অনলাইন ডেস্ক
কয়েক সপ্তাহ পর পরই স্ত্রী আর দুই সন্তানকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে হাজির হন হিসকান্দার জুলকারনাইন। তাঁদের গন্তব্য জুয়েল, টার্মিনাল ১–এর সঙ্গে যুক্ত শপিংমল। বিখ্যাত কানাডীয় স্থপতি মোশে সাফদি ও তাঁর সঙ্গীরা এর নকশা করেন। হিসকান্দার জুলকারনাইনের সন্তানদের এখানে সবচেয়ে পছন্দ সাত তলা উচ্চতার কৃত্রিম জলপ্রপাতটি। পৃথিবীর দীর্ঘতম ইনডোর জলপ্রপাত এটি।
ডিজনি থিমের আলোক শয্যার সঙ্গে গানের শোটাও তাদের প্রিয়। তারপর পরিবারটি যায় টার্মিনাল ৩ এ। শাটল বাস কিংবা ইলেকট্রিক ট্রেনে কয়েক মিনিটেই টার্মিনাল ১ থেকে সেখানে পৌঁছানো যায়। ছোটদের জন্য নানা ধরনের রাইড ও গেমের ব্যবস্থার আছে সেখানে।
‘আর কোনো বিমানবন্দরে এমন চমৎকার সময় কাটানোর, কেনাকাটা কিংবা খাওয়া–দাওয়ার ব্যবস্থা আমি দেখিনি,’ বিবিসিকে বলেন জুলকারনাইন, সিঙ্গাপুরের পৃথিবী বিখ্যাত শপিং এলাকা অরচার্ড রোডে যাওয়ার সময় চাঙ্গিতে সময় কাটানোটাও যিনি কিংবা তাঁর পরিবার সমান পছন্দ করেন।
পৃথিবীর বিমানবন্দরগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও র্যাঙ্কিং করা স্কাইট্র্যাক্স চাঙ্গিকে ২০২৩ সালে পৃথিবীর সেরা বিমানবন্দর হিসেবে নির্বাচন করেছে।
পৃথিবীর ৫৫০ টির বেশি বিমানবন্দরের সুযোগ–সুবিধা ও সার্ভিস নিয়ে যাত্রীদের মতামতের ভিত্তিতে এই র্যাঙ্কিং করা হয় বলে জানায় স্কাইট্র্যাক্স। আশ্চর্যজনক হলেও এই ব্যাংকিংয়ে এখন পর্যন্ত ১২ বার সবার ওপরে থাকার কৃতিত্ব দেখিয়েছে চাঙ্গি বিমানবন্দর। এর মধ্যে গত দশকেই আটবার। গত মাস অর্থাৎ মার্চে পুনরায় সেরার খেতাবটি ফিরে পায় তারা, কাতারের দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও জাপানের টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরকে পেছনে ফেলে।
তালিকায় চার ও পাঁচে আছে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ফ্রান্সের প্যারিসের শার্ল দ্যু গল বিমানবন্দর। ছয় ও সাতে তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর ও জার্মানির মিউনিখ বিমানবন্দর। সেরা দশের বাকি তিনটি স্থান দখল করেছে যথাক্রমে সুইজাল্যান্ডের জুরিখ বিমানবন্দর, জাপানের নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও স্পেনের মাদ্রিদ-বারাজাস বিমানবন্দর।
করোনা মহামারির ঠিক আগে ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৮২ হাজার ফ্লাইট চাঙ্গিতে অবতরণ করে কিংবা এখান থেকে উড়াল দেয়। এ সময় ৬ কোটি ৮০ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে ফ্লাইটগুলো। যদিও করোনা পরবর্তীতে সেই ফ্লাইট ও যাত্রী ফিরিয়ে আনতে লড়াই করতে হচ্ছে বিমানবন্দরটিকে। এটি কেবল পর্যটন হাব নয়, এটি সিঙ্গাপুরীদের ভালোবাসার ও সময় কাটানোর এক অসাধারণ জায়গা।
টুকিটাকি কেনাকাটা করতে ১৫ মিনিট গাড়ি চালিয়ে জুয়েল আসেন র্যাচেল ট্যান। ৩৪ বছর বয়স্ক এই আইনজীবী কেনাকাটার পাশাপাশি জায়গাটির আলাদা আকর্ষণ ক্ষমতার কথা ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘ঝরনার পাশে বসতে পারেন আপনি, উপভোগ করতে পারেন সময়টি।’
পাতাল রেল কিংবা বাসে সহজেই পৌঁছানো সম্ভব চাঙ্গিতে, এমন মানুষ কিংবা পরিবারও পাবেন যারা গোটা দিনটিই চাঙ্গিতে কাটিয়ে দিয়েছেন। ছবি দেখতে পাবেন, খেতে পারেন, কেনাকাটা করতে পারেন এমনকি শান্ত একটি জায়গায় বসে পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিতে পারেন। এটি এখন ওয়েডিং ফটোগ্রাফি এবং রাতের খাবারে বন্ধু–বান্ধব বা পরিচিতদের সাক্ষাতের এক জায়গাও পরিণত হয়েছে।
এখানকার অন্যান্য দ্রষ্টব্যের মধ্যে আছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি রেইনফরেস্ট, গুল্মের গোলকধাঁধা আর ১২ মিটার উচ্চতার একটি স্লাইড। ধরুন আপনাকে উড়োজাহাজ ধরতে হবে, আর একটু তাড়াতাড়িই হাজির হয়ে গেছেন, বিশ্রাম নেওয়ার জায়গায় পাবেন স্পা, বিনে পয়সায় ছবি দেখানো হয় এমন এক থিয়েটার আর সুইমিং পুল। মেসেজ চেয়ার আর প্রজাপতি বাগানের কথাটাও ভুললে চলবে না।
বিমানবন্দরটির নিজস্ব একটি সুগন্ধিও আছে। গোটা চাঙ্গিতে এটি ছড়িয়ে দিচ্ছে তাঁর সুগন্ধ। টার্মিনাল ৪–এর ঠিক বাইরে যা দেখবেন তাও চোখ কপালে তুলবে, প্রমাণ আকারের সব ডাইনোসর দখল করে আছে এক মাইল এলাকা।
চাঙ্গি সিঙ্গাপুরের জনগণের কাছেও এক গর্বের জায়গা। সরকারের কাছেও আছে এর আলাদা গুরুত্ব। এমনকি করোনার সময় যখন বিমানবন্দরের চেক–ইন–কাউন্টার এবং ডিউটি ফ্রি দোকানগুলোও খাঁ খাঁ করছিল সিঙ্গাপুর সরকার প্রচণ্ডরকম আত্মবিশ্বাসী ছিল চাঙ্গি আবার পর্যটকদের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে সে বিষয়ে, প্রমাণ তখন অ্যাভিয়েশন খাতে তাঁদের এক শ কোটির বেশি সিঙ্গাপুরী ডলার ব্যায় শুরু করা।
‘চাঙ্গি ট্রানজিটের জায়গা হিসেবে সেরা বিমানবন্দরগুলোর একটি,’ বলেন জুরিখে বসবাস করা অ্যালেক্স চেন, কাজের খাতিরে বছরে বার চারেক সিঙ্গাপুরে ট্রানজিট নিয়ে যাতায়াত করতে হয় তাঁকে।
চাঙ্গিকে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট কিংবা আমস্টারডামের শিফল বিমানবন্দরের চেয়ে অনেক বেশি সুপরিকল্পিত ও কার্যকর মনে করেন তিনি। ‘আমি সাধারণত ৬০ জনের মতো বড় দল নিয়ে যাতায়াত করি। কিন্তু কখনো মনে পড়ে না আমাদের একটি লাগেজ হারানো গেছে। পৃথিবীর অন্য বড় বিমানবন্দরগুলোতে কানেকটিং ফ্লাইট মিস করাটা খুব সাধারণ ব্যাপার, তবে এখানে তেমনটি ঘটে না।’ বলেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে কারিগরি কিছু সাধারণ জটিলতায় সড়ক কিংবা আকাশ পথে যাতায়াতের চেক পয়েন্টগুলোতে ইমিগ্রেশন পেরোতে বাড়তি সময় লেগে যায়। সে ক্ষেত্রে অনেক ভ্রমণকারী ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে চাঙ্গিকে বেছে নেন, এই বিশ্বাসে যে এখানে ভ্রমণপথে জটিলতায় পড়তে হবে কম। এ মতামত, অ্যাভিয়েশন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এনডাও এনালিটিকসের শোকর ইউসুফ।
১৯৯০–র দশকে ফিরে যাওয়া যাক, সিঙ্গাপুরের টিভিতে দেখার মতো একমাত্র বিষয় ছিল ড্রামা সিরিয়াল, তখন নতুন কোনো সিরিয়ালের শুরুটা প্রায়ই হতো চাঙ্গির কন্ট্রোল টাওয়ারের দৃশ্যায়নের মাধ্যমে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যেত অনেক দিন পর বিদেশ ফেরত একজন মানুষ চাঙ্গিতে নেমে একটি ট্যাক্সি নিয়ে চারপাশের দৃশ্য দেখতে দেখতে বাড়ি ফিরছে। তারপর স্বজনদের কাছে বিস্ময় প্রকাশ করে বলছে, দেশ কত বদলে গেছে। ১৯৮১ সালে একটি টার্মিনাল ও রানওয়ে নিয়ে চালু হয় বিমানবন্দরটি।
বিমানবন্দরটির এই আবেদন অটুট আছে পুরোপুরি। ২০১৯ সালে ফিরে যাই, উদ্বোধনের প্রথম ছয় মাসে ৫ কোটি মানুষের আগমন ঘটে জুয়েলে। পঞ্চম একটি টার্মিনালের কাজ শুরু হয়েছে, ২০৩০–এর দশকের মাঝামাঝিতে এটি উন্মুক্ত করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘আমার মনে হয় না পৃথিবীর আর কোনো বিমানবন্দরের বেলায় এমনটা ঘটে, যেখানে স্থানীয়রা শুধু সময় কাটাতে আসেন,’ বলেন আইনজীবী আদ্রিয়ান ট্যান। তাঁর ধারণা সিঙ্গাপুরবাসীর কাছে এটি পাড়ার একটি কফি শপের মতোই পরিচিত। শুধু তাই নয়, আদ্রিয়ানের মতে সিঙ্গাপুরের ভালো যা কিছু সবকিছুই তুলে ধরে বিমানবন্দরটি। যেমন সিঙ্গাপুরীদের দক্ষতা, সৌজন্যের প্রকাশ ঘটে চাঙ্গিতেও।
আরও খবর পড়ুন:
কয়েক সপ্তাহ পর পরই স্ত্রী আর দুই সন্তানকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে হাজির হন হিসকান্দার জুলকারনাইন। তাঁদের গন্তব্য জুয়েল, টার্মিনাল ১–এর সঙ্গে যুক্ত শপিংমল। বিখ্যাত কানাডীয় স্থপতি মোশে সাফদি ও তাঁর সঙ্গীরা এর নকশা করেন। হিসকান্দার জুলকারনাইনের সন্তানদের এখানে সবচেয়ে পছন্দ সাত তলা উচ্চতার কৃত্রিম জলপ্রপাতটি। পৃথিবীর দীর্ঘতম ইনডোর জলপ্রপাত এটি।
ডিজনি থিমের আলোক শয্যার সঙ্গে গানের শোটাও তাদের প্রিয়। তারপর পরিবারটি যায় টার্মিনাল ৩ এ। শাটল বাস কিংবা ইলেকট্রিক ট্রেনে কয়েক মিনিটেই টার্মিনাল ১ থেকে সেখানে পৌঁছানো যায়। ছোটদের জন্য নানা ধরনের রাইড ও গেমের ব্যবস্থার আছে সেখানে।
‘আর কোনো বিমানবন্দরে এমন চমৎকার সময় কাটানোর, কেনাকাটা কিংবা খাওয়া–দাওয়ার ব্যবস্থা আমি দেখিনি,’ বিবিসিকে বলেন জুলকারনাইন, সিঙ্গাপুরের পৃথিবী বিখ্যাত শপিং এলাকা অরচার্ড রোডে যাওয়ার সময় চাঙ্গিতে সময় কাটানোটাও যিনি কিংবা তাঁর পরিবার সমান পছন্দ করেন।
পৃথিবীর বিমানবন্দরগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও র্যাঙ্কিং করা স্কাইট্র্যাক্স চাঙ্গিকে ২০২৩ সালে পৃথিবীর সেরা বিমানবন্দর হিসেবে নির্বাচন করেছে।
পৃথিবীর ৫৫০ টির বেশি বিমানবন্দরের সুযোগ–সুবিধা ও সার্ভিস নিয়ে যাত্রীদের মতামতের ভিত্তিতে এই র্যাঙ্কিং করা হয় বলে জানায় স্কাইট্র্যাক্স। আশ্চর্যজনক হলেও এই ব্যাংকিংয়ে এখন পর্যন্ত ১২ বার সবার ওপরে থাকার কৃতিত্ব দেখিয়েছে চাঙ্গি বিমানবন্দর। এর মধ্যে গত দশকেই আটবার। গত মাস অর্থাৎ মার্চে পুনরায় সেরার খেতাবটি ফিরে পায় তারা, কাতারের দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও জাপানের টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরকে পেছনে ফেলে।
