ভজন সরকার
আজ থেকে অনেক অনেক বছর পরের কথা। বাংলাদেশের প্রাইমারি স্কুলগুলোতে তখন হয়তো সুর করে পড়া হবে—
‘আমাদের দেশে এক নদী আছে। নদীটির নাম পদ্মা নদী। নদীটিকে বলা হয় প্রমত্তা পদ্মা। সেই প্রমত্তা পদ্মায় একসময় কোনো সেতু ছিল না। মানুষ নৌকায় কিংবা জাহাজে নদী পারাপার হতো। এই প্রমত্তা নদী পার হতে তিন-চার ঘণ্টা লাগত। ঢেউয়ে অনেক নৌকা বা জাহাজ ডুবে যেত। অনেক মানুষ প্রাণ হারাত প্রতিবছর। একদিন সেতু নির্মাণ করা হলো। পদ্মায় সেতু হওয়ায় মানুষের দুঃখ-কষ্ট কমে গেল…।’
অথচ আগামী প্রজন্মের শিশুরা কি জানবে এই সেতু নির্মাণের নেপথ্যের কাহিনি? এই সেতু নির্মাণের পেছনে এক সাহসী নারীর কথা? আর সেই সাহসের নাম শেখ হাসিনা। একটি জাতিসত্তাকে যিনি জাগিয়ে তুলেছিলেন; একটি বদ্বীপের মানুষকে যিনি স্বাধীনতা ও স্বাধীন একটি ভূখণ্ড উপহার দিয়েছিলেন; সেই বিপ্লবী অথচ জনদরদি জননেতার কন্যার নাম শেখ হাসিনা।
পিতা উপহার দিয়েছিলেন একটি মানচিত্র। পিতা উপহার দিয়েছিলেন একটি জাতীয় পতাকা। কন্যা উপহার দিলেন এক টুকরো উজ্জ্বল সাহস। কন্যা উপহার দিলেন দেশপ্রেম। কন্যা উপহার দিলেন আত্মবিশ্বাস, যা একটি দরিদ্র-রুগ্ণ-ভগ্ন দেশের জন্য মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার অন্য নাম।
২০০ বছর আগের মীরজাফরেরা বারবার জন্মেছে এই বাংলায়। বাংলাকে বারবার খামচে ধরে ক্ষতবিক্ষত করেছে শকুনেরা। বাংলার জল-নদী-পলিমাটি বারবার ভেসে গেছে বীরের রক্তস্রোতে।
বাঙালির ভুল ও অনুশোচনার ফিরিস্তি বিশাল। দূর অতীত তো বটেই, ১৯৪৭ সালের দেশভাগ বিবেচনায় নিলেও অনুশোচনার ফিরিস্তি লিখতে কয়েক দিস্তা কাগজ লেগে যাবে। দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রতি বাঙালির আনুগত্য ছিল প্রশ্নাতীত। পূর্ববঙ্গের অধিকাংশ নেতাই দেশভাগের বিপক্ষে ছিলেন না। এমনকি পূর্ববঙ্গের প্রায় সব নেতাই পক্ষে ছিলেন হাজার মাইল দূরের পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের।
পূর্ববঙ্গের পাকিস্তান-পছন্দ জনগোষ্ঠীর ভুল ভাঙতে এক বছরের বেশি সময় লাগেনি। পরের বছরই গণপরিষদে বাংলা ভাষার ওপর আঘাত আসে। ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকেও রাষ্ট্রের ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সংশোধনী প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। ওই দিন পূর্ববঙ্গের পাকিস্তানের পক্ষের নেতাদের মোহভঙ্গ ঘটে। ছাত্র-জনতা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন।
মূল আঘাত আসে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। দেশভাগের পরে বাঙালির প্রথম ভুলের বলি সালাম, রফিক, বরকতসহ ভাষাশহীদেরা। এর পরের ইতিহাস তো সবার জানা। বাঙালির অনুশোচনার পাহাড় জমতে জমতে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম। একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় তো বাঙালির ঠেকে শেখার ফসল, বাঙালির ভুল শুধরে নেওয়ার প্রায়শ্চিত্ত।
তাই বলে কি ১৯৭১-এ বাঙালির আত্মশুদ্ধির চূড়ান্ত বোধোদয় ঘটে? না, অবশ্যই নয়। মাত্র চার বছর পরে ১৯৭৫ সালেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মুক্তিসংগ্রামের অগ্রনায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে, যাঁরা ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন।
১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পরাজয়ের কুফল তো বাংলাদেশ পেয়েছে। একটি জাতিগোষ্ঠী ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষের জীবন এবং লাখ লাখ মা-বোনের চরম আত্মত্যাগের বিনিময়ে যা অর্জন করেছিল, ১৯৭৫-এ জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তা প্রায় নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল। নিঃশেষ তো হতোই, যদি জাতির জনকের দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকার কারণে অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে না যেতেন। যদি না সাহসে ভর করে বাংলায় ফিরে আসতেন।
ইতিহাস হয়তো এই নব্য মীরজাফরদের পক্ষেই লেখা হতো ১৯৭৫ সালের পরে। সেই চেষ্টাও হয়েছে দীর্ঘ দুই দশক। কিন্তু তখনো এক উদ্দীপ্ত সাহসে ভর দিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন কন্যা শেখ হাসিনা।
দেশে ফিরে শুধু ইতিহাসকেই শুদ্ধ স্রোতে বহমান করেননি, পিতার স্বপ্নের দেশকে গড়েও তুলেছেন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। সেই উন্নয়নের একটি নাম পদ্মা সেতু।
যারা পিতাকে হত্যা করেছিল, যারা স্বাধীনতাকে আবার বিপরীত বাঁকে ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিল, তাদেরই নব্য সংস্করণ কন্যার উন্নয়নেও বাধা দিয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতাতেই পদ্মা নদীর ওপরের সেতুটি বাস্তবায়নের আগেই দুর্নীতির অজুহাতে থেমেই গিয়েছিল। আর এর পেছনের মানুষগুলো কন্যার পিতার হাতেই গড়া।
মীরজাফরেরা যেমন বারবার ফিরে আসে, তারাও ফিরে আসতে চেয়েছিল অন্য নামে, অন্য কৌশলে। কিন্তু বিশ্বাস আর দেশপ্রেমের রক্ত যাঁর ধমনিতে, সেই শেখ হাসিনা তখন দেখিয়েছিলেন সাহস।
শেখ হাসিনা তখন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করিয়েছিলেন বাংলার মানুষকে। অন্যায় অপবাদে মাথা নোয়াবে না বাংলার মানুষ। তাই পদ্মা সেতুর নাম তো সাহসেরই সেতু। পদ্মায় সেতু নির্মাণের কথা উঠল। মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করল।
টাকা নিয়ে আবির্ভাব হলো বেনিয়া বিশ্বব্যাংক। কিন্তু সেতুটি নির্মাণের আগেই শুরু হলো অপবাদ-দুর্নীতির। দেশবিরোধী কিছু মানুষ হাত মেলাল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে। বিশ্বব্যাংক চলে গেল টাকা নিয়ে।
মানুষের আশাভঙ্গ হলো। আর বুঝি হবে না পদ্মা সেতু। কোটি কোটি মানুষের উন্নত জীবনের স্বপ্ন বুঝি থমকেই যাবে।
ঠিক তখনই দেশবাসীকে বরাভয় দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাঁর পিতা জাতিকে উপহার দিয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র। সেই নেতার রক্ত যাঁর ধমনিতে, সেই কন্যা ঘোষণা করলেন, পদ্মা নদীর সেতুটি হবে এবং সেটা আমাদের নিজেদের টাকায়ই হবে। আশাবাদ সত্য হলো।
পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন বা কল্পনার ব্যাপার নয়। সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে কয়েকটি দেশের কারিগরি সহায়তায় পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষের পথে। নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে, সময় বেশি লেগেছে, পদ্মার মতো প্রমত্তা নদীকে বাগে এনে সেতুর পিলার তৈরির কাজটি সহজ ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশ হলো সব সম্ভবের দেশ। আর কথায় আছে, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। বাঙালি জাতি এখন অপেক্ষা পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন ক্ষণটির। আর মাত্র কয়েক মাস পরই অবসান ঘটবে অপেক্ষার।
লেখক: কানাডাপ্রবাসী প্রকৌশলী ও গবেষক
আজ থেকে অনেক অনেক বছর পরের কথা। বাংলাদেশের প্রাইমারি স্কুলগুলোতে তখন হয়তো সুর করে পড়া হবে—
‘আমাদের দেশে এক নদী আছে। নদীটির নাম পদ্মা নদী। নদীটিকে বলা হয় প্রমত্তা পদ্মা। সেই প্রমত্তা পদ্মায় একসময় কোনো সেতু ছিল না। মানুষ নৌকায় কিংবা জাহাজে নদী পারাপার হতো। এই প্রমত্তা নদী পার হতে তিন-চার ঘণ্টা লাগত। ঢেউয়ে অনেক নৌকা বা জাহাজ ডুবে যেত। অনেক মানুষ প্রাণ হারাত প্রতিবছর। একদিন সেতু নির্মাণ করা হলো। পদ্মায় সেতু হওয়ায় মানুষের দুঃখ-কষ্ট কমে গেল…।’
অথচ আগামী প্রজন্মের শিশুরা কি জানবে এই সেতু নির্মাণের নেপথ্যের কাহিনি? এই সেতু নির্মাণের পেছনে এক সাহসী নারীর কথা? আর সেই সাহসের নাম শেখ হাসিনা। একটি জাতিসত্তাকে যিনি জাগিয়ে তুলেছিলেন; একটি বদ্বীপের মানুষকে যিনি স্বাধীনতা ও স্বাধীন একটি ভূখণ্ড উপহার দিয়েছিলেন; সেই বিপ্লবী অথচ জনদরদি জননেতার কন্যার নাম শেখ হাসিনা।
পিতা উপহার দিয়েছিলেন একটি মানচিত্র। পিতা উপহার দিয়েছিলেন একটি জাতীয় পতাকা। কন্যা উপহার দিলেন এক টুকরো উজ্জ্বল সাহস। কন্যা উপহার দিলেন দেশপ্রেম। কন্যা উপহার দিলেন আত্মবিশ্বাস, যা একটি দরিদ্র-রুগ্ণ-ভগ্ন দেশের জন্য মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার অন্য নাম।
২০০ বছর আগের মীরজাফরেরা বারবার জন্মেছে এই বাংলায়। বাংলাকে বারবার খামচে ধরে ক্ষতবিক্ষত করেছে শকুনেরা। বাংলার জল-নদী-পলিমাটি বারবার ভেসে গেছে বীরের রক্তস্রোতে।
বাঙালির ভুল ও অনুশোচনার ফিরিস্তি বিশাল। দূর অতীত তো বটেই, ১৯৪৭ সালের দেশভাগ বিবেচনায় নিলেও অনুশোচনার ফিরিস্তি লিখতে কয়েক দিস্তা কাগজ লেগে যাবে। দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রতি বাঙালির আনুগত্য ছিল প্রশ্নাতীত। পূর্ববঙ্গের অধিকাংশ নেতাই দেশভাগের বিপক্ষে ছিলেন না। এমনকি পূর্ববঙ্গের প্রায় সব নেতাই পক্ষে ছিলেন হাজার মাইল দূরের পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের।
পূর্ববঙ্গের পাকিস্তান-পছন্দ জনগোষ্ঠীর ভুল ভাঙতে এক বছরের বেশি সময় লাগেনি। পরের বছরই গণপরিষদে বাংলা ভাষার ওপর আঘাত আসে। ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকেও রাষ্ট্রের ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সংশোধনী প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। ওই দিন পূর্ববঙ্গের পাকিস্তানের পক্ষের নেতাদের মোহভঙ্গ ঘটে। ছাত্র-জনতা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন।
মূল আঘাত আসে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। দেশভাগের পরে বাঙালির প্রথম ভুলের বলি সালাম, রফিক, বরকতসহ ভাষাশহীদেরা। এর পরের ইতিহাস তো সবার জানা। বাঙালির অনুশোচনার পাহাড় জমতে জমতে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম। একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় তো বাঙালির ঠেকে শেখার ফসল, বাঙালির ভুল শুধরে নেওয়ার প্রায়শ্চিত্ত।
তাই বলে কি ১৯৭১-এ বাঙালির আত্মশুদ্ধির চূড়ান্ত বোধোদয় ঘটে? না, অবশ্যই নয়। মাত্র চার বছর পরে ১৯৭৫ সালেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মুক্তিসংগ্রামের অগ্রনায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে, যাঁরা ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন।
১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পরাজয়ের কুফল তো বাংলাদেশ পেয়েছে। একটি জাতিগোষ্ঠী ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষের জীবন এবং লাখ লাখ মা-বোনের চরম আত্মত্যাগের বিনিময়ে যা অর্জন করেছিল, ১৯৭৫-এ জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তা প্রায় নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল। নিঃশেষ তো হতোই, যদি জাতির জনকের দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকার কারণে অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে না যেতেন। যদি না সাহসে ভর করে বাংলায় ফিরে আসতেন।
ইতিহাস হয়তো এই নব্য মীরজাফরদের পক্ষেই লেখা হতো ১৯৭৫ সালের পরে। সেই চেষ্টাও হয়েছে দীর্ঘ দুই দশক। কিন্তু তখনো এক উদ্দীপ্ত সাহসে ভর দিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন কন্যা শেখ হাসিনা।
দেশে ফিরে শুধু ইতিহাসকেই শুদ্ধ স্রোতে বহমান করেননি, পিতার স্বপ্নের দেশকে গড়েও তুলেছেন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। সেই উন্নয়নের একটি নাম পদ্মা সেতু।
যারা পিতাকে হত্যা করেছিল, যারা স্বাধীনতাকে আবার বিপরীত বাঁকে ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিল, তাদেরই নব্য সংস্করণ কন্যার উন্নয়নেও বাধা দিয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতাতেই পদ্মা নদীর ওপরের সেতুটি বাস্তবায়নের আগেই দুর্নীতির অজুহাতে থেমেই গিয়েছিল। আর এর পেছনের মানুষগুলো কন্যার পিতার হাতেই গড়া।
মীরজাফরেরা যেমন বারবার ফিরে আসে, তারাও ফিরে আসতে চেয়েছিল অন্য নামে, অন্য কৌশলে। কিন্তু বিশ্বাস আর দেশপ্রেমের রক্ত যাঁর ধমনিতে, সেই শেখ হাসিনা তখন দেখিয়েছিলেন সাহস।
শেখ হাসিনা তখন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করিয়েছিলেন বাংলার মানুষকে। অন্যায় অপবাদে মাথা নোয়াবে না বাংলার মানুষ। তাই পদ্মা সেতুর নাম তো সাহসেরই সেতু। পদ্মায় সেতু নির্মাণের কথা উঠল। মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করল।
টাকা নিয়ে আবির্ভাব হলো বেনিয়া বিশ্বব্যাংক। কিন্তু সেতুটি নির্মাণের আগেই শুরু হলো অপবাদ-দুর্নীতির। দেশবিরোধী কিছু মানুষ হাত মেলাল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে। বিশ্বব্যাংক চলে গেল টাকা নিয়ে।
মানুষের আশাভঙ্গ হলো। আর বুঝি হবে না পদ্মা সেতু। কোটি কোটি মানুষের উন্নত জীবনের স্বপ্ন বুঝি থমকেই যাবে।
ঠিক তখনই দেশবাসীকে বরাভয় দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাঁর পিতা জাতিকে উপহার দিয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র। সেই নেতার রক্ত যাঁর ধমনিতে, সেই কন্যা ঘোষণা করলেন, পদ্মা নদীর সেতুটি হবে এবং সেটা আমাদের নিজেদের টাকায়ই হবে। আশাবাদ সত্য হলো।
পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন বা কল্পনার ব্যাপার নয়। সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে কয়েকটি দেশের কারিগরি সহায়তায় পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষের পথে। নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে, সময় বেশি লেগেছে, পদ্মার মতো প্রমত্তা নদীকে বাগে এনে সেতুর পিলার তৈরির কাজটি সহজ ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশ হলো সব সম্ভবের দেশ। আর কথায় আছে, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। বাঙালি জাতি এখন অপেক্ষা পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন ক্ষণটির। আর মাত্র কয়েক মাস পরই অবসান ঘটবে অপেক্ষার।
লেখক: কানাডাপ্রবাসী প্রকৌশলী ও গবেষক
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১১ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
১২ ঘণ্টা আগে