লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পরাজিত সদস্য প্রার্থীর সমর্থককে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে লক্ষ্মীপুর আদালতের সামনের সড়কে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

তৃতীয় দফায় গত ২৮ নভেম্বর উপজেলার দরবেশপুর ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচন শেষে ৩০ নভেম্বর দুপুরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার মো. মিন্টু ভূঁইয়া (৩৫) পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী সাদিয়া আক্তার রুমার সমর্থক। এই ওয়ার্ডে বিজয়ী প্রার্থী মো. সোহাগ পাটওয়ারীর ভাই মো. সোহেল পাটওয়ারীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা গলায় ছুরি চালিয়ে মিন্টুকে হত্যার চেষ্টা করে। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হামলার শিকার মিন্টু ভূঁইয়া উপজেলার দরবেশপুর ইউনিয়নের আইয়েনগর গ্রামের মৃত হেদায়েত উল্যা ভূঁইয়ার ছেলে। আইয়েনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি তিনি।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, হামলাকারীরা যাতে আইনের ফাঁক গলে বের হয়ে যেতে না পারে প্রশাসনের কাছে তাঁরা এই দাবি জানান। এ সময় তাঁরা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান।

আহত মো. মিন্টু ভূঁইয়ার পরিবারের অভিযোগ, নির্বাচনে সমর্থন না দেওয়ার জের ধরে দরবেশপুর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য মো. সোহাগ পাটওয়ারীর নির্দেশে তাঁর ভাই এলাকার চিহ্নিত মাদকসেবী মো. সোহেল পাটওয়ারীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা গলায় ছুরি চালিয়ে মিন্টুকে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তাঁর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। তাতে প্রাণে বেঁচে যান মিন্টু। বর্তমানে তিনি রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় মিন্টুর স্ত্রী নার্গিস সুলতানা বাদী হয়ে গত ২ ডিসেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে রামগঞ্জ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। পুলিশ ওই দিনই নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য মো. সোহাগ, তাঁর ভাই সোহেল এবং হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত শুভ ও জহির নামের চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

মিন্টুর স্ত্রী নার্গিস সুলতানা বলেন, ‘আমার স্বামী পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। এটাই তাঁর অপরাধ। তাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সোহাগ বিজয়ী হয়ে সন্ত্রাসী দিয়ে আমার স্বামীকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। লোকজন এগিয়ে না এলে তারা আমার স্বামীকে মেরেই ফেলত। আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।’

পরাজিত প্রার্থী সাদিয়া আক্তার রুমা বলেন, সোহাগ মেম্বারের ভাই সোহেল চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর নেতৃত্বে মিন্টুকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে।

তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে রামগঞ্জের দরবেশপুর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মো. সোহাগ পাটওয়ারী (ফুটবল) ও সাদিয়া আক্তার রুমা (আপেল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে সোহাগ জয়ী হন। নির্বাচনের শুরুতেই মিন্টুর পরিবারের সদস্যরা সাদিয়াকে সমর্থন দিয়ে আসছিলেন।