ডা. মনোজ দাস
১. আমি মার্কসবাদী হিসেবে সম্প্রতি মুনিয়া নামের একটি মৃত্যু নিয়ে আমার কিছু ভাবনার কথা তুলে ধরছি। এটা হত্যা না আত্মহত্যা—তার ফয়সালা আইন-আদালতই করুক।
২. বুর্জোয়া শ্রেণিগত কাঠামোর মধ্যে নারী-পুরুষের দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক বোঝাতে গিয়ে এঙ্গেলস বলেছিলেন, ‘পরিবারের মধ্যে নারী হলো সর্বহারা এবং পুরুষ হলো বুর্জোয়া।’ এখানে মুনিয়া হলো সর্বহারা, আর আনভীর হলো সাক্ষাৎ খুনি-লুটেরা বুর্জোয়া।
৩. এঙ্গেলস ‘পরিবার, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও রাষ্ট্রের উৎপত্তি’ নামক গ্রন্থে দেখিয়েছেন মানবসমাজে প্রথম যে শ্রেণি নিপীড়ন, সেটা ছিল নারী ও পুরুষের মধ্যে। সেই আদি নারী নিপীড়নের সর্বোচ্চ প্রকাশ হলো মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনা।
৪. ওই গ্রন্থে এঙ্গেলস আরও বলেছিলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বুর্জোয়া প্রাধান্যের দরুণই তারা নারীকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।’ পণ্যে পরিণত হয়েই মুনিয়াদের পুরুষের পাতা ফাঁদে ধরা দিতে হয়। এঙ্গেলস ওই গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ‘অর্থনৈতিক কারণেই, নিজেদের ভরণপোষণের জন্য, ভবিষ্যতের কথা ভেবে নারীরা এটি সহ্য করে, এমনকি বিশ্বাসঘাতকতাও।’ মুনিয়ার ক্ষেত্রে এটাই ঘটেছে। গ্রাম থেকে এসে শহরে মুনিয়াদের একা থাকতে হয়। মুনিয়ারা ফাঁদে পড়ে। পড়তে বাধ্য হয়। মুনিয়া সব সহ্য করেছে। একসময় তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করা হয়েছে বা হত্যা করা হয়েছে।
পরিবারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। পরিবারের এখানে কিছুই করার থাকে না। কারণ, এঙ্গেলসের ভাষায়—‘পরিবার সমাজেরই সৃষ্টি। পরিবারের মধ্য সামাজিক অবস্থারই প্রতিফলন ঘটে।’ কমিউনিস্ট ইশতেহারে মার্কস-এঙ্গেলস বলেছেন, ‘পুঁজিবাদে মানুষের পারিবারিক সম্পর্ক নিছক টাকার সম্পর্কে পরিণত হয়েছে।...আধুনিক যন্ত্রশিল্পের কল্যাণে সর্বহারাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক শিথিল হয়ে যাচ্ছে। ...পুঁজিবাদী ব্যবস্থা তাদের ছেলেমেয়েদের সস্তা পণ্যদ্রব্যে পরিণত করছে। ...আর নারীদের ভোগ্যপণ্যের মতো হীন অবস্থায় নিক্ষেপ করছে। ...বু্র্জোয়ারা তাদের অধিনস্ত স্ত্রী-কন্যাদের সঙ্গে যৌন সংসর্গ ভোগ করছে।’
৫. ইশতেহারে মার্কস-এঙ্গেলস পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার অবসানের সঙ্গে নারীদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহারের বুর্জোয়া সংস্কৃতির বিলোপ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
৬. লেনিন ও ক্লারা জেটকিন ‘নারী নিপীড়ন, যৌন ও বিবাহ সমস্যাগুলো বৃহৎ সমাজজীবনের অংশ হিসেবে বুঝতে চেয়েছেন’। বুর্জোয়াদের ব্যাভিচার, পুরুষের স্বাধীনতা ও নারীদের দাসত্বকে তাঁরা ঘৃণার চোখে দেখেছেন। আমাদেরও লুটেরা বুর্জোয়া আনভীরদের ঘৃণা করতে হবে। লেনিনের মতে, ‘যৌনজীবনে লাম্পট্য হলো বুর্জোয়া বৈশিষ্ট্য। এর সাথে সমাজতান্ত্রিক সমাজের ভালোবাসার স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই।’
৭. যৌনজীবনকে পরিশীলিত করার জন্য বুর্জোয়ারা পরিবারের মধ্যে শিক্ষা, ধর্ম ও পুলিশি ব্যবস্থার ওপর জোর দেয়। আবার তারাই পারিবারিক মূল্যবোধকে ভেঙে ফেলে, ধর্মকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে, পুলিশি ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দেয়।
৮. তাই ‘প্রেমহীন দূষিত অপবিত্র সম্পর্কের পরিবর্তে’ প্রকৃত ভালোবাসার সামাজিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য লেনিন পুঁজিবাদ ভেঙে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনা সেই আহ্বানকেই প্রতিধ্বনিত করছে।
মুনিয়া হত্যা বা হত্যা প্ররোচনার ন্যায়বিচারের দাবি আদায়ের পাশাপাশি আমাদের সমাজতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম জোরদার করতে হবে। কিন্তু মুনিয়ারা ছাড়া বিপ্লব হবে না। এ জন্য স্ট্যালিন ‘শ্রমিক শ্রেণির সবচেয়ে বড় এই মজুত শক্তিকে’ জাগিয়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন।
১. আমি মার্কসবাদী হিসেবে সম্প্রতি মুনিয়া নামের একটি মৃত্যু নিয়ে আমার কিছু ভাবনার কথা তুলে ধরছি। এটা হত্যা না আত্মহত্যা—তার ফয়সালা আইন-আদালতই করুক।
২. বুর্জোয়া শ্রেণিগত কাঠামোর মধ্যে নারী-পুরুষের দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক বোঝাতে গিয়ে এঙ্গেলস বলেছিলেন, ‘পরিবারের মধ্যে নারী হলো সর্বহারা এবং পুরুষ হলো বুর্জোয়া।’ এখানে মুনিয়া হলো সর্বহারা, আর আনভীর হলো সাক্ষাৎ খুনি-লুটেরা বুর্জোয়া।
৩. এঙ্গেলস ‘পরিবার, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও রাষ্ট্রের উৎপত্তি’ নামক গ্রন্থে দেখিয়েছেন মানবসমাজে প্রথম যে শ্রেণি নিপীড়ন, সেটা ছিল নারী ও পুরুষের মধ্যে। সেই আদি নারী নিপীড়নের সর্বোচ্চ প্রকাশ হলো মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনা।
৪. ওই গ্রন্থে এঙ্গেলস আরও বলেছিলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বুর্জোয়া প্রাধান্যের দরুণই তারা নারীকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।’ পণ্যে পরিণত হয়েই মুনিয়াদের পুরুষের পাতা ফাঁদে ধরা দিতে হয়। এঙ্গেলস ওই গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ‘অর্থনৈতিক কারণেই, নিজেদের ভরণপোষণের জন্য, ভবিষ্যতের কথা ভেবে নারীরা এটি সহ্য করে, এমনকি বিশ্বাসঘাতকতাও।’ মুনিয়ার ক্ষেত্রে এটাই ঘটেছে। গ্রাম থেকে এসে শহরে মুনিয়াদের একা থাকতে হয়। মুনিয়ারা ফাঁদে পড়ে। পড়তে বাধ্য হয়। মুনিয়া সব সহ্য করেছে। একসময় তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করা হয়েছে বা হত্যা করা হয়েছে।
পরিবারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। পরিবারের এখানে কিছুই করার থাকে না। কারণ, এঙ্গেলসের ভাষায়—‘পরিবার সমাজেরই সৃষ্টি। পরিবারের মধ্য সামাজিক অবস্থারই প্রতিফলন ঘটে।’ কমিউনিস্ট ইশতেহারে মার্কস-এঙ্গেলস বলেছেন, ‘পুঁজিবাদে মানুষের পারিবারিক সম্পর্ক নিছক টাকার সম্পর্কে পরিণত হয়েছে।...আধুনিক যন্ত্রশিল্পের কল্যাণে সর্বহারাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক শিথিল হয়ে যাচ্ছে। ...পুঁজিবাদী ব্যবস্থা তাদের ছেলেমেয়েদের সস্তা পণ্যদ্রব্যে পরিণত করছে। ...আর নারীদের ভোগ্যপণ্যের মতো হীন অবস্থায় নিক্ষেপ করছে। ...বু্র্জোয়ারা তাদের অধিনস্ত স্ত্রী-কন্যাদের সঙ্গে যৌন সংসর্গ ভোগ করছে।’
৫. ইশতেহারে মার্কস-এঙ্গেলস পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার অবসানের সঙ্গে নারীদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহারের বুর্জোয়া সংস্কৃতির বিলোপ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
৬. লেনিন ও ক্লারা জেটকিন ‘নারী নিপীড়ন, যৌন ও বিবাহ সমস্যাগুলো বৃহৎ সমাজজীবনের অংশ হিসেবে বুঝতে চেয়েছেন’। বুর্জোয়াদের ব্যাভিচার, পুরুষের স্বাধীনতা ও নারীদের দাসত্বকে তাঁরা ঘৃণার চোখে দেখেছেন। আমাদেরও লুটেরা বুর্জোয়া আনভীরদের ঘৃণা করতে হবে। লেনিনের মতে, ‘যৌনজীবনে লাম্পট্য হলো বুর্জোয়া বৈশিষ্ট্য। এর সাথে সমাজতান্ত্রিক সমাজের ভালোবাসার স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই।’
৭. যৌনজীবনকে পরিশীলিত করার জন্য বুর্জোয়ারা পরিবারের মধ্যে শিক্ষা, ধর্ম ও পুলিশি ব্যবস্থার ওপর জোর দেয়। আবার তারাই পারিবারিক মূল্যবোধকে ভেঙে ফেলে, ধর্মকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে, পুলিশি ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দেয়।
৮. তাই ‘প্রেমহীন দূষিত অপবিত্র সম্পর্কের পরিবর্তে’ প্রকৃত ভালোবাসার সামাজিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য লেনিন পুঁজিবাদ ভেঙে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনা সেই আহ্বানকেই প্রতিধ্বনিত করছে।
মুনিয়া হত্যা বা হত্যা প্ররোচনার ন্যায়বিচারের দাবি আদায়ের পাশাপাশি আমাদের সমাজতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম জোরদার করতে হবে। কিন্তু মুনিয়ারা ছাড়া বিপ্লব হবে না। এ জন্য স্ট্যালিন ‘শ্রমিক শ্রেণির সবচেয়ে বড় এই মজুত শক্তিকে’ জাগিয়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন।
যেকোনো সামাজিক বিষয় বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কখনো কখনো তত্ত্ব দিয়ে তার ব্যাখ্যা করি, আবার কখনো কখনো বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয় বা সমস্যার বিশ্লেষণ করি। তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা...
২ ঘণ্টা আগেগাজার সবচেয়ে সুপরিচিত ফুটবল স্টেডিয়ামটি এখন বিশৃঙ্খলায় ভরা। মাঠ ও বসার জায়গায় বাস্তুচ্যুত লোকের বন্যা। সবার পিঠে ব্যাগ আর কিছু কাপড়। কেউ অসুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করছেন বা আহত আত্মীয়দের নিয়ে চলেছেন। আবার কেউ কেউ একা হাঁটছেন, খালি পায়েই হেঁটে চলেছেন।
২ ঘণ্টা আগেসিসা একটি নরম ধাতু। এটি ঈষৎ নীলাভ ধূসর বর্ণের। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৮২। ধাতুটি এতটাই নরম যে একটি ছুরির সাহায্যে একে কাটা যায়। সিসা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ। এই বিষের ভেতরেই বাস করছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। বাংলাদেশের বাতাসে যেমন সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি মাটিতে-পানিতেও পাওয়া গেছে...
২ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী পরিচয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারে সহায়তা করার কথা বলে পাপিয়া আক্তার রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি যে ‘ভুয়া’ ছাত্রী, সেটি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা তাঁকে আটক করেন। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। হয়তো তাঁর শাস্তিও হবে। পাপিয়া শুধু অচেনা রোগী ও তাদের স্বজনদের নয়, তাঁর স্বামীকেও ধোঁকা...
২ ঘণ্টা আগে