ঢাকা: প্রায় ১১ দিন বন্ধ থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রের ফের শুরু হচ্ছে জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের ব্যবহার। স্থানীয় সময়  শুক্রবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এবং খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) সিডিসির পরামর্শক প্যানেলের নির্দেশনা মেনে এই স্থগিতাদেশ তুলে নেয়।  এর আগে রক্তজমাট বাধার বিরল সমস্যার ঝুঁকি বিবেচনায় স্থগিত হয়েছিল জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের ব্যবহার।

এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) পরিচালক রোচেল ওয়ালেনস্কি বলেন,  আমরা আর এই ভ্যাকসিন ব্যবহারে বিরতি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি না। গভীর-বিশ্লেষণের ভিত্তিতে দেখা গেছে  সম্ভবত এটি রক্তজমাট বাধতে সহায়তা করতে পারে তবে ঝুঁকি খুব কম।

দীর্ঘ বৈঠকে পর গতকাল শুক্রবার জনসনের  ভ্যাকসিন ব্যবহারে স্থগিতাদেশ নিয়ে ভোটাভুটির আয়োজন করে সিডিসির প্যানেলের সদস্যরা। সেখানে ১৮  এবং  এর বেশি বয়সোর্ধ্বদের জনসনের টিকা দেয়ার পক্ষে মত দেন তাঁরা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়,  এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ লাখ মানুষ জনসনের  ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এদের মধ্যে রক্তজমাট সমস্যার শিকার হয়েছেন মাত্র ১৫ জন।

চলতি মাসে ইউরোপীয় নীতিনির্ধারকরা অ্যাস্ট্রাজেনেকা  ভ্যাকসিনের সঙ্গে জনসনের টিকায় রক্তজমাট সমস্যার মিল খুঁজে পান। তবে তাদের মতে, এর ঝুঁকির তুলনায় উপকার অনেক বেশি।

এদিকে, শুক্রবার জনসনের টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে নয়জনের শরীরে রক্তজমাট বাধার প্রমাণ মিলেছে। এর আগে আরও ছয়জন একই সমস্যার শিকার হয়েছিলেন।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভুক্তভোগীদের মধ্যে সবাই নারী এবং তাদের বয়স ৫০ বছরের নিচে। এদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন, সাতজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে প্রায় এক ডজন নারীর বয়সই ৩০ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে। তাঁদের মধে সাতজনের স্থূলকায় এবং দুইজনের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল।

সিডিসির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিছু পুরুষের মধ্যেও এ ধরনের রক্তজমাট সমস্যার বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

 বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জনসনের ভ্যাকসিন নেওয়ার  তিন সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে পারে। উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে তীব্র মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, পা ও পেটে ব্যথা।

এর আগে, চলতি মাসের শুরুর দিকে জনসনের টিকা নেয়ার পর কয়েকজন নারীর শরীরে রক্তজমাট সমস্যার খবরের প্রেক্ষিতে সেটির ব্যবহার স্থগিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। করোনা মোকাবিলায় জনসনই প্রথম এক ডোজের  ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এখন ৩৫ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্করা ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ পেয়েছেন । এছাড়া ৫৩ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ভ্যাকসিনের একটি ডোজ হলেও পেয়েছেন বলে জানিয়েছে  সিডিসি। করোনায় মৃত্যুতে বিশ্ব তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতেএ পর্যন্ত মারা গেছেন প্রায় পাঁচ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ।