বিএনপির সমাবেশ: বিচ্ছিন্ন সিলেটের চার জেলা

নিজস্ব প্রতিনিধি, সিলেট এবং হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২২, ০৮: ৩৩
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২২, ০৮: ৪০

সিলেটে বিরোধী দল বিএনপির আগামীকাল শনিবারের বিভাগীয় গণসমাবেশ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে উত্তাপ-উত্তেজনা। হবিগঞ্জের লাখাইসহ বিভাগের কয়েকটি স্থানে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় করা মামলায় বিএনপির সহস্রাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

প্রথমে সমাবেশের দিন শুধু বাস ধর্মঘটের ঘোষণা দিলেও গতকাল বৃহস্পতিবার পৃথকভাবে বিভাগের সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার– এই চার জেলায় শুক্র ও শনিবার দুদিনই সব ধরনের পরিবহনের ধর্মঘট ডেকেছে মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। অবৈধ তিন চাকার যান বন্ধসহ তিন দফা দাবিতে ডাকা হয়েছে এই ধর্মঘট।

ধর্মঘট আসবে–এমনটি ধরে নিয়ে সমাবেশের দুই দিন আগে থেকেই বিভাগের বিভিন্ন জায়গা থেকে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন। বুধবার রাত ১২টার দিকে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের নরসিংপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি এস আই সুমন আজকের পত্রিকাকে জানান, পাঁচজন করে আলাদা আলাদা গ্রুপে তাঁরা ১৫ জন পৌঁছেছেন সিলেটে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার বাকিরা আসবেন। রাতে মাঠেই থাকবেন। তবে দিনে কোথাও গিয়ে বিশ্রাম করবেন।

গতকাল বিকেলে সমাবেশস্থল নগরের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ পরিদর্শন করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল মঈন খান।

এদিকে গতকাল বিকেলে হঠাৎ শতাধিক মোটরসাইকেলযোগে বিএনপিবিরোধী নানা স্লোগান দিয়ে সিলেট শহরের চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশস্থলের অদূরে ছাত্রলীগের এমন অবস্থান নেওয়া দেখে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

সমাবেশকে ঘিরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও। সাদাপোশাকসহ ৯ শতাধিক পুলিশ, নগরের প্রবেশপথসহ ১৯টি পয়েন্টে থাকবে চেকপোস্ট। চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ।

বিরোধীদের সমাবেশের আগে শোডাউন সম্পর্কে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেন, বিএনপি সমাবেশের নামে নগরে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ছাত্রলীগ শান্তিপূর্ণ মিছিল সমাবেশের মাধ্যমে জনগণকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সমাবেশের ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার আবদুল মুক্তাদির অবশ্য আশা প্রকাশ করেছেন, ছাত্রলীগের মিছিলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। মিছিল-শোডাউন করা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার।

সমাবেশ-পূর্ব প্রচারসভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তাহসিনা রুশদীর লুনা, সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা যোগ দেন।

সমাবেশের দুই দিন আগে শুরু হওয়া আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ইজতেমার সময় কিছুটা কমিয়ে আনা হয়েছে। শুক্রবার বাদ জুমার পরিবর্তে সকাল ১০টার মধ্যে ইজতেমা শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত