ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
মৃত্যুকালীন অবস্থা কারও জন্য সুখের আবার কারও জন্য কষ্টের হয়ে থাকে। যেসব মৃত্যু আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়, তন্মধ্যে শহীদি মৃত্যু একটি। হাদিসের পরিভাষায়, শহীদের রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহ তাঁর জন্য জান্নাত অবধারিত করেন।
‘শহীদ’ আরবি শব্দ, যা ‘শাহাদত’ শব্দমূল থেকে গৃহীত। আভিধানিক অর্থ সাক্ষী, প্রত্যক্ষকারী। যাঁরা ইসলাম ও আল্লাহর কালিমাকে সমুন্নত রাখার জন্য কাফিরদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে নিহত হন, তাঁরাই শহীদ। তাঁদের কখনো মৃত বলা যাবে না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা অনুভব করতে পার না’ (সুরা বাকারা: ১৫৪)। হাদিসে আরও কিছু ব্যক্তিকে শহীদ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহর রাস্তায় মৃত্যুবরণকারী ছাড়া আরও সাত শ্রেণির শহীদ রয়েছেন। তাঁরা হলেন মহামারিতে মৃত্যুবরণকারী, পানিতে নিমজ্জিত হয়ে মৃত্যুবরণকারী, শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী, পেটের রোগে মৃত্যুবরণকারী, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকারী, ধ্বংসাবশেষের নিচে পড়ে মৃত্যুবরণকারী, সন্তান প্রসবকালে মৃত্যুবরণকারী (আবু দাউদ, তিরমিজি, মুয়াত্তা)। অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) শহীদের পরিচয় সম্পর্কে বলেন, ‘যে ব্যক্তি দ্বীনের জন্য নিহত হয়, যে স্বীয় জীবন রক্ষার্থে নিহত হয়, যে পরিবার রক্ষার্থে নিহত হয়, যে সম্মান রক্ষার্থে নিহত হয়, যে ফুসফুসের রোগে নিহত হয়, যে অত্যাচারিত হয়ে নিহত হয়, সে শহীদ’ (মুসলিম, আহমাদ)।
যেকোনো ধরনের শহীদ হোক না কেন, শহীদের মর্যাদা পাওয়ার জন্য অবশ্যই আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর প্রতি ইমান থাকা আবশ্যক। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছে, ‘এভাবে আল্লাহ তোমাদের মধ্যকার ইমানদার জেনে নেন এবং তোমাদের মধ্য থেকে কিছু লোককে শহীদ হিসেবে গ্রহণ করতে চান’ (আল–ইমরান, ১৪০)।
আল্লাহর রাস্তায় শহীদ এবং অন্যান্য শহীদের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। আল্লাহর রাস্তায় শহীদদের গোসল না দিয়ে যে পোশাক পরে ছিলেন, সেটিসহ জানাজা পড়িয়ে দাফন করতে হয়। আর অন্যান্য শহীদের গোসল-জানাজা হবে স্বাভাবিক নিয়মে। তাদের জন্য কান্নাকাটি ও আফসোস না করে তাদের শাহাদত কবুল হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। পরকালে তারা আল্লাহর রাস্তায় শহীদের ন্যায় সব প্রতিদান লাভ করবেন।
শহীদেরা আল্লাহর কাছে খুবই সম্মানিত। ইরশাদ আছে, ‘আর যে আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করবে, অতঃপর সে নিহত হোক কিংবা বিজয়ী হোক, অচিরেই আমি তাকে দেব মহাপুরস্কার’ (সুরা নিসা: ৭৪)।
শহীদদের মর্যাদা মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও প্রতীয়মান হয়। তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তিই জান্নাতে প্রবেশ করার পর আর দুনিয়ায় ফিরতে চাইবে না। যদি সে দুনিয়ার সবকিছু পায় তবুও না। কিন্তু শহীদের কথা আলাদা। সে চাইবে তাকে দুনিয়ায় ফিরিয়ে আনা হোক এবং ১০ বার তাকে আল্লাহর রাস্তায় হত্যা করা হোক। এ কারণে যে, সে তার মর্যাদা দেখতে পাবে’ (বুখারি ও মুসলিম)। শহীদের মর্যাদা সম্পর্কে আরও বর্ণিত আছে যে, শহীদের প্রথম রক্ত বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ক্ষমা করা হয় এবং তিনি জান্নাত প্রত্যক্ষ করেন, তাঁর কবরের আজাব মাফ করা হয়, কিয়ামতের ভয়াবহতা থেকে তিনি নিরাপদ থাকবেন, তাঁকে ইমানের এক জোড়া অলংকার পরানো হবে, হুরদের সঙ্গে বিবাহ দেওয়া হবে, তিনি নিকটাত্মীয় থেকে ৭০ জনের জন্য সুপারিশ করতে পারবেন।
শহীদি মৃত্যু মহান আল্লাহ কর্তৃক এক মহান পরীক্ষা। এর মাধ্যমে তিনি বান্দার ইমান যাচাই-বাছাই করে থাকেন। বর্তমানেও কোনো মানুষ যদি আল্লাহর কালিমা সমুন্নত রাখতে অথবা অন্যায়ভাবে কোনো শত্রু বা বিদ্রোহী কর্তৃক নিহত হয়, তারাও শহীদ বলে পরিগণিত হবে। তবে তাকে অবশ্যই ইমানদার হতে হবে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
