রোবায়েত ফেরদৌস
আধুনিক মানুষ কে? নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক এবং আউটসাইডারের লেখক আলবেয়ার কাম্যু এর উত্তর দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘যে খবরের কাগজ পড়ে আর রমণ করে, সে-ই আধুনিক মানুষ।’ রমণ না হয় বুঝলাম; কিন্তু খবরের কাগজ তো দূরে থাক, খোদ কাগজই নাকি পৃথিবীতে আর থাকবে না। আজ থেকে দুই হাজার বছর আগে হান সাম্রাজ্যের সময় চীন দেশে কাগজ আবিষ্কৃত হয়েছিল। এরপর মুসলিম দেশে কাগজের বিকাশ ঘটে এবং আরও পরে ইউরোপের জার্মানিতে প্রিন্টিং প্রেস তৈরির পর কাগজকেন্দ্রিক সভ্যতা শনৈঃশনৈঃ পুরো পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়ে এবং দোর্দণ্ড প্রতাপে তার রাজত্ব করতে থাকে। কাগজ আবিষ্কারের পর কাগজ ছাড়া সভ্যতার একটি দিনও আমরা ভাবতে পারতাম না! সেই কাগজকেন্দ্রিক সভ্যতা আজ প্রশ্নের মুখোমুখি। তার অস্তিত্বই আজ হুমকির সম্মুখীন। পৃথিবীতে কোনো পেপারই থাকবে না, থাকবে শুধু একটি পেপার–টয়লেট পেপার। কাগজই যেখানে টিকছে না, সেখানে খবরের কাগজের ভবিষ্যৎ কী? আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজপেপার বলছে, ২০৫০ সাল হবে পৃথিবীর শেষ বছর এবং এর পরে পৃথিবীতে ছাপার অক্ষরে আর কোনো সংবাদপত্র প্রকাশ পাবে না। ডিজিটাল প্রযুক্তি, অনলাইন, ইউটিউব আর ফেসবুক এখন সারা পৃথিবীতে ক্ষমতার ছড়ি ঘোরাচ্ছে। প্রযুক্তির সমান্তরালে নিজেকে হালনাগাদ রাখাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। নয়া প্রযুক্তির এই দাম্ভিক ও দাপুটে সময়ে সংবাদপত্র নিদারুণ কোণঠাসা। সংবাদপত্রের জন্য ঠিক এ রকম এক করুণ ও বিপরীত সময়ে আমার অত্যন্ত প্রিয় মানুষ এবং শিক্ষক অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান মেধাদীপ্ত সাহসী তারুণ্য আর অভিজ্ঞদের প্রজ্ঞা ও দায়িত্বশীলতার মিশেল ঘটিয়ে গেল ২৭ জুন ‘আজকের পত্রিকা’র শুভ উদ্বোধন ঘটিয়েছেন। সময় যেহেতু বিরূপ, চ্যালেঞ্জও তাই বেশি। বর্ষাকাল, করোনা আর লকডাউন–এই তিন চ্যালেঞ্জও যোগ হয়েছে পত্রিকাটি প্রকাশের শুভক্ষণে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, মানুষ তার সবচেয়ে ভালোটা আর সৃজনশীল কাজটা করতে পারে তখনই–বাধা, ঝুঁকি আর সীমাবদ্ধতা যখন সবচেয়ে প্রবল থাকে। দুনিয়াব্যাপী সংবাদপত্রের যখন মৃত্যুঘণ্টা বাজছে, আমার প্রিয় শিক্ষক তখন মনে করছেন, সংবাদপত্রের ‘অবিচুয়ারি’ লেখার সময় এখনো আসেনি। আমি তার এই সাহসের তারিফ করি, আর তাঁর টিমকে আন্তরিক স্যালুট জানাই।
আমরা তো দেখি, প্রতিদিন সকালে কেমন সাপের মতো হিস করে দরজার নিচ দিয়ে পিছলে বাসায় ঢুকে পড়ে খবরের কাগজ। কিন্তু কই, জাত সাপের মতো বিষ কই তাদের? সবই কেমন বিষহীন পানিবাসী তথাকথিত নিরীহ গোছের ভালো সাপ। ঢোঁড়া সাপের মতো তাদের কোনো ফণা নেই, বিষ নেই, জ্বালাও নেই; কিন্তু বেশ বড়াই আছে, আছে নিরপেক্ষতার ভং ও ভড়ং; আছে ভালোমানুষির আবরণ, আবডাল। এ জন্যই কি কামড়ে ভয়? কাউকে দংশন করলে পাছে যদি কোনো পক্ষ হয়ে যাই কিংবা নিদেনপক্ষে ভয় থাকে, কেউ যদি কোনো পক্ষে মার্জিন এঁকে দেয়। নিত্যদিন এত সব মুখোশে খবরের কাগজের মুখ মোড়া থাকা যে, মুখোশ চিরে মুখ চেনাই মুশকিল হয়ে ওঠে!
‘আজকের পত্রিকা’ কি পারবে বিষ তুলে নিতে কণ্ঠে তার? সন্তরণরত//// হাঁস যে রকম ডানা ঝাপটিয়ে জল ঝরিয়ে ফেলে, ‘আজকের পত্রিকা’ কি পারবে নিরপেক্ষতার ভণিতাকে সে রকম দূরে ঝেড়ে ফেলতে! মুখোশ চিরে মুখ দেখাতে? পারবে কি প্রভাব ফেলতে অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক, পরিবেশ-সখ্য আর নারীর প্রতি সংবেদনশীল একটি রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে? দুর্নীতি, ভূমিদস্যুতা, জঙ্গিবাদ কিংবা ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে জিহাদি সাংবাদিকতার ফরমান জারি করতে? কিংবা পারবে করপোরেট বিজ্ঞাপন দেনেওয়ালার চাপ এড়াতে? হায়! সংবাদপত্র নিজেই তো করপোরেট গোলামিতে নিজের স্বাধীন অস্তিত্ব ডুবিয়ে রাখতে ভালোবাসে। মাথা তুলে দাঁড়াবে সে কীভাবে?
অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ডের মতো তাই শুরু করতে হবে আমাদের শুরু থেকেই। ছোট্ট কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান যে পরিবার–গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির নির্মিতি আর রুচির প্রতিষ্ঠা শুরু হওয়া দরকার সেখান থেকেই। পরিবারের জমিতে গণতন্ত্র আর রুচির কর্ষণে সংবাদপত্রের রয়েছে প্রভাববিস্তারকারী ভূমিকা; পাঠক-ব্যবহারকারীর ভাষাকাঠামো নির্মাণেও তার অবদান অনপনেয়। ‘আজকের পত্রিকার’ আছে কি কোনো দূরচিন্তার পরিকল্পনা এসব ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলার? সে কি আর দশটির সঙ্গে মিলে নিছক এগারোতম পত্রিকা হতে চায়? না, অন্য দশটি কাগজ থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রেখে হয়ে উঠতে চায় একক, অনন্য!
কেমন নিরেট সিসার ঠাঁটবুনোনে ঠাসা সব প্রাণহীন ধূসর অক্ষর নিয়ে ফি দিন খবরের কাগজ বেরোয়। ‘আজকের পত্রিকা’ কি পারবে সেসব অক্ষরে প্রাণের প্রতিষ্ঠা করতে? অক্ষররাজিকে প্রেম আর জীবনের ছোঁয়ায় ভরিয়ে দিতে? কাগজে শব্দ আর বাক্যের ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে? রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত মজবুত করা, ব্যবসায়ের সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলা, দারিদ্র্যকে জয় করার দায়িত্ব থেকেও কিন্তু সংবাদপত্র রেহাই পেতে পারে না। এসব কোনোটাই কিন্তু সহজ চ্যালেঞ্জ নয়।
কিন্তু মুশকিল হয় তখন; কখন? সংবাদপত্র বের হওয়ার আগেই এর মালিকের সঙ্গে সাংবাদিকদের যখন দেনদরবার চলে, আমার বিবেচনায় তখনই প্রতিষ্ঠান হিসেবে সম্পাদকের মৃত্যু ঘটে। মহা আপসরফাটি তখনই সম্পাদিত হয়ে যায়। পরে আর কিচ্ছুটি করার থাকে না। বেতনভোগী সাংবাদিকেরা তাঁদের পেশাদারত্ব দেখাবেন কোথায়?
