ইজাজুল হক, ঢাকা
ফিলিস্তিনের দক্ষিণে লোহিত সাগর ও আকাবা উপসাগর উপকূলের এক প্রাচীন জনপদ—মাদইয়ান। এখানে নবী হিসেবে এসেছিলেন হজরত শুআইব (আ.)। পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে এই জনপদের বাসিন্দাদের অবাধ্যতা ও শাস্তির কথা আলোচিত হয়েছে। কোথাও আবার তাদের ‘আসহাবুল আইকা’ তথা ‘গাছের অধিবাসী’ও বলা হয়েছে। কারণ তারা গাছের পূজা করত। মাদইয়ান অঞ্চলটি প্রাচীন আরবের ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল। ফলে ব্যবসাকেন্দ্রিক অবাধ্যতা ও লুটপাটে তারা জড়িত ছিল। আল্লাহর নবী শুআইব (আ.)-কেও তারা অগ্রাহ্য করেছিল, ফলে আসমানি আজাবে তারা ধ্বংস হয়ে যায়।
শুআইব (আ.) প্রথমেই তাদের আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দিলেন। এরপর অনাচার, লুটপাট ও ওজনে কম দেওয়ার যে নৈরাজ্য তাদের মধ্যে চালু ছিল, তা বন্ধের আহ্বান জানান। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি মাদইয়ানে তাদের ভাই শুআইবকে পাঠিয়েছি। সে বলল, হে আমার জাতি, আল্লাহর ইবাদত করো। তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো উপাস্য নেই। তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে প্রমাণ এসে গেছে। অতএব তোমরা মাপ ও ওজন পূর্ণ করো এবং মানুষকে তাদের পণ্য কম দিয়ো না এবং পৃথিবী সংস্কারের পর তাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কোরো না। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।’ (সুরা আরাফ: ৮৫)
কিন্তু মাদইয়ানবাসী শুআইব (আ.)-এর উপদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা শুআইব (আ.) ও তাদের কথোপকথন তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘গাছের অধিবাসীরা নবীদের মিথ্যাবাদী বলেছে। যখন শুআইব তাদের বলল, তোমরা কি ভয় করো না? আমি তোমাদের বিশ্বস্ত রাসুল। অতএব, আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো। আমি তোমাদের কাছে এর বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব পালনকর্তাই দেবেন। মাপ পূর্ণ করো এবং যারা পরিমাপে কম দেয়, তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে না। … তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্তদের অন্যতম। তুমি তো আমাদের মতোই মানুষ। আমাদের ধারণা, তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা শুআরা: ১৭৬-১৮৬)
তারা শুআইব (আ.)-কে অস্বীকৃতি জানিয়েই ক্ষান্ত হলো না। বরং তাঁর ইবাদত-বন্দেগি নিয়েও ব্যঙ্গ করল। তাঁকে ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি জাগতিক বিষয়ে নাক না গলানোর জন্য সাফ জানিয়ে দিল। অন্যথায় দেশান্তর করার হুমকিও দিল। তারা বলল, ‘হে শুআইব, তোমার নামাজ কি তোমাকে নির্দেশ দেয় যে আমাদের পূর্বপুরুষেরা যার ইবাদত করত, আমাদের তা বর্জন করতে হবে বা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যা করি তাও?...’ (সুরা হুদ: ৮৭)
এরপর শুআইব (আ.) তাদের আসমানি আজাবের ভয় দেখান। আগের যুগের অবাধ্য জাতিদের পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘হে আমার জাতি, আমার সঙ্গে বিরোধ যেন কিছুতেই তোমাদের এমন অপরাধ না করায়, যার ফলে তোমাদের ওপর তেমন বিপদ আসবে, যেমন এসেছিল নুহ বা হুদ বা সালেহের জাতির ওপর; আর লুতের জাতি তো তোমাদের থেকে দূরে নয়।’ (সুরা হুদ: ৮৯)
মাদইয়ানবাসী শুআইব (আ.)-এর দাওয়াতে বিরক্ত হয়ে তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। অবিশ্বাস ও অবাধ্যতা এতই গেড়ে বসেছিল তাদের অন্তরে, শেষ পর্যন্ত তারা শুআইবের কাছে আল্লাহর আজাবই চেয়ে বসল। তারা বলল, ‘অতএব যদি সত্যবাদী হও, তবে আকাশের কোনো টুকরো আমাদের ওপর ফেলে দাও। এরপর তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলে দিল।’ (সুরা শুআরা: ১৮৭-১৮৮)
শুআইব (আ.) শেষ মুহূর্তেও তাদের সতর্ক করে গেলেন। আজাবের ব্যাপারে শেষ কথা জানিয়ে বললেন, ‘হে আমার জাতি, তোমরা আপন কাজ করে যাও, আমিও কাজ করছি। অচিরেই জানতে পারবে কার ওপর অপমানকর আজাব আসে আর কে মিথ্যাবাদী? তোমরাও অপেক্ষায় থেকো, আমিও তোমাদের সঙ্গে অপেক্ষায় রইলাম।’ (সুরা হুদ: ৯৩)
এরপর আজাব এল। শুআইব (আ.) ও তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারীদের আল্লাহ রক্ষা করলেন। বাকিদের ধ্বংস করে দিলেন। পবিত্র কোরআনে তিন ধরনের আজাবে তাদের ধ্বংস করার কথা এসেছে। এরশাদ হয়েছে, ‘ফলে তাদের মেঘাচ্ছন্ন দিনের আজাব পাকড়াও করল। নিশ্চয়ই সেটা ছিল এক মহাদিবসের আজাব। (সুরা শুআরা: ১৮৯)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘এরপর ভূমিকম্প তাদের হঠাৎ আঘাত হানল। ফলে তারা সকালে ঘরের ভেতরে উপুড় হয়ে পড়ে রইল।’ (সুরা আরাফ: ৯১) অন্য আয়াতে তাদের আজাব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘আর যারা জুলুম করেছিল, বিকট চিৎকার তাদের আঘাত করল, ফলে তারা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় পড়ে রইল। যেন তারা সেখানে কখনো বসবাসই করেনি।’ (সুরা হুদ: ৯৪-৯৫)
ফিলিস্তিনের দক্ষিণে লোহিত সাগর ও আকাবা উপসাগর উপকূলের এক প্রাচীন জনপদ—মাদইয়ান। এখানে নবী হিসেবে এসেছিলেন হজরত শুআইব (আ.)। পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে এই জনপদের বাসিন্দাদের অবাধ্যতা ও শাস্তির কথা আলোচিত হয়েছে। কোথাও আবার তাদের ‘আসহাবুল আইকা’ তথা ‘গাছের অধিবাসী’ও বলা হয়েছে। কারণ তারা গাছের পূজা করত। মাদইয়ান অঞ্চলটি প্রাচীন আরবের ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল। ফলে ব্যবসাকেন্দ্রিক অবাধ্যতা ও লুটপাটে তারা জড়িত ছিল। আল্লাহর নবী শুআইব (আ.)-কেও তারা অগ্রাহ্য করেছিল, ফলে আসমানি আজাবে তারা ধ্বংস হয়ে যায়।
শুআইব (আ.) প্রথমেই তাদের আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দিলেন। এরপর অনাচার, লুটপাট ও ওজনে কম দেওয়ার যে নৈরাজ্য তাদের মধ্যে চালু ছিল, তা বন্ধের আহ্বান জানান। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি মাদইয়ানে তাদের ভাই শুআইবকে পাঠিয়েছি। সে বলল, হে আমার জাতি, আল্লাহর ইবাদত করো। তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো উপাস্য নেই। তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে প্রমাণ এসে গেছে। অতএব তোমরা মাপ ও ওজন পূর্ণ করো এবং মানুষকে তাদের পণ্য কম দিয়ো না এবং পৃথিবী সংস্কারের পর তাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কোরো না। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।’ (সুরা আরাফ: ৮৫)
কিন্তু মাদইয়ানবাসী শুআইব (আ.)-এর উপদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা শুআইব (আ.) ও তাদের কথোপকথন তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘গাছের অধিবাসীরা নবীদের মিথ্যাবাদী বলেছে। যখন শুআইব তাদের বলল, তোমরা কি ভয় করো না? আমি তোমাদের বিশ্বস্ত রাসুল। অতএব, আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো। আমি তোমাদের কাছে এর বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব পালনকর্তাই দেবেন। মাপ পূর্ণ করো এবং যারা পরিমাপে কম দেয়, তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে না। … তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্তদের অন্যতম। তুমি তো আমাদের মতোই মানুষ। আমাদের ধারণা, তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা শুআরা: ১৭৬-১৮৬)
তারা শুআইব (আ.)-কে অস্বীকৃতি জানিয়েই ক্ষান্ত হলো না। বরং তাঁর ইবাদত-বন্দেগি নিয়েও ব্যঙ্গ করল। তাঁকে ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি জাগতিক বিষয়ে নাক না গলানোর জন্য সাফ জানিয়ে দিল। অন্যথায় দেশান্তর করার হুমকিও দিল। তারা বলল, ‘হে শুআইব, তোমার নামাজ কি তোমাকে নির্দেশ দেয় যে আমাদের পূর্বপুরুষেরা যার ইবাদত করত, আমাদের তা বর্জন করতে হবে বা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যা করি তাও?...’ (সুরা হুদ: ৮৭)
এরপর শুআইব (আ.) তাদের আসমানি আজাবের ভয় দেখান। আগের যুগের অবাধ্য জাতিদের পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘হে আমার জাতি, আমার সঙ্গে বিরোধ যেন কিছুতেই তোমাদের এমন অপরাধ না করায়, যার ফলে তোমাদের ওপর তেমন বিপদ আসবে, যেমন এসেছিল নুহ বা হুদ বা সালেহের জাতির ওপর; আর লুতের জাতি তো তোমাদের থেকে দূরে নয়।’ (সুরা হুদ: ৮৯)
মাদইয়ানবাসী শুআইব (আ.)-এর দাওয়াতে বিরক্ত হয়ে তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। অবিশ্বাস ও অবাধ্যতা এতই গেড়ে বসেছিল তাদের অন্তরে, শেষ পর্যন্ত তারা শুআইবের কাছে আল্লাহর আজাবই চেয়ে বসল। তারা বলল, ‘অতএব যদি সত্যবাদী হও, তবে আকাশের কোনো টুকরো আমাদের ওপর ফেলে দাও। এরপর তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলে দিল।’ (সুরা শুআরা: ১৮৭-১৮৮)
শুআইব (আ.) শেষ মুহূর্তেও তাদের সতর্ক করে গেলেন। আজাবের ব্যাপারে শেষ কথা জানিয়ে বললেন, ‘হে আমার জাতি, তোমরা আপন কাজ করে যাও, আমিও কাজ করছি। অচিরেই জানতে পারবে কার ওপর অপমানকর আজাব আসে আর কে মিথ্যাবাদী? তোমরাও অপেক্ষায় থেকো, আমিও তোমাদের সঙ্গে অপেক্ষায় রইলাম।’ (সুরা হুদ: ৯৩)
এরপর আজাব এল। শুআইব (আ.) ও তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারীদের আল্লাহ রক্ষা করলেন। বাকিদের ধ্বংস করে দিলেন। পবিত্র কোরআনে তিন ধরনের আজাবে তাদের ধ্বংস করার কথা এসেছে। এরশাদ হয়েছে, ‘ফলে তাদের মেঘাচ্ছন্ন দিনের আজাব পাকড়াও করল। নিশ্চয়ই সেটা ছিল এক মহাদিবসের আজাব। (সুরা শুআরা: ১৮৯)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘এরপর ভূমিকম্প তাদের হঠাৎ আঘাত হানল। ফলে তারা সকালে ঘরের ভেতরে উপুড় হয়ে পড়ে রইল।’ (সুরা আরাফ: ৯১) অন্য আয়াতে তাদের আজাব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘আর যারা জুলুম করেছিল, বিকট চিৎকার তাদের আঘাত করল, ফলে তারা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় পড়ে রইল। যেন তারা সেখানে কখনো বসবাসই করেনি।’ (সুরা হুদ: ৯৪-৯৫)
শীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম হয় এবং আবহাওয়া থাকে শীতল, যা রোজা রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী সময়। অপর দিকে শীতের রাত অনেক দীর্ঘ হয়, ফলে রাতের প্রথম প্রহরে ঘুমিয়ে নিয়ে শেষ প্রহরে আল্লাহর ইবাদত ও তাহাজ্জুদে মগ্ন হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে হাদিসে শীতকালকে ইবাদতের বসন্তক
১১ ঘণ্টা আগেআল্লাহ মানুষকে দুভাবে পরীক্ষা করেন। বিপদ দিয়ে এবং নিয়ামত দিয়ে। নিয়ামতের পরীক্ষা বিপদের পরীক্ষার চেয়ে কঠিন। বিপদের সময় মানুষ আল্লাহর স্মরণ করে; তার সাহায্য প্রার্থনা করে।
১ দিন আগেসমাজের প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার সম্পর্ক থাকা চাই। পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা ও মজবুত সম্পর্ক তৈরি করতে মহানবী (সা.) ৬টি কর্তব্যের কথা বলেছেন, যা পালন
২ দিন আগেএখানে কারণগুলো তুলে ধরা হলো—অন্যায় জুলুম থেকে বাঁচার জন্য মজলুম ব্যক্তি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তার যে দোষ রয়েছে, তা সবিস্তারে তুলে ধরার অনুমতি আছে। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, একবার আমরা
৩ দিন আগে