শরিফুল হাসান
সৌদি আরবের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। গত অর্থবছরেও দেশটি থেকে প্রায় আড়াই শ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। তবে করোনা মহামারির বন্ধে এক লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি দেশটি থেকে ফিরে এসেছিলেন কিংবা ছুটিতে এসে আটকা পড়েছিলেন। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ হাজার ফের ফিরতে চান। কিন্তু তাঁদের সেই জীবন-জীবিকা আটকে আছে একটি আরটি-পিসিআর যন্ত্রের অভাবে।
আসলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশসহ কয়েটি দেশ থেকে কর্মী ও পর্যটকদের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে পরে তারা সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে জানায়, ৫ আগস্ট থেকে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, উগান্ডা, নাইজেরিয়া ও নেপালের নাগরিকেরা আরব আমিরাতে আসতে পারবেন। তবে যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে করোনাভাইরাসের পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়।
এই ঘোষণার পর প্রবাসীরা অনেক আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্যি, যে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত প্রবাসীদের আয়ে গড়ে উঠছে, সেই রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর মেশিন বসানোর কোনো তাগাদা দেখা দিল না। আটকে পড়া প্রবাসীরা তখন শুরু করলেন বিক্ষোভ, আন্দোলন, মানববন্ধন, অনশন। তাঁদের একটাই কথা, বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর মেশিন না থাকায় তাঁরা ফিরতে পারছেন না।
নীতিনির্ধারকদের মন গললে নিশ্চয়ই তাঁরা দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতেন। কিন্তু সেটা তো হলো না। ফলে প্রবাসীদের আকুতি চললই। বরাবরের মতোই একটা পিসিআর মেশিনের বিষয়েও হস্তক্ষেপ করতে হলো দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। ওই বৈঠক শুধু ঢাকা নয়, বিদেশগামীদের সুবিধার্থে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্রুত করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর ল্যাবের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই বৈঠক শেষে সেদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে এখন যাত্রার ৭২ বা ৪৮ ঘণ্টা আগে পিসিআর পরীক্ষা করে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি উড্ডয়নের ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে র্যাপিড পিসিআর টেস্টের সনদ চেয়েছে। আজকে এটা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে, ভেরি কুইকলি দুই বা তিন দিনের মধ্যে এয়ারপোর্টেই একটা টেস্টিং ফ্যাসিলিটিজ করা হবে। অন্যান্য দেশেও যে রকম আছে। যাতে ফ্লাই করার আগের চার ঘণ্টার মধ্যে উনারা টেস্ট করতে পারেন।’
কিন্তু ‘ভেরি কুইকলি’ আর শেষ হয়নি। তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো বিমানবন্দরে সেটি চালু করা যায়নি। শুধু এবার নয়, মহামারির এই দেড় বছরে উড়োজাহাজের টিকিট থেকে শুরু করে টিকাসহ প্রবাসীর যত বিষয় আছে, সব ক্ষেত্রেই সমন্বয়হীনতার ছবি উঠে এসেছে। পিসিআর মেশিন বসানোয় বিলম্ব তাতে সর্বশেষ সংযোজন। পার্থক্য শুধু এই, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেও কাজটি শুরু হয়নি। এর বদলে কে এই কাজ পাবে, তা নিয়ে শুরু হলো প্রতিযোগিতা।
সরকারিভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিমানবন্দরে পিসিআর বসানোর দায়িত্ব নিতে রাজি হলো না। অথচ আইইডিসিআরের মতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দিনে ২০-২৫ হাজার টেস্ট করতে পারত। কিন্তু তারা দায়িত্ব নিতে রাজি না হওয়ায় কিংবা তারা অন্যকে ব্যবসা করতে সুযোগ দিতে চান বলে শুরু হলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিযোগিতা। গণমাধ্যমে খবর এল, এককভাবে এ কাজ পেতে চাইছে ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক নামের একটি প্রতিষ্ঠান; যার সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক বড় কর্তা নাকি জড়িত ছিলেন। তবে গণমাধ্যমে সমালোচনা আর প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্য অসংগতিপূর্ণ মনে হওয়ায় ল্যাব স্থাপনের চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আরব আমিরাতগামীদের করোনা পরীক্ষায় ল্যাব স্থাপনের কাজ চেয়ে যে ২৩ প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সাতটিকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। যে কেউ খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন, সাতটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই প্রভাবশালীরা রয়েছেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে করোনার পরীক্ষা প্রায় বিনা মূল্যে করা হলেও বিদেশগামীদের সর্বনিম্ন ১ হাজার ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ টাকা দিতে হবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে এসব ল্যাব চালু হবে বলে সে সময় জানানো হয়েছিল।
তবে এরপর আরও এক সপ্তাহ পেরিয়েছে। এখনো পরীক্ষা শুরু হয়নি। বরং শুরু হয়েছে নতুন জটিলতা। জানা যাচ্ছে, বিমানবন্দরের বহুতল কার পার্কিং ভবনের ছাদে উন্মুক্ত স্থানে ল্যাব করতে হবে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তবে যাঁরা পারবেন না, তাঁদের চলে যেতে বলা হয়েছে। আবার প্রত্যেকে কীভাবে কাজ করবেন, সেই এসওপি আবার অনুমোদন হতে হবে ইউএই থেকে।
অন্যদিকে আরটি-পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার জন্য যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে বিমানবন্দরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে কি না, এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে দুয়েক দিনের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০ জন যাত্রীকে বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করা হবে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে ঠিক কবে নাগাদ ল্যাব চালু হবে, সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
মাঝেমধ্যে আসলেই অবাক লাগে। একটা পিসিআর ল্যাব বসাতে আসলে ঠিক কত দিন লাগে? প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেও কেন এত দেরি? আসলে ঘাটতিটা কী সক্ষমতার, নাকি সততার?
এই প্রশ্ন তুলছেন প্রবাসীরাও। দুবাই আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম শফি আমাকে কয়েক দিন আগে একটি মেসেজ পাঠিয়ে আফসোস করে বলেছেন, ‘অক্টোবর থেকে এক্সপো শুরু দুবাইতে। কাজ পেয়েছি ইন্ডিয়ান প্যাভিলিয়নে। আমার মতো অনেক ব্যবসায়ী এই এক্সপোর অপেক্ষায় আছেন। আমার নিজের কোম্পানির ছয়জন কর্মী ছুটিতে গিয়ে আটকা পড়েছেন। কিন্তু আসতে পারছেন না। আসলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের এত দিন পরও এয়ারপোর্টে পিসিআর মেশিন বসানো গেল না কেন? দায়িত্বশীলদের ঘুম ভাঙবে কখন? উগান্ডা, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান তাদের এয়ারপোর্টে পিসিআর মেশিন বসাতে পারলেও, আমরা পারছি না কেন?’
জানি না, এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে? আসলেই দায়িত্বশীলদের ঘুম ভাঙবে কখন? নিজেদের আমরা এত উন্নত দাবি করছি, স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের এত কথা বলছি, তাহলে উগান্ডা, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত সবাই তাদের এয়ারপোর্টে পিসিআর মেশিন বসাতে পারলেও আমরা পারছি না কেন?
লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও কলামিস্ট
সৌদি আরবের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। গত অর্থবছরেও দেশটি থেকে প্রায় আড়াই শ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। তবে করোনা মহামারির বন্ধে এক লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি দেশটি থেকে ফিরে এসেছিলেন কিংবা ছুটিতে এসে আটকা পড়েছিলেন। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ হাজার ফের ফিরতে চান। কিন্তু তাঁদের সেই জীবন-জীবিকা আটকে আছে একটি আরটি-পিসিআর যন্ত্রের অভাবে।
আসলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশসহ কয়েটি দেশ থেকে কর্মী ও পর্যটকদের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে পরে তারা সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে জানায়, ৫ আগস্ট থেকে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, উগান্ডা, নাইজেরিয়া ও নেপালের নাগরিকেরা আরব আমিরাতে আসতে পারবেন। তবে যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে করোনাভাইরাসের পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়।
এই ঘোষণার পর প্রবাসীরা অনেক আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্যি, যে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত প্রবাসীদের আয়ে গড়ে উঠছে, সেই রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর মেশিন বসানোর কোনো তাগাদা দেখা দিল না। আটকে পড়া প্রবাসীরা তখন শুরু করলেন বিক্ষোভ, আন্দোলন, মানববন্ধন, অনশন। তাঁদের একটাই কথা, বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর মেশিন না থাকায় তাঁরা ফিরতে পারছেন না।
নীতিনির্ধারকদের মন গললে নিশ্চয়ই তাঁরা দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতেন। কিন্তু সেটা তো হলো না। ফলে প্রবাসীদের আকুতি চললই। বরাবরের মতোই একটা পিসিআর মেশিনের বিষয়েও হস্তক্ষেপ করতে হলো দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। ওই বৈঠক শুধু ঢাকা নয়, বিদেশগামীদের সুবিধার্থে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্রুত করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর ল্যাবের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই বৈঠক শেষে সেদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে এখন যাত্রার ৭২ বা ৪৮ ঘণ্টা আগে পিসিআর পরীক্ষা করে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি উড্ডয়নের ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে র্যাপিড পিসিআর টেস্টের সনদ চেয়েছে। আজকে এটা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে, ভেরি কুইকলি দুই বা তিন দিনের মধ্যে এয়ারপোর্টেই একটা টেস্টিং ফ্যাসিলিটিজ করা হবে। অন্যান্য দেশেও যে রকম আছে। যাতে ফ্লাই করার আগের চার ঘণ্টার মধ্যে উনারা টেস্ট করতে পারেন।’
কিন্তু ‘ভেরি কুইকলি’ আর শেষ হয়নি। তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো বিমানবন্দরে সেটি চালু করা যায়নি। শুধু এবার নয়, মহামারির এই দেড় বছরে উড়োজাহাজের টিকিট থেকে শুরু করে টিকাসহ প্রবাসীর যত বিষয় আছে, সব ক্ষেত্রেই সমন্বয়হীনতার ছবি উঠে এসেছে। পিসিআর মেশিন বসানোয় বিলম্ব তাতে সর্বশেষ সংযোজন। পার্থক্য শুধু এই, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেও কাজটি শুরু হয়নি। এর বদলে কে এই কাজ পাবে, তা নিয়ে শুরু হলো প্রতিযোগিতা।
সরকারিভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিমানবন্দরে পিসিআর বসানোর দায়িত্ব নিতে রাজি হলো না। অথচ আইইডিসিআরের মতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দিনে ২০-২৫ হাজার টেস্ট করতে পারত। কিন্তু তারা দায়িত্ব নিতে রাজি না হওয়ায় কিংবা তারা অন্যকে ব্যবসা করতে সুযোগ দিতে চান বলে শুরু হলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিযোগিতা। গণমাধ্যমে খবর এল, এককভাবে এ কাজ পেতে চাইছে ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক নামের একটি প্রতিষ্ঠান; যার সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক বড় কর্তা নাকি জড়িত ছিলেন। তবে গণমাধ্যমে সমালোচনা আর প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্য অসংগতিপূর্ণ মনে হওয়ায় ল্যাব স্থাপনের চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আরব আমিরাতগামীদের করোনা পরীক্ষায় ল্যাব স্থাপনের কাজ চেয়ে যে ২৩ প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সাতটিকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। যে কেউ খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন, সাতটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই প্রভাবশালীরা রয়েছেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে করোনার পরীক্ষা প্রায় বিনা মূল্যে করা হলেও বিদেশগামীদের সর্বনিম্ন ১ হাজার ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ টাকা দিতে হবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে এসব ল্যাব চালু হবে বলে সে সময় জানানো হয়েছিল।
তবে এরপর আরও এক সপ্তাহ পেরিয়েছে। এখনো পরীক্ষা শুরু হয়নি। বরং শুরু হয়েছে নতুন জটিলতা। জানা যাচ্ছে, বিমানবন্দরের বহুতল কার পার্কিং ভবনের ছাদে উন্মুক্ত স্থানে ল্যাব করতে হবে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তবে যাঁরা পারবেন না, তাঁদের চলে যেতে বলা হয়েছে। আবার প্রত্যেকে কীভাবে কাজ করবেন, সেই এসওপি আবার অনুমোদন হতে হবে ইউএই থেকে।
অন্যদিকে আরটি-পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার জন্য যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে বিমানবন্দরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে কি না, এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে দুয়েক দিনের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০ জন যাত্রীকে বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করা হবে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে ঠিক কবে নাগাদ ল্যাব চালু হবে, সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
মাঝেমধ্যে আসলেই অবাক লাগে। একটা পিসিআর ল্যাব বসাতে আসলে ঠিক কত দিন লাগে? প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেও কেন এত দেরি? আসলে ঘাটতিটা কী সক্ষমতার, নাকি সততার?
এই প্রশ্ন তুলছেন প্রবাসীরাও। দুবাই আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম শফি আমাকে কয়েক দিন আগে একটি মেসেজ পাঠিয়ে আফসোস করে বলেছেন, ‘অক্টোবর থেকে এক্সপো শুরু দুবাইতে। কাজ পেয়েছি ইন্ডিয়ান প্যাভিলিয়নে। আমার মতো অনেক ব্যবসায়ী এই এক্সপোর অপেক্ষায় আছেন। আমার নিজের কোম্পানির ছয়জন কর্মী ছুটিতে গিয়ে আটকা পড়েছেন। কিন্তু আসতে পারছেন না। আসলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের এত দিন পরও এয়ারপোর্টে পিসিআর মেশিন বসানো গেল না কেন? দায়িত্বশীলদের ঘুম ভাঙবে কখন? উগান্ডা, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান তাদের এয়ারপোর্টে পিসিআর মেশিন বসাতে পারলেও, আমরা পারছি না কেন?’
জানি না, এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে? আসলেই দায়িত্বশীলদের ঘুম ভাঙবে কখন? নিজেদের আমরা এত উন্নত দাবি করছি, স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের এত কথা বলছি, তাহলে উগান্ডা, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত সবাই তাদের এয়ারপোর্টে পিসিআর মেশিন বসাতে পারলেও আমরা পারছি না কেন?
লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও কলামিস্ট
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
২ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
২ ঘণ্টা আগে