ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
মহান আল্লাহ বিশেষ কৌশল ও অনুগ্রহের মাধ্যমে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। মানুষ সৃষ্টির বিভিন্ন প্রক্রিয়া হতে পারত, তবে মহান আল্লাহ একটি বিশেষ প্রক্রিয়াই অবলম্বন করেছেন। তা হলো—পৃথিবীর সব মানুষকে আদম (আ.) থেকে সৃষ্টি করে পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও আত্মীয়তার সুদৃঢ় বন্ধন তৈরি করে দিয়েছেন।
প্রথম মানব-মানবীর সৃষ্টি: মহান আল্লাহ এই সুন্দর পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। আকাশ, বাতাস, ভূমি, সাগর-মহাসাগর, পাহাড়-পর্বত, বৃক্ষলতা, পশুপাখিসহ অনেক অপূর্ব সৃষ্টিতে সমৃদ্ধ পৃথিবীতে এরপর মানুষ পাঠিয়েছেন। প্রথমে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন, এরপর হাওয়া (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁদের মাধ্যমেই মানবজাতির বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন। আদম (আ.)-কে মাটি দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কাদামাটি থেকে মানুষ সৃষ্টির সূচনা।’ (সুরা সাজদাহ: ৭) এ বিষয়ে একাধিক আয়াত রয়েছে। এরপর তাঁর পাঁজর থেকে হাওয়া (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন। এরপর তাঁদের থেকেই পুরো মানবজাতি সৃষ্টি করেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি (আদম) থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গিনী (হাওয়া)-কে সৃষ্টি করেছেন আর বিস্তার করেছেন তাদের দুজন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। …’ (সুরা নিসা: ১)
আদম (আ.) থেকেই সভ্যতার বিকাশ: আসমান-জমিন, সৃষ্টি জগৎ এবং মানুষ সৃষ্টির বিষয়ে পবিত্র কোরআনে অসংখ্য আয়াত রয়েছে। আল্লাহ তাআলা শুধু মানুষ সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হননি; বরং তাদের সঠিক পথের সন্ধান এবং সভ্য ও সুনাগরিক হিসেবে বসবাসের দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য নির্বাচিত মানুষদের নবী ও রাসুল বানিয়েছেন; যাঁরা অহির মাধ্যমে মানবজাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন। প্রথম মানুষ থেকেই যেন সভ্য মানুষের আবির্ভাব হয়, সে জন্যই প্রথম মানুষ আদম (আ.)-কেই আল্লাহ তাআলা নবুওয়ত দিয়েছেন। কাজেই প্রথম থেকেই মানুষ সভ্যতার সন্ধান পেয়েছে। সন্ধান পেয়েছে আল্লাহর পরিচয় লাভ করে তাঁর নির্দেশিত পথে পরিচালিত হওয়ার। তবে যখন মানুষ নবুওয়তের শিক্ষা পরিহার করে প্রবৃত্তির পথ অনুসরণ করেছে, তখনই অসভ্য ও বর্বরতার কালো থাবা তাদের গ্রাস করেছে।
অবাধ্যতার কারণে মানুষ বানর হয়েছে: বনি ইসরাইলের জন্য শনিবার ছিল ইবাদতের নির্দিষ্ট ও পবিত্র দিন। এ দিন তাদের জন্য মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। তারা সমুদ্র-উপকূলের অধিবাসী হওয়ায় মাছ ধরা ছিল তাদের প্রিয় কাজ। এদিকে অন্যান্য দিনের তুলনায় শনিবারে সমুদ্রকূলে মাছ আসত বেশি। আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই তারা মাছ ধরতে থাকে। এতে আল্লাহ তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হন এবং তাদের ওপর বানর ও শূকরে রূপান্তরিত হওয়ার আজাব নেমে আসে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাদের অবশ্যই তোমরা চেনো। এরপর আমি তাদের বললাম, তোমরা নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও। এরপর আমি এ ঘটনাকে তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহভীরুদের জন্য উপদেশ গ্রহণের উপাদান করে দিয়েছি।’
(সুরা বাকারা: ৬৫-৬৬)
বানর থেকে মানুষ আসেনি: মানুষ ও বানর আল্লাহ তাআলার ভিন্ন দুটি সৃষ্টি। বানর মানুষ ছিল না এবং মানুষও বানর ছিল না। এরা সম্পূর্ণ পৃথক দুটি প্রজাতি। আল্লাহ তাআলা আজাবস্বরূপ কিছু মানুষকে বানর-শূকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছিলেন। রূপান্তরিত বানর পৃথিবীতে বংশবিস্তার করেনি। সে অবস্থাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের যুগের বানর ও শূকরগুলো কি সেই রূপান্তরিত সম্প্রদায়?’ নবী (সা.) উত্তরে বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন কোনো সম্প্রদায়ের আকৃতি রূপান্তরিত করেন, তখন তাদের বংশ বিস্তার হয় না; অর্থাৎ তারা রূপান্তরিত অবস্থায়ই ধ্বংস হয়ে যায়।’ তিনি আরও বললেন, ‘বানর ও শূকর তো পৃথিবীতে আগেও ছিল।’ (মুসলিম: ২৬৬৩)
সব সৃষ্টির মধ্যে মানুষকে আল্লাহ তাআলা উত্তম অবয়বে ও উৎকৃষ্টভাবে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।’
(সুরা ত্বিন: ৪)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
মহান আল্লাহ বিশেষ কৌশল ও অনুগ্রহের মাধ্যমে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। মানুষ সৃষ্টির বিভিন্ন প্রক্রিয়া হতে পারত, তবে মহান আল্লাহ একটি বিশেষ প্রক্রিয়াই অবলম্বন করেছেন। তা হলো—পৃথিবীর সব মানুষকে আদম (আ.) থেকে সৃষ্টি করে পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও আত্মীয়তার সুদৃঢ় বন্ধন তৈরি করে দিয়েছেন।
প্রথম মানব-মানবীর সৃষ্টি: মহান আল্লাহ এই সুন্দর পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। আকাশ, বাতাস, ভূমি, সাগর-মহাসাগর, পাহাড়-পর্বত, বৃক্ষলতা, পশুপাখিসহ অনেক অপূর্ব সৃষ্টিতে সমৃদ্ধ পৃথিবীতে এরপর মানুষ পাঠিয়েছেন। প্রথমে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন, এরপর হাওয়া (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁদের মাধ্যমেই মানবজাতির বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন। আদম (আ.)-কে মাটি দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কাদামাটি থেকে মানুষ সৃষ্টির সূচনা।’ (সুরা সাজদাহ: ৭) এ বিষয়ে একাধিক আয়াত রয়েছে। এরপর তাঁর পাঁজর থেকে হাওয়া (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন। এরপর তাঁদের থেকেই পুরো মানবজাতি সৃষ্টি করেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি (আদম) থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গিনী (হাওয়া)-কে সৃষ্টি করেছেন আর বিস্তার করেছেন তাদের দুজন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। …’ (সুরা নিসা: ১)
আদম (আ.) থেকেই সভ্যতার বিকাশ: আসমান-জমিন, সৃষ্টি জগৎ এবং মানুষ সৃষ্টির বিষয়ে পবিত্র কোরআনে অসংখ্য আয়াত রয়েছে। আল্লাহ তাআলা শুধু মানুষ সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হননি; বরং তাদের সঠিক পথের সন্ধান এবং সভ্য ও সুনাগরিক হিসেবে বসবাসের দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য নির্বাচিত মানুষদের নবী ও রাসুল বানিয়েছেন; যাঁরা অহির মাধ্যমে মানবজাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন। প্রথম মানুষ থেকেই যেন সভ্য মানুষের আবির্ভাব হয়, সে জন্যই প্রথম মানুষ আদম (আ.)-কেই আল্লাহ তাআলা নবুওয়ত দিয়েছেন। কাজেই প্রথম থেকেই মানুষ সভ্যতার সন্ধান পেয়েছে। সন্ধান পেয়েছে আল্লাহর পরিচয় লাভ করে তাঁর নির্দেশিত পথে পরিচালিত হওয়ার। তবে যখন মানুষ নবুওয়তের শিক্ষা পরিহার করে প্রবৃত্তির পথ অনুসরণ করেছে, তখনই অসভ্য ও বর্বরতার কালো থাবা তাদের গ্রাস করেছে।
অবাধ্যতার কারণে মানুষ বানর হয়েছে: বনি ইসরাইলের জন্য শনিবার ছিল ইবাদতের নির্দিষ্ট ও পবিত্র দিন। এ দিন তাদের জন্য মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। তারা সমুদ্র-উপকূলের অধিবাসী হওয়ায় মাছ ধরা ছিল তাদের প্রিয় কাজ। এদিকে অন্যান্য দিনের তুলনায় শনিবারে সমুদ্রকূলে মাছ আসত বেশি। আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই তারা মাছ ধরতে থাকে। এতে আল্লাহ তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হন এবং তাদের ওপর বানর ও শূকরে রূপান্তরিত হওয়ার আজাব নেমে আসে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাদের অবশ্যই তোমরা চেনো। এরপর আমি তাদের বললাম, তোমরা নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও। এরপর আমি এ ঘটনাকে তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহভীরুদের জন্য উপদেশ গ্রহণের উপাদান করে দিয়েছি।’
(সুরা বাকারা: ৬৫-৬৬)
বানর থেকে মানুষ আসেনি: মানুষ ও বানর আল্লাহ তাআলার ভিন্ন দুটি সৃষ্টি। বানর মানুষ ছিল না এবং মানুষও বানর ছিল না। এরা সম্পূর্ণ পৃথক দুটি প্রজাতি। আল্লাহ তাআলা আজাবস্বরূপ কিছু মানুষকে বানর-শূকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছিলেন। রূপান্তরিত বানর পৃথিবীতে বংশবিস্তার করেনি। সে অবস্থাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের যুগের বানর ও শূকরগুলো কি সেই রূপান্তরিত সম্প্রদায়?’ নবী (সা.) উত্তরে বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন কোনো সম্প্রদায়ের আকৃতি রূপান্তরিত করেন, তখন তাদের বংশ বিস্তার হয় না; অর্থাৎ তারা রূপান্তরিত অবস্থায়ই ধ্বংস হয়ে যায়।’ তিনি আরও বললেন, ‘বানর ও শূকর তো পৃথিবীতে আগেও ছিল।’ (মুসলিম: ২৬৬৩)
সব সৃষ্টির মধ্যে মানুষকে আল্লাহ তাআলা উত্তম অবয়বে ও উৎকৃষ্টভাবে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।’
(সুরা ত্বিন: ৪)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
সড়ককে মানুষের চলাচলের উপযোগী করা ইমানের পরিচায়ক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান শাখা হলো, এ কথার স্বীকৃতি দেওয়া যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো, সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (
১৫ ঘণ্টা আগেশীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম হয় এবং আবহাওয়া থাকে শীতল, যা রোজা রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী সময়। অপর দিকে শীতের রাত অনেক দীর্ঘ হয়, ফলে রাতের প্রথম প্রহরে ঘুমিয়ে নিয়ে শেষ প্রহরে আল্লাহর ইবাদত ও তাহাজ্জুদে মগ্ন হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে হাদিসে শীতকালকে ইবাদতের বসন্তক
২ দিন আগেআল্লাহ মানুষকে দুভাবে পরীক্ষা করেন। বিপদ দিয়ে এবং নিয়ামত দিয়ে। নিয়ামতের পরীক্ষা বিপদের পরীক্ষার চেয়ে কঠিন। বিপদের সময় মানুষ আল্লাহর স্মরণ করে; তার সাহায্য প্রার্থনা করে।
৩ দিন আগেসমাজের প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার সম্পর্ক থাকা চাই। পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা ও মজবুত সম্পর্ক তৈরি করতে মহানবী (সা.) ৬টি কর্তব্যের কথা বলেছেন, যা পালন
৪ দিন আগে