডারিং করে থাকেন, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ইনটেলিজেন্স উইং ব্যবহার করে হয়তো কিছুটা তথ্য বের করতে পারবে। দুদক কোনো তথ্য পেলে, যে দেশের সম্পদ পাচার হয়েছে, সেই দেশের সরকারকে অনুরোধ করতে পারবে তথ্য দেওয়ার জন্য। এখানে যেটা করতে হবে, এই দুটি সংস্থার সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগের একটি শাখা আছে, আন্তর্জাতিক কর। এই শাখার মাধ্যমে বিদেশে সঞ্চিত সম্পদ ও অর্থের খোঁজ করা যেতে পারে। বিদেশে কোনো সম্পদ করতে হলে, সেই দেশের আয়কর নথিতে সম্পূর্ণ হিসাবসহ ব্যাখ্যা দিতে হয়। অতএব বাংলাদেশের কোনো নাগরিক, সে যদি দ্বৈত নাগরিকত্ব লাভ করে বা না-ও করে থাকে, তবে তার সম্পদের হিসাব সংশ্লিষ্ট দেশের আয়কর নথিতে সংরক্ষিত আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগ থেকে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, দ্বৈত কর চুক্তি। এই চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বৈত কর পরিহারের পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
যে কয়েকটি দেশ আমি উল্লেখ করলাম, হয়তো এসব দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বৈত কর চুক্তি আছে, আর যদি না থাকে, এই দ্বৈত কর চুক্তি করে, ওই সব দেশের আয়কর বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে, যেসব ব্যক্তি বিদেশে সম্পদ পাচার করেছেন, তাঁদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
এখন শুধু দরকার সরকারের সদিচ্ছা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগ, দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে, অর্থ পাচার বা সম্পদ পাচার সুনির্দিষ্ট করে, দোষী ব্যক্তিদের সম্পত্তি ফিরিয়ে আনা যেতে পারে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
লেখক: প্রকৌশলী
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১০ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
১০ ঘণ্টা আগে