মৃত্যুকালীন অবস্থা কারও জন্য সুখের আবার কারও জন্য কষ্টের হয়ে থাকে। যেসব মৃত্যু আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়, তন্মধ্যে শহীদি মৃত্যু একটি। হাদিসের পরিভাষায়, শহীদের রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহ তাঁর জন্য জান্নাত অবধারিত করেন।
‘শহীদ’ আরবি শব্দ, যা ‘শাহাদত’ শব্দমূল থেকে গৃহীত। আভিধানিক অর্থ সাক্ষী, প্রত্যক্ষকারী। যাঁরা ইসলাম ও আল্লাহর কালিমাকে সমুন্নত রাখার জন্য কাফিরদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে নিহত হন, তাঁরাই শহীদ। তাঁদের কখনো মৃত বলা যাবে না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা অনুভব করতে পার না’ (সুরা বাকারা: ১৫৪)। হাদিসে আরও কিছু ব্যক্তিকে শহীদ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহর রাস্তায় মৃত্যুবরণকারী ছাড়া আরও সাত শ্রেণির শহীদ রয়েছেন। তাঁরা হলেন মহামারিতে মৃত্যুবরণকারী, পানিতে নিমজ্জিত হয়ে মৃত্যুবরণকারী, শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী, পেটের রোগে মৃত্যুবরণকারী, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকারী, ধ্বংসাবশেষের নিচে পড়ে মৃত্যুবরণকারী, সন্তান প্রসবকালে মৃত্যুবরণকারী (আবু দাউদ, তিরমিজি, মুয়াত্তা)। অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) শহীদের পরিচয় সম্পর্কে বলেন, ‘যে ব্যক্তি দ্বীনের জন্য নিহত হয়, যে স্বীয় জীবন রক্ষার্থে নিহত হয়, যে পরিবার রক্ষার্থে নিহত হয়, যে সম্মান রক্ষার্থে নিহত হয়, যে ফুসফুসের রোগে নিহত হয়, যে অত্যাচারিত হয়ে নিহত হয়, সে শহীদ’ (মুসলিম, আহমাদ)।
যেকোনো ধরনের শহীদ হোক না কেন, শহীদের মর্যাদা পাওয়ার জন্য অবশ্যই আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর প্রতি ইমান থাকা আবশ্যক। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছে, ‘এভাবে আল্লাহ তোমাদের মধ্যকার ইমানদার জেনে নেন এবং তোমাদের মধ্য থেকে কিছু লোককে শহীদ হিসেবে গ্রহণ করতে চান’ (আল–ইমরান, ১৪০)।
আল্লাহর রাস্তায় শহীদ এবং অন্যান্য শহীদের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। আল্লাহর রাস্তায় শহীদদের গোসল না দিয়ে যে পোশাক পরে ছিলেন, সেটিসহ জানাজা পড়িয়ে দাফন করতে হয়। আর অন্যান্য শহীদের গোসল-জানাজা হবে স্বাভাবিক নিয়মে। তাদের জন্য কান্নাকাটি ও আফসোস না করে তাদের শাহাদত কবুল হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। পরকালে তারা আল্লাহর রাস্তায় শহীদের ন্যায় সব প্রতিদান লাভ করবেন।
শহীদেরা আল্লাহর কাছে খুবই সম্মানিত। ইরশাদ আছে, ‘আর যে আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করবে, অতঃপর সে নিহত হোক কিংবা বিজয়ী হোক, অচিরেই আমি তাকে দেব মহাপুরস্কার’ (সুরা নিসা: ৭৪)।
শহীদদের মর্যাদা মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও প্রতীয়মান হয়। তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তিই জান্নাতে প্রবেশ করার পর আর দুনিয়ায় ফিরতে চাইবে না। যদি সে দুনিয়ার সবকিছু পায় তবুও না। কিন্তু শহীদের কথা আলাদা। সে চাইবে তাকে দুনিয়ায় ফিরিয়ে আনা হোক এবং ১০ বার তাকে আল্লাহর রাস্তায় হত্যা করা হোক। এ কারণে যে, সে তার মর্যাদা দেখতে পাবে’ (বুখারি ও মুসলিম)। শহীদের মর্যাদা সম্পর্কে আরও বর্ণিত আছে যে, শহীদের প্রথম রক্ত বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ক্ষমা করা হয় এবং তিনি জান্নাত প্রত্যক্ষ করেন, তাঁর কবরের আজাব মাফ করা হয়, কিয়ামতের ভয়াবহতা থেকে তিনি নিরাপদ থাকবেন, তাঁকে ইমানের এক জোড়া অলংকার পরানো হবে, হুরদের সঙ্গে বিবাহ দেওয়া হবে, তিনি নিকটাত্মীয় থেকে ৭০ জনের জন্য সুপারিশ করতে পারবেন।
শহীদি মৃত্যু মহান আল্লাহ কর্তৃক এক মহান পরীক্ষা। এর মাধ্যমে তিনি বান্দার ইমান যাচাই-বাছাই করে থাকেন। বর্তমানেও কোনো মানুষ যদি আল্লাহর কালিমা সমুন্নত রাখতে অথবা অন্যায়ভাবে কোনো শত্রু বা বিদ্রোহী কর্তৃক নিহত হয়, তারাও শহীদ বলে পরিগণিত হবে। তবে তাকে অবশ্যই ইমানদার হতে হবে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১৭ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
১৭ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
১৭ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
১৮ ঘণ্টা আগে