গৌতম রায়
নতুন শিক্ষাক্রমের খসড়া প্রকাশের পর যেসব বিষয় সমালোচিত হয়েছিল ও যেগুলো নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, সেগুলো প্রায় একই রকম রেখে শিক্ষাক্রমটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী দিন কয়েক আগে নতুন শিক্ষাক্রমের পরিবর্তনগুলো জানিয়েছেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবিও পরিবর্তনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে এবং বাস্তবায়নের কৌশল জানিয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রমের অনেক শক্তিশালী ও ইতিবাচক দিক রয়েছে, কিন্তু সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে কি না, সেটি বড় প্রশ্ন। সম্ভাবনাময় এই শিক্ষাক্রমটি বাস্তবায়নে যেসব চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে, সেগুলো কার্যকরভাবে মোকাবিলা না করতে পারলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বর্তমান নিবন্ধের ফোকাস মূলত এই চ্যালেঞ্জগুলোই।
নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণি পর্যন্ত একই বা অভিন্ন বিষয় পড়ার সিদ্ধান্তটি একদিকে প্রশংসিত হচ্ছে, অন্যদিকে সমালোচিত হচ্ছে। বর্তমানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সবাইকে একই বা অভিন্ন বিষয় পড়তে হয়। এনসিটিবি জানাচ্ছে, এই সিদ্ধান্তে একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত সবাইকে সমভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলার সুযোগ থাকবে। সবাইকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন বিষয় পড়াতে গিয়ে বিজ্ঞানের আবশ্যকীয় অনেক বিষয়বস্তু ছেঁটে ফেলতে হয়েছে; যেটি দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির কারণ হতে পারে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ এমনিতেই কম। প্রতিবছর বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কমছে। যেখানে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব সামনে রেখে, বিশেষত চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে বিজ্ঞানের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করা প্রয়োজন, সেখানে কেন বিজ্ঞানের প্রতি গুরুত্ব কমানো হলো, তা বোধগম্য নয়। গণিত ও বিজ্ঞানের ভিত ঠিকমতো গড়ে তুলতে পারলে তা নানাভাবে সহায়ক হয়। কিন্তু সেটি না করে এমন কিছু বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে, যেগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারবে কি না, প্রশ্নসাপেক্ষ। একটি শিক্ষাক্রমে কিছু লুক্কায়িত বিষয় থাকে, থাকে সহশিক্ষাক্রমিক বা অন্যান্য কার্যক্রম। সদিচ্ছা ও পরিকল্পনা থাকলে অনেক বিষয় সরাসরি পাঠ্যপুস্তকে না রেখেও পরোক্ষভাবে এবং বিদ্যালয়ে নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে শেখানো যায়। যেমন মূল্যবোধ ও নৈতিকতা নামে একটি বিষয় রয়েছে, যেটি শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে পড়তে হবে। পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে বা বিষয় হিসেবে লেখাপড়া করে মানুষের মূল্যবোধ ও নৈতিকতা বাড়ানো যাবে, এটি সম্ভবত একটি আকাশকুসুম কল্পনা হয়ে থাকবে। এর আগে প্রতিটি ধর্ম বইয়ের সঙ্গে নৈতিকতা
শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। তাতে কি শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি নৈতিকভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে?
বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নপদ্ধতিতে। এই পরিবর্তন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইতিবাচক। কিছু বিষয় অবশ্য নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত ধারাবাহিক বা গাঠনিক মূল্যায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এটিকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হিসেবেই দেখতে হবে। কিন্তু শিক্ষকেরা কি সঠিক ও কার্যকরভাবে শিক্ষার্থীদের সারা বছর ধরে মূল্যায়ন করতে সক্ষম? সারা বছর মূল্যায়ন করার মতো প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্য কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে? এ ধরনের মূল্যায়নের জন্য শিক্ষকেরা কতটুকু প্রস্তুত? স্থানীয় নানা চাপ উপেক্ষা করে শিক্ষকেরা কি আদৌ যথাযথভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে পারবেন? বেশ কয়েক বছর আগে বিদ্যালয়ভিত্তিক মূল্যায়নের একটি প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। সেই অভিজ্ঞতা অনুসারে উপর্যুক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। ফলে, শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নের সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক হলেও কেবল যথাযথ বাস্তবায়নের অভাবে সেটি উল্টো ফল বয়ে আনতে পারে। আশা করি, এনসিটিবি এসব বিষয় সম্পর্কে সজাগ।
তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো বার্ষিক পরীক্ষা না থাকার সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়। এই পরিসর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা না থাকার সিদ্ধান্তটি সার্বিকভাবে শিক্ষার মান উন্নয়নে কতটুকু প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে নিশ্চয়ই গবেষণা হবে। ইতিবাচক হলে নীতিনির্ধারকেরা আগামী দিনে বার্ষিক পরীক্ষা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত উঠিয়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করতে পারেন। ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষাও থাকছে না। সে হিসেবে শিক্ষার্থীরা প্রথম বড় আঙ্গিকে পরীক্ষা দেবে এসএসসিতে। সেখানে শুধু দশম শ্রেণির বিষয়বস্তুর ওপর পরীক্ষা হবে। নবম শ্রেণির পাঠ্যবিষয় বাদ রেখে শুধু দশম শ্রেণির ওপর পরীক্ষা যৌক্তিক হচ্ছে কি না, সেটি নিয়ে ভাবনার অবকাশ রয়েছে।
নতুন শিক্ষাক্রমের যে কয়টি বিষয় বিস্মিত করেছে, তার অন্যতম হচ্ছে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটো পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত; অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের দশম, একাদশ ও দ্বাদশ পরপর তিন বছর তিনটি পাবলিক পরীক্ষা দিতে হবে। পাবলিক পরীক্ষার সংখ্যা কমানোর কথা প্রায়ই বলা হচ্ছে নানা মহল থেকে। সরকারও প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করার কথা বলছে। সেখানে এইচএসসিতে পাবলিক পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর কোনো যুক্তিসংগত উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ পড়বে, শিক্ষার্থীরা আরও বেশি করে পরীক্ষামুখী হবে। লেখাপড়ার আয়োজন হবে গৌণ, বাড়বে প্রাইভেট বা কোচিংয়ে পড়ার হার। সব মিলিয়ে এ সিদ্ধান্তটি মাধ্যমিক শিক্ষায় খারাপ ফল বয়ে আনতে পারে।
দশ বছরের বেশি সময় পার হওয়ার পরও যে প্রশ্নের উত্তর এখনো জানা যাচ্ছে না তা হলো, প্রাথমিক স্তরের সীমা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্তই থাকবে, নাকি জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে এটি অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত হবে? ২০১০ সালে বর্তমান শিক্ষানীতি যখন সংসদে গৃহীত হয়, তখন কীভাবে প্রাথমিক স্তর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়ানো যায়, তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্টরা একাধিক কৌশলও প্রণয়ন করেছিলেন। একপর্যায়ে এ নিয়ে আলোচনাই বন্ধ হয়ে যায়। একটি নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলে সেটি বেশ কয়েক বছর কার্যকর থাকে। বর্তমান শিক্ষাক্রম তৈরির সময় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা যায়। সে হিসাবে বলা যায়, ২০৩০ সালের আগে প্রাথমিক স্তরের সীমা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করার চিন্তাভাবনা সরকারের নেই। নতুন শিক্ষাক্রমেও এ-সম্পর্কিত কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। তবে কি সরকার নিজের নীতিকেই অগ্রাহ্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? এনসিটিবি যদিও দাবি করছে যে, শিক্ষানীতির সঙ্গে মিল রেখে নতুন শিক্ষাক্রম করা হয়েছে; অন্তত এ ক্ষেত্রে দাবিটি যথাযথ নয়।
