অরুণ কর্মকার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি ছাড়াই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে এখন ধরে নেওয়া যায়। যদিও তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত নয়। কারণ তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ এখনো আছে। তারপরও ধরে নেওয়ার কারণ সেই সুযোগ কাজে লাগানোর ন্যূনতম কোনো লক্ষণ বিএনপির মধ্যে এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। বরং তারা আছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সপ্তাহে চার দিন অবরোধ ডাকার আন্দোলনে। আগামীকাল রোববার থেকে আবার দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে।
ওদিকে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী অংশগ্রহণের সময়সীমা শেষ হয়ে এসেছে। বিএনপির সমমনা কোনো কোনো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টি এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন নবগঠিত জোট যুক্তফ্রন্টের কথা এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। একই ধারার আরও কোনো কোনো দল একই রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে প্রচার আছে।
জাতীয় পার্টি সব রকম দ্বিধাদ্বন্দ্ব পরিত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে এবং দলীয় প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল বিএনপি আরও আগে থেকেই নির্বাচনের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। বিএনপির অনেক নেতাও স্বতন্ত্র কিংবা অন্য কোনো দল বা জোটের পরিচয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে জামায়াতের কথাও। তাদের নেতারাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। শ দেড়েক আসনে বিএনপি-জামায়াতের এ রকম প্রার্থী থাকতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, এ রকম প্রার্থীর সংখ্যা যাতে বেশি হয়, সে জন্য সরকারের উদ্যোগ এবং চাপ আছে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল তো নির্বাচনমুখী আছেই। রয়েছে বিকল্পধারা এবং কয়েকটি ইসলামি দলও। সুতরাং সব মিলে আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ভালোই হচ্ছে। এরপর যদি ভোটারের উপস্থিতি বাড়ানো যায়, তাহলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক না বলার জোরালো কোনো যুক্তি থাকবে বলে মনে হয় না। আর নির্বাচন কতটা সৃষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে তা নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বলার বিষয় নয়। তবে ধারণা করা যায়, দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেবে। বিএনপিসহ নির্বাচনবিমুখ দলগুলো তাদের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচন ঠেকাতে পারবে বলে মনে হয় না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সবই তো হলো। কিন্তু সারা দেশে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতার যে ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে আছে এর ফলাফল কী হবে? দলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৩০০। দলটির মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৩৬২টি। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন
প্রার্থী একাধিক আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। হিসাব অনুযায়ী, প্রতিটি আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ১১ জন। তবে ২০১৮ সালের তুলনায় এবার প্রায় সাড়ে ৭০০ ফরম কম বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে।
কয়েকটি আসনের চিত্র বিস্ময়কর। যেমন কুমিল্লা-৫ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ২৯ জন প্রার্থী। চট্টগ্রাম-৮ আসনের জন্য ফরম কিনেছেন ২৬ জন। ২২ জন প্রার্থী ফরম কিনেছেন নেত্রকোনা-১ আসনের জন্য। ২১ জন কিনেছেন নড়াইল-২ আসনের জন্য।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের জন্য কিনেছেন ২০ জন। হিসাব করে দেখা যায় অধিকাংশ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতার আসনেই এ রকম প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এর মধ্যে একেবারে নবীন প্রার্থী যেমন রয়েছেন, তেমনি আছেন প্রবীণ এবং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাও। তাঁরা সবাই যে মনোনয়ন পাবেন ধরে নিয়ে প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশী হয়েছেন, তেমন নয়; বিশেষ করে নবীনেরা। তাঁদের অনেকেরই লক্ষ্য ভবিষ্যতের সিরিয়ালে অন্তর্ভুক্ত হওয়া। তবে প্রবীণ ও পরীক্ষিত নেতাদের বিষয়টি ভিন্ন। তাঁরা প্রকৃতই মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলীয় কোন্দল, বিদ্যমান সংসদ সদস্যের বদনাম, বঞ্চনার অবসান প্রভৃতি কারণে তাঁরা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন বলেই প্রার্থী হতে চাইছেন।
কিন্তু এ কথা সবার মতো তাঁরাও জানেন যে তাঁদের অনেকেই দলের মনোনয়ন না-ও পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাঁরা কী করবেন? তাঁরা সবাই কি দলের নির্দেশনা মেনে দলীয় প্রতীক পাওয়া প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে নেমে পড়বেন? নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিদ্রোহী অভিধা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন? অতীতের অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টান্ত থেকে এ কথা বলা যেতেই পারে, কেউ কেউ দলের প্রতি আনুগত্যবশত দলীয় প্রতীক পাওয়া প্রার্থীর পক্ষেই নির্বাচনে অংশ নেবেন; কিংবা অভিমানবশত চুপচাপ থাকবেন। নির্বাচনে বিশেষ কোনো ভূমিকা নেবেন না। আবার অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন। জয়-পরাজয়ের কথা না ভেবে, দলের স্বার্থের কথা না ভেবে কিংবা হতে পারে দলের বৃহত্তর স্বার্থেই দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করবেন।
প্রতিটি সংসদীয় আসনের জন্য গড়ে আওয়ামী লীগের যে ১১ জন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন, তাঁদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পাবেন তো একজনই। যাঁরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন না, তাঁদের মধ্যে গড়ে দুজন যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন এবং সেই সব আসনে যদি স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী থাকেন কিংবা থাকেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী এবং ভোট যদি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, তাহলে সেখানে কে জিতবেন তা বলা যায় না। কারণ সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ভোট ভাগাভাগি হবে। এই যে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতার একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়ে আছে, এটা নির্বাচনী ফলাফলে একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে যদি স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীর সংখ্যা কম হয়, সে ক্ষেত্রে নির্বাচনী ফলাফলে তেমন একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই। তেমন অবস্থায় বরং আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী দৃশ্যপটে ভিন্ন একটি মাত্রা যুক্ত করতে পারেন। যেমন ধরা যাক, কোনো আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকের প্রার্থী ছাড়াও এক বা একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন। কিন্তু সেখানে স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী নেই। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যিনিই বিজয়ী হোন না কেন, চূড়ান্ত বিচারে দল নেতিবাচক পরিস্থিতিতে পড়বে না। এ রকম পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ বরং দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে দেখেও না দেখার কিংবা চুপ থাকার নীতি অবলম্বন করতে পারে। কারণ তেমন ক্ষেত্রে দলের একাধিক প্রার্থী ভোটার উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়ে দিতে পারেন।
অবশ্য বিএনপি যেমন অভিযোগ করছে, তেমনিভাবে সরকার উদ্যোগ নিয়ে এবং ক্ষেত্রবিশেষে চাপ প্রয়োগ করে স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপির প্রার্থীর সংখ্যা যদি বাড়াতে চায় এবং সফল হয়, তখন কিন্তু আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলাফল কী হবে তা ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে?
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি ছাড়াই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে এখন ধরে নেওয়া যায়। যদিও তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত নয়। কারণ তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ এখনো আছে। তারপরও ধরে নেওয়ার কারণ সেই সুযোগ কাজে লাগানোর ন্যূনতম কোনো লক্ষণ বিএনপির মধ্যে এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। বরং তারা আছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সপ্তাহে চার দিন অবরোধ ডাকার আন্দোলনে। আগামীকাল রোববার থেকে আবার দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে।
ওদিকে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী অংশগ্রহণের সময়সীমা শেষ হয়ে এসেছে। বিএনপির সমমনা কোনো কোনো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টি এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন নবগঠিত জোট যুক্তফ্রন্টের কথা এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। একই ধারার আরও কোনো কোনো দল একই রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে প্রচার আছে।
জাতীয় পার্টি সব রকম দ্বিধাদ্বন্দ্ব পরিত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে এবং দলীয় প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল বিএনপি আরও আগে থেকেই নির্বাচনের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। বিএনপির অনেক নেতাও স্বতন্ত্র কিংবা অন্য কোনো দল বা জোটের পরিচয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে জামায়াতের কথাও। তাদের নেতারাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। শ দেড়েক আসনে বিএনপি-জামায়াতের এ রকম প্রার্থী থাকতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, এ রকম প্রার্থীর সংখ্যা যাতে বেশি হয়, সে জন্য সরকারের উদ্যোগ এবং চাপ আছে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল তো নির্বাচনমুখী আছেই। রয়েছে বিকল্পধারা এবং কয়েকটি ইসলামি দলও। সুতরাং সব মিলে আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ভালোই হচ্ছে। এরপর যদি ভোটারের উপস্থিতি বাড়ানো যায়, তাহলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক না বলার জোরালো কোনো যুক্তি থাকবে বলে মনে হয় না। আর নির্বাচন কতটা সৃষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে তা নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বলার বিষয় নয়। তবে ধারণা করা যায়, দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেবে। বিএনপিসহ নির্বাচনবিমুখ দলগুলো তাদের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচন ঠেকাতে পারবে বলে মনে হয় না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সবই তো হলো। কিন্তু সারা দেশে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতার যে ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে আছে এর ফলাফল কী হবে? দলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৩০০। দলটির মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৩৬২টি। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন
প্রার্থী একাধিক আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। হিসাব অনুযায়ী, প্রতিটি আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ১১ জন। তবে ২০১৮ সালের তুলনায় এবার প্রায় সাড়ে ৭০০ ফরম কম বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে।
কয়েকটি আসনের চিত্র বিস্ময়কর। যেমন কুমিল্লা-৫ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ২৯ জন প্রার্থী। চট্টগ্রাম-৮ আসনের জন্য ফরম কিনেছেন ২৬ জন। ২২ জন প্রার্থী ফরম কিনেছেন নেত্রকোনা-১ আসনের জন্য। ২১ জন কিনেছেন নড়াইল-২ আসনের জন্য।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের জন্য কিনেছেন ২০ জন। হিসাব করে দেখা যায় অধিকাংশ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতার আসনেই এ রকম প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এর মধ্যে একেবারে নবীন প্রার্থী যেমন রয়েছেন, তেমনি আছেন প্রবীণ এবং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাও। তাঁরা সবাই যে মনোনয়ন পাবেন ধরে নিয়ে প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশী হয়েছেন, তেমন নয়; বিশেষ করে নবীনেরা। তাঁদের অনেকেরই লক্ষ্য ভবিষ্যতের সিরিয়ালে অন্তর্ভুক্ত হওয়া। তবে প্রবীণ ও পরীক্ষিত নেতাদের বিষয়টি ভিন্ন। তাঁরা প্রকৃতই মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলীয় কোন্দল, বিদ্যমান সংসদ সদস্যের বদনাম, বঞ্চনার অবসান প্রভৃতি কারণে তাঁরা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন বলেই প্রার্থী হতে চাইছেন।
কিন্তু এ কথা সবার মতো তাঁরাও জানেন যে তাঁদের অনেকেই দলের মনোনয়ন না-ও পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাঁরা কী করবেন? তাঁরা সবাই কি দলের নির্দেশনা মেনে দলীয় প্রতীক পাওয়া প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে নেমে পড়বেন? নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিদ্রোহী অভিধা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন? অতীতের অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টান্ত থেকে এ কথা বলা যেতেই পারে, কেউ কেউ দলের প্রতি আনুগত্যবশত দলীয় প্রতীক পাওয়া প্রার্থীর পক্ষেই নির্বাচনে অংশ নেবেন; কিংবা অভিমানবশত চুপচাপ থাকবেন। নির্বাচনে বিশেষ কোনো ভূমিকা নেবেন না। আবার অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন। জয়-পরাজয়ের কথা না ভেবে, দলের স্বার্থের কথা না ভেবে কিংবা হতে পারে দলের বৃহত্তর স্বার্থেই দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করবেন।
প্রতিটি সংসদীয় আসনের জন্য গড়ে আওয়ামী লীগের যে ১১ জন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন, তাঁদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পাবেন তো একজনই। যাঁরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন না, তাঁদের মধ্যে গড়ে দুজন যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন এবং সেই সব আসনে যদি স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী থাকেন কিংবা থাকেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী এবং ভোট যদি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, তাহলে সেখানে কে জিতবেন তা বলা যায় না। কারণ সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ভোট ভাগাভাগি হবে। এই যে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতার একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়ে আছে, এটা নির্বাচনী ফলাফলে একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে যদি স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীর সংখ্যা কম হয়, সে ক্ষেত্রে নির্বাচনী ফলাফলে তেমন একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই। তেমন অবস্থায় বরং আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী দৃশ্যপটে ভিন্ন একটি মাত্রা যুক্ত করতে পারেন। যেমন ধরা যাক, কোনো আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকের প্রার্থী ছাড়াও এক বা একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন। কিন্তু সেখানে স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী নেই। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যিনিই বিজয়ী হোন না কেন, চূড়ান্ত বিচারে দল নেতিবাচক পরিস্থিতিতে পড়বে না। এ রকম পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ বরং দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে দেখেও না দেখার কিংবা চুপ থাকার নীতি অবলম্বন করতে পারে। কারণ তেমন ক্ষেত্রে দলের একাধিক প্রার্থী ভোটার উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়ে দিতে পারেন।
অবশ্য বিএনপি যেমন অভিযোগ করছে, তেমনিভাবে সরকার উদ্যোগ নিয়ে এবং ক্ষেত্রবিশেষে চাপ প্রয়োগ করে স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপির প্রার্থীর সংখ্যা যদি বাড়াতে চায় এবং সফল হয়, তখন কিন্তু আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলাফল কী হবে তা ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে?
শেখ হাসিনার পতিত স্বৈরাচারী সরকার সাড়ে ১৫ বছর ধরে এ দেশের জনগণের মাথাপিছু জিডিপি প্রশংসনীয় গতিতে বাড়ার গল্প সাজিয়ে শাসন করেছে। মাথাপিছু জিডিপি প্রকৃতপক্ষে একটি মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ কনসেপ্ট। এটার সবচেয়ে মারাত্মক সীমাবদ্ধতা হলো, এটা একটা গড়, যেটা স্বল্পসংখ্যক ধনী এবং বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ নিম্ন-মধ্যবিত্ত
৪ ঘণ্টা আগেআমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথিবীকে জলবায়ু-বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য ‘শূন্য বর্জ্য ও শূন্য কার্বন’-এর ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন জীবনধারা গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেআমেরিকার ১৩২ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে একবার হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম মেয়াদে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ট্রাম্প।
৪ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বড্ড কষ্ট বুকে নিয়েই ‘সব শালারা বাটপার’ স্লোগানটি দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পাচ্ছেন না। ঠিকাদারেরা ভেলকিবাজি করছেন।ক্যাম্পাসের জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হয়নি।
৪ ঘণ্টা আগে