সানজিদা সামরিন
সংকটটা সহজ নয়। এ সময়ের তরুণেরা জেনে না জেনে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। সেটা শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা বিশ্বেই এই প্রবণতা বাড়ছে। একটা গোটা প্রজন্ম বেড়ে উঠছে বুলিং থেকে সৃষ্ট হতাশা, উদ্বেগ, ভয়ের মধ্যে।
বর্তমান বিশ্বে তরুণ প্রজন্মের দিনের একটি বিরাট অংশ কেটে নিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বাড়ছে মানসিক চাপ। এই মানসিক চাপের অন্যতম কারণ অনলাইন বুলিং।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির বিস্তাররোধে গোটা বিশ্বের দেশগুলো লকডাউন দিয়ে দেয়। গৃহবন্দী হয়ে পড়ে স্কুলপড়ুয়াসহ সব শিক্ষার্থী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশু থেকে শুরু করে উঠতি বয়সীদের স্ক্রিন টাইম বা গ্যাজেটে নিবিষ্ট থাকার পরিমাণ বেড়েছে, এ কথা অস্বীকার করার জো নেই। বাড়ির ভেতরে বসে ছোট্ট ডিভাইসেই তারা চড়ে বেড়াচ্ছে গোটা বিশ্ব। অঢেল সময় কাটাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে প্রতিদিন ভারী হচ্ছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টের ঝুলি। শিকার হচ্ছে সাইবার বুলিংয়ের।
ইউরোপীয় কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে ২০২০ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৬ হাজারের বেশি শিশুর ওপর করা সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু তাদের জীবদ্দশায় কমপক্ষে এক প্রকারের সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে। প্রতিবেদনটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়।
সমীক্ষায় ১১টি ইউরোপীয় দেশের ৪৪ শতাংশ শিশু জানিয়েছে, যারা লকডাউনের আগে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছিল, লকডাউনের সময় হয়রানির শিকার হয়েছে তার চেয়েও বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনলাইন বুলিংকে জনস্বাস্থ্যের একটি বড় সমস্যা হিসেবে বর্ণনা করেছে। এটি হতাশা, উদ্বেগ ও আত্মহত্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে। ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুসারে, কোভিড–পরবর্তী কালে, এর প্রভাবে অনেক শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়তে পারে।
সাইবার বুলিং কী?
ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, ই-মেইল, চ্যাট রুম, ফেসবুক ও টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাউকে হুমকি, উৎপীড়ন, ভয় দেখানো বা হয়রানি করাকে সাইবার বুলিং বলে।
আশপাশে চোখ বুলিয়ে নিলেই সেটা বোঝা যাবে। শুধু সহজ ছোট্ট উদাহরণ দিয়েই যদি বলি, মৌমিতা একদিন ফেসবুক ইনবক্সের স্পাম থেকে আবিষ্কার করল একটি প্রোফাইল লিংক। ক্লিক করতেই দেখল ফেসবুকে তার নাম ও ছবি ব্যবহার করে কেউ ফেইক অ্যাকাউন্ট খুলেছে। প্রোফাইল ছবিটার মুখশ্রী তার হলেও কাটপেস্ট করে শরীর বদলে দেওয়া হয়েছে। টাইমলাইন ভর্তি অকথ্য ভাষায় সব স্ট্যাটাস। কমেন্টে হুমড়ি খেয়ে পড়াদের ভাষাও পড়ার অযোগ্য। মুহূর্তেই অসাড় হয়ে এল মৌমিতার গোটা শরীর। যিনি এ লিংক পাঠিয়েছেন, তার প্রোফাইল লক করা। এটা যে কারও ফেইক অ্যাকাউন্ট, তা বুঝতে বাকি নেই। নিজের নামের ওই ফেইক আইডি রিপোর্ট করে সে। কাছের কজন বন্ধুকে ব্যাপারটা জানালেও এমন ঘটনায় আমাদের দেশে ছেলেমেয়েরা বাবা–মা বা অভিভাবকদের কাছে বলে না। এর একটা বড় কারণ বিপরীত প্রতিক্রিয়া।
সাইবার বুলিং বিভিন্ন রকম হতে পারে। হুমকি দেওয়া, উত্তেজনাকর অপমান, সাম্প্রদায়িক বা নৃ-তাত্ত্বিক তিরস্কার, ভুক্তভোগীর কম্পিউটারে ভাইরাস সংক্রমণের চেষ্টা ইত্যাদি।
