সুলতানা জহুরা
সহকারী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান ও গবেষক, পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি জীব বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে অবিরাম মিথস্ক্রিয়া লিপ্ত থাকে এবং প্রতিনিয়ত অভিযোজিত হয়। এসব পারিপার্শ্বিক অবস্থার সমন্বিত রূপই হলো পরিবেশ।
পরিবেশ সাধারণত দুই প্রকার—প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সামাজিক পরিবেশ। পরিবেশের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটোই পরিবেশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সময়ের সঙ্গে এই সম্পর্কের গতি-প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটেছে মাত্র।
আদিম মানুষ চেতন কিংবা অবচেতন মনে পরিবেশের যত্ন করেছে। নৃবিজ্ঞানীদের ধারণামতে, মানুষের কার্যকলাপের কারণে পরিবেশ বা প্রকৃতিতে সব মঙ্গল ও অমঙ্গল ঘটে থাকে। মূলত এই বিশ্বাসের কারণেই পরিবেশ বা প্রকৃতির উপাদানসমূহ আদিম মানুষের কাছে আরাধ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছিল। তখন আদিম মানুষ পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল আয়ত্ত করতে পারেনি; বরং পরিবেশ দ্বারা বহু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত হতো। সে সময় পরিবেশ ছিল প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ এবং পরিবেশের উপাদানসমূহও ছিল বিশুদ্ধ। ধীরে ধীরে মানুষের চিন্তা-ভাবনার প্রসার ঘটেছে। মানুষ নানা কৌশলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশকে আয়ত্তে এনেছে বা নিয়ন্ত্রণ করতে শিখেছে। শুধু নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে তা নয়, স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অনায়াসে পরিবেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে।
পরিবেশ অবনয়নের জন্য অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো যেমন দায়ী, অন্যদিকে উন্নত বা শিল্পোন্নত দেশের ভূমিকাও কম নয়। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর দ্রুত জনস্ফীতি, খাদ্যাভাব, দারিদ্র্য, আবাসনসংকট, বেকারত্ব, অপরাধপ্রবণ জীবন, কিশোর অপরাধ, পরিবেশ উদ্বাস্তু, সাম্প্রদায়িকতা, পানির অপচয়, কৃষিভূমি হ্রাস, জ্বালানিসংকট প্রভৃতি প্রাকৃতিক ও সামাজিক উভয় পরিবেশকে ধারাবাহিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সাম্প্রতিক সময়ে মানুষ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ, জীবের জিনগত পরিবর্তন, বিলাসবহুল দ্রব্যের অপরিমিত ব্যবহার, পলিথিনের অপরিমিত ব্যবহার, অরণ্যচ্ছেদন, সামুদ্রিক সম্পদ বিনষ্টকরণ ও বাঁধ নির্মাণ করছে। মানুষ ও অন্যান্য জীবকুলের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান মাটি, বায়ু ও পানি নির্বিঘ্নে দূষিত করছে এবং খনিজ সম্পদের অপরিমিত ও নির্বিচার ব্যবহার অব্যাহত রাখতে নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য উভয় প্রকার সম্পদের অপচয় করছে অনায়াসে। উন্নত বা শিল্পোন্নত দেশসমূহ অধিক মুনাফা অর্জনের আশায় ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা বা সামনের সারিতে অবস্থানের সর্বোন্নত ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিযোগিতামূলকভাবে পরিবেশের ক্ষতি করছে। অধিক মুনাফা অর্জন করে উন্নত বা শিল্পোন্নত দেশসমূহ আরও উন্নত হয়েছে ঠিকই, অন্যদিকে পরিবেশের ওপর ঠিক কতটা নেতিবাচক চাপ প্রয়োগ হয়েছে, তা পরিমাপ করারও প্রয়াস কম বা করা বেশ কঠিন। কিন্তু পরিবেশের অবনয়নের এই মাত্রা চলতে থাকলে ভবিষ্যতের জন্য তা অশনিসংকেত বৈকি।
পরিবেশবিজ্ঞানীদের মতে; পরিবেশ অবনয়নের জন্য প্রকৃতিসৃষ্ট কারণের চেয়ে মনুষ্যসৃষ্ট কারণই বেশি দায়ী। ডিফরেস্টেশন ফ্যাক্টস অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকস ২০২৪-এ (গ্লোবাল ডেটা) উল্লেখ রয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতিবছর ১২ মিলিয়ন হেক্টর বনায়ন ধ্বংস হচ্ছে, যার পরিমাণ ৩৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যেটি তার আগের পাঁচ বছরে, অর্থাৎ ২০১০-২০১৫ সালে ছিল ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। প্রতি মিনিটে বিশ্বের প্রায় ২ হাজার ৪০০ গাছ কাটা হচ্ছে নির্বিচারে, যা বাতাসে বৃদ্ধি পাওয়া কার্বন প্রশমনের জন্য মোটেও সুখকর নয়। ২০১৮ সালে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে যত মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে, তার ২৮ শতাংশই পরিবেশদূষণজনিত অসুখ-বিসুখের কারণে।
ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট রিফর্ম কমিশন ২০২৩-এর একটি প্রতিবেদন ‘ওয়াটার পোলিউশন: এভরিথিং ইউ নিড টু নো’-এ প্রকাশিত হয় যে সুপেয় পানির পরিমাণ সীমিত। সমগ্র পৃথিবীর মিঠাপানির ১ শতাংশের কম আমরা ব্যবহার করতে পারি। যখন মিঠাপানির বৈশ্বিক চাহিদা বর্তমানের চেয়ে এক-তৃতীয়াংশ বাড়বে, তখন কোনো পদক্ষেপ ছাড়াই ২০৫০ সালে এই চ্যালেঞ্জ নিশ্চিতভাবে বাড়বে।
বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৭ মিলিয়ন মানুষ মারা যায় শুধু বায়ুদূষণের কারণে। কলকারখানার বিষাক্ত শিল্পবর্জ্য, যানবাহনের বিষাক্ত ধোঁয়া, গৃহস্থালি ও অন্যান্য কাজে সৃষ্ট আবর্জনা ও বিষাক্ত পদার্থ, পলিথিন ইত্যাদি অপরিকল্পিতভাবে মাটিতে মিশে যাওয়ায় মাটি স্বাভাবিক পুষ্টিগুণ ও মৌলিকত্ব হারিয়ে ফেলছে। তাই আধুনিককালে পরিবেশ অবনয়নের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া পরিবেশবাদীদের মনে নানা উদ্বেগের সৃষ্টি করছে।
আশঙ্কার বিষয় হলো, বিশুদ্ধ পানি ও নির্মল বায়ু বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত হবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে নিঃশেষকরণ সৃষ্টি হবে। জীবকুলের সর্বত্র পরিবেশের উপাদানসমূহের দূষণের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হলো বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন বৃদ্ধি ও ওজোনস্তরের ক্রমক্ষীয়মানতা।
পরিবেশ মানুষ কিংবা অন্যান্য প্রাণীর জীবনে এমন একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান, যাকে বাদ দিয়ে এদের অস্তিত্বের কথা ভাবা যায় না। পরিবেশের ক্রমবর্ধমান অবনয়ন প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি দিচ্ছে। সমকালীন বিশ্বে পরিবেশের অবনয়ন শুধু মানবসমাজে নয়, প্রকৃতিতেও এক বিস্ময়কর অরাজকতার সৃষ্টি করছে।
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ আন্দোলন, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশের টেকসই উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পরিবেশ অর্থনীতি, পরিবেশ রাজনীতি, পরিবেশ নারীবাদ ও পরিবেশ কর (সবুজ কর) প্রভৃতি বিষয় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তাই সামাজিক ও প্রাকৃতিক উভয় পরিবেশ সংরক্ষণে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন পরিবেশকেন্দ্রিক প্রটোকল, কনফারেন্স ও চুক্তি স্বাক্ষর নীতিমালা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
পৃথিবীতে যে জাতি যত উন্নত পরিবেশে বসবাস করে, তার মানসিকতাও তত উন্নত। উন্নত পরিবেশ গড়ে তোলে উন্নত নাগরিক ও জনহিতকর রাষ্ট্র। সুতরাং টেকসই ও বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য চাই টেকসই পরিবেশ।
সুলতানা জহুরা, সহকারী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান ও গবেষক, পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
সহকারী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান ও গবেষক, পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি জীব বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে অবিরাম মিথস্ক্রিয়া লিপ্ত থাকে এবং প্রতিনিয়ত অভিযোজিত হয়। এসব পারিপার্শ্বিক অবস্থার সমন্বিত রূপই হলো পরিবেশ।
পরিবেশ সাধারণত দুই প্রকার—প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সামাজিক পরিবেশ। পরিবেশের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটোই পরিবেশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সময়ের সঙ্গে এই সম্পর্কের গতি-প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটেছে মাত্র।
আদিম মানুষ চেতন কিংবা অবচেতন মনে পরিবেশের যত্ন করেছে। নৃবিজ্ঞানীদের ধারণামতে, মানুষের কার্যকলাপের কারণে পরিবেশ বা প্রকৃতিতে সব মঙ্গল ও অমঙ্গল ঘটে থাকে। মূলত এই বিশ্বাসের কারণেই পরিবেশ বা প্রকৃতির উপাদানসমূহ আদিম মানুষের কাছে আরাধ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছিল। তখন আদিম মানুষ পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল আয়ত্ত করতে পারেনি; বরং পরিবেশ দ্বারা বহু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত হতো। সে সময় পরিবেশ ছিল প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ এবং পরিবেশের উপাদানসমূহও ছিল বিশুদ্ধ। ধীরে ধীরে মানুষের চিন্তা-ভাবনার প্রসার ঘটেছে। মানুষ নানা কৌশলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশকে আয়ত্তে এনেছে বা নিয়ন্ত্রণ করতে শিখেছে। শুধু নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে তা নয়, স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অনায়াসে পরিবেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে।
পরিবেশ অবনয়নের জন্য অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো যেমন দায়ী, অন্যদিকে উন্নত বা শিল্পোন্নত দেশের ভূমিকাও কম নয়। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর দ্রুত জনস্ফীতি, খাদ্যাভাব, দারিদ্র্য, আবাসনসংকট, বেকারত্ব, অপরাধপ্রবণ জীবন, কিশোর অপরাধ, পরিবেশ উদ্বাস্তু, সাম্প্রদায়িকতা, পানির অপচয়, কৃষিভূমি হ্রাস, জ্বালানিসংকট প্রভৃতি প্রাকৃতিক ও সামাজিক উভয় পরিবেশকে ধারাবাহিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সাম্প্রতিক সময়ে মানুষ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ, জীবের জিনগত পরিবর্তন, বিলাসবহুল দ্রব্যের অপরিমিত ব্যবহার, পলিথিনের অপরিমিত ব্যবহার, অরণ্যচ্ছেদন, সামুদ্রিক সম্পদ বিনষ্টকরণ ও বাঁধ নির্মাণ করছে। মানুষ ও অন্যান্য জীবকুলের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান মাটি, বায়ু ও পানি নির্বিঘ্নে দূষিত করছে এবং খনিজ সম্পদের অপরিমিত ও নির্বিচার ব্যবহার অব্যাহত রাখতে নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য উভয় প্রকার সম্পদের অপচয় করছে অনায়াসে। উন্নত বা শিল্পোন্নত দেশসমূহ অধিক মুনাফা অর্জনের আশায় ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা বা সামনের সারিতে অবস্থানের সর্বোন্নত ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিযোগিতামূলকভাবে পরিবেশের ক্ষতি করছে। অধিক মুনাফা অর্জন করে উন্নত বা শিল্পোন্নত দেশসমূহ আরও উন্নত হয়েছে ঠিকই, অন্যদিকে পরিবেশের ওপর ঠিক কতটা নেতিবাচক চাপ প্রয়োগ হয়েছে, তা পরিমাপ করারও প্রয়াস কম বা করা বেশ কঠিন। কিন্তু পরিবেশের অবনয়নের এই মাত্রা চলতে থাকলে ভবিষ্যতের জন্য তা অশনিসংকেত বৈকি।
পরিবেশবিজ্ঞানীদের মতে; পরিবেশ অবনয়নের জন্য প্রকৃতিসৃষ্ট কারণের চেয়ে মনুষ্যসৃষ্ট কারণই বেশি দায়ী। ডিফরেস্টেশন ফ্যাক্টস অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকস ২০২৪-এ (গ্লোবাল ডেটা) উল্লেখ রয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতিবছর ১২ মিলিয়ন হেক্টর বনায়ন ধ্বংস হচ্ছে, যার পরিমাণ ৩৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যেটি তার আগের পাঁচ বছরে, অর্থাৎ ২০১০-২০১৫ সালে ছিল ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। প্রতি মিনিটে বিশ্বের প্রায় ২ হাজার ৪০০ গাছ কাটা হচ্ছে নির্বিচারে, যা বাতাসে বৃদ্ধি পাওয়া কার্বন প্রশমনের জন্য মোটেও সুখকর নয়। ২০১৮ সালে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে যত মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে, তার ২৮ শতাংশই পরিবেশদূষণজনিত অসুখ-বিসুখের কারণে।
ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট রিফর্ম কমিশন ২০২৩-এর একটি প্রতিবেদন ‘ওয়াটার পোলিউশন: এভরিথিং ইউ নিড টু নো’-এ প্রকাশিত হয় যে সুপেয় পানির পরিমাণ সীমিত। সমগ্র পৃথিবীর মিঠাপানির ১ শতাংশের কম আমরা ব্যবহার করতে পারি। যখন মিঠাপানির বৈশ্বিক চাহিদা বর্তমানের চেয়ে এক-তৃতীয়াংশ বাড়বে, তখন কোনো পদক্ষেপ ছাড়াই ২০৫০ সালে এই চ্যালেঞ্জ নিশ্চিতভাবে বাড়বে।
বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৭ মিলিয়ন মানুষ মারা যায় শুধু বায়ুদূষণের কারণে। কলকারখানার বিষাক্ত শিল্পবর্জ্য, যানবাহনের বিষাক্ত ধোঁয়া, গৃহস্থালি ও অন্যান্য কাজে সৃষ্ট আবর্জনা ও বিষাক্ত পদার্থ, পলিথিন ইত্যাদি অপরিকল্পিতভাবে মাটিতে মিশে যাওয়ায় মাটি স্বাভাবিক পুষ্টিগুণ ও মৌলিকত্ব হারিয়ে ফেলছে। তাই আধুনিককালে পরিবেশ অবনয়নের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া পরিবেশবাদীদের মনে নানা উদ্বেগের সৃষ্টি করছে।
আশঙ্কার বিষয় হলো, বিশুদ্ধ পানি ও নির্মল বায়ু বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত হবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে নিঃশেষকরণ সৃষ্টি হবে। জীবকুলের সর্বত্র পরিবেশের উপাদানসমূহের দূষণের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হলো বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন বৃদ্ধি ও ওজোনস্তরের ক্রমক্ষীয়মানতা।
পরিবেশ মানুষ কিংবা অন্যান্য প্রাণীর জীবনে এমন একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান, যাকে বাদ দিয়ে এদের অস্তিত্বের কথা ভাবা যায় না। পরিবেশের ক্রমবর্ধমান অবনয়ন প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি দিচ্ছে। সমকালীন বিশ্বে পরিবেশের অবনয়ন শুধু মানবসমাজে নয়, প্রকৃতিতেও এক বিস্ময়কর অরাজকতার সৃষ্টি করছে।
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ আন্দোলন, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশের টেকসই উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পরিবেশ অর্থনীতি, পরিবেশ রাজনীতি, পরিবেশ নারীবাদ ও পরিবেশ কর (সবুজ কর) প্রভৃতি বিষয় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তাই সামাজিক ও প্রাকৃতিক উভয় পরিবেশ সংরক্ষণে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন পরিবেশকেন্দ্রিক প্রটোকল, কনফারেন্স ও চুক্তি স্বাক্ষর নীতিমালা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
পৃথিবীতে যে জাতি যত উন্নত পরিবেশে বসবাস করে, তার মানসিকতাও তত উন্নত। উন্নত পরিবেশ গড়ে তোলে উন্নত নাগরিক ও জনহিতকর রাষ্ট্র। সুতরাং টেকসই ও বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য চাই টেকসই পরিবেশ।
সুলতানা জহুরা, সহকারী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান ও গবেষক, পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে