গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে হামাসের অন্তত ৬ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির এক নেতা। তবে ইসরায়েলের দাবি, গাজায় হামাসের অন্তত ১২ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে ওই হামাস নেতা বলেছেন, হামাসের যোদ্ধারা নিহত হলেও গোষ্ঠীটি যুদ্ধ বন্ধ করবে না। তিনি আরও জানান, তাঁর গোষ্ঠী রাফাহে দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তবে ওই নেতা এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। 

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ইঙ্গিত করে ওই নেতা বলেন, ‘নেতানিয়াহুর সামনে যেসব বিকল্প আছে সেগুলো কঠিন, তবে আমাদের সামনে থাকা বিকল্পগুলোও কঠিন। তিনি গাজা দখল করে নিতে পারেন, তার পরও হামাস লড়াই করে যাবে। হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যা এবং হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার যে লক্ষ্য তিনি নির্ধারণ করেছিলেন, তা অর্জিত হয়নি।’

এদিকে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গান্তেজ জানিয়েছেন, আগামী ১০ মার্চের মধ্যে, অর্থাৎ রোজা শুরুর আগেই হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তি না দিলে রাফাহে অভিযান চালানো হবে। 

বেনি গান্তেজ গত রোববার বলেছেন, ‘বিশ্ববাসীর অবশ্যই জানা উচিত এবং হামাস নেতাদের অবশ্যই জানা থাকা উচিত, রোজার আগে আমাদের জিম্মিরা ঘরে না ফিরলে লড়াই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। এমনকি রাফাহও বাদ পড়বে না এই লড়াইয়ের আওতা থেকে।’ 

এদিকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ১৩৫ দিন পেরিয়ে গেছে। এই সময়ে ২৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। বাস্তুহারা হয়েছে গাজায় ২৪ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই। এমন নারকীয় অবস্থায় অঞ্চলটিতে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা ব্যাপক কমেছে। ক্ষুধার তাড়নায় মানুষ ভিড় করছে ত্রাণবাহী ট্রাক ও শহরটির বেকারিগুলোতে। 

গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের অধিকাংশই আশ্রয় নিয়েছে রাফাহে। সংখ্যার বিচারে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ। এই অবস্থায় এই অঞ্চলে অভিযান চালানোর বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। কিন্তু সেই সতর্কবার্তা আমলে নেননি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।