তালিকায় চার ও পাঁচে আছে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ফ্রান্সের প্যারিসের শার্ল দ্যু গল বিমানবন্দর। ছয় ও সাতে তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর ও জার্মানির মিউনিখ বিমানবন্দর। সেরা দশের বাকি তিনটি স্থান দখল করেছে যথাক্রমে সুইজাল্যান্ডের জুরিখ বিমানবন্দর, জাপানের নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও স্পেনের মাদ্রিদ-বারাজাস বিমানবন্দর।
করোনা মহামারির ঠিক আগে ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৮২ হাজার ফ্লাইট চাঙ্গিতে অবতরণ করে কিংবা এখান থেকে উড়াল দেয়। এ সময় ৬ কোটি ৮০ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে ফ্লাইটগুলো। যদিও করোনা পরবর্তীতে সেই ফ্লাইট ও যাত্রী ফিরিয়ে আনতে লড়াই করতে হচ্ছে বিমানবন্দরটিকে। এটি কেবল পর্যটন হাব নয়, এটি সিঙ্গাপুরীদের ভালোবাসার ও সময় কাটানোর এক অসাধারণ জায়গা।
টুকিটাকি কেনাকাটা করতে ১৫ মিনিট গাড়ি চালিয়ে জুয়েল আসেন র্যাচেল ট্যান। ৩৪ বছর বয়স্ক এই আইনজীবী কেনাকাটার পাশাপাশি জায়গাটির আলাদা আকর্ষণ ক্ষমতার কথা ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘ঝরনার পাশে বসতে পারেন আপনি, উপভোগ করতে পারেন সময়টি।’
পাতাল রেল কিংবা বাসে সহজেই পৌঁছানো সম্ভব চাঙ্গিতে, এমন মানুষ কিংবা পরিবারও পাবেন যারা গোটা দিনটিই চাঙ্গিতে কাটিয়ে দিয়েছেন। ছবি দেখতে পাবেন, খেতে পারেন, কেনাকাটা করতে পারেন এমনকি শান্ত একটি জায়গায় বসে পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিতে পারেন। এটি এখন ওয়েডিং ফটোগ্রাফি এবং রাতের খাবারে বন্ধু–বান্ধব বা পরিচিতদের সাক্ষাতের এক জায়গাও পরিণত হয়েছে।
এখানকার অন্যান্য দ্রষ্টব্যের মধ্যে আছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি রেইনফরেস্ট, গুল্মের গোলকধাঁধা আর ১২ মিটার উচ্চতার একটি স্লাইড। ধরুন আপনাকে উড়োজাহাজ ধরতে হবে, আর একটু তাড়াতাড়িই হাজির হয়ে গেছেন, বিশ্রাম নেওয়ার জায়গায় পাবেন স্পা, বিনে পয়সায় ছবি দেখানো হয় এমন এক থিয়েটার আর সুইমিং পুল। মেসেজ চেয়ার আর প্রজাপতি বাগানের কথাটাও ভুললে চলবে না।
বিমানবন্দরটির নিজস্ব একটি সুগন্ধিও আছে। গোটা চাঙ্গিতে এটি ছড়িয়ে দিচ্ছে তাঁর সুগন্ধ। টার্মিনাল ৪–এর ঠিক বাইরে যা দেখবেন তাও চোখ কপালে তুলবে, প্রমাণ আকারের সব ডাইনোসর দখল করে আছে এক মাইল এলাকা।
চাঙ্গি সিঙ্গাপুরের জনগণের কাছেও এক গর্বের জায়গা। সরকারের কাছেও আছে এর আলাদা গুরুত্ব। এমনকি করোনার সময় যখন বিমানবন্দরের চেক–ইন–কাউন্টার এবং ডিউটি ফ্রি দোকানগুলোও খাঁ খাঁ করছিল সিঙ্গাপুর সরকার প্রচণ্ডরকম আত্মবিশ্বাসী ছিল চাঙ্গি আবার পর্যটকদের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে সে বিষয়ে, প্রমাণ তখন অ্যাভিয়েশন খাতে তাঁদের এক শ কোটির বেশি সিঙ্গাপুরী ডলার ব্যায় শুরু করা।
