দুই ইউপি চেয়ারম্যানের ধস্তাধস্তি বাউফলে

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ০৯: ২৭
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১২: ৩১

পূর্ব বিরোধের জেরে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ও কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দুই চেয়ারম্যানের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

ইউএনও কার্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কনকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ব্যক্তিগত কাজে উপজেলা পরিষদে যান। এ সময় দাসপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান এনএম জাহাঙ্গীর হোসেনও সেখানে যান। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে দুজনে ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত হন। তাঁদের চিৎকার শুনে ইউএনও তাঁর কক্ষ থেকে বের হয়ে এসে দুজনকে নির্বৃত্ত করেন। তবে উপজেলা পরিষদ এলাকায় দুই চেয়ারম্যানের অনুসারীরা অবস্থান নেন। এতে উত্তেজনা দেখা দেয়। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সেখানে পুলিশ ডাকা হয়। পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা ও কনকদিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবনে বেলা ১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন। তাঁকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করা হয়। তা ছাড়া পিস্তল উঁচিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের একটি কক্ষে আমাকে দেখে জাহাঙ্গীর হোসেন ও রাসেল নামে তাঁর এক অনুসারী আমাকে গুন্ডা বলে মন্তব্য করেন। আমিও তখন তাঁকে মন্দ কথা বলি। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীরের অনুসারী রাসেল প্যাদা চাকু বের করে আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করেন। আমি কিছুটা সরে গিয়ে নিজেকে রক্ষা করি। এ সময় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর পিস্তল বের করেন। তখন আমি চিৎকার দিলে ইউএনও স্যার এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সব ঘটনা সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড আছে।’

জনতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর বলেন, ‘শাহিন চেয়ারম্যান আমার ওপর হামলা করেছেন। যা পরিষদের কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা আছে। ঘটনাটি আমি তাৎক্ষণিক মৌখিকভাবে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানিয়েছি। পরে লিখিত অভিযোগ দিব। এ ছাড়া ইউএনও স্যারের মাধ্যমে লিখিতভাবে বিষয়টি ডিসি স্যারকে জানাব।’

জানতে চাইলে বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, ‘দুই চেয়ারম্যানই মৌখিকভাবে ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ইউএনর কার্যালয় থেকে আমাকে ঘটনাটি জানানোর পর আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।’

ইউএনও আল আমিন বলেন, ‘চিৎকার শুনে প্রথমে আমি মনে করেছি কার্যালয়ের বাইরে হয়তো কোনো ঘটনা ঘটছে। পরে যখন বুঝলাম আমার কক্ষের কাছে ডাকাডাকি হচ্ছে, তখন আমি গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং দুই চেয়ারম্যানকে দুই দিকে সরিয়ে দিই। ঘটনাটি আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানিয়েছি।’

সিসিটিভির ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ইউএনও বলেন, ‘দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। তবে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের মতো কিছু পাইনি। বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত