ইসলাম ডেস্ক
সন্তানের আচরণে অসন্তুষ্ট হয়ে কেউ কেউ ক্ষোভের বশে ত্যাজ্য করে দেন। সন্তানকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে বাকি সন্তানদের নামে পুরো সম্পদ লিখে দেন। আবার অনেকে সন্তানকে সম্পদ না দেওয়ার কসমও করে বসেন। এ বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কী—এখানে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
সন্তান ত্যাজ্য করা যায় কি
ইসলামে সন্তান ত্যাজ্য করার কোনো বিধান নেই। এমনটি করলে বাবা-মা সন্তানের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার গুনাহে লিপ্ত হবেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (বুখারি: ৫৯৮৪; মুসলিম: ২৫৫৬)
তাই কেউ সন্তানকে ত্যাজ্য করলে, মৌখিক হোক বা লিখিত, তা বাস্তবায়িত হবে না। ফলে তাঁর মৃত্যুর পর সম্পদের অধিকার পেতে ত্যাজ্য সন্তানের সামনে কোনো বাধা থাকবে না। তিনি যথানিয়মে সম্পদের ওয়ারিশ হবেন।
এ ক্ষেত্রে বাবার কোনো কথা বা লিখিত দলিল ধর্তব্য হবে না। কারণ মিরাস বা সম্পদের উত্তরাধিকার কে কতখানি পাবে, তা আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনের সুরা নিসার ১১ থেকে ১৩ নম্বর আয়াতে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। তাই কারও কথার কারণে আল্লাহর বিধান পরিবর্তিত হবে না। বাবার মৃত্যুর পর সন্তান ও অন্য ওয়ারিশেরা আপনাআপনিই তাঁর সম্পদের নির্ধারিত অংশের মালিক হয়ে যাবেন। (তিরমিজি: ২১২১; আলবাহরুর রায়েক: ৭ / ২৮৮; মওসুওয়্যাহ ফিকহিয়্যাহ: ৩৬ / ১৬৭; ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৪ / ৩৬৪; ফাতাওয়া উসমানি: ২ / ২৮৪)
এখানে উল্লেখ করা দরকার, বাবা-মায়ের অবাধ্যতা অনেক বড় গুনাহ। তবে সন্তান অবাধ্য হলে ত্যাজ্য করা ইসলামের সমাধান নয়। বরং বাবা-মায়ের উচিত, ছোট থেকে সন্তানকে ইসলামি অনুশাসনে গড়ে তোলা, ভালোবাসা ও শাসনের মাধ্যমে সন্তানের সংশোধনের চেষ্টা করা, তাকে কোরআন-হাদিসে বর্ণিত অবাধ্যতার পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করা এবং আল্লাহর কাছে সন্তানের সংশোধন কামনা করে দোয়া করা।
সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার বিধান
অবাধ্যতার কারণে সন্তানকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে মৃত্যুর আগে পুরো সম্পদ অন্য কারও নামে লিখে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ নয়। কারণ, সম্ভাব্য কোনো ওয়ারিশকে বঞ্চিত করার কৌশল অবলম্বন করা ইসলাম সমর্থন করে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৩১৬৮৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া: ৪ / ৪০০; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া: ৬ / ২৩৭)
একইভাবে এক সন্তানকে বঞ্চিত করার জন্য অন্য সন্তানের নামে সব সম্পদ বা বেশির ভাগ সম্পদ লিখে দেওয়াও ইসলামসম্মত নয়। মহানবী (সা.) এমনটি করতে নিষেধ করেছেন।
নোমান ইবনে বশির নিজের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘একবার আমার বাবা আমার মায়ের অনুরোধে আমাকে কিছু সম্পদের মালিক বানিয়ে দিতে চাইলেন। তখন মা বললেন, “আমার ছেলেকে দেওয়া সম্পদের ব্যাপারে আমি রাসুল (সা.)-কে সাক্ষী রাখতে চাই। ” বাবা আমার হাত ধরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিয়ে গেলেন, আমি তখন ছোট বালক। বাবা বললেন, “হে আল্লাহর রাসুল, তার মা তাকে দেওয়া সম্পদের জন্য আপনাকে সাক্ষী রাখতে চাচ্ছেন। ” রাসুল (সা.) বললেন, “হে বশির, এ ছাড়া কি তোমার আরও সন্তান আছে? ” তিনি বললেন, “হ্যাঁ”। নবী (সা.) বললেন, “তাদের সবাইকে কি তুমি এ পরিমাণ সম্পদ দিয়েছ? ” বললেন, “না”। রাসুল (সা.) বললেন, “তাহলে এ ক্ষেত্রে আমাকে সাক্ষী রেখো না। আমি এমন জুলুমের সাক্ষী হতে চাই না।’ ” (মুসলিম: ১২৪৩)
তবে সন্তান যদি হারাম পথে সম্পদ অপচয়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে বাবা-মা তাকে প্রয়োজনের (মৌলিক চাহিদা) অতিরিক্ত অর্থ দেবে না। মৃত্যুর আগে প্রয়োজন মতো (মৌলিক চাহিদা মেটাতে যতটুকু লাগে) সম্পদ রেখে বাকি সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান বা জনকল্যাণে ব্যয় করে দিতে পারেন। কারণ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে সম্পদ আল্লাহ তোমাদের জীবিকা বানিয়েছেন, তা নির্বোধদের হাতে তুলে দিয়ো না। বরং তা থেকে তাদের খাওয়াও, পরাও এবং তাদের সঙ্গে ন্যায়সংগত কথা বলো।’ (সুরা নিসা: ৫)
ত্যাজ্য করার কসম করলে
কোনো বাবা সন্তানকে ত্যাজ্য করার কসম করলে কসম ভেঙে তাকে ফিরিয়ে নিতে হবে এবং কাফফারা আদায় করতে হবে। কারণ কসম ভঙ্গ করা সম্পর্ক ছিন্ন করার চেয়ে ছোট গুনাহ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি নিজের পরিবারের ব্যাপারে কসম করে এবং আল্লাহর ফরজ আদায় না করে নিজের কসমের ওপর অটল থাকে, তাহলে সে আল্লাহর কাছে গুনাহগার সাব্যস্ত হবে।’ (বুখারি: ৬৬২৫; মুসলিম: ১৬৫০)
অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বিষয়ে কসম করে, পরে অন্যটিকে তা থেকে উত্তম মনে করে, সে যেন তা করে এবং নিজের কসমের কাফফারা দেয়।’ (মুসলিম: ১৬৫০)
উল্লেখ্য, কসম ভঙ্গের কাফফারা হলো, দশজন মিসকিনকে মধ্যম মানের খাবার পেট পুরে খাওয়ানো অথবা পোশাক দেওয়া বা একটি দাস মুক্ত করা। এগুলোর কোনো একটি করার সামর্থ্য না থাকলে তিন দিন রোজা রাখা। (সুরা মায়েদাহ: ৮৯)
সন্তানের আচরণে অসন্তুষ্ট হয়ে কেউ কেউ ক্ষোভের বশে ত্যাজ্য করে দেন। সন্তানকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে বাকি সন্তানদের নামে পুরো সম্পদ লিখে দেন। আবার অনেকে সন্তানকে সম্পদ না দেওয়ার কসমও করে বসেন। এ বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কী—এখানে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
সন্তান ত্যাজ্য করা যায় কি
ইসলামে সন্তান ত্যাজ্য করার কোনো বিধান নেই। এমনটি করলে বাবা-মা সন্তানের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার গুনাহে লিপ্ত হবেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (বুখারি: ৫৯৮৪; মুসলিম: ২৫৫৬)
তাই কেউ সন্তানকে ত্যাজ্য করলে, মৌখিক হোক বা লিখিত, তা বাস্তবায়িত হবে না। ফলে তাঁর মৃত্যুর পর সম্পদের অধিকার পেতে ত্যাজ্য সন্তানের সামনে কোনো বাধা থাকবে না। তিনি যথানিয়মে সম্পদের ওয়ারিশ হবেন।
এ ক্ষেত্রে বাবার কোনো কথা বা লিখিত দলিল ধর্তব্য হবে না। কারণ মিরাস বা সম্পদের উত্তরাধিকার কে কতখানি পাবে, তা আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনের সুরা নিসার ১১ থেকে ১৩ নম্বর আয়াতে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। তাই কারও কথার কারণে আল্লাহর বিধান পরিবর্তিত হবে না। বাবার মৃত্যুর পর সন্তান ও অন্য ওয়ারিশেরা আপনাআপনিই তাঁর সম্পদের নির্ধারিত অংশের মালিক হয়ে যাবেন। (তিরমিজি: ২১২১; আলবাহরুর রায়েক: ৭ / ২৮৮; মওসুওয়্যাহ ফিকহিয়্যাহ: ৩৬ / ১৬৭; ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৪ / ৩৬৪; ফাতাওয়া উসমানি: ২ / ২৮৪)
এখানে উল্লেখ করা দরকার, বাবা-মায়ের অবাধ্যতা অনেক বড় গুনাহ। তবে সন্তান অবাধ্য হলে ত্যাজ্য করা ইসলামের সমাধান নয়। বরং বাবা-মায়ের উচিত, ছোট থেকে সন্তানকে ইসলামি অনুশাসনে গড়ে তোলা, ভালোবাসা ও শাসনের মাধ্যমে সন্তানের সংশোধনের চেষ্টা করা, তাকে কোরআন-হাদিসে বর্ণিত অবাধ্যতার পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করা এবং আল্লাহর কাছে সন্তানের সংশোধন কামনা করে দোয়া করা।
সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার বিধান
অবাধ্যতার কারণে সন্তানকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে মৃত্যুর আগে পুরো সম্পদ অন্য কারও নামে লিখে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ নয়। কারণ, সম্ভাব্য কোনো ওয়ারিশকে বঞ্চিত করার কৌশল অবলম্বন করা ইসলাম সমর্থন করে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৩১৬৮৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া: ৪ / ৪০০; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া: ৬ / ২৩৭)
একইভাবে এক সন্তানকে বঞ্চিত করার জন্য অন্য সন্তানের নামে সব সম্পদ বা বেশির ভাগ সম্পদ লিখে দেওয়াও ইসলামসম্মত নয়। মহানবী (সা.) এমনটি করতে নিষেধ করেছেন।
নোমান ইবনে বশির নিজের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘একবার আমার বাবা আমার মায়ের অনুরোধে আমাকে কিছু সম্পদের মালিক বানিয়ে দিতে চাইলেন। তখন মা বললেন, “আমার ছেলেকে দেওয়া সম্পদের ব্যাপারে আমি রাসুল (সা.)-কে সাক্ষী রাখতে চাই। ” বাবা আমার হাত ধরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিয়ে গেলেন, আমি তখন ছোট বালক। বাবা বললেন, “হে আল্লাহর রাসুল, তার মা তাকে দেওয়া সম্পদের জন্য আপনাকে সাক্ষী রাখতে চাচ্ছেন। ” রাসুল (সা.) বললেন, “হে বশির, এ ছাড়া কি তোমার আরও সন্তান আছে? ” তিনি বললেন, “হ্যাঁ”। নবী (সা.) বললেন, “তাদের সবাইকে কি তুমি এ পরিমাণ সম্পদ দিয়েছ? ” বললেন, “না”। রাসুল (সা.) বললেন, “তাহলে এ ক্ষেত্রে আমাকে সাক্ষী রেখো না। আমি এমন জুলুমের সাক্ষী হতে চাই না।’ ” (মুসলিম: ১২৪৩)
তবে সন্তান যদি হারাম পথে সম্পদ অপচয়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে বাবা-মা তাকে প্রয়োজনের (মৌলিক চাহিদা) অতিরিক্ত অর্থ দেবে না। মৃত্যুর আগে প্রয়োজন মতো (মৌলিক চাহিদা মেটাতে যতটুকু লাগে) সম্পদ রেখে বাকি সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান বা জনকল্যাণে ব্যয় করে দিতে পারেন। কারণ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে সম্পদ আল্লাহ তোমাদের জীবিকা বানিয়েছেন, তা নির্বোধদের হাতে তুলে দিয়ো না। বরং তা থেকে তাদের খাওয়াও, পরাও এবং তাদের সঙ্গে ন্যায়সংগত কথা বলো।’ (সুরা নিসা: ৫)
ত্যাজ্য করার কসম করলে
কোনো বাবা সন্তানকে ত্যাজ্য করার কসম করলে কসম ভেঙে তাকে ফিরিয়ে নিতে হবে এবং কাফফারা আদায় করতে হবে। কারণ কসম ভঙ্গ করা সম্পর্ক ছিন্ন করার চেয়ে ছোট গুনাহ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি নিজের পরিবারের ব্যাপারে কসম করে এবং আল্লাহর ফরজ আদায় না করে নিজের কসমের ওপর অটল থাকে, তাহলে সে আল্লাহর কাছে গুনাহগার সাব্যস্ত হবে।’ (বুখারি: ৬৬২৫; মুসলিম: ১৬৫০)
অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বিষয়ে কসম করে, পরে অন্যটিকে তা থেকে উত্তম মনে করে, সে যেন তা করে এবং নিজের কসমের কাফফারা দেয়।’ (মুসলিম: ১৬৫০)
উল্লেখ্য, কসম ভঙ্গের কাফফারা হলো, দশজন মিসকিনকে মধ্যম মানের খাবার পেট পুরে খাওয়ানো অথবা পোশাক দেওয়া বা একটি দাস মুক্ত করা। এগুলোর কোনো একটি করার সামর্থ্য না থাকলে তিন দিন রোজা রাখা। (সুরা মায়েদাহ: ৮৯)
সড়ককে মানুষের চলাচলের উপযোগী করা ইমানের পরিচায়ক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান শাখা হলো, এ কথার স্বীকৃতি দেওয়া যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো, সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (
১৩ ঘণ্টা আগেশীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম হয় এবং আবহাওয়া থাকে শীতল, যা রোজা রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী সময়। অপর দিকে শীতের রাত অনেক দীর্ঘ হয়, ফলে রাতের প্রথম প্রহরে ঘুমিয়ে নিয়ে শেষ প্রহরে আল্লাহর ইবাদত ও তাহাজ্জুদে মগ্ন হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে হাদিসে শীতকালকে ইবাদতের বসন্তক
২ দিন আগেআল্লাহ মানুষকে দুভাবে পরীক্ষা করেন। বিপদ দিয়ে এবং নিয়ামত দিয়ে। নিয়ামতের পরীক্ষা বিপদের পরীক্ষার চেয়ে কঠিন। বিপদের সময় মানুষ আল্লাহর স্মরণ করে; তার সাহায্য প্রার্থনা করে।
৩ দিন আগেসমাজের প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার সম্পর্ক থাকা চাই। পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা ও মজবুত সম্পর্ক তৈরি করতে মহানবী (সা.) ৬টি কর্তব্যের কথা বলেছেন, যা পালন
৪ দিন আগে