ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
মানুষ আল্লাহর সেরা সৃষ্টি। মানুষের কর্মফল তাঁদের স্বীয় অবস্থানকে এমন স্তরে নিয়ে যায়, যা আল্লাহর কাছে খুবই পছন্দনীয়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বোৎকৃষ্ট মহামানব। তাঁর সাহাবি বা সঙ্গীরাও ছিলেন তাঁর একান্ত অনুসারী। মহানবী (সা.) যা করতেন এবং যা করতে নির্দেশ দিতেন, তাঁরা তা যথাযথভাবে পালন করেছেন। ইসলামি পরিভাষায়, ওই সব লোককে সাহাবি বলা হয়, যাঁরা ইমান অবস্থায় মহানবী (সা.)-কে দেখেছেন এবং ইসলামি জীবন পালন করে ইমানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করেছেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমার সাহাবিগণ প্রত্যেকেই একটি নক্ষত্র সমতুল্য। তোমরা তাঁদের যে কারও অনুসরণ করলে সঠিক পথ প্রাপ্ত হবে।’ তাই সাহাবিগণের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা প্রতিটি উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য অপরিহার্য কর্তব্য।
সাহাবিগণকে গালি দেওয়া অথবা তাঁদের সমালোচনা করা কোনো মানুষের জন্য বৈধ নয়, ইসলাম পরিপন্থী। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আমার সাহাবিগণকে গালি দিও না। কেননা, তাঁরা এমন উচ্চ মর্যাদার অধিকারী যে, তোমাদের যদি কেউ উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে তবু তাঁদের মর্যাদার কোনো অংশ বা তার অর্ধেক সওয়াব পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে না।’ (মিশকাত) যে সাহাবিগণ এত মর্যাদার অধিকারী তাঁরা সবাই জান্নাতি হলেও মহানবী (সা.) তা পার্থিব জগতে বলেননি। কিন্তু এমন কিছুসংখ্যক সাহাবি রয়েছেন, যাঁদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ইসলামে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মহানবী (সা.) তাঁদের দুনিয়ার জগতে জান্নাতি বলে সুসংবাদ প্রদান করেছেন। হাদিসের পরিভাষায় তাঁদের ‘আশারা মুবাশ্শারা’ বলা হয়। ‘আশারা’ অর্থ দশ আর ‘মুবাশ্শারা’ অর্থ সুসংবাদপ্রাপ্ত। তাই ‘আশারা মুবাশ্শারা’ মানে সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবি। তাঁদের তালিকা:
১. আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর প্রকৃত নাম আবদুল্লাহ ইবন উসমান ইবন আমর। তাঁর উপাধি আতিক ও সিদ্দিক। পুরুষদের মধ্যে তিনি প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর হাতে হজরত উসমান, যুবাইর, তালহা, আবদুর রহমান ইবন আউফসহ (রা.) অনেক বড় বড় সাহাবি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তিনি মহানবী (সা.)-এর হিজরতের সঙ্গী ছিলেন। ইসলামের এই প্রথম খলিফা ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
২. উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর হাতে ইসলামকে শক্তিশালী করেন।
৩. উসমান ইবন আফ্ফান (রা.) ছিলেন ইসলামের তৃতীয় খলিফা। তাঁর খেলাফতকাল ছিল প্রায় ১২ বছর।
৪. চতুর্থ খলিফা আলী ইবন আবু তালিব (রা.) সাত বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। তাবুক ছাড়া ইসলামের সব যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন।
৫. তালহা ইবন উবায়দুল্লাহ (রা.) উহুদের যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে খুবই দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছিলেন। শরীরের ২৪টি স্থানে কাফির কর্তৃক আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় মহানবী (সা.) তাঁর নাম রেখেছিলেন ‘তালহাতুল খায়র’ বা ভালো তালহা। তিনি উষ্ট্রের যুদ্ধে শাহাদতবরণ করেন।
৬. যুবায়ের ইবনুল আওয়াম (রা.) হাবশায় হিজরত করেছিলেন। তিনি প্রথম আল্লাহর রাস্তায় তরবারি চালিয়েছিলেন। তিনিও উষ্ট্রের যুদ্ধে শাহাদতবরণ করেন।
৭. আবদুর রহমান ইবন আওফ (রা.)–ও হাবশায় হিজরত করেছিলেন।
৮. সাদ ইবন আবি ওয়াক্কাস (রা.) প্রথম আল্লাহর রাস্তায় তির নিক্ষেপ করেন।
৯. সাঈদ ইবন যায়েদ (রা.) বদর ছাড়া ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১০. আবু উবায়দাহ আল-জাররাহ (রা.) উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর চোয়ালে বিঁধে যাওয়া লৌহবর্ম দাঁত দিয়ে বের করেছিলেন। ফলে তাঁর সামনের দুই দাঁত পড়ে গিয়েছিল।
এই ১০ জন সাহাবির বিবরণ সুনান আবু দাউদ, জামিউত তিরমিজি, সুনান ইবন মাজাহ, মুসনাদ আহমাদসহ বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
মানুষ আল্লাহর সেরা সৃষ্টি। মানুষের কর্মফল তাঁদের স্বীয় অবস্থানকে এমন স্তরে নিয়ে যায়, যা আল্লাহর কাছে খুবই পছন্দনীয়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বোৎকৃষ্ট মহামানব। তাঁর সাহাবি বা সঙ্গীরাও ছিলেন তাঁর একান্ত অনুসারী। মহানবী (সা.) যা করতেন এবং যা করতে নির্দেশ দিতেন, তাঁরা তা যথাযথভাবে পালন করেছেন। ইসলামি পরিভাষায়, ওই সব লোককে সাহাবি বলা হয়, যাঁরা ইমান অবস্থায় মহানবী (সা.)-কে দেখেছেন এবং ইসলামি জীবন পালন করে ইমানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করেছেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমার সাহাবিগণ প্রত্যেকেই একটি নক্ষত্র সমতুল্য। তোমরা তাঁদের যে কারও অনুসরণ করলে সঠিক পথ প্রাপ্ত হবে।’ তাই সাহাবিগণের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা প্রতিটি উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য অপরিহার্য কর্তব্য।
সাহাবিগণকে গালি দেওয়া অথবা তাঁদের সমালোচনা করা কোনো মানুষের জন্য বৈধ নয়, ইসলাম পরিপন্থী। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আমার সাহাবিগণকে গালি দিও না। কেননা, তাঁরা এমন উচ্চ মর্যাদার অধিকারী যে, তোমাদের যদি কেউ উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে তবু তাঁদের মর্যাদার কোনো অংশ বা তার অর্ধেক সওয়াব পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে না।’ (মিশকাত) যে সাহাবিগণ এত মর্যাদার অধিকারী তাঁরা সবাই জান্নাতি হলেও মহানবী (সা.) তা পার্থিব জগতে বলেননি। কিন্তু এমন কিছুসংখ্যক সাহাবি রয়েছেন, যাঁদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ইসলামে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মহানবী (সা.) তাঁদের দুনিয়ার জগতে জান্নাতি বলে সুসংবাদ প্রদান করেছেন। হাদিসের পরিভাষায় তাঁদের ‘আশারা মুবাশ্শারা’ বলা হয়। ‘আশারা’ অর্থ দশ আর ‘মুবাশ্শারা’ অর্থ সুসংবাদপ্রাপ্ত। তাই ‘আশারা মুবাশ্শারা’ মানে সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবি। তাঁদের তালিকা:
১. আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর প্রকৃত নাম আবদুল্লাহ ইবন উসমান ইবন আমর। তাঁর উপাধি আতিক ও সিদ্দিক। পুরুষদের মধ্যে তিনি প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর হাতে হজরত উসমান, যুবাইর, তালহা, আবদুর রহমান ইবন আউফসহ (রা.) অনেক বড় বড় সাহাবি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তিনি মহানবী (সা.)-এর হিজরতের সঙ্গী ছিলেন। ইসলামের এই প্রথম খলিফা ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
২. উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর হাতে ইসলামকে শক্তিশালী করেন।
৩. উসমান ইবন আফ্ফান (রা.) ছিলেন ইসলামের তৃতীয় খলিফা। তাঁর খেলাফতকাল ছিল প্রায় ১২ বছর।
৪. চতুর্থ খলিফা আলী ইবন আবু তালিব (রা.) সাত বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। তাবুক ছাড়া ইসলামের সব যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন।
৫. তালহা ইবন উবায়দুল্লাহ (রা.) উহুদের যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে খুবই দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছিলেন। শরীরের ২৪টি স্থানে কাফির কর্তৃক আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় মহানবী (সা.) তাঁর নাম রেখেছিলেন ‘তালহাতুল খায়র’ বা ভালো তালহা। তিনি উষ্ট্রের যুদ্ধে শাহাদতবরণ করেন।
৬. যুবায়ের ইবনুল আওয়াম (রা.) হাবশায় হিজরত করেছিলেন। তিনি প্রথম আল্লাহর রাস্তায় তরবারি চালিয়েছিলেন। তিনিও উষ্ট্রের যুদ্ধে শাহাদতবরণ করেন।
৭. আবদুর রহমান ইবন আওফ (রা.)–ও হাবশায় হিজরত করেছিলেন।
৮. সাদ ইবন আবি ওয়াক্কাস (রা.) প্রথম আল্লাহর রাস্তায় তির নিক্ষেপ করেন।
৯. সাঈদ ইবন যায়েদ (রা.) বদর ছাড়া ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১০. আবু উবায়দাহ আল-জাররাহ (রা.) উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর চোয়ালে বিঁধে যাওয়া লৌহবর্ম দাঁত দিয়ে বের করেছিলেন। ফলে তাঁর সামনের দুই দাঁত পড়ে গিয়েছিল।
এই ১০ জন সাহাবির বিবরণ সুনান আবু দাউদ, জামিউত তিরমিজি, সুনান ইবন মাজাহ, মুসনাদ আহমাদসহ বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২০ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
২০ ঘণ্টা আগে