অরুণ কর্মকার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বিএনপি নাকি এখন নতুন করে আন্দোলনের পথ খুঁজছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনের কৌশল, কর্মসূচি, গতি-প্রকৃতি কী হবে; কী হতে পারে—এসব বিষয় নিয়ে নাকি এখন ভাবতে শুরু করেছে। অবশ্য নির্বাচনের আগে, বিএনপি এবং তার মিত্র দলগুলো যখন ধারাবাহিক আন্দোলন করে যাচ্ছিল, তখন বলা হয়েছিল যে নির্বাচনের পরও একই ধারায় আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তবে নির্বাচন এবং সরকারের ক্ষমতায় আরোহণ প্রায় নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হওয়ায় নিশ্চয়ই দেশে নতুন এক বাস্তবতার সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে যেমন অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ঘোষণা করেছিল, এবার তেমন কিছু করেনি, যাতে ধরে নেওয়া যায় যে কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
অবশ্য এই বাস্তবতায় নতুন পথের সন্ধান এবং সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে ভাবনা-চিন্তার অবকাশ আছে বৈকি। সর্বোপরি সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ-মহাসমাবেশ, অবরোধ-হরতালসহ নির্বাচনের পূর্ববর্তী আন্দোলনের ব্যর্থতা নিয়েও পর্যালোচনা এবং মূল্যায়নের দরকার আছে, যাতে ভবিষ্যৎ আন্দোলনের একই পরিণতি না হয়।
কিন্তু ভাবনা কি শুধু বিএনপির একার মাথায়? সরকারের কি কোনো ভাবনা নেই? অবশ্যই আছে। সেই ভাবনা আরও বড় এবং অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। অন্তত সে রকমই হওয়ার কথা। কারণ সরকারের যেমন রাজনীতি নিয়ে ভাবনা আছে, তেমনি গভীরতর ভাবনা ভাবার আছে অর্থনীতি, কূটনীতি এবং আরও অনেক অনেক বিষয় নিয়ে। তবে রাজনীতির পাশাপাশি সরকারের জন্য বড় ভাবনা হলো, দেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার, গতিশীল করা এবং কূটনীতির দিকে নজর দেওয়া জরুরি।
কোভিডের পর গত দুই বছরে যুদ্ধ-বিগ্রহসহ বৈশ্বিক বিশৃঙ্খলা এবং সরকারের কিছু ভুল নীতি অনুসরণের ফলে দেশের অর্থনীতিতে বিশাল ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। অনেক দিন ধরেই দেশে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগামী চলমান রয়েছে। এখন তা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের জীবনধারণের অনুকূলে নয়। এই পরিস্থিতিকে প্রায়ই অসহনীয় করে তোলে কোনো কোনো পণ্যের হঠাৎ আকাশচুম্বী দাম। এরই মধ্যে ঘনিয়ে আসছে পবিত্র রমজান মাস। এসব বিবেচনায় অবিলম্বে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ সরকারের বড় ভাবনার একটি বিষয়। অবশ্য সরকার ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আগ্রাধিকারের কথা ঘোষণা করেছে।
অর্থনীতির জন্য আরও কতিপয় অশনিসংকেত হলো রাজস্ব আয়, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ এবং রিজার্ভ কমে যাওয়া। ফলে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে অনেক দিন ধরে। বিনিয়োগ কম হওয়ায়, বিদ্যুৎ-জ্বালানির উচ্চমূল্য এবং জ্বালানির অপ্রতুল সরবরাহের কারণে রপ্তানি বাণিজ্যেও সুখবর নেই। প্রধান রপ্তানিপণ্য তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অঞ্চলে এর রপ্তানি কমছে। এর অন্যতম কারণ অবশ্য ইউরোপের অর্থনৈতিক টানাপোড়েনও বটে। রেমিট্যান্স আসা দিন দিন কমে যাচ্ছে। নতুন সরকারের অর্থমন্ত্রী কীভাবে অর্থনীতির এই বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করবেন, সেটাই এখন দেশবাসীর দেখার বিষয়। আর সরকারের সবচেয়ে বড় ভাবনার বিষয়ও সেটাই।
