মইনুল হাসান
২০২৪ সাল তাইওয়ান, ভারত, পাকিস্তান, মেক্সিকো, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৬৮টি দেশে নির্বাচনের বছর। এসব দেশের মোট ভোটারসংখ্যা ৪১০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। বিশ্বজুড়ে নির্বাচনের ধুম, মানবতার ইতিহাসে এই প্রথম। এর আগে একই বছরে বিশ্বজুড়ে নির্বাচনের ব্যাপকতার এমন বিস্ময়কর নিদর্শন নেই। তাই বৈশ্বিক গণতন্ত্রের ইতিহাসে ২০২৪ সাল বিশেষ একটি বছর। এই নির্বাচনের শুরুটা হয়েছে ৭ জানুয়ারি, বাংলাদেশ থেকে; অর্থাৎ নির্বাচন উদ্বোধন হলো বাংলাদেশ থেকে।
১৩ জানুয়ারি তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে চীন প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ থেকে ইউরোপিয়ান সংসদের সদস্য নির্বাচন চলতি বছরেই সম্পন্ন হবে। সেই সংসদে চরম ডানপন্থীদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাজ্যেও পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতে মে মাস নাগাদ ভোট হবে। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনেকটাই আমোদী মেজাজে আছেন। কারণ মে মাসের নির্বাচনে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির ওপর ভর করে তিনি আবারও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ের আশা করছেন। আর তা যদি হয়, সে ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ ভারতের মসনদ যে তাঁর দখলে ২০২৯ সাল পর্যন্ত থাকবে, তা প্রায় নিশ্চিত।
এদিকে পরাশক্তি রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ পড়েছে আগামী ১৭ মার্চ। সেই নির্বাচনের ফলাফল কারও অজানা নয়, বেঁচে থাকলে জোসেফ স্তালিনের ভাবশিষ্য প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্বাচিত হবেন। তিনি একাধারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেই ১৯৯৯ থেকে দোর্দণ্ড প্রতাপে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মঞ্চে। সংবিধানের বিধান সংশোধন করে তিনি ক্রেমলিন প্রাসাদে অবস্থানের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। তিনি যে অন্তত ২০৩৬ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার সর্বোচ্চ পদে আসীন থাকবেন, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই; অর্থাৎ তিনি আরও এক যুগ ক্ষমতার ছড়ি ঘোরাবেন, তা এখন বেশ স্পষ্ট।
তবে যা স্পষ্ট নয় তা হলো, আগামী ৫ নভেম্বর, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে কে নির্বাচিত হবেন। মঙ্গলবারের এই নির্বাচনের ফলাফল আমেরিকা তথা বিশ্বের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে কি—সে প্রশ্নও উঠেছে; বিশেষ করে ইউরোপিয়ানদের মধ্যে এ নিয়ে একধরনের সংশয়, উৎকণ্ঠা এবং ভীতি কাজ করছে। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যেই গলা ছেড়ে হাঁকডাক শুরু করেছেন।
হোয়াইট হাউসের সদর দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছেন। আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে ডেমোক্রেটিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
দেশে দেশে নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যেই ইউরোপের দরজায় যুদ্ধ চলছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া তার বিশাল সামরিক শক্তি নিয়ে দুর্বল প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের ওপর হামলা চালায়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই দুই দেশের যুদ্ধ তৃতীয় বছরে পা দিতে যাচ্ছে। এমন অসম যুদ্ধ আরও কত বছর চলবে, কেউ বলতে পারছে না। যাঁরা ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারদর্শী, তাঁরা নির্দ্বিধায় বলছেন, খুব শিগগির এমন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ তাঁরা দেখছেন না।
অথচ ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতা পেলে তিনি ২৪ ঘণ্টায় এ যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন! অনেকেই মনে করেন, পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের একধরনের আলাদা সখ্য আছে। ট্রাম্প তা ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করে এমন অসাধ্যসাধন করবেন। সেই সঙ্গে ন্যাটো জোট থেকে বেরিয়ে এসে রাশিয়াকে শান্ত করবেন। এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে নতুন করে সামরিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির বাধার মুখে পড়েছেন বাইডেন।
অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। ইসরায়েল এবং হামাসের যুদ্ধের আগুন কবে নিভবে, তা কেউ জানে না। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত আক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার পর, ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ২১ লাখ অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ইতিমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ২২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এবং আহত হওয়ার সংখ্যাও প্রায় ৬০ হাজার। গাজা এখন এক বিশাল রক্তাক্ত বধ্যভূমি, তাজা কবরের দেশ।
ইসরায়েলের হামলা বন্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি তুলছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু তাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সায় না দেওয়ায় হামলা বন্ধ করছে না ইসরায়েল। ইসরায়েলিদের হাতে ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে খুন করার শর্তহীন লাইসেন্স তুলে দেওয়ার জন্য বাইডেন প্রশাসনকে দোষারোপ করছে বিশ্বের সব বিবেকবান মানুষ। এ কারণেও বাইডেন নিজ দেশের অনেক মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন, গাজা ইস্যুতে মার্কিন জনগণের একটি বড় অংশ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর খুব বেশি নাখোশ।
পুতিন ইউক্রেনের টুঁটিতে মরণ কামড় বসিয়ে চুপচাপ বসে নেই। আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ থেকে ফরাসিদের বিতাড়িত করে সেখানে রাশিয়া তার অবস্থান সুসংহত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বহুদিনের বিশ্বস্ত এবং পরীক্ষিত মিত্র সৌদি আরবসহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে মিত্রতার সম্পর্কে গড়ে তুলছে। ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো।
এমন পরিস্থিতে আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে ব্যবহার করে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও হোয়াইট হাউসে জাঁকিয়ে বসতে পারেন। যদি তাই হয়, সে ক্ষেত্রে ট্রাম্প তাঁর ‘আমেরিকার অগ্রাধিকার’ নীতি কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনকে সব রকম সহায়তা প্রদান বন্ধ করে দিতে পারেন। ন্যাটো জোট থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিতে পারেন। যদি তাই হয়, আমেরিকাকে পাশে না পেলে একা ইউরোপ পুতিনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে চরম বেকায়দায় পড়বে।ইউরোপের আঞ্চলিক অখণ্ডতা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
ভূরাজনীতি নিয়ে যাঁদের জানাশোনা আছে, তাঁরা প্রায় সবাই একমত যে সমগ্র বিশ্ব একটি অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবী একটি রাসায়নিক এবং জৈব অস্ত্রসহ পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকিতে ধুঁকছে। দেশে দেশে চরমপন্থীদের উত্থান ঘটছে। কর্তৃত্ববাদীদের আস্ফালনে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ছে। সব মিলিয়ে দ্রুত বদলে যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতির দৃশ্যপট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও অনেকটা খেই হারিয়ে ফেলছেন। কাল কী ঘটবে তা আজ নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে শুরু হয়ে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আগামী বছরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক এবং বৈশ্বিক ক্ষমতার মেরুকরণ সম্পূর্ণভাবে বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আর তা যদি হয়, তবে বলা চলে যে বিশ্বের এমন ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন আমাদের বাংলাদেশ থেকে শুরু।
লেখক: ফ্রান্সপ্রবাসী লেখক
২০২৪ সাল তাইওয়ান, ভারত, পাকিস্তান, মেক্সিকো, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৬৮টি দেশে নির্বাচনের বছর। এসব দেশের মোট ভোটারসংখ্যা ৪১০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। বিশ্বজুড়ে নির্বাচনের ধুম, মানবতার ইতিহাসে এই প্রথম। এর আগে একই বছরে বিশ্বজুড়ে নির্বাচনের ব্যাপকতার এমন বিস্ময়কর নিদর্শন নেই। তাই বৈশ্বিক গণতন্ত্রের ইতিহাসে ২০২৪ সাল বিশেষ একটি বছর। এই নির্বাচনের শুরুটা হয়েছে ৭ জানুয়ারি, বাংলাদেশ থেকে; অর্থাৎ নির্বাচন উদ্বোধন হলো বাংলাদেশ থেকে।
১৩ জানুয়ারি তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে চীন প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ থেকে ইউরোপিয়ান সংসদের সদস্য নির্বাচন চলতি বছরেই সম্পন্ন হবে। সেই সংসদে চরম ডানপন্থীদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাজ্যেও পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতে মে মাস নাগাদ ভোট হবে। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনেকটাই আমোদী মেজাজে আছেন। কারণ মে মাসের নির্বাচনে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির ওপর ভর করে তিনি আবারও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ের আশা করছেন। আর তা যদি হয়, সে ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ ভারতের মসনদ যে তাঁর দখলে ২০২৯ সাল পর্যন্ত থাকবে, তা প্রায় নিশ্চিত।
এদিকে পরাশক্তি রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ পড়েছে আগামী ১৭ মার্চ। সেই নির্বাচনের ফলাফল কারও অজানা নয়, বেঁচে থাকলে জোসেফ স্তালিনের ভাবশিষ্য প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্বাচিত হবেন। তিনি একাধারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেই ১৯৯৯ থেকে দোর্দণ্ড প্রতাপে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মঞ্চে। সংবিধানের বিধান সংশোধন করে তিনি ক্রেমলিন প্রাসাদে অবস্থানের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। তিনি যে অন্তত ২০৩৬ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার সর্বোচ্চ পদে আসীন থাকবেন, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই; অর্থাৎ তিনি আরও এক যুগ ক্ষমতার ছড়ি ঘোরাবেন, তা এখন বেশ স্পষ্ট।
তবে যা স্পষ্ট নয় তা হলো, আগামী ৫ নভেম্বর, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে কে নির্বাচিত হবেন। মঙ্গলবারের এই নির্বাচনের ফলাফল আমেরিকা তথা বিশ্বের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে কি—সে প্রশ্নও উঠেছে; বিশেষ করে ইউরোপিয়ানদের মধ্যে এ নিয়ে একধরনের সংশয়, উৎকণ্ঠা এবং ভীতি কাজ করছে। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যেই গলা ছেড়ে হাঁকডাক শুরু করেছেন।
হোয়াইট হাউসের সদর দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছেন। আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে ডেমোক্রেটিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
দেশে দেশে নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যেই ইউরোপের দরজায় যুদ্ধ চলছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া তার বিশাল সামরিক শক্তি নিয়ে দুর্বল প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের ওপর হামলা চালায়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই দুই দেশের যুদ্ধ তৃতীয় বছরে পা দিতে যাচ্ছে। এমন অসম যুদ্ধ আরও কত বছর চলবে, কেউ বলতে পারছে না। যাঁরা ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারদর্শী, তাঁরা নির্দ্বিধায় বলছেন, খুব শিগগির এমন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ তাঁরা দেখছেন না।
অথচ ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতা পেলে তিনি ২৪ ঘণ্টায় এ যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন! অনেকেই মনে করেন, পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের একধরনের আলাদা সখ্য আছে। ট্রাম্প তা ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করে এমন অসাধ্যসাধন করবেন। সেই সঙ্গে ন্যাটো জোট থেকে বেরিয়ে এসে রাশিয়াকে শান্ত করবেন। এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে নতুন করে সামরিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির বাধার মুখে পড়েছেন বাইডেন।
অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। ইসরায়েল এবং হামাসের যুদ্ধের আগুন কবে নিভবে, তা কেউ জানে না। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত আক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার পর, ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ২১ লাখ অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ইতিমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ২২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এবং আহত হওয়ার সংখ্যাও প্রায় ৬০ হাজার। গাজা এখন এক বিশাল রক্তাক্ত বধ্যভূমি, তাজা কবরের দেশ।
ইসরায়েলের হামলা বন্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি তুলছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু তাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সায় না দেওয়ায় হামলা বন্ধ করছে না ইসরায়েল। ইসরায়েলিদের হাতে ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে খুন করার শর্তহীন লাইসেন্স তুলে দেওয়ার জন্য বাইডেন প্রশাসনকে দোষারোপ করছে বিশ্বের সব বিবেকবান মানুষ। এ কারণেও বাইডেন নিজ দেশের অনেক মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন, গাজা ইস্যুতে মার্কিন জনগণের একটি বড় অংশ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর খুব বেশি নাখোশ।
পুতিন ইউক্রেনের টুঁটিতে মরণ কামড় বসিয়ে চুপচাপ বসে নেই। আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ থেকে ফরাসিদের বিতাড়িত করে সেখানে রাশিয়া তার অবস্থান সুসংহত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বহুদিনের বিশ্বস্ত এবং পরীক্ষিত মিত্র সৌদি আরবসহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে মিত্রতার সম্পর্কে গড়ে তুলছে। ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো।
এমন পরিস্থিতে আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে ব্যবহার করে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও হোয়াইট হাউসে জাঁকিয়ে বসতে পারেন। যদি তাই হয়, সে ক্ষেত্রে ট্রাম্প তাঁর ‘আমেরিকার অগ্রাধিকার’ নীতি কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনকে সব রকম সহায়তা প্রদান বন্ধ করে দিতে পারেন। ন্যাটো জোট থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিতে পারেন। যদি তাই হয়, আমেরিকাকে পাশে না পেলে একা ইউরোপ পুতিনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে চরম বেকায়দায় পড়বে।ইউরোপের আঞ্চলিক অখণ্ডতা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
ভূরাজনীতি নিয়ে যাঁদের জানাশোনা আছে, তাঁরা প্রায় সবাই একমত যে সমগ্র বিশ্ব একটি অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবী একটি রাসায়নিক এবং জৈব অস্ত্রসহ পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকিতে ধুঁকছে। দেশে দেশে চরমপন্থীদের উত্থান ঘটছে। কর্তৃত্ববাদীদের আস্ফালনে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ছে। সব মিলিয়ে দ্রুত বদলে যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতির দৃশ্যপট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও অনেকটা খেই হারিয়ে ফেলছেন। কাল কী ঘটবে তা আজ নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে শুরু হয়ে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আগামী বছরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক এবং বৈশ্বিক ক্ষমতার মেরুকরণ সম্পূর্ণভাবে বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আর তা যদি হয়, তবে বলা চলে যে বিশ্বের এমন ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন আমাদের বাংলাদেশ থেকে শুরু।
লেখক: ফ্রান্সপ্রবাসী লেখক
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৫ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৯ দিন আগে