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে সবচেয়ে বড় শঙ্কার জায়গা হলো এর বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়া। গত দুই দশকে একাধিক শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়া হোঁচট খেয়েছে। একটি শিক্ষাক্রমের নানা উপাদান থাকে। বছরের প্রথম দিন পাঠ্যপুস্তক বিতরণে বাংলাদেশ বড় আকারে সাফল্য দেখিয়েছে, কিন্তু ব্যর্থতা রয়েছে শিক্ষক নির্দেশিকা যথাসময়ে তৈরি ও বিতরণে। সাম্প্রতিক সময়ের পাঠ্যপুস্তকগুলোতে বিষয়বস্তু ও উপস্থাপনায় উন্নতি ঘটলেও নানা সমালোচনা রয়েছে। খুব কম সময়ে পাঠ্যপুস্তক তৈরি ও তা যথাযথভাবে সম্পাদনা না করার অভিযোগ রয়েছে এনসিটিবির প্রতি, যার প্রভাব পড়ে বইয়ের মানের ওপর। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা প্রয়োজন। শিক্ষক নির্দেশিকা তৈরি পাঠ্যপুস্তক তৈরির মতোই গুরুত্ব পাওয়া প্রয়োজন। না হলে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে মূল ও বড় ভূমিকা পালন করবেন শিক্ষকেরা। কিন্তু তাঁদের যথাযথভাবে তৈরি না করে শিক্ষাক্রম চালু করা হলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন অনুসারে দ্রুত যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর যে অনুপাত নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই অনুসারে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ্য শিক্ষক রয়েছে কি না, তা দ্রুত যাচাই করা এবং সে অনুসারে শিক্ষক নিয়োগ করা প্রয়োজন। শিক্ষকদের মান ও শিক্ষাদানের প্রতি তাঁদের আগ্রহের বিষয়টিও প্রশ্নযুক্ত। নতুন শিক্ষাক্রম চালুর আগে শিক্ষকদের মান যাচাই করা প্রয়োজন। মানের বিচারে যাঁরা যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারবেন না, তাঁদের বিকল্প সম্পর্কে ভাবতে হবে এবং প্রয়োজনে নতুন মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের যথাযথ প্রশিক্ষণও দিতে হবে। না হলে নতুন শিক্ষাক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে না। সুখবর এটিই যে, সারা দেশে শিক্ষাক্রম চালুর আগে ১০০টি করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাইলটিং করা হবে। আশা করা যায়, এর মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো ভালোভাবে জানা যাবে, যা থেকে এনসিটিবি সারা দেশের জন্য কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করতে পারবে। এসব বিষয় নিয়ে গবেষণার জন্য এনসিটিবির নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি দেশের অপরাপর গবেষণা সংস্থা ও গবেষকদের যুক্ত করা প্রয়োজন। প্রয়োজন তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে অবস্থা যাচাই। না হলে কোনো কোনো
ক্ষেত্রে একপাক্ষিক ফলাফল পাওয়ার আশঙ্কা রয়ে যাবে।
এ-ও বলা প্রয়োজন যে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আয়োজনে শিক্ষায় অর্থায়ন বা বিনিয়োগের বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। বলা হচ্ছে, শিক্ষকদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে শিক্ষকদের দক্ষতা যে পর্যায়ে রয়েছে, সেটির উন্নয়নে শুধু প্রশিক্ষণেই বিপুল অর্থ ব্যয় হবে। পাশাপাশি নতুন বই তৈরি ও প্রকাশ করা, শিক্ষক নির্দেশিকা তৈরি ও বিতরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানো—প্রতিটি ক্ষেত্রেই অর্থের প্রয়োজন। অথচ জাতীয় বাজেটে শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ অপ্রতুল। বাজেটে উল্লেখযোগ্য হারে বরাদ্দ না বাড়িয়ে কীভাবে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব হবে, তা বোধগম্য নয়।
সবকিছু প্রস্তুত করে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা উচিত, নাকি নতুন শিক্ষাক্রম চালু করে সবাইকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন—এ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। গত কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, অনেক ভালো উদ্যোগ কেবল প্রস্তুতি ও যোগ্যতার অভাবে শেষ পর্যন্ত আর ভালো থাকতে পারেনি। সৃজনশীল প্রশ্নের উদাহরণ এ ক্ষেত্রে সবার আগে দেওয়া যায়। নতুন শিক্ষাক্রমের অনেক কিছু আশাব্যঞ্জক। দশম শ্রেণির পর একাধিক পাবলিক পরীক্ষা, কিংবা বিজ্ঞানের পরিসর কমে যাওয়ার মতো কিছু বিষয় বাদ দিলে এই শিক্ষাক্রমের ইতিবাচক দিক চোখে পড়ে বেশি। তবে অতীত অভিজ্ঞতা সুখের নয় বলে বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলোই মূল আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশা করব, আমাদের শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামবে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
নতুন শিক্ষাক্রমের খসড়া প্রকাশের পর যেসব বিষয় সমালোচিত হয়েছিল ও যেগুলো নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, সেগুলো প্রায় একই রকম রেখে শিক্ষাক্রমটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী দিন কয়েক আগে নতুন শিক্ষাক্রমের পরিবর্তনগুলো জানিয়েছেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবিও পরিবর্তনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে এবং বাস্তবায়নের কৌশল জানিয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রমের অনেক শক্তিশালী ও ইতিবাচক দিক রয়েছে, কিন্তু সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে কি না, সেটি বড় প্রশ্ন। সম্ভাবনাময় এই শিক্ষাক্রমটি বাস্তবায়নে যেসব চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে, সেগুলো কার্যকরভাবে মোকাবিলা না করতে পারলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বর্তমান নিবন্ধের ফোকাস মূলত এই চ্যালেঞ্জগুলোই।
নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণি পর্যন্ত একই বা অভিন্ন বিষয় পড়ার সিদ্ধান্তটি একদিকে প্রশংসিত হচ্ছে, অন্যদিকে সমালোচিত হচ্ছে। বর্তমানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সবাইকে একই বা অভিন্ন বিষয় পড়তে হয়। এনসিটিবি জানাচ্ছে, এই সিদ্ধান্তে একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত সবাইকে সমভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলার সুযোগ থাকবে। সবাইকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন বিষয় পড়াতে গিয়ে বিজ্ঞানের আবশ্যকীয় অনেক বিষয়বস্তু ছেঁটে ফেলতে হয়েছে; যেটি দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির কারণ হতে পারে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ এমনিতেই কম। প্রতিবছর বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কমছে। যেখানে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব সামনে রেখে, বিশেষত চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে বিজ্ঞানের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করা প্রয়োজন, সেখানে কেন বিজ্ঞানের প্রতি গুরুত্ব কমানো হলো, তা বোধগম্য নয়। গণিত ও বিজ্ঞানের ভিত ঠিকমতো গড়ে তুলতে পারলে তা নানাভাবে সহায়ক হয়। কিন্তু সেটি না করে এমন কিছু বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে, যেগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারবে কি না, প্রশ্নসাপেক্ষ। একটি শিক্ষাক্রমে কিছু লুক্কায়িত বিষয় থাকে, থাকে সহশিক্ষাক্রমিক বা অন্যান্য কার্যক্রম। সদিচ্ছা ও পরিকল্পনা থাকলে অনেক বিষয় সরাসরি পাঠ্যপুস্তকে না রেখেও পরোক্ষভাবে এবং বিদ্যালয়ে নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে শেখানো যায়। যেমন মূল্যবোধ ও নৈতিকতা নামে একটি বিষয় রয়েছে, যেটি শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে পড়তে হবে। পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে বা বিষয় হিসেবে লেখাপড়া করে মানুষের মূল্যবোধ ও নৈতিকতা বাড়ানো যাবে, এটি সম্ভবত একটি আকাশকুসুম কল্পনা হয়ে থাকবে। এর আগে প্রতিটি ধর্ম বইয়ের সঙ্গে নৈতিকতা
শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। তাতে কি শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি নৈতিকভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে?
বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নপদ্ধতিতে। এই পরিবর্তন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইতিবাচক। কিছু বিষয় অবশ্য নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত ধারাবাহিক বা গাঠনিক মূল্যায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এটিকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হিসেবেই দেখতে হবে। কিন্তু শিক্ষকেরা কি সঠিক ও কার্যকরভাবে শিক্ষার্থীদের সারা বছর ধরে মূল্যায়ন করতে সক্ষম? সারা বছর মূল্যায়ন করার মতো প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্য কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে? এ ধরনের মূল্যায়নের জন্য শিক্ষকেরা কতটুকু প্রস্তুত? স্থানীয় নানা চাপ উপেক্ষা করে শিক্ষকেরা কি আদৌ যথাযথভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে পারবেন? বেশ কয়েক বছর আগে বিদ্যালয়ভিত্তিক মূল্যায়নের একটি প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। সেই অভিজ্ঞতা অনুসারে উপর্যুক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। ফলে, শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নের সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক হলেও কেবল যথাযথ বাস্তবায়নের অভাবে সেটি উল্টো ফল বয়ে আনতে পারে। আশা করি, এনসিটিবি এসব বিষয় সম্পর্কে সজাগ।
তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো বার্ষিক পরীক্ষা না থাকার সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়। এই পরিসর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা না থাকার সিদ্ধান্তটি সার্বিকভাবে শিক্ষার মান উন্নয়নে কতটুকু প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে নিশ্চয়ই গবেষণা হবে। ইতিবাচক হলে নীতিনির্ধারকেরা আগামী দিনে বার্ষিক পরীক্ষা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত উঠিয়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করতে পারেন। ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষাও থাকছে না। সে হিসেবে শিক্ষার্থীরা প্রথম বড় আঙ্গিকে পরীক্ষা দেবে এসএসসিতে। সেখানে শুধু দশম শ্রেণির বিষয়বস্তুর ওপর পরীক্ষা হবে। নবম শ্রেণির পাঠ্যবিষয় বাদ রেখে শুধু দশম শ্রেণির ওপর পরীক্ষা যৌক্তিক হচ্ছে কি না, সেটি নিয়ে ভাবনার অবকাশ রয়েছে।
নতুন শিক্ষাক্রমের যে কয়টি বিষয় বিস্মিত করেছে, তার অন্যতম হচ্ছে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটো পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত; অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের দশম, একাদশ ও দ্বাদশ পরপর তিন বছর তিনটি পাবলিক পরীক্ষা দিতে হবে। পাবলিক পরীক্ষার সংখ্যা কমানোর কথা প্রায়ই বলা হচ্ছে নানা মহল থেকে। সরকারও প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করার কথা বলছে। সেখানে এইচএসসিতে পাবলিক পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর কোনো যুক্তিসংগত উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ পড়বে, শিক্ষার্থীরা আরও বেশি করে পরীক্ষামুখী হবে। লেখাপড়ার আয়োজন হবে গৌণ, বাড়বে প্রাইভেট বা কোচিংয়ে পড়ার হার। সব মিলিয়ে এ সিদ্ধান্তটি মাধ্যমিক শিক্ষায় খারাপ ফল বয়ে আনতে পারে।
দশ বছরের বেশি সময় পার হওয়ার পরও যে প্রশ্নের উত্তর এখনো জানা যাচ্ছে না তা হলো, প্রাথমিক স্তরের সীমা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্তই থাকবে, নাকি জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে এটি অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত হবে? ২০১০ সালে বর্তমান শিক্ষানীতি যখন সংসদে গৃহীত হয়, তখন কীভাবে প্রাথমিক স্তর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়ানো যায়, তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্টরা একাধিক কৌশলও প্রণয়ন করেছিলেন। একপর্যায়ে এ নিয়ে আলোচনাই বন্ধ হয়ে যায়। একটি নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলে সেটি বেশ কয়েক বছর কার্যকর থাকে। বর্তমান শিক্ষাক্রম তৈরির সময় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা যায়। সে হিসাবে বলা যায়, ২০৩০ সালের আগে প্রাথমিক স্তরের সীমা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করার চিন্তাভাবনা সরকারের নেই। নতুন শিক্ষাক্রমেও এ-সম্পর্কিত কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। তবে কি সরকার নিজের নীতিকেই অগ্রাহ্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? এনসিটিবি যদিও দাবি করছে যে, শিক্ষানীতির সঙ্গে মিল রেখে নতুন শিক্ষাক্রম করা হয়েছে; অন্তত এ ক্ষেত্রে দাবিটি যথাযথ নয়।
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে সবচেয়ে বড় শঙ্কার জায়গা হলো এর বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়া। গত দুই দশকে একাধিক শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়া হোঁচট খেয়েছে। একটি শিক্ষাক্রমের নানা উপাদান থাকে। বছরের প্রথম দিন পাঠ্যপুস্তক বিতরণে বাংলাদেশ বড় আকারে সাফল্য দেখিয়েছে, কিন্তু ব্যর্থতা রয়েছে শিক্ষক নির্দেশিকা যথাসময়ে তৈরি ও বিতরণে। সাম্প্রতিক সময়ের পাঠ্যপুস্তকগুলোতে বিষয়বস্তু ও উপস্থাপনায় উন্নতি ঘটলেও নানা সমালোচনা রয়েছে। খুব কম সময়ে পাঠ্যপুস্তক তৈরি ও তা যথাযথভাবে সম্পাদনা না করার অভিযোগ রয়েছে এনসিটিবির প্রতি, যার প্রভাব পড়ে বইয়ের মানের ওপর। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা প্রয়োজন। শিক্ষক নির্দেশিকা তৈরি পাঠ্যপুস্তক তৈরির মতোই গুরুত্ব পাওয়া প্রয়োজন। না হলে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে মূল ও বড় ভূমিকা পালন করবেন শিক্ষকেরা। কিন্তু তাঁদের যথাযথভাবে তৈরি না করে শিক্ষাক্রম চালু করা হলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন অনুসারে দ্রুত যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর যে অনুপাত নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই অনুসারে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ্য শিক্ষক রয়েছে কি না, তা দ্রুত যাচাই করা এবং সে অনুসারে শিক্ষক নিয়োগ করা প্রয়োজন। শিক্ষকদের মান ও শিক্ষাদানের প্রতি তাঁদের আগ্রহের বিষয়টিও প্রশ্নযুক্ত। নতুন শিক্ষাক্রম চালুর আগে শিক্ষকদের মান যাচাই করা প্রয়োজন। মানের বিচারে যাঁরা যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারবেন না, তাঁদের বিকল্প সম্পর্কে ভাবতে হবে এবং প্রয়োজনে নতুন মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের যথাযথ প্রশিক্ষণও দিতে হবে। না হলে নতুন শিক্ষাক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে না। সুখবর এটিই যে, সারা দেশে শিক্ষাক্রম চালুর আগে ১০০টি করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাইলটিং করা হবে। আশা করা যায়, এর মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো ভালোভাবে জানা যাবে, যা থেকে এনসিটিবি সারা দেশের জন্য কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করতে পারবে। এসব বিষয় নিয়ে গবেষণার জন্য এনসিটিবির নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি দেশের অপরাপর গবেষণা সংস্থা ও গবেষকদের যুক্ত করা প্রয়োজন। প্রয়োজন তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে অবস্থা যাচাই। না হলে কোনো কোনো
ক্ষেত্রে একপাক্ষিক ফলাফল পাওয়ার আশঙ্কা রয়ে যাবে।
এ-ও বলা প্রয়োজন যে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আয়োজনে শিক্ষায় অর্থায়ন বা বিনিয়োগের বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। বলা হচ্ছে, শিক্ষকদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে শিক্ষকদের দক্ষতা যে পর্যায়ে রয়েছে, সেটির উন্নয়নে শুধু প্রশিক্ষণেই বিপুল অর্থ ব্যয় হবে। পাশাপাশি নতুন বই তৈরি ও প্রকাশ করা, শিক্ষক নির্দেশিকা তৈরি ও বিতরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানো—প্রতিটি ক্ষেত্রেই অর্থের প্রয়োজন। অথচ জাতীয় বাজেটে শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ অপ্রতুল। বাজেটে উল্লেখযোগ্য হারে বরাদ্দ না বাড়িয়ে কীভাবে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব হবে, তা বোধগম্য নয়।
সবকিছু প্রস্তুত করে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা উচিত, নাকি নতুন শিক্ষাক্রম চালু করে সবাইকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন—এ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। গত কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, অনেক ভালো উদ্যোগ কেবল প্রস্তুতি ও যোগ্যতার অভাবে শেষ পর্যন্ত আর ভালো থাকতে পারেনি। সৃজনশীল প্রশ্নের উদাহরণ এ ক্ষেত্রে সবার আগে দেওয়া যায়। নতুন শিক্ষাক্রমের অনেক কিছু আশাব্যঞ্জক। দশম শ্রেণির পর একাধিক পাবলিক পরীক্ষা, কিংবা বিজ্ঞানের পরিসর কমে যাওয়ার মতো কিছু বিষয় বাদ দিলে এই শিক্ষাক্রমের ইতিবাচক দিক চোখে পড়ে বেশি। তবে অতীত অভিজ্ঞতা সুখের নয় বলে বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলোই মূল আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশা করব, আমাদের শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামবে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
৪ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
৪ ঘণ্টা আগে