সাইবার বুলিং অপরাধীর অধিকাংশই টিনএজার বা তরুণ প্রজন্ম। এ ক্ষেত্রে উৎপীড়ক একটি ফলস ইউজার নেম ব্যবহার করে আসল পরিচয় গোপন রাখে। যার ফলে ভুক্তভোগী আসল অপরাধীকে সহজে চিহ্নিত করতে পারে না।
অনলাইনে প্রায় ৪৩ শতাংশ ছেলে-মেয়েই এ উৎপীড়নের শিকার হয়। এটি প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের বেলায় একবারের বেশি সময় ঘটে। এদিক থেকে বাংলাদেশের খবর কী? সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের নতুন জরিপ অনুযায়ী, ইন্টারনেট ও ডিভাইসের সহজলভ্যতার কারণে সাইবার হয়রানির ঘটনা শহরগুলোর পাশাপাশি গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে।
বর্তমানে শহরে ৬৪ শতাংশ এবং গ্রামে ৩৩ শতাংশ নারী ভিডিও, বার্তা এবং ছবির মাধ্যমে হয়রানির শিকার হচ্ছে। ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় মেয়েশিশুদের ওপর সাইবার হুমকি’ শীর্ষক জরিপটি শহর ও গ্রামের স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৫৮৪ জন শিক্ষার্থীর ওপর পরিচালিত হয়েছিল।
বলা বাহুল্য, ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় এর ব্যবহার যেমন বেড়েছে পাশাপাশি বেড়েছে এর অপব্যবহার। সম্পর্ক থাকাকালীন অন্তরঙ্গতার ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটছে হরহামেশা। বন্ধুর ফোন গ্যালারি থেকে ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে চলমান সময়ে। এ ছাড়াও কথোপকথনের স্ক্রিনশট বা আদান-প্রদান করা ছবি দিয়ে হুমকির ঘটনা চোখে পড়বে একটু সজাগ হলেই। এর শেষ কোথায়।
এবার উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে, ব্রিটিশ কিশোর-কিশোরীদের ৩৪ শতাংশ মোবাইল গেমস খেলার সময় বুলিংয়ের শিকার হয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ৮০ শতাংশ বা তার বেশি টিনএজার নিয়মিত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। আর মোবাইল ফোন সাইবার বুলিংয়ে সবচেয়ে কমন মাধ্যম। অন্যদিকে, ৬৮ শতাংশ টিনএজার সম্মত হয়েছে যে সাইবার বুলিং একটি বড় সমস্যা। শিক্ষার্থীদের মধ্য়ে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়।
জার্মান ডেটাবেইস কোম্পানি স্ট্যাটিস্টার দেওয়া তথ্যমতে, ভারতে ৩৭ শতাংশ অভিভাবকের ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের সন্তান অনলাইন বুলিংয়ের শিকার। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সূত্র অনুযায়ী, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং নরওয়ের ইউরোপীয় দেশগুলোয় শিশুরা অনলাইনে যৌন হয়রানি ও উৎপীড়নের শিকার হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অনলাইন বুলিংয়ের ১০ জন ভুক্তভোগীর মধ্যে মোটে একজন নিজেদের ভোগান্তির ব্যাপারে বাবা-মা বা বিশ্বস্ত বয়োজ্যেষ্ঠদের জানায়। গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, সাইবার বুলিংয়ের শিকারের দিক থেকে শীর্ষে মেয়েরা। শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায় ৫৮ শতাংশ অনলাইনে কষ্টদায়ক উক্তির শিকার হয়েছে।
দুর্ব্যবহার, উৎপীড়ন, ঠাট্টা, গসিপ দুই থেকে নয়বার বা তার বেশি হলে তা ব্যক্তির আত্মহননের ইচ্ছাকে বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের। এ ছাড়াও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে ভুক্তভোগী শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেস পিরিয়ড পার করতে পারে। বাড়তে পারে হীনম্মন্যতা। যদিও উৎপীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে একেকজনের একেক রকম আচরণ করে। সাইবার বুলিং হতে পারে মেজর ডিপ্রেশন ও উদ্বেগের অন্যতম কারণ।
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
সংকটটা সহজ নয়। এ সময়ের তরুণেরা জেনে না জেনে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। সেটা শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা বিশ্বেই এই প্রবণতা বাড়ছে। একটা গোটা প্রজন্ম বেড়ে উঠছে বুলিং থেকে সৃষ্ট হতাশা, উদ্বেগ, ভয়ের মধ্যে।
বর্তমান বিশ্বে তরুণ প্রজন্মের দিনের একটি বিরাট অংশ কেটে নিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বাড়ছে মানসিক চাপ। এই মানসিক চাপের অন্যতম কারণ অনলাইন বুলিং।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির বিস্তাররোধে গোটা বিশ্বের দেশগুলো লকডাউন দিয়ে দেয়। গৃহবন্দী হয়ে পড়ে স্কুলপড়ুয়াসহ সব শিক্ষার্থী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশু থেকে শুরু করে উঠতি বয়সীদের স্ক্রিন টাইম বা গ্যাজেটে নিবিষ্ট থাকার পরিমাণ বেড়েছে, এ কথা অস্বীকার করার জো নেই। বাড়ির ভেতরে বসে ছোট্ট ডিভাইসেই তারা চড়ে বেড়াচ্ছে গোটা বিশ্ব। অঢেল সময় কাটাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে প্রতিদিন ভারী হচ্ছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টের ঝুলি। শিকার হচ্ছে সাইবার বুলিংয়ের।
ইউরোপীয় কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে ২০২০ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৬ হাজারের বেশি শিশুর ওপর করা সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু তাদের জীবদ্দশায় কমপক্ষে এক প্রকারের সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে। প্রতিবেদনটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়।
সমীক্ষায় ১১টি ইউরোপীয় দেশের ৪৪ শতাংশ শিশু জানিয়েছে, যারা লকডাউনের আগে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছিল, লকডাউনের সময় হয়রানির শিকার হয়েছে তার চেয়েও বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনলাইন বুলিংকে জনস্বাস্থ্যের একটি বড় সমস্যা হিসেবে বর্ণনা করেছে। এটি হতাশা, উদ্বেগ ও আত্মহত্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে। ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুসারে, কোভিড–পরবর্তী কালে, এর প্রভাবে অনেক শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়তে পারে।
সাইবার বুলিং কী?
ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, ই-মেইল, চ্যাট রুম, ফেসবুক ও টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাউকে হুমকি, উৎপীড়ন, ভয় দেখানো বা হয়রানি করাকে সাইবার বুলিং বলে।
আশপাশে চোখ বুলিয়ে নিলেই সেটা বোঝা যাবে। শুধু সহজ ছোট্ট উদাহরণ দিয়েই যদি বলি, মৌমিতা একদিন ফেসবুক ইনবক্সের স্পাম থেকে আবিষ্কার করল একটি প্রোফাইল লিংক। ক্লিক করতেই দেখল ফেসবুকে তার নাম ও ছবি ব্যবহার করে কেউ ফেইক অ্যাকাউন্ট খুলেছে। প্রোফাইল ছবিটার মুখশ্রী তার হলেও কাটপেস্ট করে শরীর বদলে দেওয়া হয়েছে। টাইমলাইন ভর্তি অকথ্য ভাষায় সব স্ট্যাটাস। কমেন্টে হুমড়ি খেয়ে পড়াদের ভাষাও পড়ার অযোগ্য। মুহূর্তেই অসাড় হয়ে এল মৌমিতার গোটা শরীর। যিনি এ লিংক পাঠিয়েছেন, তার প্রোফাইল লক করা। এটা যে কারও ফেইক অ্যাকাউন্ট, তা বুঝতে বাকি নেই। নিজের নামের ওই ফেইক আইডি রিপোর্ট করে সে। কাছের কজন বন্ধুকে ব্যাপারটা জানালেও এমন ঘটনায় আমাদের দেশে ছেলেমেয়েরা বাবা–মা বা অভিভাবকদের কাছে বলে না। এর একটা বড় কারণ বিপরীত প্রতিক্রিয়া।
সাইবার বুলিং বিভিন্ন রকম হতে পারে। হুমকি দেওয়া, উত্তেজনাকর অপমান, সাম্প্রদায়িক বা নৃ-তাত্ত্বিক তিরস্কার, ভুক্তভোগীর কম্পিউটারে ভাইরাস সংক্রমণের চেষ্টা ইত্যাদি।
সাইবার বুলিং অপরাধীর অধিকাংশই টিনএজার বা তরুণ প্রজন্ম। এ ক্ষেত্রে উৎপীড়ক একটি ফলস ইউজার নেম ব্যবহার করে আসল পরিচয় গোপন রাখে। যার ফলে ভুক্তভোগী আসল অপরাধীকে সহজে চিহ্নিত করতে পারে না।
অনলাইনে প্রায় ৪৩ শতাংশ ছেলে-মেয়েই এ উৎপীড়নের শিকার হয়। এটি প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের বেলায় একবারের বেশি সময় ঘটে। এদিক থেকে বাংলাদেশের খবর কী? সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের নতুন জরিপ অনুযায়ী, ইন্টারনেট ও ডিভাইসের সহজলভ্যতার কারণে সাইবার হয়রানির ঘটনা শহরগুলোর পাশাপাশি গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে।
বর্তমানে শহরে ৬৪ শতাংশ এবং গ্রামে ৩৩ শতাংশ নারী ভিডিও, বার্তা এবং ছবির মাধ্যমে হয়রানির শিকার হচ্ছে। ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় মেয়েশিশুদের ওপর সাইবার হুমকি’ শীর্ষক জরিপটি শহর ও গ্রামের স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৫৮৪ জন শিক্ষার্থীর ওপর পরিচালিত হয়েছিল।
বলা বাহুল্য, ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় এর ব্যবহার যেমন বেড়েছে পাশাপাশি বেড়েছে এর অপব্যবহার। সম্পর্ক থাকাকালীন অন্তরঙ্গতার ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটছে হরহামেশা। বন্ধুর ফোন গ্যালারি থেকে ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে চলমান সময়ে। এ ছাড়াও কথোপকথনের স্ক্রিনশট বা আদান-প্রদান করা ছবি দিয়ে হুমকির ঘটনা চোখে পড়বে একটু সজাগ হলেই। এর শেষ কোথায়।
এবার উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে, ব্রিটিশ কিশোর-কিশোরীদের ৩৪ শতাংশ মোবাইল গেমস খেলার সময় বুলিংয়ের শিকার হয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ৮০ শতাংশ বা তার বেশি টিনএজার নিয়মিত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। আর মোবাইল ফোন সাইবার বুলিংয়ে সবচেয়ে কমন মাধ্যম। অন্যদিকে, ৬৮ শতাংশ টিনএজার সম্মত হয়েছে যে সাইবার বুলিং একটি বড় সমস্যা। শিক্ষার্থীদের মধ্য়ে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়।
জার্মান ডেটাবেইস কোম্পানি স্ট্যাটিস্টার দেওয়া তথ্যমতে, ভারতে ৩৭ শতাংশ অভিভাবকের ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের সন্তান অনলাইন বুলিংয়ের শিকার। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সূত্র অনুযায়ী, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং নরওয়ের ইউরোপীয় দেশগুলোয় শিশুরা অনলাইনে যৌন হয়রানি ও উৎপীড়নের শিকার হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অনলাইন বুলিংয়ের ১০ জন ভুক্তভোগীর মধ্যে মোটে একজন নিজেদের ভোগান্তির ব্যাপারে বাবা-মা বা বিশ্বস্ত বয়োজ্যেষ্ঠদের জানায়। গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, সাইবার বুলিংয়ের শিকারের দিক থেকে শীর্ষে মেয়েরা। শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায় ৫৮ শতাংশ অনলাইনে কষ্টদায়ক উক্তির শিকার হয়েছে।
দুর্ব্যবহার, উৎপীড়ন, ঠাট্টা, গসিপ দুই থেকে নয়বার বা তার বেশি হলে তা ব্যক্তির আত্মহননের ইচ্ছাকে বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের। এ ছাড়াও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে ভুক্তভোগী শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেস পিরিয়ড পার করতে পারে। বাড়তে পারে হীনম্মন্যতা। যদিও উৎপীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে একেকজনের একেক রকম আচরণ করে। সাইবার বুলিং হতে পারে মেজর ডিপ্রেশন ও উদ্বেগের অন্যতম কারণ।
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২১ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
২১ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
১ দিন আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
১ দিন আগে