মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
প্রশ্ন: আমাদের সমাজে বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে বাবা-মা, ভাইবোনসহ পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে যৌথভাবে থাকাকে উত্তম বিবেচনা করা হয়। পৃথক হয়ে আলাদা ঘরে বসবাস করাকে নিন্দাযোগ্য মনে করা হয়। এ বিষয়ে ইসলামে কোনো বিধিনিষেধ আছে? স্ত্রীকে কেমন ঘরে রাখার কথা বলে ইসলাম? বিস্তারিত জানতে চাই। আবদুল্লাহ কামিল, ঢাকা
উত্তর: বাবা-মায়ের সেবা করা, ভাইবোনের দেখাশোনা করা এবং আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যক্তির অন্যতম দায়িত্ব। তবে স্ত্রীর থাকার ঘর ও পারিবারিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও একজন স্বামীর অন্যতম দায়িত্ব। তাই বিয়ের আগেই তার জন্য আলাদা ঘর বা কক্ষ তৈরি করতে হবে অথবা বাসা ভাড়া নিতে হবে। বিয়ের পর স্বাভাবিক অবস্থায় স্ত্রী স্বামীর ঘরেই থাকবে, স্ত্রীর বাবার বাড়িতে নয়। এটাই ইসলামের নির্দেশ। ওমর (রা.)-এর শাসনামলে এক ব্যক্তি বিয়ে করার সময় স্ত্রীকে তার বাবার বাড়িতে রেখে দেওয়ার শর্তারোপ করে। তখন ওমর (রা.) সেই শর্ত নাকচ করে বললেন, ‘স্ত্রী স্বামীর ঘরেই থাকবে।’ (কানজুল উম্মাল)
স্বামীর দায়িত্ব হচ্ছে, স্ত্রীর জন্য উপযুক্ত বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, যেখানে সে স্বাধীনভাবে ও নিরাপদে বসবাস করতে পারবে এবং স্বাভাবিক চলাফেরার সময় গাইরে মাহরাম পুরুষের চোখের সামনে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। (আল মুগনি)
যৌথ পরিবারে থাকতে যদি স্ত্রীর কষ্ট হয়, তার স্বাধীনতা বিঘ্নিত হয় বা পর্দার বিধান লঙ্ঘিত হয়, তাহলে স্ত্রীকে যৌথ পরিবারে রাখা যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবারে থাকতে বাধ্য করা জুলুম। যৌথ পরিবারে স্ত্রীর কষ্ট হচ্ছে কি হচ্ছে না, তা যাচাই করার জন্য স্ত্রীর মতামতই যথেষ্ট। অন্য কোনো প্রমাণের প্রয়োজন নেই। (বাদায়ে আস-সানায়ে)
সুতরাং স্ত্রী যদি যৌথ পরিবারে থাকতে না চায়, তাহলে অবশ্যই তার জন্য স্বতন্ত্র আবাসস্থলের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশিষ্ট ফকিহ কাসানি (রহ.) বলেন, ‘যদি স্বামী তার স্ত্রীকে সতিন, সতিনের ছেলেমেয়ে, দেবর, শাশুড়ি, ননদ ও অন্যান্য আত্মীয়ের সঙ্গে এক ঘরে রাখতে চায়, আর স্ত্রী তাতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে, তাহলে তার জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থা করা আবশ্যক। (বাদায়ে আস-সানায়ে)
হাসকাফি (রহ.) বলেন, ‘একইভাবে স্ত্রীর জন্য স্বামীর সাধ্য অনুযায়ী স্বতন্ত্র বাসস্থানের ব্যবস্থা করা ওয়াজিব। (দুররুল মুখতার) তবে স্বামী যদি অসচ্ছল হয়, স্বতন্ত্র থাকার ব্যবস্থা করা যদি তার পক্ষে সম্ভব না হয়, তাহলে স্ত্রী স্বামীর কাছে স্বতন্ত্র ঘর দাবি না করে ধৈর্য ধারণ করবে। (মাতালিবু উলিন নুহা)
স্বতন্ত্র আবাসস্থল বলতে স্বামীর পৈতৃক ভিটা থেকে দূরে গিয়ে নতুন ঘর নির্মাণ করতে হবে অথবা ভাড়া বাসায় চলে যেতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। পৈতৃক বাড়িতেই স্ত্রীর জন্য স্বতন্ত্র থাকার ঘর, রান্নাঘর ও বাথরুমের ব্যবস্থা করে দিলেই যথেষ্ট। এটুকু পাওয়ার পর অন্য বাড়ির দাবি করা অথবা পৈতৃক ভিটা ছেড়ে শহরে বা অন্য কোথাও চলে যাওয়ার দাবি করার অধিকার স্ত্রীর নেই। (মাজমাউল আনহুর)
