বিরস
রাষ্ট্র চালান রাজনীতিবিদেরা। রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও দুনিয়াজুড়ে। রাজনীতিবিদেরা সবাই যেমন ভালো নন, আবার সবাইকে ঢালাওভাবে খারাপ বলাও অনুচিত। তাঁদের দোষ যেমন আছে, গুণও রয়েছে বিস্তর। রাজনীতির যে কী হ্যাপা, সেটা রাজনৈতিক দলে নাম না লেখালে কল্পনাও করা যায় না।
রাজনীতিবিদদের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে, তাঁদের সহনশীলতা। সমাজের বিচিত্র সব মানুষের সঙ্গে তাঁদের মিশতে হয়। অন্তত কথা দিয়ে হলেও তাঁদের সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করতে হয়। আর মানুষকে খুশি করা, মানুষের মন জুগিয়ে চলা খুব সহজ কাজ নয়। হাতের পাঁচ আঙুল যেমন এক সমান নয়, তেমনি মানুষের মন-মর্জিও এক রকম নয়। একজন যদি হইচই পছন্দ করেন, তো আরেকজনের পছন্দ নীরবতা। সব দিক সামাল নিয়ে, সবার মন জুগিয়ে চলার চেষ্টা যাঁরা সফলভাবে করতে পারেন, তাঁরা রাজনীতিতে মোটামুটি জনপ্রিয়তার খাতায় নাম লেখাতে সক্ষম হন।
একটি ঘটনার কথা মনে পড়ছে। তখনো ব্রিটিশ শাসন চলছে। জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শের–ই–বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক তখন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী (১৯৩৭-৪৩)। আজকাল রাজনৈতিক নেতাদের তেলবাজ সমর্থকের সংখ্যা বেশি হলেও আগের দিনেও তা ছিল না, তেমন নয়। শের-ই-বাংলার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ও ছিল।
সে সময় কলকাতার একটি বাংলা পত্রিকায় একজন শিল্পী হক সাহেবকে নিয়ে একটি ব্যঙ্গচিত্র বা কার্টুন আঁকেন। শের-ই-বাংলার একজন চামচা ওই কার্টুনিস্টের বিরুদ্ধে হক সাহেবের কান ভারী করে তাঁকে শাস্তি দেওয়ার আরজি জানালে হক সাহেব কার্টুনিস্টকে তাঁর সামনে হাজির করার হুকুম দেন। শের-ই-বাংলা শিল্পীর কাছে তাঁর অমন ব্যঙ্গচিত্র আঁকার কারণ জানতে চেয়ে বলেন, আমি কি এতটাই কুদর্শন, যেমনটা তুমি এঁকেছ? শিল্পী কাঁচুমাচু করে জবাব দেন: হুজুর, আমি ছবি এঁকেই জীবিকা নির্বাহ করি। আপনি বিখ্যাত ও পরোপকারী মানুষ। ভাবলাম, আপনাকে একটু বাঁকাট্যারা করে এঁকে যদি মানুষকে একটু আমোদ দেওয়া যায়, ক্ষতি কি! এতে নিশ্চয়ই আপনার প্রধানমন্ত্রিত্ব চলে যাবে না, জনপ্রিয়তায় টান পড়বে না! কিন্তু আমার হয়তো দু-পয়সা আয় বাড়বে।
শের-ই-বাংলা মনে মনে হাসলেন। ভাবলেন, আমার কাজ আমি করি। ওর কাজ ও করে। ও তো শুধু একটি কার্টুন এঁকেছে। আমার সঙ্গে যাঁরা সারাক্ষণ ঘুর ঘুর করে তাদের সবার মতবল কি আমি জানি? কার্টুনশিল্পীকে কোনো ভর্ৎসনা না করেই বাংলার প্রধানমন্ত্রী বললেন, আমার ছবি বিকৃত করে এঁকে যদি তোমার আয়-রোজগার বাড়ে, তাহলে মন দিয়ে সেটাই করো।
কিন্তু এমন উদারতা অবশ্য আজকাল শাসকদের মধ্যে কম দেখা যায়। এখন নেতা-সমর্থক সবাই বেপরোয়া। ধৈর্য-সহ্য কম। গরম তেলে ফোড়ন পড়ার মতো সবাই শুধু তিড়িং-বিড়িং করে। আর সবচেয়ে বড় কথা, শেরেবাংলার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে তো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ছিল না। তা ছাড়া, আজকাল তো সূর্যের চেয়ে বালুর উত্তাপ বেশি।
যাহোক, রাজনীতিবিদদের নিয়ে আগেও কৌতুক চালু ছিল, এখনো আছে। রাজনীতি যত দিন থাকবে, তত দিন এসব কৌতুকের ভাষা ও প্রেক্ষিত বদল হয়ে চলতেই থাকবে।
আজ না হয় একটি পুরোনো কৌতুক আমরা নতুন করে স্মরণ করি।
একজন বিখ্যাত পাশ্চাত্য সমাজবিজ্ঞানী গবেষণার কাজে বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। তিনি ছিলেন ঘোরতর নাস্তিক। কোনো ধর্মের প্রতি তাঁর অনুরাগ ছিল না। মন্দির-মসজিদ-গির্জা-প্যাগোডা থেকে তিনি দূরে থাকতেন সব সময়। তো, বাংলাদেশ সফরের সময় তিনি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরে ঘুরে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিশে, কথা বলে যেন তাঁর জ্ঞানচোখ খুলে গেল, চোখের সামনে থেকে কালো পর্দা সরে গেল। কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি চার্চ খুঁজতে শুরু করলেন। তাঁরই এক বাংলাদেশি সহযোগী গবেষককে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি না নাস্তিক? তাহলে তুমি চার্চ খুঁজছ কেন?
এবার গবেষক ভদ্রলোক বললেন, শোনো, গত কয়েক দিন তোমাদের দেশে থেকে ঈশ্বর-বিষয়ে আমার মনোভাব বদলেছে। এখানে এসে আমি বুঝেছি, নিশ্চয়ই ঈশ্বর বলে কেউ আছেন। না হলে তোমাদের দেশটা চলছে কীভাবে? তাই আমি এখন থেকে নিয়মিত চার্চে গিয়ে ঈশ্বরের প্রার্থনা করব বলে মনস্থির করেছি।
রাষ্ট্র চালান রাজনীতিবিদেরা। রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও দুনিয়াজুড়ে। রাজনীতিবিদেরা সবাই যেমন ভালো নন, আবার সবাইকে ঢালাওভাবে খারাপ বলাও অনুচিত। তাঁদের দোষ যেমন আছে, গুণও রয়েছে বিস্তর। রাজনীতির যে কী হ্যাপা, সেটা রাজনৈতিক দলে নাম না লেখালে কল্পনাও করা যায় না।
রাজনীতিবিদদের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে, তাঁদের সহনশীলতা। সমাজের বিচিত্র সব মানুষের সঙ্গে তাঁদের মিশতে হয়। অন্তত কথা দিয়ে হলেও তাঁদের সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করতে হয়। আর মানুষকে খুশি করা, মানুষের মন জুগিয়ে চলা খুব সহজ কাজ নয়। হাতের পাঁচ আঙুল যেমন এক সমান নয়, তেমনি মানুষের মন-মর্জিও এক রকম নয়। একজন যদি হইচই পছন্দ করেন, তো আরেকজনের পছন্দ নীরবতা। সব দিক সামাল নিয়ে, সবার মন জুগিয়ে চলার চেষ্টা যাঁরা সফলভাবে করতে পারেন, তাঁরা রাজনীতিতে মোটামুটি জনপ্রিয়তার খাতায় নাম লেখাতে সক্ষম হন।
একটি ঘটনার কথা মনে পড়ছে। তখনো ব্রিটিশ শাসন চলছে। জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শের–ই–বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক তখন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী (১৯৩৭-৪৩)। আজকাল রাজনৈতিক নেতাদের তেলবাজ সমর্থকের সংখ্যা বেশি হলেও আগের দিনেও তা ছিল না, তেমন নয়। শের-ই-বাংলার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ও ছিল।
সে সময় কলকাতার একটি বাংলা পত্রিকায় একজন শিল্পী হক সাহেবকে নিয়ে একটি ব্যঙ্গচিত্র বা কার্টুন আঁকেন। শের-ই-বাংলার একজন চামচা ওই কার্টুনিস্টের বিরুদ্ধে হক সাহেবের কান ভারী করে তাঁকে শাস্তি দেওয়ার আরজি জানালে হক সাহেব কার্টুনিস্টকে তাঁর সামনে হাজির করার হুকুম দেন। শের-ই-বাংলা শিল্পীর কাছে তাঁর অমন ব্যঙ্গচিত্র আঁকার কারণ জানতে চেয়ে বলেন, আমি কি এতটাই কুদর্শন, যেমনটা তুমি এঁকেছ? শিল্পী কাঁচুমাচু করে জবাব দেন: হুজুর, আমি ছবি এঁকেই জীবিকা নির্বাহ করি। আপনি বিখ্যাত ও পরোপকারী মানুষ। ভাবলাম, আপনাকে একটু বাঁকাট্যারা করে এঁকে যদি মানুষকে একটু আমোদ দেওয়া যায়, ক্ষতি কি! এতে নিশ্চয়ই আপনার প্রধানমন্ত্রিত্ব চলে যাবে না, জনপ্রিয়তায় টান পড়বে না! কিন্তু আমার হয়তো দু-পয়সা আয় বাড়বে।
শের-ই-বাংলা মনে মনে হাসলেন। ভাবলেন, আমার কাজ আমি করি। ওর কাজ ও করে। ও তো শুধু একটি কার্টুন এঁকেছে। আমার সঙ্গে যাঁরা সারাক্ষণ ঘুর ঘুর করে তাদের সবার মতবল কি আমি জানি? কার্টুনশিল্পীকে কোনো ভর্ৎসনা না করেই বাংলার প্রধানমন্ত্রী বললেন, আমার ছবি বিকৃত করে এঁকে যদি তোমার আয়-রোজগার বাড়ে, তাহলে মন দিয়ে সেটাই করো।
কিন্তু এমন উদারতা অবশ্য আজকাল শাসকদের মধ্যে কম দেখা যায়। এখন নেতা-সমর্থক সবাই বেপরোয়া। ধৈর্য-সহ্য কম। গরম তেলে ফোড়ন পড়ার মতো সবাই শুধু তিড়িং-বিড়িং করে। আর সবচেয়ে বড় কথা, শেরেবাংলার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে তো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ছিল না। তা ছাড়া, আজকাল তো সূর্যের চেয়ে বালুর উত্তাপ বেশি।
যাহোক, রাজনীতিবিদদের নিয়ে আগেও কৌতুক চালু ছিল, এখনো আছে। রাজনীতি যত দিন থাকবে, তত দিন এসব কৌতুকের ভাষা ও প্রেক্ষিত বদল হয়ে চলতেই থাকবে।
আজ না হয় একটি পুরোনো কৌতুক আমরা নতুন করে স্মরণ করি।
একজন বিখ্যাত পাশ্চাত্য সমাজবিজ্ঞানী গবেষণার কাজে বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। তিনি ছিলেন ঘোরতর নাস্তিক। কোনো ধর্মের প্রতি তাঁর অনুরাগ ছিল না। মন্দির-মসজিদ-গির্জা-প্যাগোডা থেকে তিনি দূরে থাকতেন সব সময়। তো, বাংলাদেশ সফরের সময় তিনি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরে ঘুরে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিশে, কথা বলে যেন তাঁর জ্ঞানচোখ খুলে গেল, চোখের সামনে থেকে কালো পর্দা সরে গেল। কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি চার্চ খুঁজতে শুরু করলেন। তাঁরই এক বাংলাদেশি সহযোগী গবেষককে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি না নাস্তিক? তাহলে তুমি চার্চ খুঁজছ কেন?
এবার গবেষক ভদ্রলোক বললেন, শোনো, গত কয়েক দিন তোমাদের দেশে থেকে ঈশ্বর-বিষয়ে আমার মনোভাব বদলেছে। এখানে এসে আমি বুঝেছি, নিশ্চয়ই ঈশ্বর বলে কেউ আছেন। না হলে তোমাদের দেশটা চলছে কীভাবে? তাই আমি এখন থেকে নিয়মিত চার্চে গিয়ে ঈশ্বরের প্রার্থনা করব বলে মনস্থির করেছি।
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
১ দিন আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
১ দিন আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
১ দিন আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
১ দিন আগে