সিরাজুল ইসলাম সিরাজ
সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ধরাশায়ী এবং বিদ্রোহীদের জয়জয়কার। কিন্তু কেন?
আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রম, দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, শত শত নেতা-কর্মীর আত্মত্যাগ এবং সীমাহীন প্রচেষ্টার ফলে আজ দল ক্ষমতায়। নেতা-কর্মীরা খেয়ে না খেয়ে দিবারাত্রি কাজ করার ফসল একজন নির্বাচিত সাংসদ বা এমপি। সেই এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর নেতা-কর্মীকে আর চেনেন না। নেতা-কর্মীদের বিপদে পাশে থাকার তাগিদ অনুভব করেন না। ভোটের আগে ভাই ডাকতে পারলেও নির্বাচিত হওয়ার পর স্যার কিংবা ম্যাডাম ডাকতে অনেক সময় বাধ্য করা হয় কিংবা ভাই ডাকলে বিরক্ত হয়। নেতা-কর্মীদের অল্প দিনের মধ্যেই চাকর ভাবতে শুরু করেন।
এই সব নিগৃহীত, অপমানিত, বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এবং বিপদগ্রস্ত নেতা-কর্মীরা তাঁদের সমস্যা সমাধানের জন্য এমপিদের খুঁজে পান না কিংবা এমপি এদের আর পছন্দ করেন না। এমপি নিজেকে দলের এবং এলাকার মালিক ভাবতে শুরু করেন। তিনি এলাকার কিছু তেলবাজ পরিবেষ্টিত হয়ে যান। তাদের নিয়ে চলতেই এমপিরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কারণ এরা এমপির সব সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এমন ভাব যেন এমপি কোনো ভুলই করতে জানেন না।
একজন কর্মী সারা জীবন দলের জন্য কাজ করল, দলের জন্য অবদান রাখল, সে কি দল থেকে একটু মূল্যায়ন পাওয়ার অধিকার রাখে না? সে কি দল থেকে একটু সম্মান পাওয়ার অধিকার রাখে না? তার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিপদ হতে রক্ষার সহায়তা চাইতে পারে না? একজন এমপি নির্বাচিত হলেই সবকিছুর মালিক হয়ে যায় না বা যেতে পারে না। কিন্তু আমরা কি দেখছি? এমপিরাই সবকিছু।
হাজার হাজার মানুষ আওয়ামী লীগ করে সংসার, জীবন-যৌবন নষ্ট করেছেন, সংসার ত্যাগ করেছেন, শুধুমাত্র রাজনীতি করার কারণে জেল খেটেছেন, সংসারের অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছেন। অনেকে আন্দোলন সংগ্রামে আত্মাহুতি দিয়েছেন। ছাত্রলীগ করে পড়াশোনাটাও ঠিকমতো শেষ করতে পারেন নাই। এরা কি শুধু কিছু পাওয়ার জন্যই রাজনীতি করেছেন?
না তা নয়, কেউ সম্মান পাওয়ার জন্য, কেউ পরিচিতি পাওয়ার জন্য, কেউ সমাজসেবা করার জন্য কেউবা সমাজ তথা দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এবং কেউ তাঁর এলাকার সমস্যাগুলো নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের নিকট উপস্থাপনের জন্য রাজনীতি করছেন। কিন্তু এখনকার প্রায় সব এমপি সাহেব যেভাবে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার নিরন্তর চেষ্টা করছেন সেটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। যখন কোনো নেতার সঙ্গে কর্মীরা থাকে না, তখন নেতার নেতৃত্ব থাকে না। যখন কোনো এমপি নেতা-কর্মী শূন্য হয়ে যায় এবং জনগণ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তখন তিনি নেতৃত্বের পাশাপাশি জনগণের আস্থা হারান।
টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায়। কিন্তু বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই একটু ভেবে দেখবেন কি, আপনার দলের সাধারণ নেতা-কর্মীদের কি অবস্থা? তারা তাদের মর্যাদা কতটুকু পেয়েছেন? তারা কীভাবে উপেক্ষিত, বঞ্চিত ও লাঞ্ছিত হচ্ছেন? দল পাগল মানুষগুলো দলের কার্যক্রমের কী অবস্থা?
যদি তৃণমূলকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় এবং দলীয় চেইন অব কমান্ড অনুসরণ করা যায় তাহলে বিদ্রোহী প্রার্থী অবশ্যই কমে যেত বলে আমরা মনে করি। তৃণমূলের নেতা-কর্মী আপনার কথা শোনে না আপনি কিসের জনপ্রতিনিধি? আপনার নেতৃত্বে অবশ্যই গলদ আছে, আপনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি সুবিচার করেন নাই, তাদের প্রাপ্য অধিকার দেন নাই।
এমপি মহোদয়, আপনি হয়তো থাকবেন না, কিন্তু দল কাঙাল মানুষগুলোকে আর আঘাত করবেন না। এতে আপনার মঙ্গল না হলেও দেশ ও দলের মঙ্গল অবধারিত। সব দায়িত্ব যদি সভানেত্রীর ঘাড়ে দেবেন তাহলে আপনাদের দায়িত্বে থাকার প্রয়োজন আছে কি? এমপির যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি দায় আছে আমাদের সবার। কাউকে ছোট করে কেউ কখনো বড় হতে পেরেছে কি এবং ভবিষ্যতেও পারবে কি?
লেখক: সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, শিল্পপতি, পীরগঞ্জ রংপুর
সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ধরাশায়ী এবং বিদ্রোহীদের জয়জয়কার। কিন্তু কেন?
আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রম, দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, শত শত নেতা-কর্মীর আত্মত্যাগ এবং সীমাহীন প্রচেষ্টার ফলে আজ দল ক্ষমতায়। নেতা-কর্মীরা খেয়ে না খেয়ে দিবারাত্রি কাজ করার ফসল একজন নির্বাচিত সাংসদ বা এমপি। সেই এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর নেতা-কর্মীকে আর চেনেন না। নেতা-কর্মীদের বিপদে পাশে থাকার তাগিদ অনুভব করেন না। ভোটের আগে ভাই ডাকতে পারলেও নির্বাচিত হওয়ার পর স্যার কিংবা ম্যাডাম ডাকতে অনেক সময় বাধ্য করা হয় কিংবা ভাই ডাকলে বিরক্ত হয়। নেতা-কর্মীদের অল্প দিনের মধ্যেই চাকর ভাবতে শুরু করেন।
এই সব নিগৃহীত, অপমানিত, বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এবং বিপদগ্রস্ত নেতা-কর্মীরা তাঁদের সমস্যা সমাধানের জন্য এমপিদের খুঁজে পান না কিংবা এমপি এদের আর পছন্দ করেন না। এমপি নিজেকে দলের এবং এলাকার মালিক ভাবতে শুরু করেন। তিনি এলাকার কিছু তেলবাজ পরিবেষ্টিত হয়ে যান। তাদের নিয়ে চলতেই এমপিরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কারণ এরা এমপির সব সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এমন ভাব যেন এমপি কোনো ভুলই করতে জানেন না।
একজন কর্মী সারা জীবন দলের জন্য কাজ করল, দলের জন্য অবদান রাখল, সে কি দল থেকে একটু মূল্যায়ন পাওয়ার অধিকার রাখে না? সে কি দল থেকে একটু সম্মান পাওয়ার অধিকার রাখে না? তার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিপদ হতে রক্ষার সহায়তা চাইতে পারে না? একজন এমপি নির্বাচিত হলেই সবকিছুর মালিক হয়ে যায় না বা যেতে পারে না। কিন্তু আমরা কি দেখছি? এমপিরাই সবকিছু।
হাজার হাজার মানুষ আওয়ামী লীগ করে সংসার, জীবন-যৌবন নষ্ট করেছেন, সংসার ত্যাগ করেছেন, শুধুমাত্র রাজনীতি করার কারণে জেল খেটেছেন, সংসারের অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছেন। অনেকে আন্দোলন সংগ্রামে আত্মাহুতি দিয়েছেন। ছাত্রলীগ করে পড়াশোনাটাও ঠিকমতো শেষ করতে পারেন নাই। এরা কি শুধু কিছু পাওয়ার জন্যই রাজনীতি করেছেন?
না তা নয়, কেউ সম্মান পাওয়ার জন্য, কেউ পরিচিতি পাওয়ার জন্য, কেউ সমাজসেবা করার জন্য কেউবা সমাজ তথা দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এবং কেউ তাঁর এলাকার সমস্যাগুলো নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের নিকট উপস্থাপনের জন্য রাজনীতি করছেন। কিন্তু এখনকার প্রায় সব এমপি সাহেব যেভাবে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার নিরন্তর চেষ্টা করছেন সেটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। যখন কোনো নেতার সঙ্গে কর্মীরা থাকে না, তখন নেতার নেতৃত্ব থাকে না। যখন কোনো এমপি নেতা-কর্মী শূন্য হয়ে যায় এবং জনগণ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তখন তিনি নেতৃত্বের পাশাপাশি জনগণের আস্থা হারান।
টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায়। কিন্তু বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই একটু ভেবে দেখবেন কি, আপনার দলের সাধারণ নেতা-কর্মীদের কি অবস্থা? তারা তাদের মর্যাদা কতটুকু পেয়েছেন? তারা কীভাবে উপেক্ষিত, বঞ্চিত ও লাঞ্ছিত হচ্ছেন? দল পাগল মানুষগুলো দলের কার্যক্রমের কী অবস্থা?
যদি তৃণমূলকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় এবং দলীয় চেইন অব কমান্ড অনুসরণ করা যায় তাহলে বিদ্রোহী প্রার্থী অবশ্যই কমে যেত বলে আমরা মনে করি। তৃণমূলের নেতা-কর্মী আপনার কথা শোনে না আপনি কিসের জনপ্রতিনিধি? আপনার নেতৃত্বে অবশ্যই গলদ আছে, আপনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি সুবিচার করেন নাই, তাদের প্রাপ্য অধিকার দেন নাই।
এমপি মহোদয়, আপনি হয়তো থাকবেন না, কিন্তু দল কাঙাল মানুষগুলোকে আর আঘাত করবেন না। এতে আপনার মঙ্গল না হলেও দেশ ও দলের মঙ্গল অবধারিত। সব দায়িত্ব যদি সভানেত্রীর ঘাড়ে দেবেন তাহলে আপনাদের দায়িত্বে থাকার প্রয়োজন আছে কি? এমপির যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি দায় আছে আমাদের সবার। কাউকে ছোট করে কেউ কখনো বড় হতে পেরেছে কি এবং ভবিষ্যতেও পারবে কি?
লেখক: সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, শিল্পপতি, পীরগঞ্জ রংপুর
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১১ দিন আগে