নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা জোনাইল বাজারে ও চান্দাই ইউপির গাড়ফা মৎস্যজীবী পাড়ায় দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে নওগাঁর মান্দায় ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে গণেশপুর ইউপির দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে এক গ্রাম পুলিশসহ আটজন আহত হয়েছেন।

উপজেলার গণেশপুর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থীর দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার সতিহাটে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গণেশপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরীর পক্ষে ভোট চাওয়ার অভিযোগে সাইফুল ইসলাম শান্ত নামের এক কর্মীকে শুক্রবার সন্ধ্যায় সতিহাটে মারধর করেন নৌকা প্রার্থী হানিফ উদ্দিন মণ্ডলের সমর্থকেরা। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা সতিহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন।

এ সময় সতিহাট শহীদ মিনার এলাকায় অবস্থান নেন হানিফ উদ্দিন মণ্ডলের কর্মী-সমর্থকেরা। দুই পক্ষে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ উভয় পক্ষের লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরী বলেন, গ্রামপুলিশ আমিনুল ইসলাম নৌকা প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করায় পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে।

নৌকার প্রার্থী হানিফ উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল চৌধুরীর লোকজন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন আমার নির্বাচনী একটি ক্যাম্প ভাঙচুর করেছে।’

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ মামলা করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওই ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, এ ঘটনায় নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ দিকে, নাটোরের বড়াইগ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে উপজেলার জোনাইল বাজারে ও চান্দাই ইউপির গাড়ফা মৎস্যজীবী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

চান্দাই ইউপির আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনিসুর রহমানের অনুসারী দৌলত হোসেন বলেন, নির্বাচনে তাঁদের প্রার্থী পরাজয়ের পর রাত আটটার দিকে কয়েক শ লোক মিছিল নিয়ে এসে তাঁর অটোরিকশা, ইদ্রিস আলীর দোকান ও টিভি ভাঙচুর করে লুটপাট করে।

দৌলত হোসেন আরও বলেন, ‘সকালে নৌকার বিজয়ী প্রার্থী শাহনাজ পারভীন এসে পেট্রল দিয়ে বাড়িঘরে জালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আশ্বস্ত করায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’

চান্দাই ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘বংশগত দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ছাড়া আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকির মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’

এদিকে জোনাইল বাজারে চা দোকানি জীবন কুমার সাহা বলেন, নির্বাচনের পর দিন শুক্রবার সকালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মীরা তাঁর দোকান ভাঙচুর করেন।

জোনাইল ইউপির নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, দীর্ঘদিন তাঁর কর্মীরা নির্যাতিত ছিলেন। তাঁরা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটিয়েছেন।