ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলায় বাধা দিতে আরও জোর প্রচেষ্টা না চালালে যুক্তরাজ্যও যুদ্ধাপরাধের দায় এড়াতে পারবে না বলে সতর্ক করেছেন এক ব্রিটিশ এমপি। 

পার্লামেন্ট সদস্য ক্রিস্পিন ব্লান্ট যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা সমর্থন করতে গিয়ে যে ‘আইনি বিপদ’ আছে, তা সরকারের কর্মকর্তারা এখনো বুঝতে পেরেছেন বলে তাঁর মনে হয় না। মাত্র ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারের এলাকা গাজা উপত্যকায় ২২ লাখের বেশি মানুষের বাস। সেখানে ইসরায়েলের ভারী বোমা বর্ষণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এমপি ক্রিস্পিন ব্লান্ট। 

ব্লান্ট ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার অব জাস্টিস ফর প্যালেস্টাইনের (আইসিজেপি) সহপরিচালক। আজ শনিবার এ সংগঠনটির তরফ থেকে নিশ্চিত করা হয়, তারা ‘গাজায় যুদ্ধাপরাধে সহায়তা ও প্ররোচনা দেওয়ার’ জন্য যুক্তরাজ্যের সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চান। 

বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে হামাসের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের হামলা এবং একটি সংগীত উৎসবে ২৫০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারীসহ সহস্রাধিক নাগরিকদের হত্যার জবাবে গাজায় নিরবচ্ছিন্ন বিমান হামলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাস যোদ্ধারা বলছেন, ইসরায়েলি হামলায় তাঁদের হাতে জিম্মি বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি এবং বিদেশি নাগরিকও নিহত হয়েছেন। 

আইসিজেপি থেকে দেওয়া এক চিঠিতে ফিলিস্তিনিদের গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরে যাওয়ার জন্য এবং সামরিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে জড়ানোর ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর জন্য বলা হয়েছে। 

আজ শনিবার লন্ডনের মধ্যাঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে পরিকল্পিত এক বিক্ষোভ চালানোর আগমুহূর্তে এ আহ্বান আসে। এ বিক্ষোভে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

উত্তর গাজা থেকে ১১ লাখ মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে খাবার, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ তো রয়েছেই। ইসরায়েলের এসব পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে ‘ভয়াবহ’ ফলাফল এবং মানবিক বিপর্যয় ঘটবে বলে সতর্ক করেছে সংস্থা দুটি। 

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে ৫৮৩টিই শিশু বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। 

ব্লান্ট স্কাই নিউজকে বলেন, যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা দেখলে ‘সবাইকে অবশ্যই অপরাধ সংঘটনকারীদের দমন করার জন্য কাজ করতে হবে’। 

তিনি আরও বলেন, ‘আপনি যদি জানেন যে একটি পক্ষ যুদ্ধাপরাধ করতে যাচ্ছে, তবে পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে আপনি নিজেকে অংশীদার করছেন। এই জোরপূর্বক লোক স্থানান্তর এমন এক আইনের লঙ্ঘন যেটি আন্তর্জাতিক আইন এবং এই অঞ্চলের সব রাষ্ট্রকে প্রভাবিত করে। যেহেতু এ আইন এই অঞ্চলে তৈরি হয়েছে তাই, যুদ্ধাপরাধে নিশ্চুপ থাকা, আপনাকে অপরাধ সম্পাদনকারীর সমান দোষী করে তোলে।’