সজল জাহিদ
জীবনের অল্প কয়েকটি ভ্রমণে বিভিন্ন ধরনের পাহাড় দেখেছি। সবুজ থেকে সাদা, ন্যাড়া থেকে অরণ্যে ঢাকা, সাদা থেকে লাল, কালো থেকে ধূসর—সব রকমের পাহাড়ই ভীষণ প্রিয়, অনেক আনন্দের আর দারুণ উপভোগের। কিন্তু সত্যি বলতে, এমন আদুরে, এত মন ভালো করে দেওয়া, অপলক তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করার মতো পাহাড় আগে দেখিনি। এই পাহাড়ের সারিগুলোর দিকে তাকাতেই কেমন যেন একটা সুখ সুখ অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হয়ে যেত মন। ভীষণ সুখানুভূতি নিয়ে, সবুজ ঢেউয়ের মতো ঢেউখেলানো পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে থেকে হাঁটতে শুরু করেছিলাম। এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম যে এই পাহাড়ের আমি নাম দিয়েছি সুখপাহাড়!
আজকে সেই সুখপাহাড়ের ছোট্ট গল্পটা করি। নাগাল্যান্ডের জুকো ভ্যালি ট্রেকে পাওয়া জুকোর পথের প্রথম আপহিল শেষ করে, ট্রেইলের শুরুতেই দেখতে পাওয়া যায় এ পাহাড়ের সারি। না, এখানে কোনো পাহাড় আকাশছোঁয়া ছিল না, বড়, বুনো বা জঙ্গলে ঘেরা ছিল না। এখানে কোনো পাহাড়ে মেঘেদের দলের ছুটে বেড়ানো ছিল না, পাহাড়ের গায়ে কুয়াশার চাদর জড়ানো ছিল না। কোনো পাহাড়ে গা-ছমছমে অনুভূতি ছিল না। এখানে তেমন কোনো আপহিল বা ডাউনহিল ছিল না। এ ছিল আমার দেখা এক অদ্ভুত রকমের পাহাড়, যেমনটা আগে আর কোথাও দেখিনি, চোখে পড়েনি।
শুরুতে একটা ঘাস-লতাপাতা দিয়ে আবৃত পাহাড়ের গা বেয়ে কিছুটা নিচে নেমে, একটা ছোট্ট খাঁড়ি পার হয়ে অন্য একটি পাহাড়ে হাঁটা শুরু করেছিলাম। তখনই, ঠিক তখনই এত দিন ধরে অন্যের ছবিতে আর গুগলে দেখা অদ্ভুত মোহাচ্ছন্নতায় মোড়ানো সবুজের ঢেউখেলানো পাহাড়ের ঢেউ দেখতে পেলাম! প্রথম দেখাতেই মুগ্ধতা আমার গতি থামিয়ে দিল। ছবির সঙ্গে বাস্তবের এমন চমৎকার মিল পেয়ে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম ঝটপট। এরপর অবাক চোখে মন্ত্রমুগ্ধের মতো কিছু সময় তাকিয়ে ছিলাম সেদিকে। আর ঠিক তখনই একটা অদ্ভুত সুখানুভূতিতে আচ্ছন্ন হলাম। মনে হলো, এই পাহাড়ের রিজ লাইন ধরে অনন্তকাল বুঝি হেঁটে যাওয়া যাবে ক্লান্তিহীন।
আবারও হাঁটা শুরু করলাম। কিছু সময় হেঁটে আরও কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর পুরো পাহাড়ের ঢেউখেলানো সবুজ সারির প্রায় পুরো ভিউ দৃষ্টিসীমায় ধরা দিল। ব্যাকপ্যাক রেখে সেখানে বসে পড়লাম। সেই পাহাড়ের সবুজ ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে থেকে প্রাণভরে উপভোগ করতে থাকলাম দৃশ্য। তখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি, এই ট্রেইলের পুরোটা পথই এমন সবুজ ঢেউখেলানো পাহাড়ের সারি দিয়ে সাজানো। তাই বসে বসে দেখছিলাম, দূরে, ঢেউখেলানো সবুজের মাঝে, পাহাড়ের ঠিক মাঝখানে মাথার সিঁথির মতো আঁকাবাঁকা একটা লাইন চলে গেছে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। তখনো বুঝতে পারিনি যে ওটাই আমাদের পুরো ট্রেকের পাহাড়ের ট্রেইল। অথচ তেমনই একটা ট্রেইলে দাঁড়িয়ে আছি!
যখন ওই পাহাড় ছাড়িয়ে একটু আগে ছবি তুলে রাখা পাহাড়ের ট্রেইলে গিয়ে পৌঁছালাম, পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলাম, যে ছবি একটু আগে তুলেছি, যে পাহাড়ের ট্রেইল দূর থেকে দেখে মুগ্ধ হয়েছি, সেই একই পাহাড়ের সারি! একই রকম ট্রেইল আর একই রকম সবুজের ঢেউখেলানো পাহাড়েই হেঁটে এসেছি। পেছনে সেই একই দৃশ্য সামনের মতো হুবহু! বুঝলাম, পাহাড়ের মাঝের ওই সরু রেখাটাই আসলে আমাদের ট্রেক রুট, পাহাড়ের মূল ট্রেইল। এটা দেখা, বোঝা আর উপলব্ধি করার পর মুগ্ধতা আরও বেড়ে গেল। বিস্ময়ে আরও বেশি সুখে আচ্ছন্ন হয়ে গেলাম। যেটুকু ক্লান্তি অনুভূত হতে শুরু করেছিল, তা দূর হয়ে সেই জায়গায় সুখের নতুন একটা অনুভূতি তৈরি হলো। আর ঠিক তখনই সবুজের এই ঢেউখেলানো পাহাড়, অদ্ভুত মোহময় এই পাহাড়ের সারির আমি নিজের মতো নাম দিলাম ‘সুখপাহাড়’!
সুখপাহাড়ের ট্রেইল ধরে ভীষণ আনন্দ নিয়ে আরেকটা অদ্ভুত রকম সন্তুষ্টির রেশ প্রাণে জড়িয়ে এগিয়ে যেতে শুরু করলাম। কোনো রকম ক্লান্তি, হাঁপিয়ে ওঠা কিংবা কষ্ট ছাড়া! শুধুই একটা সুখ সুখ অনুভূতি নিয়ে পাহাড়ে এর আগে কোনো দিন এভাবে হাঁটিনি। তাই এই সুখপাহাড়ে ট্রেক করে এগিয়ে যাওয়ায় স্মৃতি অনেক দিন অমলিন থাকবে, যে স্মৃতি আমার সুখের আকাশে আর একটা শুকতারা হয়ে গেছে!
যেতে চাইলে
নাগাল্যান্ডের জুকো ভ্যালি ট্রেকে এই সুখপাহাড়ের অবস্থান। সেখানে যাওয়ার নানা উপায় আছে। এয়ারে কলকাতা বা গুয়াহাটি থেকে ডিমাপুর অথবা আগরতলা বা গুয়াহাটি থেমে ট্রেনে ডিমাপুর। সেখান থেকে বাস বা জিপে করে নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমা। সেখান থেকে আরও ২৫ কিলোমিটার দূরের জুকো ট্রেক পয়েন্টে গাড়ি বা জিপে যেতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করে জুকো ট্রেইলে চলা শুরু করতে হয়। শুরুর চড়াই শেষ করে ভিউ পয়েন্ট থেকে মূল ট্রেইলে হাঁটতে শুরু করলেই পাওয়া যাবে এই সুখপাহাড়ের ঠিকানা।
জীবনের অল্প কয়েকটি ভ্রমণে বিভিন্ন ধরনের পাহাড় দেখেছি। সবুজ থেকে সাদা, ন্যাড়া থেকে অরণ্যে ঢাকা, সাদা থেকে লাল, কালো থেকে ধূসর—সব রকমের পাহাড়ই ভীষণ প্রিয়, অনেক আনন্দের আর দারুণ উপভোগের। কিন্তু সত্যি বলতে, এমন আদুরে, এত মন ভালো করে দেওয়া, অপলক তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করার মতো পাহাড় আগে দেখিনি। এই পাহাড়ের সারিগুলোর দিকে তাকাতেই কেমন যেন একটা সুখ সুখ অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হয়ে যেত মন। ভীষণ সুখানুভূতি নিয়ে, সবুজ ঢেউয়ের মতো ঢেউখেলানো পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে থেকে হাঁটতে শুরু করেছিলাম। এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম যে এই পাহাড়ের আমি নাম দিয়েছি সুখপাহাড়!
আজকে সেই সুখপাহাড়ের ছোট্ট গল্পটা করি। নাগাল্যান্ডের জুকো ভ্যালি ট্রেকে পাওয়া জুকোর পথের প্রথম আপহিল শেষ করে, ট্রেইলের শুরুতেই দেখতে পাওয়া যায় এ পাহাড়ের সারি। না, এখানে কোনো পাহাড় আকাশছোঁয়া ছিল না, বড়, বুনো বা জঙ্গলে ঘেরা ছিল না। এখানে কোনো পাহাড়ে মেঘেদের দলের ছুটে বেড়ানো ছিল না, পাহাড়ের গায়ে কুয়াশার চাদর জড়ানো ছিল না। কোনো পাহাড়ে গা-ছমছমে অনুভূতি ছিল না। এখানে তেমন কোনো আপহিল বা ডাউনহিল ছিল না। এ ছিল আমার দেখা এক অদ্ভুত রকমের পাহাড়, যেমনটা আগে আর কোথাও দেখিনি, চোখে পড়েনি।
শুরুতে একটা ঘাস-লতাপাতা দিয়ে আবৃত পাহাড়ের গা বেয়ে কিছুটা নিচে নেমে, একটা ছোট্ট খাঁড়ি পার হয়ে অন্য একটি পাহাড়ে হাঁটা শুরু করেছিলাম। তখনই, ঠিক তখনই এত দিন ধরে অন্যের ছবিতে আর গুগলে দেখা অদ্ভুত মোহাচ্ছন্নতায় মোড়ানো সবুজের ঢেউখেলানো পাহাড়ের ঢেউ দেখতে পেলাম! প্রথম দেখাতেই মুগ্ধতা আমার গতি থামিয়ে দিল। ছবির সঙ্গে বাস্তবের এমন চমৎকার মিল পেয়ে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম ঝটপট। এরপর অবাক চোখে মন্ত্রমুগ্ধের মতো কিছু সময় তাকিয়ে ছিলাম সেদিকে। আর ঠিক তখনই একটা অদ্ভুত সুখানুভূতিতে আচ্ছন্ন হলাম। মনে হলো, এই পাহাড়ের রিজ লাইন ধরে অনন্তকাল বুঝি হেঁটে যাওয়া যাবে ক্লান্তিহীন।
আবারও হাঁটা শুরু করলাম। কিছু সময় হেঁটে আরও কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর পুরো পাহাড়ের ঢেউখেলানো সবুজ সারির প্রায় পুরো ভিউ দৃষ্টিসীমায় ধরা দিল। ব্যাকপ্যাক রেখে সেখানে বসে পড়লাম। সেই পাহাড়ের সবুজ ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে থেকে প্রাণভরে উপভোগ করতে থাকলাম দৃশ্য। তখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি, এই ট্রেইলের পুরোটা পথই এমন সবুজ ঢেউখেলানো পাহাড়ের সারি দিয়ে সাজানো। তাই বসে বসে দেখছিলাম, দূরে, ঢেউখেলানো সবুজের মাঝে, পাহাড়ের ঠিক মাঝখানে মাথার সিঁথির মতো আঁকাবাঁকা একটা লাইন চলে গেছে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। তখনো বুঝতে পারিনি যে ওটাই আমাদের পুরো ট্রেকের পাহাড়ের ট্রেইল। অথচ তেমনই একটা ট্রেইলে দাঁড়িয়ে আছি!