‘চাঙ্গি ট্রানজিটের জায়গা হিসেবে সেরা বিমানবন্দরগুলোর একটি,’ বলেন জুরিখে বসবাস করা অ্যালেক্স চেন, কাজের খাতিরে বছরে বার চারেক সিঙ্গাপুরে ট্রানজিট নিয়ে যাতায়াত করতে হয় তাঁকে।
চাঙ্গিকে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট কিংবা আমস্টারডামের শিফল বিমানবন্দরের চেয়ে অনেক বেশি সুপরিকল্পিত ও কার্যকর মনে করেন তিনি। ‘আমি সাধারণত ৬০ জনের মতো বড় দল নিয়ে যাতায়াত করি। কিন্তু কখনো মনে পড়ে না আমাদের একটি লাগেজ হারানো গেছে। পৃথিবীর অন্য বড় বিমানবন্দরগুলোতে কানেকটিং ফ্লাইট মিস করাটা খুব সাধারণ ব্যাপার, তবে এখানে তেমনটি ঘটে না।’ বলেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে কারিগরি কিছু সাধারণ জটিলতায় সড়ক কিংবা আকাশ পথে যাতায়াতের চেক পয়েন্টগুলোতে ইমিগ্রেশন পেরোতে বাড়তি সময় লেগে যায়। সে ক্ষেত্রে অনেক ভ্রমণকারী ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে চাঙ্গিকে বেছে নেন, এই বিশ্বাসে যে এখানে ভ্রমণপথে জটিলতায় পড়তে হবে কম। এ মতামত, অ্যাভিয়েশন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এনডাও এনালিটিকসের শোকর ইউসুফ।
১৯৯০–র দশকে ফিরে যাওয়া যাক, সিঙ্গাপুরের টিভিতে দেখার মতো একমাত্র বিষয় ছিল ড্রামা সিরিয়াল, তখন নতুন কোনো সিরিয়ালের শুরুটা প্রায়ই হতো চাঙ্গির কন্ট্রোল টাওয়ারের দৃশ্যায়নের মাধ্যমে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যেত অনেক দিন পর বিদেশ ফেরত একজন মানুষ চাঙ্গিতে নেমে একটি ট্যাক্সি নিয়ে চারপাশের দৃশ্য দেখতে দেখতে বাড়ি ফিরছে। তারপর স্বজনদের কাছে বিস্ময় প্রকাশ করে বলছে, দেশ কত বদলে গেছে। ১৯৮১ সালে একটি টার্মিনাল ও রানওয়ে নিয়ে চালু হয় বিমানবন্দরটি।
বিমানবন্দরটির এই আবেদন অটুট আছে পুরোপুরি। ২০১৯ সালে ফিরে যাই, উদ্বোধনের প্রথম ছয় মাসে ৫ কোটি মানুষের আগমন ঘটে জুয়েলে। পঞ্চম একটি টার্মিনালের কাজ শুরু হয়েছে, ২০৩০–এর দশকের মাঝামাঝিতে এটি উন্মুক্ত করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘আমার মনে হয় না পৃথিবীর আর কোনো বিমানবন্দরের বেলায় এমনটা ঘটে, যেখানে স্থানীয়রা শুধু সময় কাটাতে আসেন,’ বলেন আইনজীবী আদ্রিয়ান ট্যান। তাঁর ধারণা সিঙ্গাপুরবাসীর কাছে এটি পাড়ার একটি কফি শপের মতোই পরিচিত। শুধু তাই নয়, আদ্রিয়ানের মতে সিঙ্গাপুরের ভালো যা কিছু সবকিছুই তুলে ধরে বিমানবন্দরটি। যেমন সিঙ্গাপুরীদের দক্ষতা, সৌজন্যের প্রকাশ ঘটে চাঙ্গিতেও।
আরও খবর পড়ুন:
দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সিলেট যেন এক মহারানি। চা-বাগান, পাহাড়, নদী, ঝরনা, বিল কী নেই এ জেলায়। এ জেলারই এক উপজেলা জৈন্তাপুর। এখানে দেখা যাবে নীল পানির সারি নদী, চা-বাগান আর লাল শাপলার বিল। শীতে বেরিয়ে পড়বেন না কি?...
১০ ঘণ্টা আগেদিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
৪ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
৪ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
৪ দিন আগে