বিভুরঞ্জন সরকার
হঠাৎ দুজন মানুষের কথা কেন যেন খুব মনে পড়ছে। তাই তাঁদের নিয়ে কিছু না লিখে স্বস্তি পাচ্ছি না। একজন মুকুল চক্রবর্তী, আরেকজন সুলতান আহমেদ। মুকুল আমার ব্যাচমেট। পড়ত পদার্থ বিজ্ঞানে। সুলতান ভাই সিনিয়র। তিনি বাংলার ছাত্র, আমিও। মুকুল, আর আমি জগন্নাথ হলে থাকতাম। সুলতান ভাই জহুরুল হক হলে। তবে আড্ডা দিতেন বেশি জগন্নাথ হলেই। জগন্নাথ হল ছিল আমাদের আমলে ছাত্র ইউনিয়নের দুর্গ। মুকুল প্রথম দিকে জাসদ ছাত্রলীগের কর্মী ছিল। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে ঝাঁজালো স্লোগানে কলাভবন, হলের করিডর কাঁপাত। পরে অবশ্য আমাদের প্রভাবে মুকুলও ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দিয়েছিল।
সুলতান ভাই ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলে ছিলেন উচ্চকিত। ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি ভিয়েতনামের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্য যে মিছিলে পুলিশের গুলিতে মতিউল-কাদের নিহত হন, সেই মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন সুলতান ভাই। আমার সঙ্গে কী করে যেন এই দুজনেরই হয়েছিল যাকে বলে গলায়-গলায় ভাব। কত সময় যে আমরা একসঙ্গে কাটিয়েছি, কত কি যে করেছি! কত স্বপ্নের জাল বুনেছি।
পৃথিবীটা সব মানুষের বাসযোগ্য করার জন্য সে কী ব্যাকুলতা-আকুলতা আমাদের। বাংলাদেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। মানুষ নিরক্ষর থাকবে না। বেকার থাকবে না। সবাই মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে। রোগে চিকিৎসা পাবে। আমাদের সবটুকু সময় তাই সংগঠন গড়ে তোলার কাজে ব্যয় করতাম। বাস্তবিক অর্থেই আমাদের ‘নাওয়া-খাওয়া’র ঠিক ছিল না। এমন অনেক দিন গেছে সত্যি সত্যি পেটে দানাপানি পড়েনি। তাতে আমাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না। দেশে কত মানুষই তো হররোজ রোজা রাখে!
আমাদের বয়সী অনেক ছাত্র তখন রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হলের সামনে দিয়ে ঘুরঘুর করত। বিকেলে জটলা দিত। বন্ধু জোটানো-পটানোর জন্য কতজনের কত কোশেশ। যারা সফল হতো, তাদের ভাবসাবই ছিল আলাদা। যেন বিজয়ী বীর। অসফলরা ওদের দিকে হিংসুটে চোখে তাকাত। আমাদের, মানে যারা ছাত্র ইউনিয়ন করতাম, ওসব করার সময় হতো না। দু–একজন যে ব্যতিক্রম ছিলেন না, তা নয়! আবার সাংগঠনিক শৃঙ্খলার কারণে আমাদের একটু সমঝেও চলতে হতো।
তাই বলে আমাদের কি কোনো সাধ-আহ্লাদ ছিল না? বয়সের দোষ বলে যে কথাটা আছে, আমাদের কি তা ছিল না? ছিল নিশ্চয়ই। কিন্তু তা অবদমনের ক্ষমতা কী করে যেন আমরা অর্জন করেছিলাম। দিঘলকেশী কাউকে দেখে আমাদের মন কি গেয়ে উঠত না, ‘কুন্তল বন্যা, কে দিল তোমায় বলো কন্যা?’ মনের ভেতর আনচান করত; কিন্তু প্রকাশ হতো না।
মুকুল ঠোঁট দিয়ে চমৎকার শিস দিতে পারত। কয়েকটি গানের এমন সুন্দর সুর তুলত যে শুনলে কানমন জুড়িয়ে যেত। মাঝেমধ্যে গভীর রাতে হলের দেয়াল টপকে আমি, মুকুল ও আরও দু–একজন শামসুন্নাহার হলের সামনের রাস্তায় চলে যেতাম। মুকুল শিস দিয়ে সুরের মূর্ছনা তুলত— 'এই রাত তোমার আমার!’
