ডা. লেলিন চৌধুরী
গত দুই দশকে বাংলাদেশ তিনটি মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও কোভিড ১৯ বা করোনা। প্রতিটি মহামারির তাণ্ডবলীলায় মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়। গত বছর বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে ডেঙ্গু রোগীর দেখা মিলে। কিন্তু তখন ডেঙ্গুর সংক্রমণ খুব একটা বিস্তৃত হয়নি। কিন্তু এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে করোনা ও ডেঙ্গুর যুগপৎ আক্রমণে মানুষ দিশেহারা।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দুটো অংশ। একটি হচ্ছে সাধারণ মানুষকে যুক্ত করে করোনা সংক্রমণকে ছড়িয়ে পড়তে না দেওয়া। অন্যটি হচ্ছে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগীর সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতার মধ্য দিয়ে আমাদের করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম চলে আসছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যবিষয়ক সংসদীয় কমিটি পুরো কার্যক্রমের মূল্যায়ন করেছে। করোনার টিকাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। অপর্যাপ্ত টিকার সংগ্রহ নিয়ে গণটিকার আয়োজন, কঠোর লকডাউন চলাকালে হঠাৎ করে পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া, গ্রাম ও শহরাঞ্চলে ভিন্ন ধরনের টিকা কার্যক্রম পরিচালনাসহ নানা বিষয়ে অব্যবস্থাপনার কথা জানিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
করোনার এই দেড় বছরে জনসাধারণকে করোনা নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত করার কাজটিকে কাঠামোগত রূপ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের নিম্নগতি চলমান। গত ১৯ আগস্ট থেকে সারা দেশের সবকিছু খুলে দেওয়া হয়। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কোনো রোডম্যাপ ঘোষিত হয়নি। বলাবাহুল্য করোনার আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ দেশের শিক্ষা খাত। কত বছরে এই ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব হবে—সেটা বলা দুষ্কর।
দেশের সবকিছু খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সকল মহলে ব্যাপক শৈথিল্য দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে খুব দ্রুত দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। এমন অবস্থায় সামনের মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আবার করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সামনের অক্টোবরে আমাদের করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করতে হতে পারে।
বছরের শুরুতেই বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়। তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো নিশ্চুপ ছিল। ডেঙ্গুর রোগী যত বাড়ছে, আমরা কর্তৃপক্ষের হাঁকডাক ও সাজগোজ তত দেখছি। অবশ্য প্রতি বছরই এমনটি দেখা যায়। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের মূল কাজ দুটি। একটি হলো প্রাপ্তবয়স্ক মশা এবং মশার শূককীট বা লার্ভাকে মারার জন্য ওষুধ দেওয়া। দ্বিতীয়টি হলো এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা। বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গু প্রতিরোধী কার্যক্রম শুরু করতে হয়। গত ২০ বছর যাবৎ নানাভাবে বিচার-বিশ্লেষণ ও গবেষণা করে করণীয়গুলো ঠিক করা হয়েছে। আমরা সবাই জানি কখন কী কী করতে হবে। কিন্তু আসল কাজটি রেখে প্রদর্শনের সমারোহে ব্যস্ত সবাই। ফলে এডিস মশা তার ডেঙ্গু-অভিযান অপ্রতিহত গতিতে জারি রেখেছে। করোনার রোগী-ভারে জর্জরিত হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর জন্য শয্যা জোগাড় করা দুরূহ কাজ। ফলে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
করোনা ও ডেঙ্গুর যুগপৎ আক্রমণে নাগরিকেরা নাকাল। দুটি ক্ষেত্রেই অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম প্রকট। করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা হতে হবে স্বাস্থ্যবিজ্ঞানসম্মত। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হতে হবে সমাজবিজ্ঞানসম্মত। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে যখন আমলাতান্ত্রিকতা প্রাধান্য বিস্তার করে, তখন সেখানে অসম্পূর্ণতা থাকবেই। ডেঙ্গু প্রতিরোধী কার্যক্রমে প্রদর্শনবাদ থেকে সরে এসে সারা বছর মশক নিধনের কাজটি সঠিকভাবে করতে হবে। ‘বাইরে করোনা, ঘরে ডেঙ্গুর হানা’—এ অবস্থায় নগরবাসীর একটিই ভাবনা—‘কাজের কাজটি কবে হবে?’
ডা. লেলিন চৌধুরী: জনস্বাস্থ্যবিদ
গত দুই দশকে বাংলাদেশ তিনটি মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও কোভিড ১৯ বা করোনা। প্রতিটি মহামারির তাণ্ডবলীলায় মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়। গত বছর বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে ডেঙ্গু রোগীর দেখা মিলে। কিন্তু তখন ডেঙ্গুর সংক্রমণ খুব একটা বিস্তৃত হয়নি। কিন্তু এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে করোনা ও ডেঙ্গুর যুগপৎ আক্রমণে মানুষ দিশেহারা।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দুটো অংশ। একটি হচ্ছে সাধারণ মানুষকে যুক্ত করে করোনা সংক্রমণকে ছড়িয়ে পড়তে না দেওয়া। অন্যটি হচ্ছে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগীর সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতার মধ্য দিয়ে আমাদের করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম চলে আসছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যবিষয়ক সংসদীয় কমিটি পুরো কার্যক্রমের মূল্যায়ন করেছে। করোনার টিকাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। অপর্যাপ্ত টিকার সংগ্রহ নিয়ে গণটিকার আয়োজন, কঠোর লকডাউন চলাকালে হঠাৎ করে পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া, গ্রাম ও শহরাঞ্চলে ভিন্ন ধরনের টিকা কার্যক্রম পরিচালনাসহ নানা বিষয়ে অব্যবস্থাপনার কথা জানিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
করোনার এই দেড় বছরে জনসাধারণকে করোনা নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত করার কাজটিকে কাঠামোগত রূপ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের নিম্নগতি চলমান। গত ১৯ আগস্ট থেকে সারা দেশের সবকিছু খুলে দেওয়া হয়। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কোনো রোডম্যাপ ঘোষিত হয়নি। বলাবাহুল্য করোনার আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ দেশের শিক্ষা খাত। কত বছরে এই ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব হবে—সেটা বলা দুষ্কর।
দেশের সবকিছু খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সকল মহলে ব্যাপক শৈথিল্য দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে খুব দ্রুত দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। এমন অবস্থায় সামনের মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আবার করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সামনের অক্টোবরে আমাদের করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করতে হতে পারে।
বছরের শুরুতেই বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়। তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো নিশ্চুপ ছিল। ডেঙ্গুর রোগী যত বাড়ছে, আমরা কর্তৃপক্ষের হাঁকডাক ও সাজগোজ তত দেখছি। অবশ্য প্রতি বছরই এমনটি দেখা যায়। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের মূল কাজ দুটি। একটি হলো প্রাপ্তবয়স্ক মশা এবং মশার শূককীট বা লার্ভাকে মারার জন্য ওষুধ দেওয়া। দ্বিতীয়টি হলো এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা। বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গু প্রতিরোধী কার্যক্রম শুরু করতে হয়। গত ২০ বছর যাবৎ নানাভাবে বিচার-বিশ্লেষণ ও গবেষণা করে করণীয়গুলো ঠিক করা হয়েছে। আমরা সবাই জানি কখন কী কী করতে হবে। কিন্তু আসল কাজটি রেখে প্রদর্শনের সমারোহে ব্যস্ত সবাই। ফলে এডিস মশা তার ডেঙ্গু-অভিযান অপ্রতিহত গতিতে জারি রেখেছে। করোনার রোগী-ভারে জর্জরিত হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর জন্য শয্যা জোগাড় করা দুরূহ কাজ। ফলে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
করোনা ও ডেঙ্গুর যুগপৎ আক্রমণে নাগরিকেরা নাকাল। দুটি ক্ষেত্রেই অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম প্রকট। করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা হতে হবে স্বাস্থ্যবিজ্ঞানসম্মত। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হতে হবে সমাজবিজ্ঞানসম্মত। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে যখন আমলাতান্ত্রিকতা প্রাধান্য বিস্তার করে, তখন সেখানে অসম্পূর্ণতা থাকবেই। ডেঙ্গু প্রতিরোধী কার্যক্রমে প্রদর্শনবাদ থেকে সরে এসে সারা বছর মশক নিধনের কাজটি সঠিকভাবে করতে হবে। ‘বাইরে করোনা, ঘরে ডেঙ্গুর হানা’—এ অবস্থায় নগরবাসীর একটিই ভাবনা—‘কাজের কাজটি কবে হবে?’
ডা. লেলিন চৌধুরী: জনস্বাস্থ্যবিদ
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১২ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
১২ ঘণ্টা আগে