যখন ওই পাহাড় ছাড়িয়ে একটু আগে ছবি তুলে রাখা পাহাড়ের ট্রেইলে গিয়ে পৌঁছালাম, পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলাম, যে ছবি একটু আগে তুলেছি, যে পাহাড়ের ট্রেইল দূর থেকে দেখে মুগ্ধ হয়েছি, সেই একই পাহাড়ের সারি! একই রকম ট্রেইল আর একই রকম সবুজের ঢেউখেলানো পাহাড়েই হেঁটে এসেছি। পেছনে সেই একই দৃশ্য সামনের মতো হুবহু! বুঝলাম, পাহাড়ের মাঝের ওই সরু রেখাটাই আসলে আমাদের ট্রেক রুট, পাহাড়ের মূল ট্রেইল। এটা দেখা, বোঝা আর উপলব্ধি করার পর মুগ্ধতা আরও বেড়ে গেল। বিস্ময়ে আরও বেশি সুখে আচ্ছন্ন হয়ে গেলাম। যেটুকু ক্লান্তি অনুভূত হতে শুরু করেছিল, তা দূর হয়ে সেই জায়গায় সুখের নতুন একটা অনুভূতি তৈরি হলো। আর ঠিক তখনই সবুজের এই ঢেউখেলানো পাহাড়, অদ্ভুত মোহময় এই পাহাড়ের সারির আমি নিজের মতো নাম দিলাম ‘সুখপাহাড়’!
সুখপাহাড়ের ট্রেইল ধরে ভীষণ আনন্দ নিয়ে আরেকটা অদ্ভুত রকম সন্তুষ্টির রেশ প্রাণে জড়িয়ে এগিয়ে যেতে শুরু করলাম। কোনো রকম ক্লান্তি, হাঁপিয়ে ওঠা কিংবা কষ্ট ছাড়া! শুধুই একটা সুখ সুখ অনুভূতি নিয়ে পাহাড়ে এর আগে কোনো দিন এভাবে হাঁটিনি। তাই এই সুখপাহাড়ে ট্রেক করে এগিয়ে যাওয়ায় স্মৃতি অনেক দিন অমলিন থাকবে, যে স্মৃতি আমার সুখের আকাশে আর একটা শুকতারা হয়ে গেছে!
যেতে চাইলে
নাগাল্যান্ডের জুকো ভ্যালি ট্রেকে এই সুখপাহাড়ের অবস্থান। সেখানে যাওয়ার নানা উপায় আছে। এয়ারে কলকাতা বা গুয়াহাটি থেকে ডিমাপুর অথবা আগরতলা বা গুয়াহাটি থেমে ট্রেনে ডিমাপুর। সেখান থেকে বাস বা জিপে করে নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমা। সেখান থেকে আরও ২৫ কিলোমিটার দূরের জুকো ট্রেক পয়েন্টে গাড়ি বা জিপে যেতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করে জুকো ট্রেইলে চলা শুরু করতে হয়। শুরুর চড়াই শেষ করে ভিউ পয়েন্ট থেকে মূল ট্রেইলে হাঁটতে শুরু করলেই পাওয়া যাবে এই সুখপাহাড়ের ঠিকানা।
ব্যাগ কেনার আগে কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখা ভালো। ব্যাগের আকার ও রং ব্যবহারকারীর ব্যক্তিত্বে ছাপ রাখে বেশ গভীরভাবে।
৯ ঘণ্টা আগেসংবেদনশীল ত্বকের মানুষ সারা বছর ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ ধরনের ত্বক আবহাওয়ার পরিবর্তন, দূষণ বা ত্বকের অনুপযুক্ত প্রসাধনীতে প্রভাবিত হতে পারে।
১০ ঘণ্টা আগেশীতের হিমেল হাওয়া থেকে বাঁচতে বাইকারদের পোশাক নিয়ে থাকতে হয় সচেতন। তাই এ সময় বাইকারদের পোশাকে আসে বিশেষ পরিবর্তন। বাইকারদের পোশাক যেমন শীত নিবারক হতে হয়, তেমনি হতে হয় আরামদায়ক। কী কী থাকবে সে পোশাকে?
১০ ঘণ্টা আগেএই ফুলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিখ্যাত ফরাসি আবিষ্কারক লুই অটোইন ডি বোগেনভিলিয়ার নাম। তাঁর নামেই এ গাছের নাম রাখা হয়েছিল বোগেনভিলিয়া। আর এটিকে বাংলায় প্রথম বাগানবিলাস বলে ডেকেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কমবেশি সারা বছর ফুল দেখা গেলেও
১০ ঘণ্টা আগে