অর্থনীতির পরেই নতুন সরকারের সবচেয়ে বড় ভাবনা কূটনীতির বিষয়-আশয় নিয়ে। বাংলাদেশের ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’—কূটনীতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ভূ-রাজনীতিতে চরম বৈরী বৃহৎ শক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে চলা। সরকারকে গত তিন মেয়াদ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই পার হতে হয়েছে। কিন্তু এবার সেই চ্যালেঞ্জের মাত্রা ভিন্নতর এবং অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের আগে এই বৃহৎ শক্তিগুলো মোটাদাগে দুটি ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছিল। নির্বাচনের পরও তাদের সেই অবস্থানে যে কোনো পরিবর্তন হয়নি, তা তাদের বক্তব্য-বিবৃতি থেকে দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট।
পরস্পরের প্রতি বৈরী বৃহৎ শক্তির মধ্যে চীন-রাশিয়া-ভারত নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ইউরোপীয় ইউনিয়ন তা করেনি; বরং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বিবৃতি দিয়েছে। এই শক্তির সঙ্গে আবার ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের মতোই ঘনিষ্ঠ। কিন্তু বাংলাদেশ তো সবার সঙ্গেই বন্ধুত্ব অব্যাহত রেখে চলতে চায়। সেই হিসেবে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে যে শক্তিগুলো, তাদের সঙ্গে নিয়েই চলতে চাইবে বাংলাদেশ এবং চলতে হবে নিজেদের স্বার্থেই। এই জটিল ও কঠিন সমীকরণটি পেশাদার রাজনীতিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তথা সরকার কতটা সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়, সেটা শুধু দেখার বিষয় নয়। এর ওপর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকাংশে নির্ভর করছে।
কূটনীতির এ বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, দেশের রাজনীতি, বিশেষ করে বিএনপি এবং তাদের সমমনা দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচিও এর সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। তারা বৃহৎ শক্তিগুলোর কূটনৈতিক চাপের ছত্রচ্ছায়ায় আন্দোলন জমিয়ে তুলতে চায়। এই যে বিএনপি এখন নতুন কর্মসূচি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে তা-ও প্রভাবিত করছে কূটনীতির এ বিষয়টিকে। কারণ বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো থেকে যা জানা যায়, তাতে তারা মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুধু নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে বিবৃতি দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। তারা স্যাংশনের মতো কোনো নিষেধাজ্ঞাও বাংলাদেশের ওপর আরোপ করতে পারে। সেটা হলেই তাদের আন্দোলনও জমবে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের জন্য বিষয়টি আলাদা গুরুত্ব বহন করছে।
বিএনপি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করলে এবং ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে গেলে তা জনসমর্থন পাবে নিঃসন্দেহে। কিন্তু তারা সেটাকে এক রকম উপেক্ষাই করে এসেছে সব সময়। কারণ তারা মনে করে ওই ধরনের ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন করে সরকারকে অজনপ্রিয় করা গেলেও, উৎখাত করা কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। সে জন্য দরকার অন্য কিছুর আড়াল বা প্রশ্রয়। এই ধারণা থেকে বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে নির্ভর করে এসেছে বিদেশি শক্তির চাপ এবং অদৃশ্য ও কাল্পনিক কোনো শক্তির ওপর।
এবারও তারা আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের আগে দেখে নিতে চাইছে যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুধু বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ থাকে, নাকি কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) দেওয়ার দিকেও যায়। তাদের এসব হিসাব-নিকাশের মূলে রয়েছে সরকার উৎখাতের উদগ্র আকাঙ্ক্ষা। কাজেই মাথাব্যথা শুধু বিএনপির নয়, সরকারেরও বটে; বরং সরকারেরই মাথাব্যথা বেশি হওয়ার কথা।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বিএনপি নাকি এখন নতুন করে আন্দোলনের পথ খুঁজছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনের কৌশল, কর্মসূচি, গতি-প্রকৃতি কী হবে; কী হতে পারে—এসব বিষয় নিয়ে নাকি এখন ভাবতে শুরু করেছে। অবশ্য নির্বাচনের আগে, বিএনপি এবং তার মিত্র দলগুলো যখন ধারাবাহিক আন্দোলন করে যাচ্ছিল, তখন বলা হয়েছিল যে নির্বাচনের পরও একই ধারায় আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তবে নির্বাচন এবং সরকারের ক্ষমতায় আরোহণ প্রায় নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হওয়ায় নিশ্চয়ই দেশে নতুন এক বাস্তবতার সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে যেমন অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ঘোষণা করেছিল, এবার তেমন কিছু করেনি, যাতে ধরে নেওয়া যায় যে কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
অবশ্য এই বাস্তবতায় নতুন পথের সন্ধান এবং সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে ভাবনা-চিন্তার অবকাশ আছে বৈকি। সর্বোপরি সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ-মহাসমাবেশ, অবরোধ-হরতালসহ নির্বাচনের পূর্ববর্তী আন্দোলনের ব্যর্থতা নিয়েও পর্যালোচনা এবং মূল্যায়নের দরকার আছে, যাতে ভবিষ্যৎ আন্দোলনের একই পরিণতি না হয়।
কিন্তু ভাবনা কি শুধু বিএনপির একার মাথায়? সরকারের কি কোনো ভাবনা নেই? অবশ্যই আছে। সেই ভাবনা আরও বড় এবং অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। অন্তত সে রকমই হওয়ার কথা। কারণ সরকারের যেমন রাজনীতি নিয়ে ভাবনা আছে, তেমনি গভীরতর ভাবনা ভাবার আছে অর্থনীতি, কূটনীতি এবং আরও অনেক অনেক বিষয় নিয়ে। তবে রাজনীতির পাশাপাশি সরকারের জন্য বড় ভাবনা হলো, দেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার, গতিশীল করা এবং কূটনীতির দিকে নজর দেওয়া জরুরি।
কোভিডের পর গত দুই বছরে যুদ্ধ-বিগ্রহসহ বৈশ্বিক বিশৃঙ্খলা এবং সরকারের কিছু ভুল নীতি অনুসরণের ফলে দেশের অর্থনীতিতে বিশাল ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। অনেক দিন ধরেই দেশে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগামী চলমান রয়েছে। এখন তা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের জীবনধারণের অনুকূলে নয়। এই পরিস্থিতিকে প্রায়ই অসহনীয় করে তোলে কোনো কোনো পণ্যের হঠাৎ আকাশচুম্বী দাম। এরই মধ্যে ঘনিয়ে আসছে পবিত্র রমজান মাস। এসব বিবেচনায় অবিলম্বে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ সরকারের বড় ভাবনার একটি বিষয়। অবশ্য সরকার ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আগ্রাধিকারের কথা ঘোষণা করেছে।
অর্থনীতির জন্য আরও কতিপয় অশনিসংকেত হলো রাজস্ব আয়, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ এবং রিজার্ভ কমে যাওয়া। ফলে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে অনেক দিন ধরে। বিনিয়োগ কম হওয়ায়, বিদ্যুৎ-জ্বালানির উচ্চমূল্য এবং জ্বালানির অপ্রতুল সরবরাহের কারণে রপ্তানি বাণিজ্যেও সুখবর নেই। প্রধান রপ্তানিপণ্য তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অঞ্চলে এর রপ্তানি কমছে। এর অন্যতম কারণ অবশ্য ইউরোপের অর্থনৈতিক টানাপোড়েনও বটে। রেমিট্যান্স আসা দিন দিন কমে যাচ্ছে। নতুন সরকারের অর্থমন্ত্রী কীভাবে অর্থনীতির এই বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করবেন, সেটাই এখন দেশবাসীর দেখার বিষয়। আর সরকারের সবচেয়ে বড় ভাবনার বিষয়ও সেটাই।
অর্থনীতির পরেই নতুন সরকারের সবচেয়ে বড় ভাবনা কূটনীতির বিষয়-আশয় নিয়ে। বাংলাদেশের ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’—কূটনীতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ভূ-রাজনীতিতে চরম বৈরী বৃহৎ শক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে চলা। সরকারকে গত তিন মেয়াদ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই পার হতে হয়েছে। কিন্তু এবার সেই চ্যালেঞ্জের মাত্রা ভিন্নতর এবং অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের আগে এই বৃহৎ শক্তিগুলো মোটাদাগে দুটি ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছিল। নির্বাচনের পরও তাদের সেই অবস্থানে যে কোনো পরিবর্তন হয়নি, তা তাদের বক্তব্য-বিবৃতি থেকে দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট।
পরস্পরের প্রতি বৈরী বৃহৎ শক্তির মধ্যে চীন-রাশিয়া-ভারত নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ইউরোপীয় ইউনিয়ন তা করেনি; বরং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বিবৃতি দিয়েছে। এই শক্তির সঙ্গে আবার ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের মতোই ঘনিষ্ঠ। কিন্তু বাংলাদেশ তো সবার সঙ্গেই বন্ধুত্ব অব্যাহত রেখে চলতে চায়। সেই হিসেবে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে যে শক্তিগুলো, তাদের সঙ্গে নিয়েই চলতে চাইবে বাংলাদেশ এবং চলতে হবে নিজেদের স্বার্থেই। এই জটিল ও কঠিন সমীকরণটি পেশাদার রাজনীতিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তথা সরকার কতটা সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়, সেটা শুধু দেখার বিষয় নয়। এর ওপর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকাংশে নির্ভর করছে।
কূটনীতির এ বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, দেশের রাজনীতি, বিশেষ করে বিএনপি এবং তাদের সমমনা দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচিও এর সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। তারা বৃহৎ শক্তিগুলোর কূটনৈতিক চাপের ছত্রচ্ছায়ায় আন্দোলন জমিয়ে তুলতে চায়। এই যে বিএনপি এখন নতুন কর্মসূচি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে তা-ও প্রভাবিত করছে কূটনীতির এ বিষয়টিকে। কারণ বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো থেকে যা জানা যায়, তাতে তারা মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুধু নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে বিবৃতি দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। তারা স্যাংশনের মতো কোনো নিষেধাজ্ঞাও বাংলাদেশের ওপর আরোপ করতে পারে। সেটা হলেই তাদের আন্দোলনও জমবে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের জন্য বিষয়টি আলাদা গুরুত্ব বহন করছে।
বিএনপি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করলে এবং ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে গেলে তা জনসমর্থন পাবে নিঃসন্দেহে। কিন্তু তারা সেটাকে এক রকম উপেক্ষাই করে এসেছে সব সময়। কারণ তারা মনে করে ওই ধরনের ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন করে সরকারকে অজনপ্রিয় করা গেলেও, উৎখাত করা কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। সে জন্য দরকার অন্য কিছুর আড়াল বা প্রশ্রয়। এই ধারণা থেকে বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে নির্ভর করে এসেছে বিদেশি শক্তির চাপ এবং অদৃশ্য ও কাল্পনিক কোনো শক্তির ওপর।
এবারও তারা আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের আগে দেখে নিতে চাইছে যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুধু বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ থাকে, নাকি কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) দেওয়ার দিকেও যায়। তাদের এসব হিসাব-নিকাশের মূলে রয়েছে সরকার উৎখাতের উদগ্র আকাঙ্ক্ষা। কাজেই মাথাব্যথা শুধু বিএনপির নয়, সরকারেরও বটে; বরং সরকারেরই মাথাব্যথা বেশি হওয়ার কথা।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৫ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগে