শীতে খোলে ভাগ্য

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ১৯
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৪০

সারি সারি মাটির চুলা জ্বলছে, প্রতিটি চুলার ওপরে বসানো হয়েছে ‘খোলা’। একটু পর পর খোলার ঢাকনা তুলে কড়াইয়ে তুলে দিচ্ছেন চালের গুঁড়ার ‘গোলা’। কয়েক মিনিট রেখেই গরম-গরম চিতই পিঠা নামিয়ে প্লেট ধরিয়ে দিচ্ছেন ক্রেতাদের হাতে। প্লেটের এক পাশে দেওয়া হচ্ছে পছন্দমতো সরিষা ভর্তা, ধনে পাতা ভর্তা, মরিচ ভর্তা ও চিংড়ির শুঁটকি ভর্তা। এমন দৃশ্য মাদারীপুর শহরের পুরাতন জেলখানার পূর্ব পাশে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুর জেলা শহরের শতাধিক স্থানে শীত এলেই যেন ভাগ্য খুলে যায় এসব মৌসুমি পিঠা বিক্রেতাদের। প্রতিদিন পিঠা বিক্রি থেকে আয় হয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। পিঠা বিক্রেতারা প্রত্যেকেই নিম্ন আয়ের মানুষ। শীত মৌসুম এলেই তাঁরা স্বল্প পুঁজি নিয়ে বাড়তি আয়ের আশায় পিঠা বিক্রি করে থাকেন। এই পিঠা বিক্রি করেই শীতের তিন থেকে চার মাস তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

মাদারীপুর শহরের ডিসি ব্রিজ এলাকার রাসেল তালুকদার বলেন, ‘বাসায় পিঠা তৈরি করা এখন অনেক কষ্টকর। তাই বাজারের পিঠা পরিবারের সদস্যদের জন্য কিনে নিয়ে বাসায় যাচ্ছি। খরচও খুব বেশি না। বাড়িতে বানাতে যে কষ্ট আর খরচ, তার চেয়ে এটাই ভালো।’

হাফিজ মিয়া নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘সন্ধ্যার পরে হালকা কুয়াশায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অনুভব হয়, তখন ভ্রাম্যমাণ এই পিঠার দোকান থেকে আমি পিঠা খেয়ে থাকি। চিতই পিঠা আমার খুব পছন্দ। শীতের সময় উনুনের পাশে দাঁড়িয়ে পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা।’

পিঠা বিক্রেতা আলতাব হোসেন বলেন, ‘শীতের মৌসুমে এলেই আমি পিঠা বিক্রি করে থাকি। অন্য মৌসুমে আমি দিন মজুরের কাজ করে থাকি। সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্রেতা থাকে। গত বছরের চেয়ে এবার চাল, লাকড়ির দাম অনেক বেশি, তাই আগের মতো লাভ হয় না।’

আরেক পিঠা বিক্রেতা শরীফা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী একজন দিনমজুর। সংসারের কিছুটা হাল ধরতে আমি পিঠা বিক্রি করি। তা ছাড়া শীতে আমার স্বামীর তেমন কাজ থাকে না। তাই সেও মাঝে মধ্যে আমাকে পিঠা বিক্রি করতে সাহায্য করেন। তবে এখানে মাঝে মধ্যে স্থানীয় বখাটেরা পিঠা খেয়ে টাকা দেন না। পুলিশকে বললেও কাজ হয় না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত