ফরহাদ রনি
একবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জুনিয়র শিক্ষার্থী আমাকে অনুরোধ করছিল তার মাকে যেন বুঝিয়ে বলি, তাকে একটা মোবাইল ফোন কিনে দিতে। এ যুগে ভার্সিটি-পড়ুয়া শিক্ষার্থীর কাছে মোবাইল নেই, এটি মেনে নিতে কষ্ট হয়। আমি অবাক হয়েই সেই শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলাম, কেন তার মা-বাবা তাকে এখনো মোবাইল ফোন কিনে দেননি। সে জানাল, মোবাইল ফোন অনেক খারাপ, অনেক খারাপ ভিডিও থাকে, আর ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষ খারাপ হয়ে যায়, তাই কিনে দেননি।
মেয়েটির সরল উত্তরে আমি কিছুটা অবাক হলাম। আমাদের দেশে ইতিবাচক দিক নিয়ে মানুষের মাথাব্যথা কম। নেতিবাচক দিক নিয়েই মানুষ বেশি মেতে ওঠে। যেমন ধরুন, এক ছেলে একটা অনুষ্ঠানে এক মেয়ের নাচ দেখে তার প্রেমে পড়ে যায়। একপর্যায়ে ছেলেটি মেয়েটিকে বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের পর মেয়েটিকে আর নাচের চর্চা করতে দেয়নি।
যাহোক, বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া সে মেয়েটির মাথায় তার পরিবার মোবাইল সম্পর্কে শুধু নেতিবাচক দিকটাই ঢুকিয়ে দিয়েছেন। মেয়েটির অনুরোধ রক্ষার্থে আমি তার মাকে ফোন করে বোঝালাম, দা-বঁটি আবিষ্কার করা হয়েছিল আগাছা পরিষ্কার করতে আর শাকসবজি কাটতে। সেই দা-বঁটি দিয়ে যদি মানুষ খুন করা হয়, সেটা নিশ্চয় দা বা বঁটির দায় নয়, দায় মানুষের।
তাই মোবাইল দিয়ে যদি মানুষ খারাপ কিছু করে, সেটা মানুষের দায়, মোবাইলের নয়। সেই সঙ্গে মোবাইলের অনেক ইতিবাচক দিক বুঝিয়ে বলায় কয়দিন পরেই মেয়েটিকে মোবাইল কিনে দেওয়া হলো।
সাত দিন পর অভিযোগ এল, মেয়েটি সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকে। জানা গেল, মেয়েটি মোবাইলে ইউটিউবে নানা ধরনের টিউটোরিয়াল দেখে সেসব বিষয়ে শেখার চেষ্টা করছে। অথচ অভিভাবক যদি একটু সন্তানের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করতেন, তাহলে এত চিন্তার কারণ ছিল না। মেয়েটি তার মাকেই হয়তো ইউটিউবের ভিডিওগুলো দেখাত।
প্রযুক্তির ভালো-মন্দ দুটো দিক থাকে। এর ব্যবহার নির্ভর করে নিজের ওপর। আমরা নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হয়ে সভ্যতাকে এগিয়ে নেব অবশ্যই। আমরা তো কোনো কাজে থেমে থাকতে পারি না। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুরব্বি সারাক্ষণ ফেসবুককেই গাল দিচ্ছেন। অথচ এই ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষ চমৎকার কাজ করতে পারে।
আমার মা একবার রক্তশূন্যতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শরীরে রক্তের ঘাটতি থাকায় ডাক্তার জানান অতিদ্রুত চার ব্যাগ রক্ত লাগবে। আমি সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে আধা ঘণ্টার মধ্যে রক্ত জোগাড় হয়ে গিয়েছিল। খেয়াল রাখতে হবে, অতিমাত্রায় কোনো কিছুই ভালো নয়। অতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহারে সময়ের পাশাপাশি নষ্ট হতে পারে আপনার মূল্যবান জীবন।
আমাদের মন সবকিছুই বুঝে করে। কী করলে খারাপ হবে, সেটাও আমরা জানি। তাই ফেসবুকের ব্যবহারটাও সেভাবেই করা উচিত। পৃথিবীতে সবচেয়ে জঘন্য মানুষ সে, যে ভালো সাজার ভান করে এবং ভালো মানুষ সেজে বিশ্বাস অর্জন করে অন্যের ক্ষতি করে। ফেসবুকে মানুষকে ধরা বা ছোঁয়া যায় না।
তাই ফেসবুকে সখ্য খুব দ্রুতই হয়।
সে সখ্যকে পুঁজি করে অন্যের ক্ষতি ফেসবুকে খুব সহজেই করা যায়। আমি সিগারেট কীভাবে খেতে হয় সেই দৃশ্য দেখিয়ে বলতে পারব না যে মাদককে ‘না’ বলুন। কারণ, এতে কেউ সিগারেট কীভাবে খেতে হয়, তা শিখে যেতে পারেন।
তেমন ফেসবুকের নেতিবাচক দিক বলতে চাইছি না। ভালো-মন্দের জ্ঞান আমরা সমাজ থেকেই শিখি।
ফেসবুকের নেতিবাচক দিক আমরা নিজেরাই জানি। শুধু মাধ্যম, তার উপকারিতা, অপকারিতা, সমস্যা, সমাধান ও সম্ভাবনা—সবকিছু আমাদের হাতে। আমরাই করতে পারি, এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক ব্যবহার।
লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
একবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জুনিয়র শিক্ষার্থী আমাকে অনুরোধ করছিল তার মাকে যেন বুঝিয়ে বলি, তাকে একটা মোবাইল ফোন কিনে দিতে। এ যুগে ভার্সিটি-পড়ুয়া শিক্ষার্থীর কাছে মোবাইল নেই, এটি মেনে নিতে কষ্ট হয়। আমি অবাক হয়েই সেই শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলাম, কেন তার মা-বাবা তাকে এখনো মোবাইল ফোন কিনে দেননি। সে জানাল, মোবাইল ফোন অনেক খারাপ, অনেক খারাপ ভিডিও থাকে, আর ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষ খারাপ হয়ে যায়, তাই কিনে দেননি।
মেয়েটির সরল উত্তরে আমি কিছুটা অবাক হলাম। আমাদের দেশে ইতিবাচক দিক নিয়ে মানুষের মাথাব্যথা কম। নেতিবাচক দিক নিয়েই মানুষ বেশি মেতে ওঠে। যেমন ধরুন, এক ছেলে একটা অনুষ্ঠানে এক মেয়ের নাচ দেখে তার প্রেমে পড়ে যায়। একপর্যায়ে ছেলেটি মেয়েটিকে বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের পর মেয়েটিকে আর নাচের চর্চা করতে দেয়নি।
যাহোক, বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া সে মেয়েটির মাথায় তার পরিবার মোবাইল সম্পর্কে শুধু নেতিবাচক দিকটাই ঢুকিয়ে দিয়েছেন। মেয়েটির অনুরোধ রক্ষার্থে আমি তার মাকে ফোন করে বোঝালাম, দা-বঁটি আবিষ্কার করা হয়েছিল আগাছা পরিষ্কার করতে আর শাকসবজি কাটতে। সেই দা-বঁটি দিয়ে যদি মানুষ খুন করা হয়, সেটা নিশ্চয় দা বা বঁটির দায় নয়, দায় মানুষের।
তাই মোবাইল দিয়ে যদি মানুষ খারাপ কিছু করে, সেটা মানুষের দায়, মোবাইলের নয়। সেই সঙ্গে মোবাইলের অনেক ইতিবাচক দিক বুঝিয়ে বলায় কয়দিন পরেই মেয়েটিকে মোবাইল কিনে দেওয়া হলো।
সাত দিন পর অভিযোগ এল, মেয়েটি সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকে। জানা গেল, মেয়েটি মোবাইলে ইউটিউবে নানা ধরনের টিউটোরিয়াল দেখে সেসব বিষয়ে শেখার চেষ্টা করছে। অথচ অভিভাবক যদি একটু সন্তানের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করতেন, তাহলে এত চিন্তার কারণ ছিল না। মেয়েটি তার মাকেই হয়তো ইউটিউবের ভিডিওগুলো দেখাত।
প্রযুক্তির ভালো-মন্দ দুটো দিক থাকে। এর ব্যবহার নির্ভর করে নিজের ওপর। আমরা নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হয়ে সভ্যতাকে এগিয়ে নেব অবশ্যই। আমরা তো কোনো কাজে থেমে থাকতে পারি না। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুরব্বি সারাক্ষণ ফেসবুককেই গাল দিচ্ছেন। অথচ এই ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষ চমৎকার কাজ করতে পারে।
আমার মা একবার রক্তশূন্যতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শরীরে রক্তের ঘাটতি থাকায় ডাক্তার জানান অতিদ্রুত চার ব্যাগ রক্ত লাগবে। আমি সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে আধা ঘণ্টার মধ্যে রক্ত জোগাড় হয়ে গিয়েছিল। খেয়াল রাখতে হবে, অতিমাত্রায় কোনো কিছুই ভালো নয়। অতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহারে সময়ের পাশাপাশি নষ্ট হতে পারে আপনার মূল্যবান জীবন।
আমাদের মন সবকিছুই বুঝে করে। কী করলে খারাপ হবে, সেটাও আমরা জানি। তাই ফেসবুকের ব্যবহারটাও সেভাবেই করা উচিত। পৃথিবীতে সবচেয়ে জঘন্য মানুষ সে, যে ভালো সাজার ভান করে এবং ভালো মানুষ সেজে বিশ্বাস অর্জন করে অন্যের ক্ষতি করে। ফেসবুকে মানুষকে ধরা বা ছোঁয়া যায় না।
তাই ফেসবুকে সখ্য খুব দ্রুতই হয়।
সে সখ্যকে পুঁজি করে অন্যের ক্ষতি ফেসবুকে খুব সহজেই করা যায়। আমি সিগারেট কীভাবে খেতে হয় সেই দৃশ্য দেখিয়ে বলতে পারব না যে মাদককে ‘না’ বলুন। কারণ, এতে কেউ সিগারেট কীভাবে খেতে হয়, তা শিখে যেতে পারেন।
তেমন ফেসবুকের নেতিবাচক দিক বলতে চাইছি না। ভালো-মন্দের জ্ঞান আমরা সমাজ থেকেই শিখি।
ফেসবুকের নেতিবাচক দিক আমরা নিজেরাই জানি। শুধু মাধ্যম, তার উপকারিতা, অপকারিতা, সমস্যা, সমাধান ও সম্ভাবনা—সবকিছু আমাদের হাতে। আমরাই করতে পারি, এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক ব্যবহার।
লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
৪ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
৪ ঘণ্টা আগে