গণপরিবহন বন্ধের সুযোগে ফেনীর মহিপালে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার সকালে মহিপাল বাস টার্মিনাল এলাকায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে পরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ফেনীতে বাস-ট্রাকসহ সব পরিবহন বন্ধ রাখে গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এদিন দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। এতে তাঁদের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

সরেজমিনে জানা গেছে, যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাতে ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনেকেই বাস কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার করেও গাড়ি পাননি। এ সুযোগে ফেনী থেকে ঢাকা যেতে মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে যাত্রীদের কাছ থেকে ২৮০ টাকার ভাড়া ৭০০ টাকার বেশি রাখছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। একইভাবে ফেনী থেকে চট্টগ্রামের ভাড়া ১৫০ টাকা হলেও অনেকে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় যাচ্ছেন। আবার ফেনী থেকে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাত্রীরা ১০০ টাকার ভাড়া ৩০০ টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। পণ্যবাহী যানে করে গন্তব্যে যেতেও বাড়তি ভাড়া গুনতে হয় যাত্রীদের।

ফেনী থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন নুরুল আলম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, যাত্রীবাহী বাস নেই, এই সুযোগে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস যাচ্ছে। এসব গাড়িতে ২৮০ টাকা ভাড়া ৭০০-৮০০ টাকার বেশি ভাড়া রাখা হচ্ছে।

চট্টগ্রামগামী এনজিও কর্মী দেলোয়ার হোসেন বলেন, আগে ভাড়া ছিল সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা। কিন্তু এখন ছোট ছোট গাড়িতে নিচ্ছে ৩০০ টাকা। যেতেই যেহেতু হবে, তাই বাড়তি ভাড়া দিয়েই যেতে হবে।

ফারুক ইকবাল নামে নোয়াখালীগামী এক যাত্রী বলেন, ‘যাঁরা এসিতে বসে পাজেরো গাড়িতে ঘোরেন, তাঁরা আমাদের বোবাকান্না বুঝবেন না।’

মালিক শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, একটি কুচক্রীমহলের ইন্ধনে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এ চক্রই যথেষ্ট। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জ্বালানি তেলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও জেলা ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম নবী বলেন, ইতিমধ্যে তাঁদের আয়কর কমানোর দাবিও বাস্তবায়ন হয়নি। এর মাঝে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁরা। নতুন করে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি অমূলক। দ্রুত তাঁদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে তাঁরা আরও কঠোর হবেন বলে জানান তিনি।

ফেনী জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক আহম্মদ নূর বলেন, ফেনীতে পরিবহন চলাচলে কেউ বাধা দিচ্ছে না। যেকোনো রকমের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছেন। তবে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে—এমন অভিযোগ কেউ দেয়নি বলে জানান তিনি।