রজত কান্তি রায়, ঢাকা
সেই দুপুরে আমাদের আড্ডা জমে উঠেছিল বেশ। ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করলেও আড্ডা ফেলে উঠতে ইচ্ছা করছিল না বলে দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেল। আমরা কথা বলে যাচ্ছিলাম ভ্রমণ নিয়ে। ভ্রমণে তরুণদের আগ্রহের বিষয়ে। দেশ-বিদেশের ভ্রমণসুবিধা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে। সেখানে ঘুরেফিরে আসছিল নিজেদের ভ্রমণ ও পরিকল্পনার কথা।
সজল জাহিদের ফেসবুক পেজ ফলো করলে দেখা যাবে, তিন দিনের ছুটিতেও তিনি ভারতের কোনো না কোনো জায়গায় গিয়ে বসে আছেন। সেটা হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ কিংবা আসাম অথবা সিমলা। এসব ভ্রমণে কখনো একা, কখনো পরিবার থাকে তাঁর সঙ্গে। আমি বহুবার সজলের কাছে জানতে চেয়েছি, কেন ভারত ভ্রমণ করেন তিনি? সজল প্রতিবার প্রায় একই উত্তর দিয়েছেন। বলেছেন, এত অল্প টাকায়, এত বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও প্রকৃতি পৃথিবীতে দেখা যাবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। হাতের কাছে যেহেতু ভারত নামে এত বড় একটি দেশ আছে, সেটাকে অদেখা রেখে মরতে চান না তিনি। ফলে এক দশকের বেশি সময় ধরে শুধু ভারতেই ভ্রমণ করছেন তিনি। ভারত ভ্রমণ শেষ হলে নেপাল কিংবা ইউরোপের কথা ভাববেন বলে জানান সজল।
পরিবার যখন সঙ্গী
ভ্রমণটা তাঁর নেশা। যখন ‘ব্যাচেলর’ ছিলেন, একা ছুটতেন সেই নেশা মেটাতে। বিয়ের পরও তাতে ভাটা পড়েনি। অবশ্য প্রথম প্রথম কিছুটা যে সমস্যা হয়নি, তা নয়। কিন্তু বিয়ের বয়স যতই বেড়েছে, স্ত্রী-সন্তানেরা বুঝতে পেরেছেন, এ লোককে দমানো যাবে না। ফলে তাঁরাও এখন সজলের সঙ্গে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েন। বরং সেটাই ভালো হয়েছে বলে জানান সজল। এখন ভ্রমণের সময় ও পরিকল্পনা পরিবারের মানুষেরাই করেন। তিনি সঙ্গ দেন মাত্র।
টিপস
রইল বাকি এক
সজল ভ্রমণ শুরু করেন ২০০৮ সাল থেকে। সে যাত্রায় বন্ধু শাকিল আহমেদ ছিলেন সঙ্গে। গন্তব্য ছিল কক্সবাজার হয়ে সেন্ট মার্টিন। সফলভাবেই শেষ হয়েছিল শুরুর সেই গল্প।
২০১২ সাল থেকে তিনি ভারত ভ্রমণ শুরু করেন। ভুল পরিকল্পনায় হয়েছিল প্রথম ভ্রমণ। ফলে গন্তব্য সিমলা-মানালি থাকলেও যেতে হয়েছিল আগ্রা। বলা চলে, সেটা ছিল ভুলে তাজমহল দেখা।
তারপর কেটে গেছে প্রায় ১০ বছর। ভারত নামের বিশাল দেশটির পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন সজল। অর্জন করেছেন বিচিত্র অভিজ্ঞতা। সমতল পলিমাটি থেকে পাথুরে পাহাড়, মরুভূমি থেকে বরফের রাজ্য, বৃক্ষহীন মাটি থেকে ঘন বন—প্রায় সব জায়গায় ভ্রমণ করেছেন তিনি। জিজ্ঞেস করেছিলাম, সব শেষ? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং অরুণাচল প্রদেশ ছাড়া পুরো ভারত ঘোরা শেষ। বিশেষ অনুমতিসহ আইনের বিভিন্ন মারপ্যাঁচে সেখানে যাওয়া হচ্ছে না। সজল জানান, চাইলে যাওয়া যায় অবৈধভাবে। কিন্তু তিনি বৈধভাবে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়েই যেতে চান অরুণাচল। এর জন্য যত সময় লাগুক, তিনি অপেক্ষা করতে রাজি আছেন।
ঠিকানাবিহীন ভ্রমণ