শামসুন্নাহার হলের বারান্দায় লক্ষ্য করতাম একে একে অনেক ছায়ামূর্তি এসে দাঁড়াচ্ছে। কয়েক মিনিট যেন মোহাবিষ্ট থাকতাম আমরা। ব্যস, ওটুকুই! তাতেই আমরা আমোদিত হতাম। ওগুলো কি প্রেম ছিল? নাকি ভালো লাগার কিছু মুহূর্ত? চাঁদপুরের মতলবের মুকুলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার পরও কিছুদিন চিঠিপত্রে যোগাযোগ ছিল। ও এলাকায় চলে গিয়েছিল। দেশে বিপ্লব হয়নি; সবার জন্য সমানাধিকার নিশ্চিত হয়নি। মুকুলের জীবনটাও যেন কেমন শেকড় থেকে উপড়ে গিয়েছিল! আহা, মুকুল কোথায় গেলি বন্ধু আমার!
মুকুলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। ও কেমন আছে, কী করছে, তার কিছুই জানি না। হঠাৎ কেন মুকুল আমার স্মৃতির দুয়ারে এসে হানা দিল? বন্ধু মুকুল, ক্ষমা করে দিস এই অকৃতজ্ঞ অভাজনকে। মানুষের জীবন এমনই। যাকে ছাড়া চলবে না বলে মনে করা হয় একসময়, দেখা যায় সময়ের স্রোত তাকে ছাড়াই দিব্যি টেনে নিয়ে যায়!
সুলতান ভাই। কী প্রাণোচ্ছল মানুষ ছিলেন! হাসি-গল্পে মাতিয়ে রাখতেন। তাঁর নীতি ছিল—‘নো চিন্তা, ডু ফুর্তি’। দুশ্চিন্তাহীন এক নতুন জীবনের সন্ধানী ছিলেন সুলতান ভাই। কত রকম পাগলামিই না করতেন। ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ছিলেন।
তখন আমরা মাঝেমধ্যে বলাকা সিনেমা হলে নাইট শোয়ে সিনেমা দেখতাম। রাত বারোটায় শো শেষ হয়েছে, সুলতান ভাইয়ের মনে হলো ছবির নায়িকাকে গিয়ে অভিনন্দন জানিয়ে আসি! যাহা ভাবা, তাহা কাজ। অত রাতে ছোটা হলো অলিভিয়ার বাসায়। পাগল আর কাকে বলে! তাঁর পাগলামির সহযাত্রী আমি। দারোয়ান গেট খুলবে না। সুলতান ভাই বললেন, ‘যাও ম্যাডামকে বল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট সুলতান এসেছে।’
দারোয়ান ভেতরে গিয়ে একটু পরে হাসিমুখে ফিরে এসে আমাদের ভেতরে নিয়ে গেলেন। রাতের পোশাক পরা নায়িকা অলিভিয়াকে অভিনন্দন জানালেন সুলতান ভাই। ছবির নাম ছিল—‘যখন বৃষ্টি এলো’ ইংরেজি টাইটেল: ‘The Rain’.
সুলতান ভাই অলিভিয়ার কাছে জানতে চাইলেন—‘যখন সুলতান এলো’–এর ইংরেজি কি হবে—‘The Sultan’? ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলেন অলিভিয়া। সুলতান ভাইয়ের চোখমুখ থেকে ঠিকরে বের হচ্ছে উচ্ছ্বাস। খুব ছেলেমানুষি কি? অত রাতেও চা খেতে বললেন অলিভিয়া। সুলতান ভাই ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলেন। নির্বাক, অসহায় সঙ্গী আমি তাঁকে অনুসরণ করি।
আরেক দিন আলমগীর কবিরের ‘সূর্যকন্যা’ দেখে বেরিয়ে সুলতান ভাইয়ের মনে হলো নায়িকা জয়শ্রী কবিরকে অভিনন্দন জানাতে হবে। আমাকে সঙ্গে নিয়ে রাত–দুপুরে হানা দিলেন আজিমপুরে আলমগীর কবিরের বাসায়। আলমগীর কবিরের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। আমি ‘মুক্তকণ্ঠ’ নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন বের করতাম। তাতে চলচ্চিত্র বিষয়ে কবির ভাইয়ের লেখা ছাপা হতো। সুন্দরী রূপসী জয়শ্রী কবির সে রাতে আমাদের চাপ্যায়িত (চা পানে আপ্যায়িত) না করে আসতে দেননি।
আজকের দিনে এসব ভাবা যায়! গাঁজাখুরি গল্প মনে হলেও এগুলো সত্য এবং এগুলো সম্ভব ছিল সুলতান ভাইয়ের পক্ষেই। আচ্ছা, সুলতান ভাইয়ের মতো আমুদে মানুষটি কোথায় হারিয়ে গেলেন?
খুব মনে পড়ছে, মন পুড়ছে। কেউ ভোলে আর কেউ ভোলে না অতীত দিনের স্মৃতি!
বিভুরঞ্জন সরকার: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
হঠাৎ দুজন মানুষের কথা কেন যেন খুব মনে পড়ছে। তাই তাঁদের নিয়ে কিছু না লিখে স্বস্তি পাচ্ছি না। একজন মুকুল চক্রবর্তী, আরেকজন সুলতান আহমেদ। মুকুল আমার ব্যাচমেট। পড়ত পদার্থ বিজ্ঞানে। সুলতান ভাই সিনিয়র। তিনি বাংলার ছাত্র, আমিও। মুকুল, আর আমি জগন্নাথ হলে থাকতাম। সুলতান ভাই জহুরুল হক হলে। তবে আড্ডা দিতেন বেশি জগন্নাথ হলেই। জগন্নাথ হল ছিল আমাদের আমলে ছাত্র ইউনিয়নের দুর্গ। মুকুল প্রথম দিকে জাসদ ছাত্রলীগের কর্মী ছিল। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে ঝাঁজালো স্লোগানে কলাভবন, হলের করিডর কাঁপাত। পরে অবশ্য আমাদের প্রভাবে মুকুলও ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দিয়েছিল।
সুলতান ভাই ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলে ছিলেন উচ্চকিত। ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি ভিয়েতনামের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্য যে মিছিলে পুলিশের গুলিতে মতিউল-কাদের নিহত হন, সেই মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন সুলতান ভাই। আমার সঙ্গে কী করে যেন এই দুজনেরই হয়েছিল যাকে বলে গলায়-গলায় ভাব। কত সময় যে আমরা একসঙ্গে কাটিয়েছি, কত কি যে করেছি! কত স্বপ্নের জাল বুনেছি।
পৃথিবীটা সব মানুষের বাসযোগ্য করার জন্য সে কী ব্যাকুলতা-আকুলতা আমাদের। বাংলাদেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। মানুষ নিরক্ষর থাকবে না। বেকার থাকবে না। সবাই মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে। রোগে চিকিৎসা পাবে। আমাদের সবটুকু সময় তাই সংগঠন গড়ে তোলার কাজে ব্যয় করতাম। বাস্তবিক অর্থেই আমাদের ‘নাওয়া-খাওয়া’র ঠিক ছিল না। এমন অনেক দিন গেছে সত্যি সত্যি পেটে দানাপানি পড়েনি। তাতে আমাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না। দেশে কত মানুষই তো হররোজ রোজা রাখে!
আমাদের বয়সী অনেক ছাত্র তখন রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হলের সামনে দিয়ে ঘুরঘুর করত। বিকেলে জটলা দিত। বন্ধু জোটানো-পটানোর জন্য কতজনের কত কোশেশ। যারা সফল হতো, তাদের ভাবসাবই ছিল আলাদা। যেন বিজয়ী বীর। অসফলরা ওদের দিকে হিংসুটে চোখে তাকাত। আমাদের, মানে যারা ছাত্র ইউনিয়ন করতাম, ওসব করার সময় হতো না। দু–একজন যে ব্যতিক্রম ছিলেন না, তা নয়! আবার সাংগঠনিক শৃঙ্খলার কারণে আমাদের একটু সমঝেও চলতে হতো।
তাই বলে আমাদের কি কোনো সাধ-আহ্লাদ ছিল না? বয়সের দোষ বলে যে কথাটা আছে, আমাদের কি তা ছিল না? ছিল নিশ্চয়ই। কিন্তু তা অবদমনের ক্ষমতা কী করে যেন আমরা অর্জন করেছিলাম। দিঘলকেশী কাউকে দেখে আমাদের মন কি গেয়ে উঠত না, ‘কুন্তল বন্যা, কে দিল তোমায় বলো কন্যা?’ মনের ভেতর আনচান করত; কিন্তু প্রকাশ হতো না।
মুকুল ঠোঁট দিয়ে চমৎকার শিস দিতে পারত। কয়েকটি গানের এমন সুন্দর সুর তুলত যে শুনলে কানমন জুড়িয়ে যেত। মাঝেমধ্যে গভীর রাতে হলের দেয়াল টপকে আমি, মুকুল ও আরও দু–একজন শামসুন্নাহার হলের সামনের রাস্তায় চলে যেতাম। মুকুল শিস দিয়ে সুরের মূর্ছনা তুলত— 'এই রাত তোমার আমার!’
শামসুন্নাহার হলের বারান্দায় লক্ষ্য করতাম একে একে অনেক ছায়ামূর্তি এসে দাঁড়াচ্ছে। কয়েক মিনিট যেন মোহাবিষ্ট থাকতাম আমরা। ব্যস, ওটুকুই! তাতেই আমরা আমোদিত হতাম। ওগুলো কি প্রেম ছিল? নাকি ভালো লাগার কিছু মুহূর্ত? চাঁদপুরের মতলবের মুকুলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার পরও কিছুদিন চিঠিপত্রে যোগাযোগ ছিল। ও এলাকায় চলে গিয়েছিল। দেশে বিপ্লব হয়নি; সবার জন্য সমানাধিকার নিশ্চিত হয়নি। মুকুলের জীবনটাও যেন কেমন শেকড় থেকে উপড়ে গিয়েছিল! আহা, মুকুল কোথায় গেলি বন্ধু আমার!
মুকুলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। ও কেমন আছে, কী করছে, তার কিছুই জানি না। হঠাৎ কেন মুকুল আমার স্মৃতির দুয়ারে এসে হানা দিল? বন্ধু মুকুল, ক্ষমা করে দিস এই অকৃতজ্ঞ অভাজনকে। মানুষের জীবন এমনই। যাকে ছাড়া চলবে না বলে মনে করা হয় একসময়, দেখা যায় সময়ের স্রোত তাকে ছাড়াই দিব্যি টেনে নিয়ে যায়!
সুলতান ভাই। কী প্রাণোচ্ছল মানুষ ছিলেন! হাসি-গল্পে মাতিয়ে রাখতেন। তাঁর নীতি ছিল—‘নো চিন্তা, ডু ফুর্তি’। দুশ্চিন্তাহীন এক নতুন জীবনের সন্ধানী ছিলেন সুলতান ভাই। কত রকম পাগলামিই না করতেন। ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ছিলেন।
তখন আমরা মাঝেমধ্যে বলাকা সিনেমা হলে নাইট শোয়ে সিনেমা দেখতাম। রাত বারোটায় শো শেষ হয়েছে, সুলতান ভাইয়ের মনে হলো ছবির নায়িকাকে গিয়ে অভিনন্দন জানিয়ে আসি! যাহা ভাবা, তাহা কাজ। অত রাতে ছোটা হলো অলিভিয়ার বাসায়। পাগল আর কাকে বলে! তাঁর পাগলামির সহযাত্রী আমি। দারোয়ান গেট খুলবে না। সুলতান ভাই বললেন, ‘যাও ম্যাডামকে বল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট সুলতান এসেছে।’
দারোয়ান ভেতরে গিয়ে একটু পরে হাসিমুখে ফিরে এসে আমাদের ভেতরে নিয়ে গেলেন। রাতের পোশাক পরা নায়িকা অলিভিয়াকে অভিনন্দন জানালেন সুলতান ভাই। ছবির নাম ছিল—‘যখন বৃষ্টি এলো’ ইংরেজি টাইটেল: ‘The Rain’.
সুলতান ভাই অলিভিয়ার কাছে জানতে চাইলেন—‘যখন সুলতান এলো’–এর ইংরেজি কি হবে—‘The Sultan’? ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলেন অলিভিয়া। সুলতান ভাইয়ের চোখমুখ থেকে ঠিকরে বের হচ্ছে উচ্ছ্বাস। খুব ছেলেমানুষি কি? অত রাতেও চা খেতে বললেন অলিভিয়া। সুলতান ভাই ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলেন। নির্বাক, অসহায় সঙ্গী আমি তাঁকে অনুসরণ করি।
আরেক দিন আলমগীর কবিরের ‘সূর্যকন্যা’ দেখে বেরিয়ে সুলতান ভাইয়ের মনে হলো নায়িকা জয়শ্রী কবিরকে অভিনন্দন জানাতে হবে। আমাকে সঙ্গে নিয়ে রাত–দুপুরে হানা দিলেন আজিমপুরে আলমগীর কবিরের বাসায়। আলমগীর কবিরের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। আমি ‘মুক্তকণ্ঠ’ নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন বের করতাম। তাতে চলচ্চিত্র বিষয়ে কবির ভাইয়ের লেখা ছাপা হতো। সুন্দরী রূপসী জয়শ্রী কবির সে রাতে আমাদের চাপ্যায়িত (চা পানে আপ্যায়িত) না করে আসতে দেননি।
আজকের দিনে এসব ভাবা যায়! গাঁজাখুরি গল্প মনে হলেও এগুলো সত্য এবং এগুলো সম্ভব ছিল সুলতান ভাইয়ের পক্ষেই। আচ্ছা, সুলতান ভাইয়ের মতো আমুদে মানুষটি কোথায় হারিয়ে গেলেন?
খুব মনে পড়ছে, মন পুড়ছে। কেউ ভোলে আর কেউ ভোলে না অতীত দিনের স্মৃতি!
বিভুরঞ্জন সরকার: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১৯ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
২০ ঘণ্টা আগে