ঈশ্বরগঞ্জে চিঠি দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করছে পাটবাজার ব্যবসায়ী সমিতি। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

ঈশ্বরগঞ্জ পৌরশহরের পাটবাজারে ১০-১২ জন মুদি ব্যবসায়ীর বিভিন্ন পণ্যের ২০টির মতো গুদাম রয়েছে। গুদামগুলোতে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫টি ট্রাকে পণ্য বোঝাই ও নামানো হয়। পণ্য বোঝাই ও নামানোর জন্য ট্রাকপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা চাঁদা দিতে হয় পাটবাজার ব্যবসায়ী সমিতিতে। এভাবে মাসে গড়ে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সমিতি। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত ট্রাক থেকে ব্যবসায়ীদের পণ্য নামাতে দেওয়া হয় না।

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, আগে চাঁদার পরিমাণ কম থাকলেও গত ২৪ মে পাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবদুল খালেক সওদাগর স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ব্যবসায়ীদের দোকানে পাঠানো হয়। সেই চিঠিতে নতুন করে ৪০০-৫০০ টাকা চাঁদা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘পাটবাজারে আমার একটি মুদি পণ্যের গুদাম রয়েছে। এ জন্য প্রতি মাসে ভাড়া দিই। কিন্তু ওই স্থানে পণ্য নামানোর জন্য প্রতি ট্রাকের জন্য পাটবাজার ব্যবসায়ী সমিতিকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে। অবৈধভাবে ওই টাকাটা আমাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করে আদায় করে নিচ্ছে তারা।’

ভুক্তভোগী মনোজ কুমার সাহা বলেন, ‘প্রতিদিন ৪-৫টি পণ্যবোঝাই ট্রাক আসে আমার। প্রতি ট্রাকের জন্য ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা চাঁদা দিলে মাস শেষে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। চাঁদার টাকা আমিসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

এ বিষয়ে জানত চাইলে পাটবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবদুল খালেক সওদাগর বলেন, ব্যবসায়ী সমিতির অর্থায়নে একজন ব্যক্তির নামে ধান-পাট মহাল ইজারা নেওয়া হয়েছে। বস্তাপ্রতি ১ টাকা ইজারা পৌরসভার নির্ধারিত। ব্যবসায়ীদের ৫২০ বস্তার ট্রাকেও তাঁরা ৪০০ টাকা নেন। সমিতি ইজারা নিতে পারে না বলে ব্যক্তির মাধ্যমে বাজারটি ইজারা নেওয়া হয়েছিল।

ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক দুলাল ভূঁইয়া বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে অচিরেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘টাকা তোলার বিষয়টি পৌরসভার ইজারাকৃতের কোনো অংশে নয়। আমি যতদূর জানি পাটবাজার ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে ১০০-২০০ টাকা করে চাঁদা তোলা হতো পাটবাজার মসজিদের জন্য। তবে ট্রাকপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা আদায়ের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।’

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। ব্যবসায়ীরা লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।