বিভুরঞ্জন সরকার
২ মে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসছেন।
আসামে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গড়ছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। কেরালায় আবার সরকারে যাচ্ছে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামপন্থীরা।
তামিলনাড়ুতে এক দশক পর ক্ষমতায় ফিরছে ডিএমকে-কংগ্রেস জোট। পদুচেরিতে জয় পেয়েছে বিজেপি জোট। পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশ হলেও বাংলাদেশে বেশি আগ্রহ, কৌতূহল এবং আলোচনা পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে। কেরালায় এত দুর্যোগকালেও বামপন্থীরা কীভাবে জনসমর্থন ধরে রাখতে সক্ষম হলো, সেটি কম কৌতূহলোদ্দীপক নয়। তবে আমরা তা নিয়ে তেমন মাতামাতি করছি না। আমাদের দেশে অনেকের মধ্যেই ব্যাপক স্বস্তি দেখা যাচ্ছে বিজেপি পরাজিত হওয়ায়। বাংলাদেশে যারা ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সমর্থক, ধারক-বাহক-পৃষ্ঠপোষক, তারাও বিস্ময়করভাবে ভারতে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির সমর্থক। এ দেশে চাই ইসলামি শাসন, কিন্তু ভারতে হিন্দুত্ববাদী শাসন কখনো নয়।
প্রচার-প্রচারণা দেখে আশঙ্কা করা হচ্ছিল পশ্চিমবঙ্গে বুঝি রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্তকারী ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি ক্ষমতায় এসেই যাবে।
কিন্তু সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো জয় পেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। এবার পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় বসার জন্য আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছিল কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর প্রধান মন্ত্রণাদাতা, ভারতের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি বলে পরিচিত অমিত শাহ তাঁদের অন্য সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। একটাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য—যেকোনো উপায়ে হারাতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বলা যায়, একজন নারী হয়ে মমতা একা লড়েছেন ভারতীয় রাজনীতির চাণক্যবুদ্ধিধর বলে পরিচিত প্রবল প্রতাপশালী সব পুরুষ নেতার বিরুদ্ধে। নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের অনুকূলে রাখার জন্য সব আয়োজনই করেছিল বিজেপি এবং দিল্লির কেন্দ্রীয় শাসকগোষ্ঠী। নজিরবিহীন লম্বা সময় ধরে মোট আট দফায় ভোট হয়েছে। ২ মে ফলাফল ঘোষণার পর বিষ গেলার মতো করে মমতাকেই বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানাতে হয়েছে মোদি-শাহ জুটিকে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসভার এবারের নির্বাচনে মমতা বন্দোপ্যাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস যতটা আশা করা হয়েছিল, তার চেয়েও ভালো ফল করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ব্যক্তিগতভাবে নন্দীগ্রামে অল্প ভোটে পরাজিত হলেও ২৯২ আসনের মধ্যে ( মোট ২৯৪ আসনের মধ্যে ২ আসনে প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ভোট স্থগিত হয়েছে ) ২১৩ আসন পেয়ে রেকর্ড গড়েছে তৃণমূল। নির্বাচনের আগে যেভাবে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িক পড়েছিল, তাতে কেউ কেউ এমন আশঙ্কাও করছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে এবার তৃণমূল নির্মূল হয়ে যাবে। কিন্তু ভোটের ফল বলছে, তৃণমূল আছে মানুষের মর্মমূলে। মমতাকে মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে তাকে আরও বেশি জনগণের কাছাকাছি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বহর, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব, ভিনরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, প্রশাসন যন্ত্র, সিবিআই, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ—সর্বশক্তি নিয়ে নেমেও মমতাকে হারাতে ব্যর্থ হওয়ার পেছনের কারণ খুঁজতে বসে গেছেন রাজনীতি বিশ্লেষক ও পণ্ডিতেরা। অনেক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হবে, বিজপির অনেক ত্রুটি এখন ধরা হবে, নানা কারণ বের করে চলবে আলাপ-আলোচনা। কিন্তু তাতে মমতার তৃতীয়বারের মতো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া ঠেকানো যাবে না। মমতাকে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি থেকে মাইনাস করতে গিয়ে এখন উল্টো মোদি-শাহের কপালে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট হবে। কারণ, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদিবিরোধী রাজনীতির প্রধান এবং উজ্জ্বল মুখ হয়ে উঠবেন মমতা—এমন কথা এখনই উচ্চারিত হচ্ছে।
ভারতের রাজনীতি বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে মমতার পক্ষে কয়েকটি ‘ম’ বিশেষ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। প্রথম ম হলো মহিলা অর্থাৎ নারী ভোট। মমতা নারী হওয়ায় নানা কুৎসিত প্রচারণা চালানো হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকি নরেন্দ্র মোদিও তাঁকে ‘দিদি, ও দিদি’ বলে প্রকাশ্য জনসভায় এমন অভব্য অঙ্গভঙ্গি করেছেন, যা ভালোভাবে নেননি পশ্চিমবঙ্গের নারীরা। নারীদের জন্য মমতার সরকার কিছু বাড়তি সুবিধাও দিয়েছেন নানা সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে। তাই মমতাকে ক্ষমতায় রাখতে নারীরা আগের তুলনায় এবার বেশি সংখ্যায় তাঁর ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তৃণমূলের নির্বাচনী প্রতীকে সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
দ্বিতীয় ম হলো মধ্যবিত্ত সমাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলনবলন সবই মধ্যবিত্তদের জীবনাচারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ভদ্রলোকেরা তাঁকে অপছন্দ করলেও মধ্যবিত্তরা মমতাকে নিজেদের লোক বলেই মনে করেন। মমতার ১০ বছরের শাসনকালে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বঞ্চিত বোধ করেনি। মধ্যবিত্তদের মধ্যে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়িও কম। বিজেপি হিন্দুত্ব নিয়ে অহম্প্রচারের যে নগ্ন চেষ্টা চালিয়েছে, তা মধ্যবিত্তদের মনে গভীর রেখাপাত করেছে বলে মনে হয় না। বরং বিজেপি ক্ষমতায় এলে উচ্চবিত্ত ও হিন্দুদের মধ্যে যারা জাতপাত নিয়ে বিভাজনে আগ্রহী, তাদের দাপট বাড়বে—এমন শঙ্কা থেকেও মধ্যবিত্তরা মমতার পক্ষে দাঁড়ানোকেই নিরাপদ মনে করেছে।
তৃতীয় ম হলো মুসলমান জনগোষ্ঠী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুসলিমবান্ধব বলে প্রচার করে বিজেপি প্রকারান্তরে তাঁর উপকারই করেছে। মুসলমানদের মধ্যে এই আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল যে বিজেপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে তাঁদের জীবন-জীবিকা অনিরাপদ হয়ে উঠবে। পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোট কম নয়। প্রায় ২৭ শতাংশ বলে জানা যায়। আগে এই ভোট বাম, কংগ্রেস এবং তৃণমূলে বিভক্ত হলেও এবার তা প্রায় একচেটিয়াভাবে মমতার পক্ষে গেছে বলে মনে করার যুক্তিসংগত কারণ আছে। বাম এবং কংগ্রেসের ভুল রাজনৈতিক কৌশল এবার তাদের একেবারে তলানিতে নিয়ে গেছে। ৩৪ বছর রাজ্য শাসন করে বামপন্থীদের এই শোচনীয় অবস্থা আলাদা গবেষণার বিষয় হওয়া দরকার। কংগ্রেসের রাজনীতিও যে আর সাধারণ মানুষের মেজাজ-মর্জি বুঝে পরিচালিত হচ্ছে না, সেটা বোঝা যায় নির্বাচনে দলটির হতশ্রী দশা দেখেই।
আর শেষ ম ‘ম’মতা নিজেই। তাঁর নামের অর্থই বুঝি তাঁর প্রতি ভোটারদের মমতা বাড়িয়ে দিয়েছে। ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে গিয়ে পায়ে আঘাত পান মমতা। তখন থেকে তাঁর সঙ্গী হয় হুইলচেয়ার। তাঁর এই চোট পাওয়া বা আহত হওয়া নিয়েও কম পানি ঘোলা করেনি তাঁর প্রতিপক্ষ শিবির। বলা হয়েছে, এটি তাঁর অভিনয়, সাজানো নাটক। তবে এটি যদি নাটক বা অভিনয়ও হয়ও, তবু বলতে হবে—এখানেও মমতা পারদর্শিতার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন। পোশাক-আশাকে আটপৌরে মমতা হুইলচেয়ারে বসে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে মানুষের সহানুভূতি পেয়েছেন কিছুটা বেশি মাত্রায়। বিজেপি শিবিরের আত্মবিশ্বাস ও ঔদ্ধত্যের জবাব মানুষ দিয়েছে ভোটের যন্ত্রে টিপ দিয়ে। মমতাও হুইলচেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেন।
মোদি-শাহ রণদামামা বাজিয়ে ভোটের মাঠে নামলে মমতা বলেছিলেন, ‘খেলা হবে’। ভোট রাজনীতিতে তিনি যে দক্ষ খেলোয়াড়, সেটি তিনি প্রায় একা খেলেই জয় ছিনিয়ে এনে প্রমাণ করে দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যে বিপুল জনগোষ্ঠী রয়েছে, তা-ও স্পষ্ট হয়েছে।
ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে যে সব অঞ্চলে সবসময় একই রকম সাফল্য পাওয়া যায় না, বিজেপি কি তা বোঝার চেষ্টা করবে? ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে বিভক্ত একটি দেশে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি কখনো কখনো বুমেরাংও হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নির্বাচনের ফলাফল অন্তত তাই বলেছে।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় এবং মমতার তৃণমূলের জয়ের ফলে সেখানে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির বিজয় হয়েছে বলে উল্লসিত হওয়ারও কিছু আছে বলে মনে হয় না। কেউ কেউ বরং মনে করছেন, সেখানে একটি উগ্রবাদী ধর্মাশ্রয়ী রাজনৈতিক ধারা পরাজিত হলেও প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ বা অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক ধারার বিজয় হয়নি। সেখানে যেটা হয়েছে, তাকে অনেকে মন্দের ভালো মনে করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর নরেন্দ্র মোদি একধারার রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব না করলেও আদর্শগত জায়গায় মমতার দৃঢ়তাও সন্দেহমুক্ত নয়। মমতার মধ্যেও নানা স্ববিরোধিতা আছে। ক্ষমতার রাজনীতির যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তাতে মমতা সততা ও উদারতার ধারক-বাহক, তেমনটা বলা যাবে না। গণতন্ত্র চর্চার পরিসর তিনিও কম সীমিত করে আনেননি।
বিশৃঙ্খলতা ও হিংস্রতামুক্ত রাজনীতির পথ তিনি ১০ বছরে কতটা মসৃণ করেছেন, সে প্রশ্ন আছে। মারের বদলে মার—এই নীতি অনুসরণ করে পশ্চিমবঙ্গে যে অগ্নিগর্ভ রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, তার দায় থেকে মমতাকে মুক্তি দেওয়া যাবে না।
অর্থনীতি ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি সাধনের প্রতিযোগিতা না করে হিংস্র, কদর্য ও সংঘাতের পরিবেশ তৈরিতে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় থাকা সব রাজনৈতিক দল এবং বর্তমান কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে একসঙ্গেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়। নির্বাচনী প্রচারকালে যে হানাহানি, রক্তপাত, গুলি-বোমার মহড়া এবং খুন-জখমের যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো একতরফা ছিল না। ভোট ভিক্ষুক, ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতিকেরা এখন নীতিপঙ্গুতার শিকার। সেটা কোনো একটি মাত্র দলে আছে তা-ও নয়। মমতার বিজয়ে তাই এটা মনে করার কারণ নেই যে এখন থেকে পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতিতে শীতল হাওয়া বইবে। বরং দেখে নেওয়ার জেদ ও প্রবণতা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, নজর রাখতে হবে সেদিকে। বিজেপি-আরএসএস রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়ে ৩ থেকে ৭৭টি আসনে পৌঁছে যে বিপদসংকেত দিয়েছে, তা খাটো করে যেমন দেখা যাবে না, তেমনি এই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় নিয়েও ভাবতে হবে।
এটা ঠিক যে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু উভয়ের রক্ষাকবচ। নানা ধর্ম ও মতের, নানা জাতের ও চিন্তার মানুষের একটি দেশে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারে কেবল ধর্মনিরপেক্ষ নীতি। ধর্মভিত্তিক ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয়। ধর্মকে ব্যক্তিজীবনের চর্চার মধ্যে রাখাই মঙ্গল। রাজনীতির কূটজালে ধর্মকে জড়ালে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হবে। ধর্মমুক্ত রাজনীতি সব ধর্মের, সব সম্প্রদায়ের এবং সব দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর ও পৃথিবীর জন্যেও শুভ।
তবে সেই আদর্শ রাজনীতির চালকের আসনে বসার মতো যোগ্য মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি না, তা নিয়ে আছে বিরাট প্রশ্ন। বড় হওয়ার প্রতিযোগিতা করার মতো বড় মানুষের অভাব অনেক দেশের রাজনীতিতেই প্রকট।
২ মে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসছেন।
আসামে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গড়ছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। কেরালায় আবার সরকারে যাচ্ছে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামপন্থীরা।
তামিলনাড়ুতে এক দশক পর ক্ষমতায় ফিরছে ডিএমকে-কংগ্রেস জোট। পদুচেরিতে জয় পেয়েছে বিজেপি জোট। পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশ হলেও বাংলাদেশে বেশি আগ্রহ, কৌতূহল এবং আলোচনা পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে। কেরালায় এত দুর্যোগকালেও বামপন্থীরা কীভাবে জনসমর্থন ধরে রাখতে সক্ষম হলো, সেটি কম কৌতূহলোদ্দীপক নয়। তবে আমরা তা নিয়ে তেমন মাতামাতি করছি না। আমাদের দেশে অনেকের মধ্যেই ব্যাপক স্বস্তি দেখা যাচ্ছে বিজেপি পরাজিত হওয়ায়। বাংলাদেশে যারা ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সমর্থক, ধারক-বাহক-পৃষ্ঠপোষক, তারাও বিস্ময়করভাবে ভারতে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির সমর্থক। এ দেশে চাই ইসলামি শাসন, কিন্তু ভারতে হিন্দুত্ববাদী শাসন কখনো নয়।
প্রচার-প্রচারণা দেখে আশঙ্কা করা হচ্ছিল পশ্চিমবঙ্গে বুঝি রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্তকারী ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি ক্ষমতায় এসেই যাবে।
কিন্তু সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো জয় পেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। এবার পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় বসার জন্য আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছিল কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর প্রধান মন্ত্রণাদাতা, ভারতের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি বলে পরিচিত অমিত শাহ তাঁদের অন্য সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। একটাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য—যেকোনো উপায়ে হারাতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বলা যায়, একজন নারী হয়ে মমতা একা লড়েছেন ভারতীয় রাজনীতির চাণক্যবুদ্ধিধর বলে পরিচিত প্রবল প্রতাপশালী সব পুরুষ নেতার বিরুদ্ধে। নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের অনুকূলে রাখার জন্য সব আয়োজনই করেছিল বিজেপি এবং দিল্লির কেন্দ্রীয় শাসকগোষ্ঠী। নজিরবিহীন লম্বা সময় ধরে মোট আট দফায় ভোট হয়েছে। ২ মে ফলাফল ঘোষণার পর বিষ গেলার মতো করে মমতাকেই বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানাতে হয়েছে মোদি-শাহ জুটিকে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসভার এবারের নির্বাচনে মমতা বন্দোপ্যাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস যতটা আশা করা হয়েছিল, তার চেয়েও ভালো ফল করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ব্যক্তিগতভাবে নন্দীগ্রামে অল্প ভোটে পরাজিত হলেও ২৯২ আসনের মধ্যে ( মোট ২৯৪ আসনের মধ্যে ২ আসনে প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ভোট স্থগিত হয়েছে ) ২১৩ আসন পেয়ে রেকর্ড গড়েছে তৃণমূল। নির্বাচনের আগে যেভাবে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িক পড়েছিল, তাতে কেউ কেউ এমন আশঙ্কাও করছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে এবার তৃণমূল নির্মূল হয়ে যাবে। কিন্তু ভোটের ফল বলছে, তৃণমূল আছে মানুষের মর্মমূলে। মমতাকে মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে তাকে আরও বেশি জনগণের কাছাকাছি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বহর, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব, ভিনরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, প্রশাসন যন্ত্র, সিবিআই, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ—সর্বশক্তি নিয়ে নেমেও মমতাকে হারাতে ব্যর্থ হওয়ার পেছনের কারণ খুঁজতে বসে গেছেন রাজনীতি বিশ্লেষক ও পণ্ডিতেরা। অনেক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হবে, বিজপির অনেক ত্রুটি এখন ধরা হবে, নানা কারণ বের করে চলবে আলাপ-আলোচনা। কিন্তু তাতে মমতার তৃতীয়বারের মতো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া ঠেকানো যাবে না। মমতাকে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি থেকে মাইনাস করতে গিয়ে এখন উল্টো মোদি-শাহের কপালে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট হবে। কারণ, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদিবিরোধী রাজনীতির প্রধান এবং উজ্জ্বল মুখ হয়ে উঠবেন মমতা—এমন কথা এখনই উচ্চারিত হচ্ছে।
ভারতের রাজনীতি বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে মমতার পক্ষে কয়েকটি ‘ম’ বিশেষ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। প্রথম ম হলো মহিলা অর্থাৎ নারী ভোট। মমতা নারী হওয়ায় নানা কুৎসিত প্রচারণা চালানো হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকি নরেন্দ্র মোদিও তাঁকে ‘দিদি, ও দিদি’ বলে প্রকাশ্য জনসভায় এমন অভব্য অঙ্গভঙ্গি করেছেন, যা ভালোভাবে নেননি পশ্চিমবঙ্গের নারীরা। নারীদের জন্য মমতার সরকার কিছু বাড়তি সুবিধাও দিয়েছেন নানা সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে। তাই মমতাকে ক্ষমতায় রাখতে নারীরা আগের তুলনায় এবার বেশি সংখ্যায় তাঁর ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তৃণমূলের নির্বাচনী প্রতীকে সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
দ্বিতীয় ম হলো মধ্যবিত্ত সমাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলনবলন সবই মধ্যবিত্তদের জীবনাচারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ভদ্রলোকেরা তাঁকে অপছন্দ করলেও মধ্যবিত্তরা মমতাকে নিজেদের লোক বলেই মনে করেন। মমতার ১০ বছরের শাসনকালে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বঞ্চিত বোধ করেনি। মধ্যবিত্তদের মধ্যে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়িও কম। বিজেপি হিন্দুত্ব নিয়ে অহম্প্রচারের যে নগ্ন চেষ্টা চালিয়েছে, তা মধ্যবিত্তদের মনে গভীর রেখাপাত করেছে বলে মনে হয় না। বরং বিজেপি ক্ষমতায় এলে উচ্চবিত্ত ও হিন্দুদের মধ্যে যারা জাতপাত নিয়ে বিভাজনে আগ্রহী, তাদের দাপট বাড়বে—এমন শঙ্কা থেকেও মধ্যবিত্তরা মমতার পক্ষে দাঁড়ানোকেই নিরাপদ মনে করেছে।
তৃতীয় ম হলো মুসলমান জনগোষ্ঠী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুসলিমবান্ধব বলে প্রচার করে বিজেপি প্রকারান্তরে তাঁর উপকারই করেছে। মুসলমানদের মধ্যে এই আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল যে বিজেপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে তাঁদের জীবন-জীবিকা অনিরাপদ হয়ে উঠবে। পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোট কম নয়। প্রায় ২৭ শতাংশ বলে জানা যায়। আগে এই ভোট বাম, কংগ্রেস এবং তৃণমূলে বিভক্ত হলেও এবার তা প্রায় একচেটিয়াভাবে মমতার পক্ষে গেছে বলে মনে করার যুক্তিসংগত কারণ আছে। বাম এবং কংগ্রেসের ভুল রাজনৈতিক কৌশল এবার তাদের একেবারে তলানিতে নিয়ে গেছে। ৩৪ বছর রাজ্য শাসন করে বামপন্থীদের এই শোচনীয় অবস্থা আলাদা গবেষণার বিষয় হওয়া দরকার। কংগ্রেসের রাজনীতিও যে আর সাধারণ মানুষের মেজাজ-মর্জি বুঝে পরিচালিত হচ্ছে না, সেটা বোঝা যায় নির্বাচনে দলটির হতশ্রী দশা দেখেই।
আর শেষ ম ‘ম’মতা নিজেই। তাঁর নামের অর্থই বুঝি তাঁর প্রতি ভোটারদের মমতা বাড়িয়ে দিয়েছে। ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে গিয়ে পায়ে আঘাত পান মমতা। তখন থেকে তাঁর সঙ্গী হয় হুইলচেয়ার। তাঁর এই চোট পাওয়া বা আহত হওয়া নিয়েও কম পানি ঘোলা করেনি তাঁর প্রতিপক্ষ শিবির। বলা হয়েছে, এটি তাঁর অভিনয়, সাজানো নাটক। তবে এটি যদি নাটক বা অভিনয়ও হয়ও, তবু বলতে হবে—এখানেও মমতা পারদর্শিতার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন। পোশাক-আশাকে আটপৌরে মমতা হুইলচেয়ারে বসে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে মানুষের সহানুভূতি পেয়েছেন কিছুটা বেশি মাত্রায়। বিজেপি শিবিরের আত্মবিশ্বাস ও ঔদ্ধত্যের জবাব মানুষ দিয়েছে ভোটের যন্ত্রে টিপ দিয়ে। মমতাও হুইলচেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেন।
মোদি-শাহ রণদামামা বাজিয়ে ভোটের মাঠে নামলে মমতা বলেছিলেন, ‘খেলা হবে’। ভোট রাজনীতিতে তিনি যে দক্ষ খেলোয়াড়, সেটি তিনি প্রায় একা খেলেই জয় ছিনিয়ে এনে প্রমাণ করে দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যে বিপুল জনগোষ্ঠী রয়েছে, তা-ও স্পষ্ট হয়েছে।
ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে যে সব অঞ্চলে সবসময় একই রকম সাফল্য পাওয়া যায় না, বিজেপি কি তা বোঝার চেষ্টা করবে? ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে বিভক্ত একটি দেশে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি কখনো কখনো বুমেরাংও হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নির্বাচনের ফলাফল অন্তত তাই বলেছে।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় এবং মমতার তৃণমূলের জয়ের ফলে সেখানে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির বিজয় হয়েছে বলে উল্লসিত হওয়ারও কিছু আছে বলে মনে হয় না। কেউ কেউ বরং মনে করছেন, সেখানে একটি উগ্রবাদী ধর্মাশ্রয়ী রাজনৈতিক ধারা পরাজিত হলেও প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ বা অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক ধারার বিজয় হয়নি। সেখানে যেটা হয়েছে, তাকে অনেকে মন্দের ভালো মনে করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর নরেন্দ্র মোদি একধারার রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব না করলেও আদর্শগত জায়গায় মমতার দৃঢ়তাও সন্দেহমুক্ত নয়। মমতার মধ্যেও নানা স্ববিরোধিতা আছে। ক্ষমতার রাজনীতির যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তাতে মমতা সততা ও উদারতার ধারক-বাহক, তেমনটা বলা যাবে না। গণতন্ত্র চর্চার পরিসর তিনিও কম সীমিত করে আনেননি।
বিশৃঙ্খলতা ও হিংস্রতামুক্ত রাজনীতির পথ তিনি ১০ বছরে কতটা মসৃণ করেছেন, সে প্রশ্ন আছে। মারের বদলে মার—এই নীতি অনুসরণ করে পশ্চিমবঙ্গে যে অগ্নিগর্ভ রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, তার দায় থেকে মমতাকে মুক্তি দেওয়া যাবে না।
অর্থনীতি ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি সাধনের প্রতিযোগিতা না করে হিংস্র, কদর্য ও সংঘাতের পরিবেশ তৈরিতে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় থাকা সব রাজনৈতিক দল এবং বর্তমান কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে একসঙ্গেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়। নির্বাচনী প্রচারকালে যে হানাহানি, রক্তপাত, গুলি-বোমার মহড়া এবং খুন-জখমের যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো একতরফা ছিল না। ভোট ভিক্ষুক, ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতিকেরা এখন নীতিপঙ্গুতার শিকার। সেটা কোনো একটি মাত্র দলে আছে তা-ও নয়। মমতার বিজয়ে তাই এটা মনে করার কারণ নেই যে এখন থেকে পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতিতে শীতল হাওয়া বইবে। বরং দেখে নেওয়ার জেদ ও প্রবণতা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, নজর রাখতে হবে সেদিকে। বিজেপি-আরএসএস রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়ে ৩ থেকে ৭৭টি আসনে পৌঁছে যে বিপদসংকেত দিয়েছে, তা খাটো করে যেমন দেখা যাবে না, তেমনি এই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় নিয়েও ভাবতে হবে।
এটা ঠিক যে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু উভয়ের রক্ষাকবচ। নানা ধর্ম ও মতের, নানা জাতের ও চিন্তার মানুষের একটি দেশে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারে কেবল ধর্মনিরপেক্ষ নীতি। ধর্মভিত্তিক ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয়। ধর্মকে ব্যক্তিজীবনের চর্চার মধ্যে রাখাই মঙ্গল। রাজনীতির কূটজালে ধর্মকে জড়ালে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হবে। ধর্মমুক্ত রাজনীতি সব ধর্মের, সব সম্প্রদায়ের এবং সব দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর ও পৃথিবীর জন্যেও শুভ।
তবে সেই আদর্শ রাজনীতির চালকের আসনে বসার মতো যোগ্য মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি না, তা নিয়ে আছে বিরাট প্রশ্ন। বড় হওয়ার প্রতিযোগিতা করার মতো বড় মানুষের অভাব অনেক দেশের রাজনীতিতেই প্রকট।
যেকোনো সামাজিক বিষয় বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কখনো কখনো তত্ত্ব দিয়ে তার ব্যাখ্যা করি, আবার কখনো কখনো বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয় বা সমস্যার বিশ্লেষণ করি। তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা...
২ ঘণ্টা আগেগাজার সবচেয়ে সুপরিচিত ফুটবল স্টেডিয়ামটি এখন বিশৃঙ্খলায় ভরা। মাঠ ও বসার জায়গায় বাস্তুচ্যুত লোকের বন্যা। সবার পিঠে ব্যাগ আর কিছু কাপড়। কেউ অসুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করছেন বা আহত আত্মীয়দের নিয়ে চলেছেন। আবার কেউ কেউ একা হাঁটছেন, খালি পায়েই হেঁটে চলেছেন।
২ ঘণ্টা আগেসিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
২ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
২ ঘণ্টা আগে