২০২২ সাল। কাশ্মীর ভ্রমণের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে সজল চলে গেলেন আহমেদাবাদ। স্টেশনে ব্যাকপ্যাক রেখে সারা দিন আহমেদাবাদ ঘুরে, সন্ধ্যায় স্টেশনে ফিরে ট্রেন ধরে চলে গিয়েছিলেন ভুজ। সারা দিন ভুজ, রান অব কাচ ঘুরে বিকেলে সুরাটের ট্রেনে চেপে বসা। সারা রাত যাত্রা করে সকালে সুরাটে পৌঁছান। এভাবে তিনি পুরো ভ্রমণ করেন কোনো হোটেলে না থেকে। কলকাতা এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন অফিসার এসব শুনে দ্রুত হাতে তাঁর পাসপোর্টে সিল মেরে ভবিষ্যৎ ভারত ভ্রমণের জন্য শুভকামনা জানিয়ে বিদায় দিয়েছিলেন।
টিপস
ব্যক্তিগত জাহিদ
নেছারাবাদ উপজেলার সুটিয়াকাঠি গ্রাম, পিরোজপুর জেলা। এটি স্থায়ী ঠিকানা হলেও সজলের জন্ম হয়েছিল পাকশীতে, ১৯৮২ সালের ৮ মার্চ। বাবা মো. চান মিয়া আর মা মোছা. ঝর্ণা বেগম। লেখাপড়া করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিষয়ে। অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ, অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস পদে চাকরি করছেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে। স্ত্রী শারমিন নাসরিন এবং দুই সন্তান আয়ান আব্দুল্লা ও জুনায়রাহ জারনাজকে নিয়ে
সজল জাহিদের সংসার।
সেই দুপুরে আমাদের আড্ডা জমে উঠেছিল বেশ। ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করলেও আড্ডা ফেলে উঠতে ইচ্ছা করছিল না বলে দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেল। আমরা কথা বলে যাচ্ছিলাম ভ্রমণ নিয়ে। ভ্রমণে তরুণদের আগ্রহের বিষয়ে। দেশ-বিদেশের ভ্রমণসুবিধা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে। সেখানে ঘুরেফিরে আসছিল নিজেদের ভ্রমণ ও পরিকল্পনার কথা।
সজল জাহিদের ফেসবুক পেজ ফলো করলে দেখা যাবে, তিন দিনের ছুটিতেও তিনি ভারতের কোনো না কোনো জায়গায় গিয়ে বসে আছেন। সেটা হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ কিংবা আসাম অথবা সিমলা। এসব ভ্রমণে কখনো একা, কখনো পরিবার থাকে তাঁর সঙ্গে। আমি বহুবার সজলের কাছে জানতে চেয়েছি, কেন ভারত ভ্রমণ করেন তিনি? সজল প্রতিবার প্রায় একই উত্তর দিয়েছেন। বলেছেন, এত অল্প টাকায়, এত বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও প্রকৃতি পৃথিবীতে দেখা যাবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। হাতের কাছে যেহেতু ভারত নামে এত বড় একটি দেশ আছে, সেটাকে অদেখা রেখে মরতে চান না তিনি। ফলে এক দশকের বেশি সময় ধরে শুধু ভারতেই ভ্রমণ করছেন তিনি। ভারত ভ্রমণ শেষ হলে নেপাল কিংবা ইউরোপের কথা ভাববেন বলে জানান সজল।
পরিবার যখন সঙ্গী
ভ্রমণটা তাঁর নেশা। যখন ‘ব্যাচেলর’ ছিলেন, একা ছুটতেন সেই নেশা মেটাতে। বিয়ের পরও তাতে ভাটা পড়েনি। অবশ্য প্রথম প্রথম কিছুটা যে সমস্যা হয়নি, তা নয়। কিন্তু বিয়ের বয়স যতই বেড়েছে, স্ত্রী-সন্তানেরা বুঝতে পেরেছেন, এ লোককে দমানো যাবে না। ফলে তাঁরাও এখন সজলের সঙ্গে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েন। বরং সেটাই ভালো হয়েছে বলে জানান সজল। এখন ভ্রমণের সময় ও পরিকল্পনা পরিবারের মানুষেরাই করেন। তিনি সঙ্গ দেন মাত্র।
টিপস
রইল বাকি এক
সজল ভ্রমণ শুরু করেন ২০০৮ সাল থেকে। সে যাত্রায় বন্ধু শাকিল আহমেদ ছিলেন সঙ্গে। গন্তব্য ছিল কক্সবাজার হয়ে সেন্ট মার্টিন। সফলভাবেই শেষ হয়েছিল শুরুর সেই গল্প।
২০১২ সাল থেকে তিনি ভারত ভ্রমণ শুরু করেন। ভুল পরিকল্পনায় হয়েছিল প্রথম ভ্রমণ। ফলে গন্তব্য সিমলা-মানালি থাকলেও যেতে হয়েছিল আগ্রা। বলা চলে, সেটা ছিল ভুলে তাজমহল দেখা।
তারপর কেটে গেছে প্রায় ১০ বছর। ভারত নামের বিশাল দেশটির পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন সজল। অর্জন করেছেন বিচিত্র অভিজ্ঞতা। সমতল পলিমাটি থেকে পাথুরে পাহাড়, মরুভূমি থেকে বরফের রাজ্য, বৃক্ষহীন মাটি থেকে ঘন বন—প্রায় সব জায়গায় ভ্রমণ করেছেন তিনি। জিজ্ঞেস করেছিলাম, সব শেষ? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং অরুণাচল প্রদেশ ছাড়া পুরো ভারত ঘোরা শেষ। বিশেষ অনুমতিসহ আইনের বিভিন্ন মারপ্যাঁচে সেখানে যাওয়া হচ্ছে না। সজল জানান, চাইলে যাওয়া যায় অবৈধভাবে। কিন্তু তিনি বৈধভাবে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়েই যেতে চান অরুণাচল। এর জন্য যত সময় লাগুক, তিনি অপেক্ষা করতে রাজি আছেন।
ঠিকানাবিহীন ভ্রমণ
২০২২ সাল। কাশ্মীর ভ্রমণের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে সজল চলে গেলেন আহমেদাবাদ। স্টেশনে ব্যাকপ্যাক রেখে সারা দিন আহমেদাবাদ ঘুরে, সন্ধ্যায় স্টেশনে ফিরে ট্রেন ধরে চলে গিয়েছিলেন ভুজ। সারা দিন ভুজ, রান অব কাচ ঘুরে বিকেলে সুরাটের ট্রেনে চেপে বসা। সারা রাত যাত্রা করে সকালে সুরাটে পৌঁছান। এভাবে তিনি পুরো ভ্রমণ করেন কোনো হোটেলে না থেকে। কলকাতা এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন অফিসার এসব শুনে দ্রুত হাতে তাঁর পাসপোর্টে সিল মেরে ভবিষ্যৎ ভারত ভ্রমণের জন্য শুভকামনা জানিয়ে বিদায় দিয়েছিলেন।
টিপস
ব্যক্তিগত জাহিদ
নেছারাবাদ উপজেলার সুটিয়াকাঠি গ্রাম, পিরোজপুর জেলা। এটি স্থায়ী ঠিকানা হলেও সজলের জন্ম হয়েছিল পাকশীতে, ১৯৮২ সালের ৮ মার্চ। বাবা মো. চান মিয়া আর মা মোছা. ঝর্ণা বেগম। লেখাপড়া করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিষয়ে। অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ, অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস পদে চাকরি করছেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে। স্ত্রী শারমিন নাসরিন এবং দুই সন্তান আয়ান আব্দুল্লা ও জুনায়রাহ জারনাজকে নিয়ে
সজল জাহিদের সংসার।
দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সিলেট যেন এক মহারানি। চা-বাগান, পাহাড়, নদী, ঝরনা, বিল কী নেই এ জেলায়। এ জেলারই এক উপজেলা জৈন্তাপুর। এখানে দেখা যাবে নীল পানির সারি নদী, চা-বাগান আর লাল শাপলার বিল। শীতে বেরিয়ে পড়বেন না কি?...
১২ ঘণ্টা আগেদিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
৪ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
৪ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
৪ দিন আগে