কাসানি (রহ.) বলেন, ‘যদি স্বামী তার স্ত্রীকে নিয়ে বড় ঘরের একটি কক্ষে থাকে এবং স্ত্রীর মৌলিক প্রয়োজন এককভাবে পূরণ করার ব্যবস্থা করে দেয়, তখন স্বামীর কাছে আলাদা ঘর দাবি করার অধিকার স্ত্রীর নেই।’ (বাদায়িয়ুস সানায়ি)
হাসকাফি (রহ.) বলেন, ‘বড় ঘরের একটি অংশে স্ত্রীকে রেখে তার জন্য আলাদা বাথরুম ও রান্নাঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া যথেষ্ট।’ এর টীকায় ইবনে আবেদিন (রহ.) বলেন, ‘রান্নাঘর ও বাথরুম স্ত্রীর জন্য নির্ধারিত ঘরের ভেতরে হতে হবে অথবা বাইরে হলেও তাতে অন্য কারও অংশীদারত্ব থাকা যাবে না।’ (রদ্দুল মুহতার) তবে স্ত্রীকে আলাদা ঘরে রাখলেও পরিবারের অন্য সদস্যের প্রতি কর্তব্য পালন করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অবহেলা করা যাবে না; বিশেষ করে মা-বাবার সেবায় কার্পণ্য করা কোনোভাবেই ইসলাম অনুমোদন করে না।
উত্তর দিয়েছেন
মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
প্রশ্ন: আমাদের সমাজে বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে বাবা-মা, ভাইবোনসহ পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে যৌথভাবে থাকাকে উত্তম বিবেচনা করা হয়। পৃথক হয়ে আলাদা ঘরে বসবাস করাকে নিন্দাযোগ্য মনে করা হয়। এ বিষয়ে ইসলামে কোনো বিধিনিষেধ আছে? স্ত্রীকে কেমন ঘরে রাখার কথা বলে ইসলাম? বিস্তারিত জানতে চাই। আবদুল্লাহ কামিল, ঢাকা
উত্তর: বাবা-মায়ের সেবা করা, ভাইবোনের দেখাশোনা করা এবং আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যক্তির অন্যতম দায়িত্ব। তবে স্ত্রীর থাকার ঘর ও পারিবারিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও একজন স্বামীর অন্যতম দায়িত্ব। তাই বিয়ের আগেই তার জন্য আলাদা ঘর বা কক্ষ তৈরি করতে হবে অথবা বাসা ভাড়া নিতে হবে। বিয়ের পর স্বাভাবিক অবস্থায় স্ত্রী স্বামীর ঘরেই থাকবে, স্ত্রীর বাবার বাড়িতে নয়। এটাই ইসলামের নির্দেশ। ওমর (রা.)-এর শাসনামলে এক ব্যক্তি বিয়ে করার সময় স্ত্রীকে তার বাবার বাড়িতে রেখে দেওয়ার শর্তারোপ করে। তখন ওমর (রা.) সেই শর্ত নাকচ করে বললেন, ‘স্ত্রী স্বামীর ঘরেই থাকবে।’ (কানজুল উম্মাল)
স্বামীর দায়িত্ব হচ্ছে, স্ত্রীর জন্য উপযুক্ত বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, যেখানে সে স্বাধীনভাবে ও নিরাপদে বসবাস করতে পারবে এবং স্বাভাবিক চলাফেরার সময় গাইরে মাহরাম পুরুষের চোখের সামনে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। (আল মুগনি)
যৌথ পরিবারে থাকতে যদি স্ত্রীর কষ্ট হয়, তার স্বাধীনতা বিঘ্নিত হয় বা পর্দার বিধান লঙ্ঘিত হয়, তাহলে স্ত্রীকে যৌথ পরিবারে রাখা যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে যৌথ পরিবারে থাকতে বাধ্য করা জুলুম। যৌথ পরিবারে স্ত্রীর কষ্ট হচ্ছে কি হচ্ছে না, তা যাচাই করার জন্য স্ত্রীর মতামতই যথেষ্ট। অন্য কোনো প্রমাণের প্রয়োজন নেই। (বাদায়ে আস-সানায়ে)
সুতরাং স্ত্রী যদি যৌথ পরিবারে থাকতে না চায়, তাহলে অবশ্যই তার জন্য স্বতন্ত্র আবাসস্থলের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশিষ্ট ফকিহ কাসানি (রহ.) বলেন, ‘যদি স্বামী তার স্ত্রীকে সতিন, সতিনের ছেলেমেয়ে, দেবর, শাশুড়ি, ননদ ও অন্যান্য আত্মীয়ের সঙ্গে এক ঘরে রাখতে চায়, আর স্ত্রী তাতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে, তাহলে তার জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থা করা আবশ্যক। (বাদায়ে আস-সানায়ে)
হাসকাফি (রহ.) বলেন, ‘একইভাবে স্ত্রীর জন্য স্বামীর সাধ্য অনুযায়ী স্বতন্ত্র বাসস্থানের ব্যবস্থা করা ওয়াজিব। (দুররুল মুখতার) তবে স্বামী যদি অসচ্ছল হয়, স্বতন্ত্র থাকার ব্যবস্থা করা যদি তার পক্ষে সম্ভব না হয়, তাহলে স্ত্রী স্বামীর কাছে স্বতন্ত্র ঘর দাবি না করে ধৈর্য ধারণ করবে। (মাতালিবু উলিন নুহা)
স্বতন্ত্র আবাসস্থল বলতে স্বামীর পৈতৃক ভিটা থেকে দূরে গিয়ে নতুন ঘর নির্মাণ করতে হবে অথবা ভাড়া বাসায় চলে যেতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। পৈতৃক বাড়িতেই স্ত্রীর জন্য স্বতন্ত্র থাকার ঘর, রান্নাঘর ও বাথরুমের ব্যবস্থা করে দিলেই যথেষ্ট। এটুকু পাওয়ার পর অন্য বাড়ির দাবি করা অথবা পৈতৃক ভিটা ছেড়ে শহরে বা অন্য কোথাও চলে যাওয়ার দাবি করার অধিকার স্ত্রীর নেই। (মাজমাউল আনহুর)
কাসানি (রহ.) বলেন, ‘যদি স্বামী তার স্ত্রীকে নিয়ে বড় ঘরের একটি কক্ষে থাকে এবং স্ত্রীর মৌলিক প্রয়োজন এককভাবে পূরণ করার ব্যবস্থা করে দেয়, তখন স্বামীর কাছে আলাদা ঘর দাবি করার অধিকার স্ত্রীর নেই।’ (বাদায়িয়ুস সানায়ি)
হাসকাফি (রহ.) বলেন, ‘বড় ঘরের একটি অংশে স্ত্রীকে রেখে তার জন্য আলাদা বাথরুম ও রান্নাঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া যথেষ্ট।’ এর টীকায় ইবনে আবেদিন (রহ.) বলেন, ‘রান্নাঘর ও বাথরুম স্ত্রীর জন্য নির্ধারিত ঘরের ভেতরে হতে হবে অথবা বাইরে হলেও তাতে অন্য কারও অংশীদারত্ব থাকা যাবে না।’ (রদ্দুল মুহতার) তবে স্ত্রীকে আলাদা ঘরে রাখলেও পরিবারের অন্য সদস্যের প্রতি কর্তব্য পালন করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অবহেলা করা যাবে না; বিশেষ করে মা-বাবার সেবায় কার্পণ্য করা কোনোভাবেই ইসলাম অনুমোদন করে না।
উত্তর দিয়েছেন
মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
সড়ককে মানুষের চলাচলের উপযোগী করা ইমানের পরিচায়ক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান শাখা হলো, এ কথার স্বীকৃতি দেওয়া যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো, সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (
১৩ ঘণ্টা আগেশীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম হয় এবং আবহাওয়া থাকে শীতল, যা রোজা রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী সময়। অপর দিকে শীতের রাত অনেক দীর্ঘ হয়, ফলে রাতের প্রথম প্রহরে ঘুমিয়ে নিয়ে শেষ প্রহরে আল্লাহর ইবাদত ও তাহাজ্জুদে মগ্ন হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে হাদিসে শীতকালকে ইবাদতের বসন্তক
২ দিন আগেআল্লাহ মানুষকে দুভাবে পরীক্ষা করেন। বিপদ দিয়ে এবং নিয়ামত দিয়ে। নিয়ামতের পরীক্ষা বিপদের পরীক্ষার চেয়ে কঠিন। বিপদের সময় মানুষ আল্লাহর স্মরণ করে; তার সাহায্য প্রার্থনা করে।
৩ দিন আগেসমাজের প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার সম্পর্ক থাকা চাই। পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা ও মজবুত সম্পর্ক তৈরি করতে মহানবী (সা.) ৬টি কর্তব্যের কথা বলেছেন, যা পালন
৪ দিন আগে