তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় রোপা আমন পরবর্তী সময়ে পতিত জমিতে সরিষার চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। সাধারণত রোপা আমন কিংবা বোনা আমন কাটার পর দুই থেকে আড়াই মাস জমি পতিত থাকে। তারপর জানুয়ারি শেষ দিকে বোরো মৌসুমের চারা রোপণ শুরু হয়। এই সময়টিকে অনাবাদি না রাখতেই এই কৌশল অবলম্বন করে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ১৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত হওয়ায় তার মধ্যে ১৬০ হেক্টর সরিষার অবাধ হয়েছে। গত বছর ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। সে হিসেবে চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে।

অন্যদিকে অনুকূল আবহাওয়ায় চলতি মৌসুমে কচুয়ায় সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। দামও ভালো থাকায় কৃষকেরা এবার সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়িয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছর প্রত্যেক চাষি অধিক লাভবান হবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তাঁরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, রোপা আমনের ধান কাটার পর বোরো ধান রোপণের মাঝে স্বল্পমেয়াদি বারি সরিষা ১৪ ও ১৭ জাতগুলো আবাদ করা যায়। এগুলো ৭৫ দিনের মধ্যেই ফলন এসে যায়, গড় ফলন বিঘা প্রতি ৪-৫ মণ। যা তেল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করবে, পাশাপাশি জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করবে।

উপজেলার তুলপাই ব্লকের কৃষক জামাল হোসেন বলেন, উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহায়তায় এই প্রথম আমাদের এলাকায় ব্লক প্রদর্শনীর মাধ্যমে ৩ একর জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা অনেককেই সরিষার বীজ দিতে পারব।

পালাখাল ব্লকের আষারকোটা গ্রামের স্থানীয় কৃষক আলী মিয়া জানান, গত বছর সরিষা ভালো দাম পাওয়ায় চলতি বছরে আরও বেশি জমিতে আবাদ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ভালো ফলন হওয়ায় অবশ্যই দাম ভালো পাব বলে আশা করছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সোফায়েল হোসেন বলেন, তেল জাতীয় ফসলের বৃদ্ধি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্যাটার্ন ভিত্তিক প্রদর্শনী করা হয়েছে। একই কৃষক সরিষা চাষের পরে বোরো ধান এবং আমন ধান করার জন্য উপকরণ পাবে। এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ভোজ্য তেল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা। দেশে প্রতি বছর ২৪ হাজার ৮ শত কোটি টাকার ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়।