কেমন চাই ‘আজকের পত্রিকা’? এই তো প্রশ্ন? যদি বলি এমন চাই সত্যিকার অর্থেই, যা কণ্ঠ হয়ে উঠবে এ কালের; সম্ভব কি হয়ে ওঠা এমন? কেন সংশয়? ওই যে বললাম, আদি আপসটি আগেই হয়ে যায়। সেখান থেকে ‘আজকের পত্রিকা’ কি বেরোতে পারবে? এখানকার সাংবাদিকেরা কি পারবেন কখনো যদি তাঁদের মালিক দুর্নীতি, ঋণখেলাপ, ভূমিদস্যুতা, হত্যা-অন্যায়ে যুক্ত হয়, তার বিরুদ্ধে কলম ধরতে? বলা হয় পোস্ট-ট্রুথ বা সত্য-উত্তর যুগে আমরা বাস করছি, যেখানে নিখাদ সত্য বলে কিছু নেই! যা আছে তা শুধু অর্ধসত্য কিংবা মিথ্যের আবরণে সত্যের প্রকাশ। ‘আজকের পত্রিকা’ কেমন ও কোন সত্যের প্রকাশ ঘটায়–এক শ ভাগ সংশয়ভরা মন নিয়ে ‘দেখিবার অপেক্ষায় রইলাম’।
লেখক: অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আধুনিক মানুষ কে? নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক এবং আউটসাইডারের লেখক আলবেয়ার কাম্যু এর উত্তর দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘যে খবরের কাগজ পড়ে আর রমণ করে, সে-ই আধুনিক মানুষ।’ রমণ না হয় বুঝলাম; কিন্তু খবরের কাগজ তো দূরে থাক, খোদ কাগজই নাকি পৃথিবীতে আর থাকবে না। আজ থেকে দুই হাজার বছর আগে হান সাম্রাজ্যের সময় চীন দেশে কাগজ আবিষ্কৃত হয়েছিল। এরপর মুসলিম দেশে কাগজের বিকাশ ঘটে এবং আরও পরে ইউরোপের জার্মানিতে প্রিন্টিং প্রেস তৈরির পর কাগজকেন্দ্রিক সভ্যতা শনৈঃশনৈঃ পুরো পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়ে এবং দোর্দণ্ড প্রতাপে তার রাজত্ব করতে থাকে। কাগজ আবিষ্কারের পর কাগজ ছাড়া সভ্যতার একটি দিনও আমরা ভাবতে পারতাম না! সেই কাগজকেন্দ্রিক সভ্যতা আজ প্রশ্নের মুখোমুখি। তার অস্তিত্বই আজ হুমকির সম্মুখীন। পৃথিবীতে কোনো পেপারই থাকবে না, থাকবে শুধু একটি পেপার–টয়লেট পেপার। কাগজই যেখানে টিকছে না, সেখানে খবরের কাগজের ভবিষ্যৎ কী? আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজপেপার বলছে, ২০৫০ সাল হবে পৃথিবীর শেষ বছর এবং এর পরে পৃথিবীতে ছাপার অক্ষরে আর কোনো সংবাদপত্র প্রকাশ পাবে না। ডিজিটাল প্রযুক্তি, অনলাইন, ইউটিউব আর ফেসবুক এখন সারা পৃথিবীতে ক্ষমতার ছড়ি ঘোরাচ্ছে। প্রযুক্তির সমান্তরালে নিজেকে হালনাগাদ রাখাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। নয়া প্রযুক্তির এই দাম্ভিক ও দাপুটে সময়ে সংবাদপত্র নিদারুণ কোণঠাসা। সংবাদপত্রের জন্য ঠিক এ রকম এক করুণ ও বিপরীত সময়ে আমার অত্যন্ত প্রিয় মানুষ এবং শিক্ষক অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান মেধাদীপ্ত সাহসী তারুণ্য আর অভিজ্ঞদের প্রজ্ঞা ও দায়িত্বশীলতার মিশেল ঘটিয়ে গেল ২৭ জুন ‘আজকের পত্রিকা’র শুভ উদ্বোধন ঘটিয়েছেন। সময় যেহেতু বিরূপ, চ্যালেঞ্জও তাই বেশি। বর্ষাকাল, করোনা আর লকডাউন–এই তিন চ্যালেঞ্জও যোগ হয়েছে পত্রিকাটি প্রকাশের শুভক্ষণে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, মানুষ তার সবচেয়ে ভালোটা আর সৃজনশীল কাজটা করতে পারে তখনই–বাধা, ঝুঁকি আর সীমাবদ্ধতা যখন সবচেয়ে প্রবল থাকে। দুনিয়াব্যাপী সংবাদপত্রের যখন মৃত্যুঘণ্টা বাজছে, আমার প্রিয় শিক্ষক তখন মনে করছেন, সংবাদপত্রের ‘অবিচুয়ারি’ লেখার সময় এখনো আসেনি। আমি তার এই সাহসের তারিফ করি, আর তাঁর টিমকে আন্তরিক স্যালুট জানাই।
আমরা তো দেখি, প্রতিদিন সকালে কেমন সাপের মতো হিস করে দরজার নিচ দিয়ে পিছলে বাসায় ঢুকে পড়ে খবরের কাগজ। কিন্তু কই, জাত সাপের মতো বিষ কই তাদের? সবই কেমন বিষহীন পানিবাসী তথাকথিত নিরীহ গোছের ভালো সাপ। ঢোঁড়া সাপের মতো তাদের কোনো ফণা নেই, বিষ নেই, জ্বালাও নেই; কিন্তু বেশ বড়াই আছে, আছে নিরপেক্ষতার ভং ও ভড়ং; আছে ভালোমানুষির আবরণ, আবডাল। এ জন্যই কি কামড়ে ভয়? কাউকে দংশন করলে পাছে যদি কোনো পক্ষ হয়ে যাই কিংবা নিদেনপক্ষে ভয় থাকে, কেউ যদি কোনো পক্ষে মার্জিন এঁকে দেয়। নিত্যদিন এত সব মুখোশে খবরের কাগজের মুখ মোড়া থাকা যে, মুখোশ চিরে মুখ চেনাই মুশকিল হয়ে ওঠে!
‘আজকের পত্রিকা’ কি পারবে বিষ তুলে নিতে কণ্ঠে তার? সন্তরণরত//// হাঁস যে রকম ডানা ঝাপটিয়ে জল ঝরিয়ে ফেলে, ‘আজকের পত্রিকা’ কি পারবে নিরপেক্ষতার ভণিতাকে সে রকম দূরে ঝেড়ে ফেলতে! মুখোশ চিরে মুখ দেখাতে? পারবে কি প্রভাব ফেলতে অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক, পরিবেশ-সখ্য আর নারীর প্রতি সংবেদনশীল একটি রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে? দুর্নীতি, ভূমিদস্যুতা, জঙ্গিবাদ কিংবা ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে জিহাদি সাংবাদিকতার ফরমান জারি করতে? কিংবা পারবে করপোরেট বিজ্ঞাপন দেনেওয়ালার চাপ এড়াতে? হায়! সংবাদপত্র নিজেই তো করপোরেট গোলামিতে নিজের স্বাধীন অস্তিত্ব ডুবিয়ে রাখতে ভালোবাসে। মাথা তুলে দাঁড়াবে সে কীভাবে?
অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ডের মতো তাই শুরু করতে হবে আমাদের শুরু থেকেই। ছোট্ট কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান যে পরিবার–গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির নির্মিতি আর রুচির প্রতিষ্ঠা শুরু হওয়া দরকার সেখান থেকেই। পরিবারের জমিতে গণতন্ত্র আর রুচির কর্ষণে সংবাদপত্রের রয়েছে প্রভাববিস্তারকারী ভূমিকা; পাঠক-ব্যবহারকারীর ভাষাকাঠামো নির্মাণেও তার অবদান অনপনেয়। ‘আজকের পত্রিকার’ আছে কি কোনো দূরচিন্তার পরিকল্পনা এসব ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলার? সে কি আর দশটির সঙ্গে মিলে নিছক এগারোতম পত্রিকা হতে চায়? না, অন্য দশটি কাগজ থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রেখে হয়ে উঠতে চায় একক, অনন্য!
কেমন নিরেট সিসার ঠাঁটবুনোনে ঠাসা সব প্রাণহীন ধূসর অক্ষর নিয়ে ফি দিন খবরের কাগজ বেরোয়। ‘আজকের পত্রিকা’ কি পারবে সেসব অক্ষরে প্রাণের প্রতিষ্ঠা করতে? অক্ষররাজিকে প্রেম আর জীবনের ছোঁয়ায় ভরিয়ে দিতে? কাগজে শব্দ আর বাক্যের ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে? রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত মজবুত করা, ব্যবসায়ের সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলা, দারিদ্র্যকে জয় করার দায়িত্ব থেকেও কিন্তু সংবাদপত্র রেহাই পেতে পারে না। এসব কোনোটাই কিন্তু সহজ চ্যালেঞ্জ নয়।
কিন্তু মুশকিল হয় তখন; কখন? সংবাদপত্র বের হওয়ার আগেই এর মালিকের সঙ্গে সাংবাদিকদের যখন দেনদরবার চলে, আমার বিবেচনায় তখনই প্রতিষ্ঠান হিসেবে সম্পাদকের মৃত্যু ঘটে। মহা আপসরফাটি তখনই সম্পাদিত হয়ে যায়। পরে আর কিচ্ছুটি করার থাকে না। বেতনভোগী সাংবাদিকেরা তাঁদের পেশাদারত্ব দেখাবেন কোথায়?
কেমন চাই ‘আজকের পত্রিকা’? এই তো প্রশ্ন? যদি বলি এমন চাই সত্যিকার অর্থেই, যা কণ্ঠ হয়ে উঠবে এ কালের; সম্ভব কি হয়ে ওঠা এমন? কেন সংশয়? ওই যে বললাম, আদি আপসটি আগেই হয়ে যায়। সেখান থেকে ‘আজকের পত্রিকা’ কি বেরোতে পারবে? এখানকার সাংবাদিকেরা কি পারবেন কখনো যদি তাঁদের মালিক দুর্নীতি, ঋণখেলাপ, ভূমিদস্যুতা, হত্যা-অন্যায়ে যুক্ত হয়, তার বিরুদ্ধে কলম ধরতে? বলা হয় পোস্ট-ট্রুথ বা সত্য-উত্তর যুগে আমরা বাস করছি, যেখানে নিখাদ সত্য বলে কিছু নেই! যা আছে তা শুধু অর্ধসত্য কিংবা মিথ্যের আবরণে সত্যের প্রকাশ। ‘আজকের পত্রিকা’ কেমন ও কোন সত্যের প্রকাশ ঘটায়–এক শ ভাগ সংশয়ভরা মন নিয়ে ‘দেখিবার অপেক্ষায় রইলাম’।
লেখক: অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১ দিন আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
১ দিন আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
১ দিন আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
১ দিন আগে