‘আদর্শ শিক্ষক’ সম্মাননা পেলেন দেশের ১১ শিক্ষক 

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯: ২১

শিক্ষা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় ‘আদর্শ শিক্ষক’ সম্মাননা পেলেন দেশের ১১ জন শিক্ষক। গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে নৈতিকতা দিবস উপলক্ষে ‘এথিকস ক্লাব বাংলাদেশ’ এ সম্মাননা দেয়।

সম্মাননা পাওয়া শিক্ষকরা হলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার বসাক, ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ, ভারতেশ্বরী হোমসের সাবেক অধ্যক্ষ প্রতিভা মুৎসুদ্দি, খুলনা জিলা স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল আলম, ৫৫ নং সোনাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবেরা খানম, ময়মনসিংহের ধলুয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিল্টন মানখিন, নারায়ণগঞ্জের কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনতি রানী এবং বান্দরবান বৌদ্ধ অনাথালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পাই নু মারমা।

এথিকস ক্লাব বাংলাদেশের সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন। শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম শিক্ষকদের হাতে ‘আদর্শ শিক্ষক’ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

দীপু মনি বলেন, ‘জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার পাশাপাশি দক্ষতা, সৃজনশীল গড়ে তুলতে আমরা প্রাণান্তকর চেষ্টা করছি। এ প্রজন্ম যেন দক্ষ ও সৃজনশীলতায় প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারে তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে; জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারব। আমার বাবাও একজন শিক্ষক, শিক্ষকদের সম্মাননা একজন শিক্ষকের সন্তান হিসেবে গর্ববোধ করি।’

অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্ত শিক্ষক অরুণ কুমার বসাক বলেন, ‘প্রযুক্তি সামনে যাচ্ছে, আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার মান ভালো থাকলে দেশ এগিয়ে যায়।’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে এই প্রবীণ অধ্যাপক বলেন, ‘দিনে যা শিখবে, দিন শেষে নিভৃতে তা চর্চা করবে। পড়তে হবে, পড়ার কোন বিকল্প নেই।’

অধ্যাপক আবু সায়ীদ বলেন, ‘নৈতিকতার জন্য যু্দ্ধ করতে হয়। আলো যেমন ভয়ংকর আগুন থেকে এসে সবকিছুকে ভস্ম করে দেয় তেমনি নৈতিকতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে হয়। নৈতিকতার গুরুত্ব অনুধাবন ও বাস্তব জীবনে চর্চা করার আহ্বান জানান প্রবীণ এই শিক্ষক।’

অধ্যাপক ফখরুল আলম বলেন, ‘শিক্ষকতা করেছি ভালো লাগা থেকে, কেমন পড়িয়েছি জানি না তবে প্রচুর ভালোবাসা পেয়ছি। শিক্ষার্থীদের মন উজাড় করে ভালোবেসেছি, ভালোবাসা নিয়ে বাকি দিনগুলো কাটাতে চাই।’

অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের গল্প করে পড়াতাম, তারা মনযোগ দিয়ে ক্লাস করত। তারা যখন মনযোগ দিয়ে ক্লাস করত তখন আমার খুব ভালো লাগত, যা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। আমি আদর্শ শিক্ষক কিনা জানি না তবে শিক্ষার্থীদের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিতাম।’

উদ্বোধনী সংগীত ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ক্লাবের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ক্লাবের প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা। বক্তব্য রাখেন এথিকস ক্লাবের উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

অনুষ্ঠানে ক্লাবের প্রয়াত উপদেষ্টা জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান,জামিলুর রেজা চৌধুরী, বিচারপতি হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, হাফিজ জিএ সিদ্দিকী, অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এম আর খান, মকবুল আহমেদ, ডা. এ বি এম ফজলুল করিম, বজলুল মবিন চৌধুরী, কবি রবিউল হুসাইন, আবুল হাসনাত, ড. আকবর আলি খান, অধ্যাপক সমরজিৎ রায় ও অধ্যাপক ডা. মো. আহসানুল হাবিবের স্মরণ করা হয়।

আলোচনা ও প্রয়াত উপদেষ্টদের স্মরণ শেষে ক্লাব আয়োজিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ এবং সংগীতানুষ্ঠান করা হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত