সায়মা সাফীজ সুমি
বেশ কিছুদিন ধরেই খেয়াল করছি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কিছুটা হলেও অসন্তুষ্ট আমাদের ওপর। এর একটি অনেক বড় কারণ হলো, আমরা চাইছি আমাদের পূর্বের প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় ওদের বড় করতে, যা আসলে বেশ কঠিন। আমাদের সময় মা-বাবার ইচ্ছে-অনিচ্ছায় বা তাঁদের সিদ্ধান্তে আমাদের শিক্ষা, ক্যারিয়ার অনেকটাই নির্ভর করত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের চাওয়াকে পাত্তাই দেওয়া হতো না। উদাহরণস্বরূপ বলতে পারি আমার পরিবারের কথাই। দুই বোন, তাই দুজনকেই বিজ্ঞান বিভাগেই পড়তে হবে। আমার বড় বোনের সাহিত্যে বেশ দখল ছিল। তার ফলাফলও আমরা দেখেছি দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতায় তার তৃতীয় স্থান পাওয়ায়। এইচএসসিতে হলিক্রসে পড়ার সময়ে কত অনুরোধ করল, তাকে মানবিক বিভাগে দিতে। কিন্তু হলো না, তাকে ডাক্তারি পড়তে হবে। ডাক্তারিতে চান্স পেল না। এতে ও মনে মনে খুশি হলো। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে সুযোগ পেল। মা-বাবা এরপরও চেয়েছিলেন বছর লস দিয়ে ডাক্তারি পড়াতে। কিন্তু বিধিবাম এই প্রথম বোনের অগ্নিমূর্তি দেখতে পেলাম। সে কিছুতেই বছর ক্ষতি করে ডাক্তারি পড়তে রাজি নয়। এভাবেই ওর শিক্ষাজীবন শেষ হলো।
এবার আসা যাক আমার ব্যাপারে, আমি এইচএসসির পর ফ্লাইং ক্লাবে ট্রেনিং নিয়ে পাইলট হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখানেও বিধিবাম, ফর্ম তুললাম কিন্তু জমা দিতে দেওয়া হলো না। কারণ, তাঁদের ধারণা আমি টিকে যাবই। তারপর আবার সেই পুরোনো ইচ্ছে মাথা চাড়া দিল—ডাক্তার বানাতে হবে। এবার বড় বোন নিজের ক্ষেত্রে যা পারেনি, তা-ই করল; বলল, ‘যদি ওর ডাক্তারি পড়তেই হয়, তাহলে ও এইচএসসিই পাস থাকবে।’ তারপর পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি হয়তো নিয়েছি, সুযোগ পেয়েছি তাই। আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাই, আমার মা-বাবা তাঁদের সময়ের জন্য যথেষ্টই শিক্ষিত ও দুজনেই অডিট বিভাগে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। কেন এত বড় গল্পের অবতারণা করা? কারণ, আমি দেখতে পাচ্ছি পরবর্তী প্রজন্মের একটা চাপা ক্ষোভ ইচ্ছের বিরুদ্ধে পড়াশোনা করে এখন প্রচণ্ড হতাশ। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গালভরা শব্দের জন্য পড়ানো হয়েছে, কিন্তু এখন প্রচণ্ড হতাশ, কাজে চরম অনীহা। শুধু কাজেই অনীহা নয়, জীবনের পথ চলায়ও প্রচণ্ড অনীহা।
আমাদের মনে হয় একটু ভাবার সময় এসেছে, প্রজন্মের ইচ্ছা, অনিচ্ছা, ভালো লাগা, মন্দ লাগাকে গুরুত্ব দেওয়া। হয়তো কিছু ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্ত হবে, তাও তাকে ভুল করে শিখতে দিতে হবে। কারণ জীবনটা তার এবং একসময় একাই তাকে চলতে হবে।
পারিবারিক বা সামাজিক চাপে কিছু করলে যেটা হয়, তারা সেটিকে ভালো না বেসে দায় ভেবে কাজটা করে। এতে করে অনেকেই বেশির ভাগ সময় হতাশায় নিমজ্জিত থাকছে। তা ছাড়া তারা অন্যের ইচ্ছেকে শ্রদ্ধা করতে পারে না। তাদের কাছে মনে হয় জোর করে বা চাপিয়ে দিয়ে অনেক কিছু করানো যায়। তা ছাড়া অনেকে এই হতাশা থেকে ভালো থাকার জন্য নেশার জগতে শান্তি খোঁজার চেষ্টা করছে বা করে। আমাদের মনে হয়, সময় এসেছে প্রজন্মের কথাও মন দিয়ে শোনা, তাদেরও গুরুত্ব দেওয়া। আমরা হয়তো বয়সে বড়, অভিজ্ঞতাও বেশি; তারপরও বলব—নতুনকে গ্রহণ করার শক্তি ওদের চেয়ে আমাদের কম। নতুনকে গ্রহণ করার মানসিকতা না থাকলে আমাদের একটি হতাশ প্রজন্ম দেখা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। কারণ, তথ্যপ্রযুক্তির কারণে বিশ্বায়নের যুগে আমরা চাইলেও তাদের ছোট্ট গণ্ডিতে আটকে রাখতে পারব না। জানি এবং মানি—এতে ওদের ভুল হবে, মুখ থুবড়ে পড়বে, সময় নষ্ট হবে—তারপরও এত এত হতাশ মুখ দেখতে হবে না। কারণ, বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, তারা তাদের কাজের দায়ভার অন্যের ওপর চাপাতে ভালোবাসে না, পছন্দ করে না। ওরা স্বীকার করে—দায় তার নিজের। তা না-হলে আমরা এমন সব প্রজন্ম রেখে যাব—জীবন তাদের, কিন্তু ইচ্ছে আমাদের।
বেশ কিছুদিন ধরেই খেয়াল করছি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কিছুটা হলেও অসন্তুষ্ট আমাদের ওপর। এর একটি অনেক বড় কারণ হলো, আমরা চাইছি আমাদের পূর্বের প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় ওদের বড় করতে, যা আসলে বেশ কঠিন। আমাদের সময় মা-বাবার ইচ্ছে-অনিচ্ছায় বা তাঁদের সিদ্ধান্তে আমাদের শিক্ষা, ক্যারিয়ার অনেকটাই নির্ভর করত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের চাওয়াকে পাত্তাই দেওয়া হতো না। উদাহরণস্বরূপ বলতে পারি আমার পরিবারের কথাই। দুই বোন, তাই দুজনকেই বিজ্ঞান বিভাগেই পড়তে হবে। আমার বড় বোনের সাহিত্যে বেশ দখল ছিল। তার ফলাফলও আমরা দেখেছি দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতায় তার তৃতীয় স্থান পাওয়ায়। এইচএসসিতে হলিক্রসে পড়ার সময়ে কত অনুরোধ করল, তাকে মানবিক বিভাগে দিতে। কিন্তু হলো না, তাকে ডাক্তারি পড়তে হবে। ডাক্তারিতে চান্স পেল না। এতে ও মনে মনে খুশি হলো। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে সুযোগ পেল। মা-বাবা এরপরও চেয়েছিলেন বছর লস দিয়ে ডাক্তারি পড়াতে। কিন্তু বিধিবাম এই প্রথম বোনের অগ্নিমূর্তি দেখতে পেলাম। সে কিছুতেই বছর ক্ষতি করে ডাক্তারি পড়তে রাজি নয়। এভাবেই ওর শিক্ষাজীবন শেষ হলো।
এবার আসা যাক আমার ব্যাপারে, আমি এইচএসসির পর ফ্লাইং ক্লাবে ট্রেনিং নিয়ে পাইলট হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখানেও বিধিবাম, ফর্ম তুললাম কিন্তু জমা দিতে দেওয়া হলো না। কারণ, তাঁদের ধারণা আমি টিকে যাবই। তারপর আবার সেই পুরোনো ইচ্ছে মাথা চাড়া দিল—ডাক্তার বানাতে হবে। এবার বড় বোন নিজের ক্ষেত্রে যা পারেনি, তা-ই করল; বলল, ‘যদি ওর ডাক্তারি পড়তেই হয়, তাহলে ও এইচএসসিই পাস থাকবে।’ তারপর পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি হয়তো নিয়েছি, সুযোগ পেয়েছি তাই। আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাই, আমার মা-বাবা তাঁদের সময়ের জন্য যথেষ্টই শিক্ষিত ও দুজনেই অডিট বিভাগে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। কেন এত বড় গল্পের অবতারণা করা? কারণ, আমি দেখতে পাচ্ছি পরবর্তী প্রজন্মের একটা চাপা ক্ষোভ ইচ্ছের বিরুদ্ধে পড়াশোনা করে এখন প্রচণ্ড হতাশ। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গালভরা শব্দের জন্য পড়ানো হয়েছে, কিন্তু এখন প্রচণ্ড হতাশ, কাজে চরম অনীহা। শুধু কাজেই অনীহা নয়, জীবনের পথ চলায়ও প্রচণ্ড অনীহা।
আমাদের মনে হয় একটু ভাবার সময় এসেছে, প্রজন্মের ইচ্ছা, অনিচ্ছা, ভালো লাগা, মন্দ লাগাকে গুরুত্ব দেওয়া। হয়তো কিছু ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্ত হবে, তাও তাকে ভুল করে শিখতে দিতে হবে। কারণ জীবনটা তার এবং একসময় একাই তাকে চলতে হবে।
পারিবারিক বা সামাজিক চাপে কিছু করলে যেটা হয়, তারা সেটিকে ভালো না বেসে দায় ভেবে কাজটা করে। এতে করে অনেকেই বেশির ভাগ সময় হতাশায় নিমজ্জিত থাকছে। তা ছাড়া তারা অন্যের ইচ্ছেকে শ্রদ্ধা করতে পারে না। তাদের কাছে মনে হয় জোর করে বা চাপিয়ে দিয়ে অনেক কিছু করানো যায়। তা ছাড়া অনেকে এই হতাশা থেকে ভালো থাকার জন্য নেশার জগতে শান্তি খোঁজার চেষ্টা করছে বা করে। আমাদের মনে হয়, সময় এসেছে প্রজন্মের কথাও মন দিয়ে শোনা, তাদেরও গুরুত্ব দেওয়া। আমরা হয়তো বয়সে বড়, অভিজ্ঞতাও বেশি; তারপরও বলব—নতুনকে গ্রহণ করার শক্তি ওদের চেয়ে আমাদের কম। নতুনকে গ্রহণ করার মানসিকতা না থাকলে আমাদের একটি হতাশ প্রজন্ম দেখা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। কারণ, তথ্যপ্রযুক্তির কারণে বিশ্বায়নের যুগে আমরা চাইলেও তাদের ছোট্ট গণ্ডিতে আটকে রাখতে পারব না। জানি এবং মানি—এতে ওদের ভুল হবে, মুখ থুবড়ে পড়বে, সময় নষ্ট হবে—তারপরও এত এত হতাশ মুখ দেখতে হবে না। কারণ, বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, তারা তাদের কাজের দায়ভার অন্যের ওপর চাপাতে ভালোবাসে না, পছন্দ করে না। ওরা স্বীকার করে—দায় তার নিজের। তা না-হলে আমরা এমন সব প্রজন্ম রেখে যাব—জীবন তাদের, কিন্তু ইচ্ছে আমাদের।
যেকোনো সামাজিক বিষয় বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কখনো কখনো তত্ত্ব দিয়ে তার ব্যাখ্যা করি, আবার কখনো কখনো বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয় বা সমস্যার বিশ্লেষণ করি। তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা...
১ ঘণ্টা আগেগাজার সবচেয়ে সুপরিচিত ফুটবল স্টেডিয়ামটি এখন বিশৃঙ্খলায় ভরা। মাঠ ও বসার জায়গায় বাস্তুচ্যুত লোকের বন্যা। সবার পিঠে ব্যাগ আর কিছু কাপড়। কেউ অসুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করছেন বা আহত আত্মীয়দের নিয়ে চলেছেন। আবার কেউ কেউ একা হাঁটছেন, খালি পায়েই হেঁটে চলেছেন।
২ ঘণ্টা আগেসিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
২ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
২ ঘণ্টা আগে