রিক্তা রিচি
রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই তড়িঘড়ি করে প্রস্তুত হতে হয়। অফিসে যাওয়ার তাড়া। এর চেয়েও বড় তাড়া হলো বাস পাওয়ার। মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রী যাওয়ার জন্য যে পরিবহনগুলো থাকে, সেগুলো সব সময় পাওয়া যায় না। চাহিদার তুলনায় বাস কম। মানুষের ভিড় বেশি হলে লাইনে দাঁড়াতে হয় দীর্ঘ সময়। তারপর গাদাগাদি করে বাসে ওঠা, দীর্ঘ জ্যাম পাড়ি দিয়ে ঘণ্টা দুয়েক পর গন্তব্যে পৌঁছানো—চ্যালেঞ্জই বটে। এর চেয়েও বড় বিষয়—বাসে ‘শকুন’-এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া।
আমি জানি না, ভাষার ব্যবহারে আমি খুব রুক্ষ কি না। তবে যেটি বলতে চেয়েছি, সেটি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন। হ্যাঁ, আমি মেয়ে। আর মেয়ে বলেই হয়তো সব সময় আমার দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকান কেউ কেউ। বাসে দুই সিট পাশাপাশি। আর পাশে একের পর এক ব্যক্তি বসেন। নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছালে একই সিটে অন্যজন বসেন। কখনো পুরুষ, কখনো নারী। যখন একজন নারীর পরিবর্তে একজন পুরুষ পাশে বসেন, অনেকটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারণ, কখন যেন কিছুই হয়নি, এভাবে গায়ে গা লাগিয়ে বসে পড়ে!
কিংবা সিটটা তিনি এমন মনে করে নেন, যেন তা নিজের ঘরের রিল্যাক্সিং/রকিং চেয়ার। কিংবা এমনভাবে হাত-পা নাড়াচাড়া করেন, যেন পাশে থাকা ব্যক্তির গায়ে স্পর্শ লাগে। তাঁর পাশে যে আরেকজন মানুষ আছেন, যিনি বিব্রত হচ্ছেন কি না, তা নিয়ে যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই।
এমনও অভিজ্ঞতা হয়েছে, বারবার পাশে বসে থাকা পুরুষটাকে বলেছি আরেকটু চেপে বসতে। কিছুক্ষণ ঠিক থাকলেও পরে আবারও আগের মতো অবস্থা। সবার কথা বলছি না। তবে কেউ কেউ এমন। আর এমনটা শুধু আমার সঙ্গে হয়, তা নয়। বাসে করে কাজে যেতে হয়, এমন অধিকাংশ নারীর সঙ্গে এ রকমটা নিত্যদিন হয়।
বাসভর্তি মানুষ। বাসের সব কটি সিট কানায় কানায় পূর্ণ। তারপরও অসংখ্য মানুষকে বাসে ওঠানো হয়। সিটিং বাসের ভাড়া নিলেও অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো হয়। অতিরিক্ত যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকেন। ধরুন, একজন পুরুষ দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর পাশের সিটে একজন নারী বসে আছেন। অনিচ্ছা-ইচ্ছাকৃতভাবে নারীর গায়ে ঠিকই স্পর্শ লাগে। অনিচ্ছাকৃত স্পর্শটাকে অন্য চোখে দেখছি না। তবে উদ্দেশ্য যদি হয় একজন নারীকে ছোঁয়া, তাহলে বিষয়টি অবশ্যই লজ্জার। ব্যাপারটি শুধু নারীদের জন্য নয়, পুরুষের জন্যও লজ্জার। একজন সত্যিকারের পুরুষ নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন, যত্নবান হবেন, নারীর প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন—এমনটাই প্রত্যাশা করি, এমনটাই হওয়া উচিত। কিন্তু যাঁরা ঘরে-বাইরে, বাসে, রাস্তায় কিংবা হাঁটার সময় বিভিন্নভাবে নারীর শরীর ছুঁতে চেষ্টা করেন, তাঁদের আসলে কী বলব? নারী দেখলেই যাঁদের কামুক দৃষ্টি জেগে ওঠে, তাঁদের কী বলা যায়!
শুধু বাসে নয়, নিউমার্কেট-নীলক্ষেত-ফার্মগেট ও ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় যাঁরা নিয়মিত চলাচল করেন কিংবা হঠাৎ এক দিন এই পথে হেঁটেছেন, তাঁরা জানেন একজন নারীকে কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কতভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়। কোথাও নিরাপদ নয় একজন নারী। সে শিশু হোক, কিশোরী, যুবতী কিংবা বৃদ্ধা। অনাকাঙ্ক্ষিত কালো হাতের স্পর্শ পিছু ছাড়ে না।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা হলো মূল বিষয়। মহামারির এই সময়ে এতটুকু পরিবর্তন আসেনি সেসব মানুষের মনে।
তাঁরা আগের মতোই নারীর শরীর ঘেঁষে বসতে চাইছেন, অহেতুক স্পর্শ করতে চাইছেন নারীর শরীর! ভাবা যায়! এতটুকু বিবেকবোধ জাগ্রত হয়নি তাঁদের! ভাবলেই গা শিউরে ওঠে।
লেখক: সাংবাদিক
রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই তড়িঘড়ি করে প্রস্তুত হতে হয়। অফিসে যাওয়ার তাড়া। এর চেয়েও বড় তাড়া হলো বাস পাওয়ার। মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রী যাওয়ার জন্য যে পরিবহনগুলো থাকে, সেগুলো সব সময় পাওয়া যায় না। চাহিদার তুলনায় বাস কম। মানুষের ভিড় বেশি হলে লাইনে দাঁড়াতে হয় দীর্ঘ সময়। তারপর গাদাগাদি করে বাসে ওঠা, দীর্ঘ জ্যাম পাড়ি দিয়ে ঘণ্টা দুয়েক পর গন্তব্যে পৌঁছানো—চ্যালেঞ্জই বটে। এর চেয়েও বড় বিষয়—বাসে ‘শকুন’-এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া।
আমি জানি না, ভাষার ব্যবহারে আমি খুব রুক্ষ কি না। তবে যেটি বলতে চেয়েছি, সেটি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন। হ্যাঁ, আমি মেয়ে। আর মেয়ে বলেই হয়তো সব সময় আমার দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকান কেউ কেউ। বাসে দুই সিট পাশাপাশি। আর পাশে একের পর এক ব্যক্তি বসেন। নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছালে একই সিটে অন্যজন বসেন। কখনো পুরুষ, কখনো নারী। যখন একজন নারীর পরিবর্তে একজন পুরুষ পাশে বসেন, অনেকটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারণ, কখন যেন কিছুই হয়নি, এভাবে গায়ে গা লাগিয়ে বসে পড়ে!
কিংবা সিটটা তিনি এমন মনে করে নেন, যেন তা নিজের ঘরের রিল্যাক্সিং/রকিং চেয়ার। কিংবা এমনভাবে হাত-পা নাড়াচাড়া করেন, যেন পাশে থাকা ব্যক্তির গায়ে স্পর্শ লাগে। তাঁর পাশে যে আরেকজন মানুষ আছেন, যিনি বিব্রত হচ্ছেন কি না, তা নিয়ে যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই।
এমনও অভিজ্ঞতা হয়েছে, বারবার পাশে বসে থাকা পুরুষটাকে বলেছি আরেকটু চেপে বসতে। কিছুক্ষণ ঠিক থাকলেও পরে আবারও আগের মতো অবস্থা। সবার কথা বলছি না। তবে কেউ কেউ এমন। আর এমনটা শুধু আমার সঙ্গে হয়, তা নয়। বাসে করে কাজে যেতে হয়, এমন অধিকাংশ নারীর সঙ্গে এ রকমটা নিত্যদিন হয়।
বাসভর্তি মানুষ। বাসের সব কটি সিট কানায় কানায় পূর্ণ। তারপরও অসংখ্য মানুষকে বাসে ওঠানো হয়। সিটিং বাসের ভাড়া নিলেও অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো হয়। অতিরিক্ত যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকেন। ধরুন, একজন পুরুষ দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর পাশের সিটে একজন নারী বসে আছেন। অনিচ্ছা-ইচ্ছাকৃতভাবে নারীর গায়ে ঠিকই স্পর্শ লাগে। অনিচ্ছাকৃত স্পর্শটাকে অন্য চোখে দেখছি না। তবে উদ্দেশ্য যদি হয় একজন নারীকে ছোঁয়া, তাহলে বিষয়টি অবশ্যই লজ্জার। ব্যাপারটি শুধু নারীদের জন্য নয়, পুরুষের জন্যও লজ্জার। একজন সত্যিকারের পুরুষ নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন, যত্নবান হবেন, নারীর প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন—এমনটাই প্রত্যাশা করি, এমনটাই হওয়া উচিত। কিন্তু যাঁরা ঘরে-বাইরে, বাসে, রাস্তায় কিংবা হাঁটার সময় বিভিন্নভাবে নারীর শরীর ছুঁতে চেষ্টা করেন, তাঁদের আসলে কী বলব? নারী দেখলেই যাঁদের কামুক দৃষ্টি জেগে ওঠে, তাঁদের কী বলা যায়!
শুধু বাসে নয়, নিউমার্কেট-নীলক্ষেত-ফার্মগেট ও ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় যাঁরা নিয়মিত চলাচল করেন কিংবা হঠাৎ এক দিন এই পথে হেঁটেছেন, তাঁরা জানেন একজন নারীকে কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কতভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়। কোথাও নিরাপদ নয় একজন নারী। সে শিশু হোক, কিশোরী, যুবতী কিংবা বৃদ্ধা। অনাকাঙ্ক্ষিত কালো হাতের স্পর্শ পিছু ছাড়ে না।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা হলো মূল বিষয়। মহামারির এই সময়ে এতটুকু পরিবর্তন আসেনি সেসব মানুষের মনে।
তাঁরা আগের মতোই নারীর শরীর ঘেঁষে বসতে চাইছেন, অহেতুক স্পর্শ করতে চাইছেন নারীর শরীর! ভাবা যায়! এতটুকু বিবেকবোধ জাগ্রত হয়নি তাঁদের! ভাবলেই গা শিউরে ওঠে।
লেখক: সাংবাদিক
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
৩ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
৪ ঘণ্টা আগে