জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
বেসরকারি সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের কাছে নিজ ভবনের জায়গা ভাড়া দিয়েছিলেন ওই ব্যাংকের পরিচালক মিজানুর রহমান। অভিযোগ উঠেছে, শুধু চড়া ভাড়াই নয়, জায়গা বেশি দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। এমনকি সিটি করপোরেশনের মালিকানায় থাকা গাড়ি রাখার জায়গারও ভাড়া তুলেছেন। এসব ভাড়ার বিপরীতে ভ্যাট ও করের টাকাও গেছে ব্যাংকের তহবিল থেকে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের গচ্চা গেলেও লাভ গুনেছেন পরিচালক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এমন অভিযোগ পাঠানো হয়েছে সম্প্রতি। এ নিয়ে দুই দফায় বিশেষ পরিদর্শন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এসবিএসি ব্যাংক। পরিদর্শনের পর বিষয়টিকে গুরুতর অনিয়ম বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে মিজানুর রহমানের দাবি, নিয়ম মেনেই সব করা হয়েছে।
অভিযোগ ও বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এসবিএসি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের জন্য রাজধানীর ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকার সানমুন স্টার টাওয়ারের ১১ তলার ৩০ হাজার ৫০ বর্গফুট এবং পঞ্চম তলায় ৩ হাজার বর্গফুট ভাড়া নিতে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি মেসার্স এম আর ট্রেডিংয়ের সঙ্গে চুক্তি করে। প্রতি বর্গফুটের মাসিক ভাড়া নির্ধারিত হয় ১১০ টাকা। ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট ও আয়করও দিতে হয়েছে ব্যাংককে। মেসার্স এম আর ট্রেডিংয়ের মালিক মিজানুর রহমান, যিনি এসবিএসি ব্যাংকের একজন পরিচালকও। সে সময় ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন আমজাদ হোসেন। ওই হোল্ডিংয়ে জমির পরিমাণ ১ বিঘা ১৭ কাঠা ১ ছটাক ৩৯ বর্গফুট; যা বর্গফুটে রূপান্তর করলে দাঁড়ায় ২৬ হাজার ৭২৪ বর্গফুট। অর্থাৎ প্রতি তলায় সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ৭২৪ বর্গফুট (খালি জায়গা বিবেচনায় নেওয়া হলে) ভাড়া দেওয়া সম্ভব। ফলে ১১ তলায় প্রকৃত জায়গার চেয়ে ৩ হাজার ৩২৬ বর্গফুটের অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এতে ১১০ টাকা হারে মাসিক ভাড়া হিসেবেই ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৮৬০ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে; বছরে যার পরিমাণ ৪৩ লাখ ৯০ হাজার ৩২০ টাকা। সঙ্গে যোগ হয়েছে ভ্যাট ও কর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে এটিকে গুরুতর অনিয়ম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ১১০ টাকা ছিল। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভাড়া বাড়িয়ে প্রতি বর্গফুটের জন্য নেওয়া হয় ১২৫ টাকা। পরে আরেক দফা বাড়িয়ে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ছিল ১৬০ টাকা। ২০১৮ সালের জুনে মিজানুর রহমান ভাড়া চুক্তির মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়াতে আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদকে বললেও চড়া ভাড়ার কারণে নবায়ন করা হয়নি।
এদিকে ন্যাশনাল ব্যাংকের মহাখালী শাখায় ঋণের জন্য এম আর ট্রেডিংয়ের বন্ধক রাখা দলিল অনুযায়ী, ২৩ তলা ভবনের প্রতি তলায় জায়গার পরিমাণ ২৫ হাজার বর্গফুট।
তবে এসবিএসি ব্যাংকের চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারির অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও পরিপালন বিভাগের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে সরেজমিন মাপের উল্লেখ করে মোট ৩৩ হাজার ৩৫০ বর্গফুটের পরিবর্তে ৩১ হাজার ১৫৪ বর্গফুট জায়গা থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। সেখানে আগে ১ হাজার ৮৯৬ বর্গফুটের অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ব্যাংক ভাড়া বাবদ ১৮ কোটি ৩৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৬২ টাকা বেশি দিয়েছে। এর কয়েক বছর আগে ব্যাংকটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলের প্রতিবেদনে ওই ভবনে এসবিএসি ব্যাংকের ব্যবহৃত মোট ফ্লোর স্পেস সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ৭২৪ বর্গফুট উল্লেখ করা হয়েছে। পরিদর্শক দলের প্রতিবেদনে প্রদত্ত অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত আনার ও ভাড়া চুক্তি সংশোধনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
অভিযোগ ও পরিদর্শন প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, ওই ভবনের পঞ্চম তলায় গাড়ি রাখার যে তিন হাজার বর্গফুট জায়গা মিজানুর রহমানের মেসার্স এম আর ট্রেডিং ব্যাংককে ভাড়া দিয়েছে, সেই জায়গার মালিক আসলে সিটি করপোরেশন। ২০০৯ সালের ১২ নভেম্বর সানমুন স্টার টাওয়ার নির্মাণে জমির মালিক তৎকালীন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মিজানুর রহমানের করা চুক্তি অনুযায়ী ভবনটির চতুর্থ ও পঞ্চম তলার পুরোটা কার পার্কিংয়ের জন্য এবং অষ্টম, নবম, ২১ ও ২২ তলা পাবে সিটি করপোরেশন। বাকিগুলো পাবে এম আর ট্রেডিং। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংকে রক্ষিত নথি অনুযায়ী পঞ্চম তলার পার্কিংয়ের তিন হাজার বর্গফুটের মালিক সিটি করপোরেশন, যা এম আর ট্রেডিং কোনোভাবেই ভাড়া দিতে পারে না।
২০১৮ সালের জুনে এম আর ট্রেডিংয়ের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করে এসবিএসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ভবনে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ছিল মাত্র ৬৫ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, এসবিএসি ব্যাংকের পরিচালক মিজানুর রহমান খেলাপি হলেও ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড সেই সময় ঋণের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে গোপন করেছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ঋণখেলাপি ব্যাংকের পরিচালক থাকতে পারেন না। তবে তিনি এখনো ব্যাংকটির পরিচালক। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দল।
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি গভর্নর বরাবর পাঠানো মোহাম্মদ ইদ্রিস নামের একজন সাধারণ শেয়ারহোল্ডারের অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট এসবিএসি ব্যাংকের ১২৪তম সাধারণ সভায় মিজানুর রহমান বলেন, বেশি দরে ভাড়ার চুক্তি তৎকালীন চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনকে ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে করা হয়েছিল। অভিযোগকারী ওই বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ডের কপি বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষিত থাকার কথা অভিযোগে উল্লেখ করেন।
২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে আমজাদ হোসেন এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। প্রধান কার্যালয়ে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০২১ সালে এসবিএসি ব্যাংক নতুন স্থান ভাড়া নেওয়ার পদক্ষেপ নিলে মিজানুর রহমান সানমুন স্টার টাওয়ারে ফ্লোর ভাড়া দিতে পরিচালনা পর্ষদে প্রস্তাব দেন। আলাপ-আলোচনার পর প্রতি বর্গফুট মাত্র ৫০ টাকা ভাড়ায় ৩১ হাজার ১৫৪ বর্গফুট ভাড়া নেওয়া হয়।
২০২২ সালের ১৫ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরিচালকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাংকের প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা কেনা যাবে না। এমন করা হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এসবিএসি ব্যাংকের পরিচালক মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সব নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। ভাড়া দিতে ঘুষ দেওয়া, সিটি করপোরেশনের কার পার্কিংয়ের স্পেস ভাড়া ও ঋণখেলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংযোগ কেটে দেন।
এসবিএসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি গত বছরের জুনে এসবিএসি ব্যাংকে এসেছি। এমডি পদে আছি ডিসেম্বর থেকে। কয়েক বছর আগের ভাড়ার বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগটি শুনেছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কোনো পক্ষ অভিযোগ দিয়ে থাকলে সেটির তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশনা দিলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’
বেসরকারি সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের কাছে নিজ ভবনের জায়গা ভাড়া দিয়েছিলেন ওই ব্যাংকের পরিচালক মিজানুর রহমান। অভিযোগ উঠেছে, শুধু চড়া ভাড়াই নয়, জায়গা বেশি দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। এমনকি সিটি করপোরেশনের মালিকানায় থাকা গাড়ি রাখার জায়গারও ভাড়া তুলেছেন। এসব ভাড়ার বিপরীতে ভ্যাট ও করের টাকাও গেছে ব্যাংকের তহবিল থেকে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের গচ্চা গেলেও লাভ গুনেছেন পরিচালক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এমন অভিযোগ পাঠানো হয়েছে সম্প্রতি। এ নিয়ে দুই দফায় বিশেষ পরিদর্শন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এসবিএসি ব্যাংক। পরিদর্শনের পর বিষয়টিকে গুরুতর অনিয়ম বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে মিজানুর রহমানের দাবি, নিয়ম মেনেই সব করা হয়েছে।
অভিযোগ ও বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এসবিএসি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের জন্য রাজধানীর ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকার সানমুন স্টার টাওয়ারের ১১ তলার ৩০ হাজার ৫০ বর্গফুট এবং পঞ্চম তলায় ৩ হাজার বর্গফুট ভাড়া নিতে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি মেসার্স এম আর ট্রেডিংয়ের সঙ্গে চুক্তি করে। প্রতি বর্গফুটের মাসিক ভাড়া নির্ধারিত হয় ১১০ টাকা। ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট ও আয়করও দিতে হয়েছে ব্যাংককে। মেসার্স এম আর ট্রেডিংয়ের মালিক মিজানুর রহমান, যিনি এসবিএসি ব্যাংকের একজন পরিচালকও। সে সময় ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন আমজাদ হোসেন। ওই হোল্ডিংয়ে জমির পরিমাণ ১ বিঘা ১৭ কাঠা ১ ছটাক ৩৯ বর্গফুট; যা বর্গফুটে রূপান্তর করলে দাঁড়ায় ২৬ হাজার ৭২৪ বর্গফুট। অর্থাৎ প্রতি তলায় সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ৭২৪ বর্গফুট (খালি জায়গা বিবেচনায় নেওয়া হলে) ভাড়া দেওয়া সম্ভব। ফলে ১১ তলায় প্রকৃত জায়গার চেয়ে ৩ হাজার ৩২৬ বর্গফুটের অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এতে ১১০ টাকা হারে মাসিক ভাড়া হিসেবেই ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৮৬০ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে; বছরে যার পরিমাণ ৪৩ লাখ ৯০ হাজার ৩২০ টাকা। সঙ্গে যোগ হয়েছে ভ্যাট ও কর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে এটিকে গুরুতর অনিয়ম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ১১০ টাকা ছিল। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভাড়া বাড়িয়ে প্রতি বর্গফুটের জন্য নেওয়া হয় ১২৫ টাকা। পরে আরেক দফা বাড়িয়ে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ছিল ১৬০ টাকা। ২০১৮ সালের জুনে মিজানুর রহমান ভাড়া চুক্তির মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়াতে আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদকে বললেও চড়া ভাড়ার কারণে নবায়ন করা হয়নি।
এদিকে ন্যাশনাল ব্যাংকের মহাখালী শাখায় ঋণের জন্য এম আর ট্রেডিংয়ের বন্ধক রাখা দলিল অনুযায়ী, ২৩ তলা ভবনের প্রতি তলায় জায়গার পরিমাণ ২৫ হাজার বর্গফুট।
তবে এসবিএসি ব্যাংকের চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারির অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও পরিপালন বিভাগের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে সরেজমিন মাপের উল্লেখ করে মোট ৩৩ হাজার ৩৫০ বর্গফুটের পরিবর্তে ৩১ হাজার ১৫৪ বর্গফুট জায়গা থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। সেখানে আগে ১ হাজার ৮৯৬ বর্গফুটের অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ব্যাংক ভাড়া বাবদ ১৮ কোটি ৩৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৬২ টাকা বেশি দিয়েছে। এর কয়েক বছর আগে ব্যাংকটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলের প্রতিবেদনে ওই ভবনে এসবিএসি ব্যাংকের ব্যবহৃত মোট ফ্লোর স্পেস সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ৭২৪ বর্গফুট উল্লেখ করা হয়েছে। পরিদর্শক দলের প্রতিবেদনে প্রদত্ত অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত আনার ও ভাড়া চুক্তি সংশোধনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
অভিযোগ ও পরিদর্শন প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, ওই ভবনের পঞ্চম তলায় গাড়ি রাখার যে তিন হাজার বর্গফুট জায়গা মিজানুর রহমানের মেসার্স এম আর ট্রেডিং ব্যাংককে ভাড়া দিয়েছে, সেই জায়গার মালিক আসলে সিটি করপোরেশন। ২০০৯ সালের ১২ নভেম্বর সানমুন স্টার টাওয়ার নির্মাণে জমির মালিক তৎকালীন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মিজানুর রহমানের করা চুক্তি অনুযায়ী ভবনটির চতুর্থ ও পঞ্চম তলার পুরোটা কার পার্কিংয়ের জন্য এবং অষ্টম, নবম, ২১ ও ২২ তলা পাবে সিটি করপোরেশন। বাকিগুলো পাবে এম আর ট্রেডিং। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংকে রক্ষিত নথি অনুযায়ী পঞ্চম তলার পার্কিংয়ের তিন হাজার বর্গফুটের মালিক সিটি করপোরেশন, যা এম আর ট্রেডিং কোনোভাবেই ভাড়া দিতে পারে না।
২০১৮ সালের জুনে এম আর ট্রেডিংয়ের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করে এসবিএসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ভবনে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ছিল মাত্র ৬৫ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, এসবিএসি ব্যাংকের পরিচালক মিজানুর রহমান খেলাপি হলেও ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড সেই সময় ঋণের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে গোপন করেছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ঋণখেলাপি ব্যাংকের পরিচালক থাকতে পারেন না। তবে তিনি এখনো ব্যাংকটির পরিচালক। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দল।
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি গভর্নর বরাবর পাঠানো মোহাম্মদ ইদ্রিস নামের একজন সাধারণ শেয়ারহোল্ডারের অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট এসবিএসি ব্যাংকের ১২৪তম সাধারণ সভায় মিজানুর রহমান বলেন, বেশি দরে ভাড়ার চুক্তি তৎকালীন চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনকে ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে করা হয়েছিল। অভিযোগকারী ওই বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ডের কপি বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষিত থাকার কথা অভিযোগে উল্লেখ করেন।
২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে আমজাদ হোসেন এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। প্রধান কার্যালয়ে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০২১ সালে এসবিএসি ব্যাংক নতুন স্থান ভাড়া নেওয়ার পদক্ষেপ নিলে মিজানুর রহমান সানমুন স্টার টাওয়ারে ফ্লোর ভাড়া দিতে পরিচালনা পর্ষদে প্রস্তাব দেন। আলাপ-আলোচনার পর প্রতি বর্গফুট মাত্র ৫০ টাকা ভাড়ায় ৩১ হাজার ১৫৪ বর্গফুট ভাড়া নেওয়া হয়।
২০২২ সালের ১৫ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরিচালকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাংকের প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা কেনা যাবে না। এমন করা হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এসবিএসি ব্যাংকের পরিচালক মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সব নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। ভাড়া দিতে ঘুষ দেওয়া, সিটি করপোরেশনের কার পার্কিংয়ের স্পেস ভাড়া ও ঋণখেলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংযোগ কেটে দেন।
এসবিএসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি গত বছরের জুনে এসবিএসি ব্যাংকে এসেছি। এমডি পদে আছি ডিসেম্বর থেকে। কয়েক বছর আগের ভাড়ার বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগটি শুনেছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কোনো পক্ষ অভিযোগ দিয়ে থাকলে সেটির তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশনা দিলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
২ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
২ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৬ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৯ দিন আগে